রবীন্দ্র জয়ন্তী, শিলাইদহ কুঠিবাড়িতে তিনদিনের উৎসব উদ্বোধন
Published: 8th, May 2025 GMT
কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার শিলাইদহের কুঠিবাড়িতে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তিনদিনব্যাপী জাতীয় আয়োজনের উদ্বোধন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) দুপুর ১২টায় অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।
এ সময় তিনি বলেন, “জমিদারি সূত্রে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শিলাইদহে আসতেন। সেখানকার মানুষের সাথে তার আলাদা একটি দেয়া-নেয়ার সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল। সেটা ছিল জাগতিক ও ইন্টেলেকচুয়াল। রবীন্দ্রনাথের অনেক চিঠিপত্রে তিনি বলেছেন বাংলাদেশের প্রকৃতির টানের পাশাপাশি এদেশের একদল ভাবুক মানুষের সাথে তার যোগাযোগ ছিল। বিশেষ করে গগন হরকরা।”
মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, “আমাদের দেশের নিজস্ব সংস্কৃতির প্রাথমিক অভিব্যক্তি হলো গান। আমাদের দেশের মানুষ যখন আনন্দ পায়, দুঃখ পায় কিংবা অনুভূতি জানাতে চায় তখন তাদের প্রাথমিক অভিব্যক্তি হয় গান। আমি এইগুলোকে শুধু গান হিসেবে না দেখে কবিতা ও দর্শন হিসেবে দেখতে বলবো। তাহলেই আমরা বুঝতে পারবো আমাদের এ অঞ্চলের দর্শন ও ভাবের গভীরতা কতটুকু ছিল।”
তিনি বলেন, “আমার চোখে আপনাদের অঞ্চলের সবচেয়ে বড় দার্শনিক ও গানের মানুষ হলো লালন ও সিরাজ। আমরা যেমন রবীন্দ্র জয়ন্তী পালন করছি, নজরুল জয়ন্তী পালন করছি- তেমনি আমাদের হীনমন্যতা থেকে বেরিয়ে এসে নতুন বাংলাদেশে লালন ফকির ও হাসন রাজার অনুষ্ঠান জাতীয়ভাবে পালন করা উচিৎ বলে আমি মনে করি।”
সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মফিদুর রহমানের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড.
আলোচনা শেষে মূলমঞ্চে রবীন্দ্র সংগীত, কবিতা আবৃত্তি, দলীয় নৃত্য ও রবীন্দ্রনাথের লেখা নাটক পরিবেশন করবেন কুষ্টিয়া জেলা ছাড়াও জাতীয় পর্যায়ের রবীন্দ্র শিল্পীরা। এর আগে জেলা শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীদের কন্ঠে জাতীয় ও রবীন্দ্র সংগীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সুচনা করা হয়।
সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। এবারের আয়োজনে কুঠিবাড়ির মুলমঞ্চে প্রতিদিনই আলোচনা সভার পাশাপাশি রবীন্দ্র সংঙ্গীত, কবিতা আবৃত্তি,দলীয় নৃত্য ও রবীন্দ্রনাথের লেখা নাটক পরিবেশন করা হবে। সাথে কুঠিবাড়ী চত্ত্বরে বসেছে বিশাল গ্রামীণ মেলা। নানা রকম পসরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানীরা।
এদিকে তিনদিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানকে ঘিরে শিলাইদহ কুঠিবাড়ি আঙিনা হাজারো দর্শনার্থীদের পদচারনায় মুখর হয়ে উঠেছে। দর্শনাথীদের সুযোগ সুবিধা সৃষ্টির পাশাপাশি কুঠিবাড়িকে পুর্ণাঙ্গ পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার দাবি এই অঞ্চলের মানুষের।
জমিদারী দেখাশোনার জন্য ১৮৯১ সালে প্রথম এই কুঠিবাড়িতে আসেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। নিরিবিলি পরিবেশ, জমিদারী আর ব্যবসার কারণে বার বার কুষ্টিয়ার এই কুঠিবাড়িতে ফিরে আসতেন তিনি। শিলাইদহে কবির জীবনের বেশকিছু মূল্যবান সময় কেটেছে। এখানে বসে রচিত গীতাঞ্জলী কাব্যই রবীন্দ্রনাথকে এনে দিয়েছে নোবেল পুরষ্কার আর বিশ্বকবির মর্যাদা। এছাড়াও তিনি এখানে বসেই আমাদের জাতীয় সঙ্গীতসহ অসংখ্য কালজয়ী সাহিত্য রচনা করেছেন। কুঠিবাড়িতে সংরক্ষণ আছে সেসব দিনের নানা স্মৃতি।
ঢাকা/কাঞ্চন/টিপু
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর রব ন দ র অন ষ ঠ ন শ ল ইদহ আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
এক স্কুল থেকেই গ্র্যাজুয়েট হলেন ৩০ জোড়া যমজ
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের লং আইল্যান্ডের একটি হাইস্কুলে এবারের গ্র্যাজুয়েশন ডে-তে যেন যমজের উৎসব বসেছিল।
আইল্যান্ডের প্লেইনভিউ-ওল্ড বেতপেজ জন এফ কেনেডি হাইস্কুল থেকে এবার প্রায় ৫০০ শিক্ষার্থী গ্র্যাজুয়েট হয়েছেন, যাঁদের মধ্যে ৩০ জোড়াই যমজ!
এসব শিক্ষার্থীর মধ্যে কয়েকজন একে অপরকে চেনেন সেই কিন্ডারগার্টেনে পড়ার সময় থেকে। তাঁদের মা–বাবারা একে অপরের সঙ্গে পরিচিত হয়েছিলেন স্থানীয় যমজ ক্লাবের মাধ্যমে। তাঁদের কারও কারও মধ্যে এত অটুট বন্ধন গড়ে উঠেছে যে এখনো পরিবার নিয়ে তাঁরা একসঙ্গে ছুটি কাটানোর পরিকল্পনা করেন।
তবে একই পদবি ছাড়া অন্য কিছু দেখে গত রোববার গ্র্যাজুয়েশন মঞ্চে হাঁটা যমজ জোড়াদের আলাদা করে চেনা বেশ কঠিন ছিল। কারণ, এই যমজদের কেউই ‘আইডেন্টিক্যাল’ নন, বরং সবাই ‘ফ্র্যাটারনাল’ যমজ। অর্থাৎ আলাদা ডিম্বাণু ও শুক্রাণু থেকে তাঁদের জন্ম। অনেক যমজই ভিন্ন লিঙ্গের। কিন্তু এতে তাঁদের মধ্যে সম্পর্কের গভীরতা একটুও কমেনি, বলেন বারি কোহেন। তিনি আগামী শরতে ইন্ডিয়ানা ইউনিভার্সিটিতে যাচ্ছেন। তাঁর ভাই ব্রেইডন কোহেন যাচ্ছেন ইউনিভার্সিটি অব পিটসবার্গে।
বারি কোহেন বলেন, ‘বিশেষ করে ছেলে-মেয়ে যমজদের ক্ষেত্রে অনেকেই ভাবেন যে আমরা কেবল ভাই–বোন। আসলে এটা তার চেয়ে বেশি। কারণ, আমরা একই সময়ে একই অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যাই।’
যমজ শিক্ষার্থীদের একজন সিডনি মঙ্কা বলেন, ‘আমরা একসঙ্গে থাকলে পুরো ঘর যেন আলোয় ভরে যায়।’
প্লেইনভিউ-ওল্ড বেতপেজের এই স্কুলে প্রতিবছর বেশ কয়েক জোড়া যমজের একসঙ্গে লেখাপড়া করার বিষয়টি নতুন নয়। এর আগে ২০১৪ ও ২০১৫ সালে স্কুলটিতে ১০ জোড়া করে যমজ শিক্ষার্থী গ্র্যাজুয়েট হয়েছিলেন। এ বছর নতুন ব্যাচেও রয়েছেন ৯ জোড়া যমজ।
স্কুলে গ্র্যাজুয়েশনের পর বেশির ভাগ যমজই আলাদা হয়ে ভিন্ন ভিন্ন কলেজে চলে যান। তবে ব্যতিক্রমও আছে। যেমন আইডেন ও ক্লোয়ি মাঞ্জো—দুজনই যাচ্ছেন ইউনিভার্সিটি অব ফ্লোরিডায়। এমনকি তাঁরা থাকবেন একই ডরমে।
অন্যদিকে, কিছু যমজ আলাদা হওয়ার জন্য মুখিয়ে আছেন।
তেমন যমজ শিক্ষার্থীদের একজন কায়লা জাসার। তিনি বলেন, ‘আমরা সব সময় একসঙ্গে ছিলাম, এবার আলাদা অভিজ্ঞতা নেওয়ার সময়।’ কায়লা যাচ্ছেন ইন্ডিয়ানা ইউনিভার্সিটিতে আর তাঁর যমজ বোন সিডনি যাচ্ছেন ইউনিভার্সিটি অব ডেলাওয়ারে। এই যমজ উৎসবের মধ্য দিয়ে শেষ হচ্ছে তাঁদের একসঙ্গে বেড়ে ওঠার এক যুগান্তকারী অধ্যায়।
গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস অনুযায়ী, ২০১৭ সালে ইলিনয়ের উইনেটকার নিউ ট্রিয়র হাইস্কুল থেকে একসঙ্গে ৪৪ জোড়া যমজ এবং ১টি ত্রয়ী গ্র্যাজুয়েট হয়েছিলেন।