‘টাকার বিনিময়ে’ নারীদের হাতে স্বেচ্ছায় নির্যাতনের শিকার হন পুরুষ, গ্রেপ্তার ২
Published: 1st, May 2025 GMT
‘টাকার বিনিময়ে’ নারীদের হাতে পুরুষের কথিত নির্যাতন, বিকৃত যৌনাচারের ডিভিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে জড়িত একটি চক্রের দুই নারী সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার রাত ৩টায় বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় একটি ফ্ল্যাট থেকে তাদের গ্রেপ্তারের পর পুলিশ বলছে, এই চক্র ‘ফেমডম গ্রুপ’ হিসেবে পরিচিত। নারীরা নিজেদের ‘মিসট্রেস’ হিসেবে পরিচয় দেন।
গ্রেপ্তার দুই নারী হলেন-শিখা আক্তার (২৫) ও সুইটি আক্তার জারা (২৫)। তারা দুইজন বান্ধবী বলে পুলিশকে জানিয়েছেন।
এ ধরনের চক্রের সদস্য গ্রেপ্তারের ঘটনা বাংলাদেশে প্রথম বলে মনে করছেন ভাটারা থানার এসআই ইকবাল হেসেন।
তাদের একটি টেলিগ্রাম গ্রুপ থাকার তথ্য দিয়ে এসআই ইকবাল বলেন, ‘এই গ্রুপের সাথে এক ব্যক্তি যোগাযোগ করে এক ঘণ্টার ‘ফেমডম সেশন’ বুকিং করেন। পরে ওই ফ্ল্যাটে গিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর পুলিশকে খবর দিলে সেখান অভিযান চালানো হয়। এসময় তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে ওই দুই নারীর কাছ থেকে বেশ কিছু ভিডিও পাওয়া যায় যেগুলো ‘ফেমডম সেশন’ এর অংশ। এছাড়া বিকৃত যৌনাচারে ব্যবহৃত একটি চাবুক, বিশেষ পোশাক, হাইহিল বুট জুতা ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশ কর্মকর্তা ইকবাল বলেন, যেসব পুরুষ এ বিষয়ে আগ্রহী তারা গ্রুপে যোগাযোগ করে এক ঘণ্টার জন্য ৩ থেকে ৫ হাজার টাকায় ‘সেশন’ বুকিং করেন। পুরুষরা সেখানে গিয়ে স্বেচ্ছায় তরুণীর হাতে কথিত নির্যাতনের শিকার হন। এতে সে পুরুষরা আনন্দ পান বলে গ্রেপ্তার দুই নারী বলেছেন।
যখন কথিত নির্যাতন চলে তখন সে পুরুষের অনুমতি নিয়ে ভিডিও করার দাবি করে তিনি বলেন, পরে সে ভিডিও ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকায় কিনে নেয় পুরুষটি। এসব ভিডিওর কিছু অংশ তাদের নির্ধারিত গ্রুপে পোস্ট করে থাকে। প্রতিদিন তারা দুই থেকে তিনজনের বুকিং নেন বলে পুলিশকে বলেছেন গ্রেপ্তার দুই নারী।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
গোপালগঞ্জে সুদের টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে সংঘর্ষ, পুলিশসহ আহত ২৫
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় সুদের টাকা লেনদেনের বিরোধকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামের মধ্যে ২ ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে ৪ পুলিশসহ অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ও সেনা বাহিনী ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশ ২৫ রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে। এছাড়া ঘটনাস্থল থেকে উভয়পক্ষের ৪৫ জনকে আটক করার কথা জানিয়েছে পুলিশ।
আহতরা হলেন- পারভেজ শেখ (২০), মানিক শেখ (৪১), সাদ্দাম শেখ (৩৫), শাকিল খান (২৫), ফয়সাল শেখ (২০), আবু সাঈদ শেখ (৪০), সজীব শেখ (১৯), রনি শেখ (৪০), সোহেল সুলতান (২৫), আফ্রিদি শেখ (১৯), মোস্তফা শেখ (৪০), নুরুন্নবী (১৮), আমানুল্লাহসহ (২৫) আরও অনেকে।
গুরুতর আহতদের গোপালগঞ্জ ও কোটালীপাড়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া কোটালীপাড়া থানার আহত এসআই সেলিম মাহমুদ কোটালীপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। ওই এসআইসহ কোটালীপাড়া থানার আরও ৩ কনস্টেবল আহত হয়েছেন বলে কোটালীপাড়া থানার এসআই মামুনুর রশীদ জানিয়েছেন।
মাঝবাড়ি গ্রামের কালাম দাড়িয়া ও বংকুরা গ্রামের হাসেম মুন্সি জানিয়েছেন, কোটালীপাড়া উপজেলার বংকুরা গ্রামের রিয়াজুলের কাছ থেকে মাঝবাড়ি গ্রামের ফারুক দাড়িয়া সুদে টাকা নেন । সেই টাকা সময়মত ফারুক সুদে আসলে পরিশোধ করতে গড়িমসি শুরু করেন। এতে পাওনাদার রিয়াজুল ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। সুদের টাকা লেনদেন নিয়ে দু’জনের মধ্যে আজ শুক্রবার সকালে বাকবিতণ্ডা হয়। এদিন সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মসজিদের মাইক থেকে গ্রামবাসীকে সংঘর্ষে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। এ আহ্বানের পর দুই গ্রামের লোকজন ঢাল-সড়কিসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। দফায়-দফায় উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ চলে। পুলিশ প্রথমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হয়। দুই ঘণ্টা পর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি শান্ত করে।
উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করায় ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
কোটালীপাড়া পাড়া থানার ওসি মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ২৫ রাউন্ড গুলি বর্ষণ ও উভয়পক্ষের ৪৫ জনকে আটক করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে জানিয়ে ওসি আরও বলেন, এলাকার পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কোন পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়নি। অভিযোগ পাওয়ামাত্র আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অভিযুক্ত রিয়াজুল ও ফারুক দাড়িয়ার ফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া গেছে। এ কারণে তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।