স্টেগেন নয়, চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ও ক্লাসিকোতে খেলবেন শেজনি
Published: 4th, May 2025 GMT
রিয়াল ভায়াদোলিদের বিপক্ষে ২-১ গোলের জয় দিয়ে লা লিগায় শীর্ষস্থান আরও মজবুত করেছে বার্সেলোনা। ম্যাচে দীর্ঘ সাত মাস পর মাঠে নেমে চমৎকার পারফরম্যান্স উপহার দিয়েছেন জার্মান গোলরক্ষক মার্ক-আন্দ্রে টের স্টেগেন। কিন্তু চ্যাম্পিয়ন্স লিগ এবং এল ক্লাসিকোর মতো গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে গোলবারের নিচে দেখা যাবে পোলিশ গোলরক্ষক ভয়চেক শেজনিকে। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে এমনটাই নিশ্চিত করেছেন বার্সা কোচ হ্যান্সি ফ্লিক।
আগামী বুধবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সেমিফাইনালে ইন্টার মিলানের মুখোমুখি হবে বার্সেলোনা। আর তার কয়েকদিন পরই এল ক্লাসিকোতে মাঠে নামবে তারা চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে। এই দুই গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে দলে ব্যাপক পরিবর্তন এনেছিলেন ফ্লিক। ভায়াদোলিদের বিপক্ষে মূল একাদশে নয়টি পরিবর্তন আনেন তিনি।
এতে তরুণদের খেলতে নামানোর সুযোগ হলেও, ফ্লিক খেলোয়াড়দের নিয়ে আস্থা হারাচ্ছেন না, ‘আমি হতাশ নই। এত পরিবর্তনের পর খেলোয়াড়দের জন্য খেলা সহজ নয়। ওরা তরুণ। আমি ওদের উপর বিশ্বাস রাখি। কিছু ভুল হয়েছে, দ্রুত কনভার্শনেও সমস্যা ছিল। তবে আরাউহো, ক্রিস্টেনসেন এবং টের স্টেগেন ভালো খেলেছে।’
স্টেগেন ফিরলেও চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগ আর এল ক্লাসিকোয় তার খেলা হবে না। হ্যান্সি ফ্লিক সংবাদ সম্মেলনে বললেন, ‘চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সেমিফাইনালে ইন্টার মিলান আর এল ক্লাসিকোয় আমাদের গোলকিপার ভয়চেক শেজনি। স্টেগেনকে ফিরে পেয়ে খুব ভালো লাগছে।’
ম্যাচে পিছিয়ে পড়েও দ্বিতীয়ার্ধে রাফিনিয়া ও ফারমিন লোপেজের গোলে ম্যাচে ফেরে বার্সা। কোচ ফ্লিক এই দুই খেলোয়াড়ের পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট। রাফিনিয়ার গোলের প্রশংসা করার পাশাপাশি ফারমিনকে নিয়ে ইঙ্গিত দিয়েছেন ইন্টার মিলানের বিপক্ষে শুরুর একাদশে থাকার সম্ভাবনার কথা, ‘ফারমিন এমন একজন খেলোয়াড়, যাকে যেকোনো সময় শুরুর একাদশে রাখা যায়। সে বিভিন্ন পজিশনে খেলতে পারে। আমাদের লক্ষ্য ছিল তিন পয়েন্ট পাওয়া, সেটি অর্জিত হয়েছে। মিশন সম্পন্ন।’
লা লিগায় এই জয়ের ফলে রিয়াল মাদ্রিদের সঙ্গে বার্সার পয়েন্ট ব্যবধান দাঁড়িয়েছে ৭। আজ রিয়াল মাঠে নামবে সেল্টা ভিগোর বিপক্ষে। আর পরবর্তী রাউন্ডে ন্যু ক্যাম্পে অনুষ্ঠিত হবে মৌসুমের দ্বিতীয় এল ক্লাসিকো। তার আগে বার্সার সামনে ইন্টার মিলান পরীক্ষাও হয়ে উঠেছে গুরুত্বপূর্ণ।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইন ট র ম ল ন এল ক ল স ক
এছাড়াও পড়ুন:
মোটরসাইকেলের যত্নে যা যা করবেন
এখন প্রয়োজনের বাহন মোটরসাইকেল। যত্ন না নিলে মোটরসাইকেলের পারফরম্যান্স ধীরে ধীরে কমে আসে। শখ হোক বা প্রয়োজন হোক, নিজের মোটরসাইকেলের নিয়মিত যত্ন করা প্রয়োজন। যেকোনো মোটরসাইকেলের ভালো পারফরম্যান্স ও দীর্ঘস্থায়িত্বের জন্য নিয়মিত যত্ন ও রক্ষণাবেক্ষণ অপরিহার্য। বাইক ভ্যালি ঢাকার ব্যবস্থাপক মো. আল-শাহিন বলেন, অন্য সব যানবাহন ও বৈদ্যুতিক যন্ত্রের মতোই মোটরসাইকেলের যত্ন নেওয়া প্রয়োজন।
মোটরসাইকেলের যত্ন নিতে হবে নিয়মিত
প্রতিদিন পরিষ্কার করতে চেষ্টা করুন। মোটরসাইকেল চালানোর পর কাদা, ধুলা ও পানি মুছে ফেলুন। বিশেষ করে বর্ষাকালে মোটরসাইকেলের চেইন, চাকা ও নিচের অংশ ভালোভাবে পরিষ্কার রাখতে হবে। নরম সাবান ও পানি ব্যবহার করে মোটরসাইকেল পরিষ্কার করুন। চেইন ও স্পোকের বিশেষ যত্ন নিন। ভেজা মোটরসাইকেল কখনোই ঢেকে রাখবেন না। বাইকে কোনো আঁচড় বা রং নষ্ট হলে তা দ্রুত মেরামত করুন। এতে মরিচা পড়া থেকে রক্ষা পাবে।
যন্ত্রকে বুঝতে হবে
শুধু চালালেই হবে না, মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন সম্পর্ক ধারণা রাখতে হবে। ইঞ্জিন অয়েল বাইকের ইঞ্জিনের প্রাণ। এটি ইঞ্জিনকে ঠান্ডা রাখে, মসৃণভাবে চলতে সাহায্য করে। ইঞ্জিনের যন্ত্রাংশকে লুব্রিকেট করে। বাইকের মডেল এবং ব্যবহারের ধরন অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময় পরপর ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করুন। আপনার বাইকের জন্য উপযুক্ত ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করুন। ভুল গ্রেডের অয়েল ইঞ্জিনের ক্ষতি করতে পারে। নিয়মিত এয়ার ফিল্টার পরিষ্কার করুন। এয়ার ফিল্টার ইঞ্জিনে বিশুদ্ধ বাতাস সরবরাহ করে। রাস্তায় প্রচুর ধুলাবালু থাকায় এয়ার ফিল্টার দ্রুত নোংরা হয়ে যায়, তাই খেয়াল রাখতে হবে। এয়ার ফিল্টার নিয়মিত পরীক্ষা করুন। নির্দিষ্ট কিলোমিটার চালানোর পরপর ম্যানুয়ালে উল্লেখিত সময় অনুযায়ী এয়ার ফিল্টার পরিবর্তন করুন। নোংরা এয়ার ফিল্টার ইঞ্জিনের পারফরম্যান্স কমিয়ে দেয়, ফুয়েল খরচ বাড়ায়।
সব দিকে নজর রাখুন
টায়ারের যত্ন নিন নিয়মিত। টায়ারের সঠিক বায়ুচাপ বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি। কম চাপ বাইকের স্থিরতা কমিয়ে দেয় ও দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ায়। প্রতি সপ্তাহে অন্তত একবার টায়ারের এয়ার প্রেশার পরীক্ষা করুন। টায়ারে কোনো ফাটল বা ছিদ্র, ফোলা বা অস্বাভাবিক ক্ষয় আছে কি না, তা নিয়মিত পরীক্ষা করুন। নিয়মিত ব্রেক সিস্টেমের যত্ন নিন। ব্রেক প্যাড ও ডিস্ক নিয়মিত পরীক্ষা করুন। ব্রেক প্যাড ক্ষয় হলে দ্রুত পরিবর্তন করুন। ডিস্ক ব্রেকযুক্ত বাইকের ক্ষেত্রে ব্রেক ফ্লুইডের স্তর পরীক্ষা করুন। প্রয়োজনে রিফিল করতে হবে। ব্রেক বেশি টাইট বা বেশি ঢিলা হওয়া কোনোটাই ভালো নয়। ব্রেক সঠিকভাবে অ্যাডজাস্ট করা আছে কি না, তা নিশ্চিত করুন। নিয়মিত চেইনের যত্ন নিন। বাইকের চেইন নিয়মিত পরিষ্কার করুন ও লুব্রিকেট করুন। বিশেষ করে বর্ষাকালে চেইন দ্রুত মরিচা ধরতে পারে। চেইন পরিষ্কার করতে কখনো পানি ব্যবহার করবেন না, এতে মরিচা ধরতে পারে। বেশি ঢিলা বা বেশি টাইট চেইন উভয়ই ক্ষতিকর।
সারা বছরের কথা মাথায় রাখুন
স্পার্ক প্লাগ নিয়মিত পরিষ্কার করুন। প্লাগের গ্যাপ (০.৮ – ০.৯ মিমি) ঠিক আছে কি না, তা পরীক্ষা করুন। প্রয়োজনে স্পার্ক প্লাগ পরিবর্তন করুন। প্রতিবছর জ্বালানি ফিল্টার পরিবর্তন করা আবশ্যক। হেডলাইট, টেইললাইট, ইন্ডিকেটর, হর্ন এবং অন্যান্য ইলেকট্রিক্যাল সিস্টেম সঠিকভাবে কাজ করছে কি না, তা নিয়মিত পরীক্ষা করুন। ব্যাটারির টার্মিনাল পরিষ্কার রাখুন সব সময়। বাইক চালানোর সময় বাইকের আওয়াজ কেমন শোনাচ্ছে, তা বোঝার চেষ্টা করুন। অস্বাভাবিক কোনো শব্দ শুনলে মোটরসাইকেল পরীক্ষা করুন। প্রতি চার মাস অন্তর অন্তর বা চার হাজার কিলোমিটার পরপর বাইকের সার্ভিসিং করান। এতে মোটরসাইকেলের ছোটখাটো সমস্যাগুলো দ্রুত ধরা পড়বে।
নতুন মোটরসাইকেল চালানোর ক্ষেত্রে যা যা খেয়াল রাখতে হবে
নতুন মোটরসাইকেল কেনা মানেই এক নতুন উত্তেজনা। তবে এই সময়ে বাইকের যত্ন নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এটি বাইকের ভবিষ্যৎ কর্মক্ষমতা নির্ধারণ করে। মোটরসাইকেল বিক্রয় সাওয়ারী বিডি ডট কমের সেলস এক্সিকিউটিভ নাঈম হোসেন বলেন, নতুন বাইকের জন্য প্রথম ৫০০-১০০০ কিলোমিটার চালানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়ে উচ্চগতি বা হঠাৎ ব্রেকিং পরিহার করুন। ম্যানুয়ালে উল্লিখিত সময় বা কিলোমিটার অনুযায়ী নির্ধারিত সার্ভিসিং সেন্টার থেকে প্রথম সার্ভিসিং করিয়ে নিন। সাধারণত ৫০০-১০০০ কিলোমিটারের মধ্যে এটি করা হয়। প্রথম ৩০০ কিলোমিটার চালানোর পরে ইঞ্জিন ওয়েল বদলাতে হবে। সার্ভিসিংয়ের মাধ্যমে ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন, ব্রেক চেক, চেইন অ্যাডজাস্টমেন্ট এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অংশ পরীক্ষা করতে হবে নিয়মিত বিরতিতে। ৩০০–৫০০–১০০০–১৫০০–২০০০ কিলোমিটার চালানোর পরপর পরীক্ষা করতে হবে। এটি বাইকের দীর্ঘায়ুর জন্য অপরিহার্য। প্রথম সার্ভিসিংয়ের পর ম্যানুয়াল অনুযায়ী সঠিক গ্রেডের ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করুন। নির্দিষ্ট ব্র্যান্ডের যন্ত্রপাতি ও সার্ভিস সেন্টার থেকে মোটরসাইকেল সার্ভিসিং ও মেরামতে গুরুত্ব দিন।
সঠিক যত্ন ও রক্ষণাবেক্ষণ আপনার বাইকের জীবনকাল বাড়াতে সাহায্য করবে। মোটরসাইকেল নিরাপদ থাকলে আপনার রাইডিং অভিজ্ঞতা আনন্দদায়ক হবে। মোটরসাইকেলের যত্ন নিন, নিরাপদে থাকুন।