দেশের চলমান সংস্কার এবং নির্বাচন নিয়ে শ্রমিকসহ সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার। তিনি বলেছেন, ‘আমরা নির্বাচন কমিশনে সংস্কার নিয়ে বেশ কিছু প্রস্তাব দিয়েছি, ইসি কিছু বিষয়ে দ্বিমত জানাচ্ছে; ইসির বক্তব্য একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে। তারা একটি বিশেষ দলকে ক্ষমতায় নেওয়ার আয়োজন করছে বলে মনে হচ্ছে।’

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর বাংলামোটরে ‘মে দিবসের আহ্বান ও ২৪–এর গণ–অভ্যুত্থানের প্রেরণায়: নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তে শ্রমিকের ন্যায্য হিস্যা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ কথাগুলো বলেন সারোয়ার তুষার। এনসিপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে দলের শ্রমিক উইং।

নির্বাচনের আগে ইসি পুনর্গঠন এবং ইসি সংস্কার করতে হবে উল্লেখ করে সারোয়ার তুষার বলেন, সংশয় তৈরি হয়েছে যে এই ইসি আসলে কার ইসি, এই ইসি আসলে কী চায়। এই ইসি দ্বারা আদৌ সুষ্ঠু নির্বাচন করা যাবে কি না, প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। যে আইন, যে বিধান দ্বারা এই ইসি পরিচালিত হয়, এই বিদ্যমান আইন এবং এই বিদ্যমান বিধানে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। ফলে আগামী নির্বাচনের আগেই ইসির সংস্কার করাটা সবচেয়ে জরুরি।

এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, বর্তমান সমাজব্যবস্থায় শ্রমিকদের ‘দাস’ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। তাঁদের কোনো স্বাধীন সত্তা নেই। তাঁদের ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা কখনো ১২ ঘণ্টা শ্রমের বিনিময়ে যে সামান্য অর্থ দেওয়া হয়, তাতে জীবনধারণ সম্ভব নয়। তিনি বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট বলতে চাই, বাংলাদেশের মানুষের মুক্তি, নাগরিকের মুক্তি, শ্রমিকের মুক্তির জন্য আমাদের সুস্পষ্টভাবে কাজ করতে হবে এবং সেটাই হবে আগামী নতুন বাংলাদেশের শ্রমিকদের জন্য মুক্তি এবং নতুন বন্দোবস্ত।’

এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ চলমান সংস্কারসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন। সংস্কারের মাধ্যমে শুধু কোনো একক দল যেন সুবিধা না পায়, সেদিকে দৃষ্টি দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘আমরা ইতিহাসের প্রতিটি স্তর বঞ্চিত হয়েছি। ৪৭–পরবর্তী সময়ে বঞ্চিত হয়েছি। ৭১–পরবর্তী সময়ে বঞ্চিত হয়েছি। ৯০–পরবর্তী সময়ে আমরা বঞ্চিত হয়েছি। সর্বশেষ আমরা ২০২৪–এ এসে দাঁড়িয়েছি। আমাদের মাথায় রাখতে হবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে আমাদের দায় রয়েছে।’

এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, দেশের পোশাক খাতে একটি মালিকবান্ধব ব্যবস্থা দাঁড় করানো হয়েছে। এখানে শ্রমিকদের শোষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে, অচিরেই এ ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে। শ্রমিক অঞ্চল থেকে বিপ্লব গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, জাতীয় নাগরিক পার্টি শ্রমিকদের বিদ্যমান এ অবস্থায় রাখতে চায় না। বাংলাদেশ পুনর্গঠনে এনসিপি শ্রমিকদের সঙ্গে নিয়ে কাজ করবে এবং তাদের পাশে থাকবে।

এনসিপির শ্রমিক উইংয়ের সংগঠক রহমতউল্লা রবিন নিহালের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক রিয়াজ মোর্শেদ, দলের শ্রমিক উইংয়ের যুগ্ম সমন্বয়ক শাহ আলম, আল আমিন, সজিব ওয়াফি, আবু আবদুল্লাহ, সদস্য ফয়সাল আহমেদ প্রমুখ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সমন বয়ক এনস প র ব যবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদনের পরবর্তী শুনানি বুধবার

রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের (রিভিউ) ওপর পরবর্তী শুনানির জন্য আগামীকাল বুধবার দিন রেখেছেন আপিল বিভাগ। আজ মঙ্গলবার শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের বেঞ্চ পরবর্তী ওই দিন ধার্য করেন।

এর আগে গত ১৮ মে শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ শুনানির জন্য ১ জুলাই দিন ধার্য করেছিলেন। ধার্য তারিখে বিষয়টি শুনানির জন্য রিভিউ আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবীর সময়ের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগ ১৫ জুলাই পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন। আজ বিষয়টি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের কার্যতালিকার ৭ নম্বর ক্রমিকে ওঠে।

ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স সংশোধন করে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দেন। পরে ২০১৬ সালের ১০ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। রায়ে রাষ্ট্রের সাংবিধানিক পদধারীদের পদক্রম ওপরের দিকে রাখা ও অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা হয়। পাশাপাশি জেলা জজদের পদক্রম আট ধাপ উন্নীত করে সচিবদের সমান করা হয়।

আপিল বিভাগের রায়ের পর্যবেক্ষণে প্রধান বিচারপতির পদক্রম এক ধাপ উন্নীত করে জাতীয় সংসদের স্পিকারের সমান এবং রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের (স্বাধীনতা পুরস্কার, একুশে পদক ও মহান স্বাধীনতাসংগ্রামে অংশগ্রহণ করে যে মুক্তিযোদ্ধারা বীর উত্তম খেতাব পেয়েছেন) পদক্রমে যথাযথভাবে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত বলে উল্লেখ করা হয়।

ওই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) তৎকালীন চেয়ারম্যান ২০১৭ সালে পৃথক আবেদন করেন। রিভিউ আবেদনে রাষ্ট্রের ৯০ জন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল পক্ষভুক্ত হন। পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের ওপর গত ২৭ এপ্রিল শুনানি শুরু হয়।

আজ আদালতে রিভিউ আবেদনকারী মন্ত্রিপরিষদ সচিবের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন শুনানি করেন। রিট আবেদনকারী পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী এবং ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম শুনানিতে অংশ নেন।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ রুলস অব বিজনেস অনুযায়ী, ১৯৮৬ সালে ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরি করে। রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর একই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর তা জারি করা হয়। পরে বিভিন্ন সময়ে তা সংশোধন করা হয়।

সর্বশেষ সংশোধন করা হয় ২০০৩ সালের ডিসেম্বরে। সংশোধিত এই ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরির ক্ষেত্রে সাংবিধানিক পদ, সংবিধান কর্তৃক স্বীকৃত ও সংজ্ঞায়িত পদগুলো প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের নিচের ক্রমিকে রাখা হয়েছে—এমন উল্লেখ করে এর বৈধতা নিয়ে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের তৎকালীন মহাসচিব মো. আতাউর রহমান ২০০৬ সালে রিট করেন।

রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১০ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট আট দফা নির্দেশনাসহ ১৯৮৬ সালের ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স (সংশোধিত) অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ ২০১১ সালে আপিল করে। এ আপিলের ওপর শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দেন। এ রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে ২০১৭ সালে করা আবেদনের ওপর শুনানি চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আসামির কাঠগড়ায় সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের ৪৫ মিনিট
  • পরবর্তী সরকারের পক্ষে এত সহজে সংস্কার আকাঙ্ক্ষাকে উপেক্ষা করা সম্ভব হবে না: আসিফ নজরুল
  • বিসিআইসির নিয়োগ পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ
  • এলডিসি উত্তরণের পরবর্তী প্রস্তুতি নিতে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন
  • ৪৪তম বিসিএস: মনোনীত প্রার্থীদের তথ্য চেয়ে পুনরায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ
  • ‘আগামীর বাংলাদেশে মিডিয়াকে দালাল হিসেবে দেখতে চাই না’ 
  • ‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদনের পরবর্তী শুনানি বুধবার
  • মাইলস্টোনে দগ্ধ ৩৩ জন এখনো ভর্তি, আইসিইউতে ৩
  • শেখ হাসিনার অডিওগুলো শুনলে বোঝা যায়, তাঁর এখনো প্রতিশোধ নেওয়ার ইচ্ছা আছে: আইন উপদেষ্টা
  • দ্বিতীয় প্রান্তিকে ব্র্যাক ব্যাংকের মুনাফা বেড়েছে