ঘটনার ২ বছর পর মামলা: বিএনপি, আ.লীগ ও সাংবাদিক আসামি
Published: 2nd, May 2025 GMT
বরগুনা জেলা বিএনপির কার্যালয় ভাঙচুরের ঘটনার দুই বছর পর বিশেষ ক্ষমতা আইনে ১৫৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে বিএনপি নেতার ছেলে। তবে, মামলায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি কয়েকজন, সাংবাদিক, আইনজীবী এমনকি বিএনপির অঙ্গ সংগঠন স্বেচ্ছাসেবক দলের এক নেতাকেও আসামি করা হয়েছে।
বরগুনা থানা পুলিশ বলছে, গত ৩০ এপ্রিল বরগুনা জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস এম নজরুল ইসলামের ছেলে এস এম নইমুল ইসলাম বাদী হয়ে বরগুনা থানায় এই মামলা করেন। বিশেষ ক্ষমতা আইনের পাশাপাশি এই মামলায় বিস্ফোরক আইনের ধারাও যুক্ত করা হয়েছে। ১৫৮ জনের নাম উল্লেখ করে এতে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদেরও আসামি করা হয়েছে।
পুলিশ এরইমধ্যে এই মামলায় একজনকে গ্রেপ্তার করে বৃহস্পতিবার আদালতে সোপর্দ করেছে।
বিএনপির সূত্র জানায়, বিএনপিতে নইমুল ইসলামের কোনো পদ-পদবি নেই। মামলায় স্বেচ্ছাসেবক দলের বরগুনা সদর উপজেলা শাখার ৮ নম্বর সদর ইউনিয়নের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব সোহাগ মৃধাকেও আসামি করা হয়েছে। তবে এজাহারে তাকে জেলা যুবলীগের সদস্য হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া শহরের দুইজন ব্যবসায়ীকেও মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
মামলায় প্রধান অভিযুক্ত করা হয়েছে বরগুনা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুকে। এছাড়া আসামিদের তালিকায় রয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো.
আমতলী পৌরসভার সাবেক মেয়র মো. মতিয়ার রহমান, বেতাগী পৌরসভার সাবেক মেয়র এবিএম গোলাম কবির, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক শাহ মোহাম্মদ ওয়ালি উল্লাহ, উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম, তালতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রেজবি উল কবির;
বরগুনা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি ও দৈনিক যুগান্তরের নিজস্ব প্রতিবেদক অ্যাডভোকেট মজিুবুল হক কিসলু, বরগুনা জেলা আইনজীবি সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মাহাবুবুল বারী আসলাম, ৬নং বুড়িরচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবীরসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের অন্য নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে।
আসামিদের মধ্যে ধীরেন্দ্রদেবনাথ শম্ভু, জাহাঙ্গীর কবির বর্তমানে কারাগারে আছেন।
এ মামলায় আমতলীর চাওড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আক্তারুজ্জামান খান বাদলকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
তিনি গত বুধবার (৩০ এপ্রিল) অন্য একটি মামলায় জামিন পেয়ে কারাগার থেকে বের হন। তবে সেসময় অজ্ঞাত আসামি হিসেবে তাকে পুনরায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বরগুনা জেলা বিএনপির একাধিক নেতারা বলেন, বরগুনায় বিএনপির কোনো জেলা কমিটি নেই। এই মামলা দায়েরের বিষয়ে আমাদের সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনা হয়নি। আমরা দেখলাম মামলায় স্বেচ্ছাসেবক দলের একজন নেতার নামও যুক্ত করা হয়েছে, যা বিস্ময়কর!
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আসামিরা একটি মিছিল বের করে বরগুনা জেলা বিএনপি কার্যালয়ে হামলা চালায়। হামলার সময় তারা অফিস কক্ষ ভাঙচুর করেন, আসবাবপত্র, ইলেকট্রনিক ও ইলেকট্রিক্যাল সরঞ্জাম ভাঙচুর করেন এবং সেগুলো সড়কে স্তুপ করে আগুন ধরিয়ে দেন। এছাড়া একাধিক হাতবোমা কার্যালয়ের ভেতর ও বাইরে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।
বাদী অভিযোগ করেন, ওই সময়ে বিএনপি সরকারে না থাকায় তারা প্রশাসনের কাছ থেকে কোনো প্রতিকার পাননি।
মামলার বাদী এস এম নইমুল ইসলাম বলেন, “বিএনপির কার্যালয় ভাঙচুরের ঘটনায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করেছি। যথেষ্ট সাক্ষী আছে এই ঘটনার। তৎকালীন সময়ে থানায় মামলা নেয়নি। তাই এখন মামলা দায়ের করেছি।”
বরগুনা সদর উপজেলা শাখার ৮ নম্বর সদর ইউনিয়নের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব সোহাগ মৃধা বলেন, “আমাকে মামলার আসামি করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের সময়ে নির্যাতনের শিকার হয়েছি, প্রশাসনের মাধ্যমে হয়রানির শিকার হয়েছি। এখন আবার আওয়ামী লীগের সাথে আমাকে মামলার আসামি করা হয়েছে। বিএনপি নেতাদের সাথে কথা বলেছি। তারা সবাই হতবাক। আমি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নেতাদের সাথে কথা বলব।”
এ বিষয়ে বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেওয়ান জগলুল হাসান বলেন, “বিশেষ ক্ষমতা আইন, নাশকতা ও বিস্ফোরক আইনে ১৫৮ জন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ইতিমধ্যে একজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। তদন্ত শেষে প্রতিবেদন আদালতে জমা দেওয়া হবে।”
ঢাকা/ইমরান/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ল ইসল ম ব এনপ র ক ত কর উপজ ল সদস য আওয় ম বরগ ন
এছাড়াও পড়ুন:
সৌদি আরবের কাছে ৩৫০ কোটি ডলারের ক্ষেপণাস্ত্র বিক্রির অনুমোদন দিল যুক্তরাষ্ট্র
সৌদি আরবের কাছে ৩৫০ কোটি ডলারের ক্ষেপণাস্ত্র বিক্রির অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সৌদি আরব সফরের আগে শুক্রবার এ অনুমোদন দেওয়া হলো।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছে, ক্ষেপণাস্ত্র বিক্রি নিয়ে সৌদি আরবের সঙ্গে চুক্তির বিষয়টি তারা কংগ্রেসকে জানিয়েছে। এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর মধ্যে থাকবে মধ্যপাল্লার ১ হাজার ‘এআইএম–১২০’ ক্ষেপণাস্ত্র। আকাশে থাকা লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করার জন্য কোনো আকাশযান থেকে (এয়ার টু এয়ার) এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ছোড়া যায়।
আগামী ১৩ থেকে ১৬ মে সৌদি আরব, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাত সফর করবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর আগে সম্প্রতি প্রয়াত পোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অংশ নিতে ইতালির রাজধানী রোমে সংক্ষিপ্ত সফর করেছিলেন তিনি। এটিই ছিল দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় বসার পর মার্কিন প্রেসিডেন্টের প্রথম বিদেশ সফর।
তেলসমৃদ্ধ সৌদি আরবের সঙ্গে বড় ধরনের বাণিজ্যচুক্তি করার কথা আগে থেকেই বলে আসছিলেন ট্রাম্প। এ ছাড়া ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করতে মস্কো ও কিয়েভের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় গুরুত্বপূর্ণ মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ভূমিকা পালন করছে রিয়াদ।