বাংলাদেশের সীমান্তপথে ভারতীয় নাগরিকদের পুশ-ইন চলছে অথচ সরকার এ বিষয়ে একটি কথাও বলছে না বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। একই সঙ্গে তিনি প্রশ্ন তোলেন সরকারের ‘পাওয়ারফুল’ উপদেষ্টা খোদা বখস কোথায় আছেন?

আজ রোববার দুপুরে বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী বৌদ্ধ ফোরামের আয়োজনে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, ‘শুনেছি একজন খুব শক্তিশালী উপদেষ্টা রয়েছেন- খোদা বখস। তিনি নাকি স্বরাষ্ট্র বিষয়ক সব কিছু দেখেন এবং খুবই ক্ষমতাবান। আবার শোনা যায়, তিনি নাকি বিএনপিকে খুব একটা পছন্দ করেন না। নিজের মতো করে সব গুছিয়ে রাখেন। তাহলে এত ক্ষমতাবান উপদেষ্টা থাকার পরও আজ সীমান্তে ভারতীয় নাগরিকদের পুশ-ইনের মতো ঘটনা ঘটছে কেন? সাতক্ষীরা, কুড়িগ্রাম, খাগড়াছড়ি, মৌলভীবাজার—এসব সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে লোক ঢোকানো হচ্ছে, সরকার কিছু বলছে না। কোথায় খোদা বখস? কোথায় সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়?’

অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ‘কোথায় সরকার? তারা তো পুশ-ইন বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। এগুলো তো বিরাট অন্যায়। কোথা থেকে এই রাষ্ট্রীয় অপরাধগুলো করা হচ্ছে? । বাংলাদেশের জনগণকে কি এত দুর্বল জাতি ভাবছেন? মুক্তিযুদ্ধের দেশ, যে জাতি ৩০ লাখ শহীদ আর দেড় হাজার শিশু-কিশোরের রক্ত দিয়েছে, সে জাতিকে উপেক্ষা করে সীমান্ত দিয়ে লোক ঢুকানো হবে আর সরকার কিছুই বলবে না? তাহলে তো শেখ হাসিনা যেমন করেছেন আপনারাও তাই করছেন। আমাদের সীমান্তে লোক হত্যা করলে শেখ হাসিনা একটা প্রতিবাদও করতেন না, বর্তমান সরকারও আজ নিরুত্তর।’

রিজভীর অভিযোগ, শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হলেও জনগণের প্রত্যাশা পূরণে তারা ব্যর্থ। “সরকার সংস্কারের কথা বলেছিল, জনগণ তা মেনে নিয়েছিল। বলা হয়েছিল নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। কিন্তু এখনও সে বিষয়ে সরকার নীরব। কেন এই নিশ্চুপতা?”—জানতে চান তিনি।

রিজভী অভিযোগ করেন, ‘একজন সাবেক রাষ্ট্রপতি, যিনি খুনের মামলার আসামি, তিনি দেশে ছিলেন—এনএসআই ও ডিজিএফআই ক্লিয়ারেন্স ছাড়া তিনি বিদেশে গেলেন কীভাবে? তার তো লাল পাসপোর্ট রয়েছে। সেটি বাতিল করা হয়নি কেন?’

তিনি ওই রাষ্ট্রপতিকে ফ্যাসিবাদের প্রতিনিধি আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘তিনি শেখ হাসিনার মানসিকতার প্রতিচ্ছবি ছিলেন। তাহলে এমন একজন ব্যক্তি কীভাবে দেশ ছাড়লেন? সরকারের জানা ছিল না?’

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আব্দুস সালাম, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, নির্বাহী কমিটির সদস্য রমেশ দত্ত, বৌদ্ধ ফোরামের নেতা সুশীল বড়ুয়া, পার্থ প্রতিম বড়ুয়া অপু প্রমুখ।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ উপদ ষ ট সরক র র প শ ইন

এছাড়াও পড়ুন:

সূর্যের সামনে স্কাইডাইভার, তৈরি হয়েছে এক অলীক আলোকচিত্র

প্রাচীন গল্পে আছে, ইকারাস মোমের ডানা নিয়ে সূর্যের খুব কাছে উড়ে গিয়েছিল। তখন মোম গলে গেলে ইকারাস নিচে পড়ে যায়। সৃজনশীল এক ফটোগ্রাফার সম্প্রতি সূর্যের দারুণ এক ছবি তুলে সেই দৃশ্যের কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন। যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনায় একজন স্কাইডাইভার মাত্র এক সেকেন্ডের ভগ্নাংশের জন্য সূর্যের সামনে দিয়ে নেমে যান। ঠিক তখনই তাঁকে ক্যামেরাবন্দী করেন অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার অ্যান্ড্রু ম্যাককার্থি। জ্বলন্ত সূর্যের মুখের ওপর দিয়ে যেন এক মানব প্রতিকৃতি নিচে নেমে গেল, এমন দৃশ্য ধরা পড়ে ক্যামেরা লেন্সে। দৃষ্টিবিভ্রমের এক অসাধারণ কীর্তি তৈরি করেছেন অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার অ্যান্ড্রু ম্যাককার্থি।

অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার অ্যান্ড্রু ম্যাককার্থি নিখুঁতভাবে তাঁর ক্যামেরা দিয়ে একজন স্কাইডাইভারকে ক্যামেরার সংকীর্ণ ফিল্ড অব ভিউয়ের মধ্য দিয়ে নেমে যাওয়ার সময় ধারণ করেন। ছবিটি বেশ পরাবাস্তব এক অনুভূতি তৈরি করেছে। ইকারাসকে নিয়ে প্রাচীন মিথের সঙ্গে ছবিটি তুলনা করেছেন অনেকেই।

অ্যান্ড্রু ম্যাককার্থি চাঁদ ও সূর্যের অত্যন্ত সূক্ষ্ম ছবি তোলার জন্য পরিচিত। তিনি সূর্যের সামনে স্কাইডাইভারের এই একটি মাত্র ছবির জন্য কয়েক সপ্তাহ ধরে প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। সূর্যের ছবি তোলা এমনিতেই কঠিন কাজ। সেখানে সূর্যের সামনে গতিশীল একটি বিমান বা একজন পতিত মানবকে একই ফ্রেমে আনা ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন চ্যালেঞ্জ। বিমানটির গতিপথ, সূর্যের কোণ, ক্যামেরার অবস্থান ও স্কাইডাইভারের অবতরণের মতো সব বিষয়কে মাত্র কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে এক করে কাজটি হয়েছে।

অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার অ্যান্ড্রু ম্যাককার্থি বলেন, ‘বলা যায়, একেবারে অযৌক্তিক একটি কাজ করেছি। যদিও চূড়ান্ত ছবিটি দারুণ এক অনুভূতি দেয়। স্কাইডাইভার ছিলেন ইউটিউবার ও সংগীতজ্ঞ গ্যাব্রিয়েল সি ব্রাউন। সে সূর্যের উত্তাল হলুদ পৃষ্ঠের বিপরীতে একটি কালো সিলুয়েট বা ছায়ামূর্তি হিসেবে ছবিতে চলে এসেছে। সূর্যের অবস্থান ৯ কোটি ৩০ লাখ মাইল দূরে হলেও ক্যামেরায় দারুণভাবে দেখা যাচ্ছে সব। ইকারাসের সঙ্গে তুলনা করা ছবি অসম্ভব বলে মনে হয়। আগুনের মতো সৌর ক্রোমোস্ফিয়ারের আবহের বিপরীতে একটি সত্যিকারের মানব চিহ্ন আমাদের মুগ্ধ করে। দেখে মনে হবে যেন, মহাকাশে কেউ নিচে পড়ে যাচ্ছে।’

স্কাইডাইভাররা ব্রাউনের ৩ হাজার ৫০০ ফুট উচ্চতা থেকে পতন শুরু করলে প্রায় ১০ সেকেন্ড সময় ব্যয় করে প্যারাসুট খোলার আগে ছবি তোলার সুযোগ মেলে। ম্যাককার্থি একটি লুন্ট ৬০ মিলিমিটার এইচ–আলফা ক্যামেরায় তার ফ্রি ফলের ছবি তোলেন। একটি এএসআই ১ হাজার ৬০০ মিলিমিটারে একক এক্সপোজার ধারণ করা হয়। আসলে এই বিভ্রমের মূল কারণ হচ্ছে দূরত্বের সামঞ্জস্য। ব্রাউন একটি ছোট বিমান থেকে প্রায় ৩ হাজার ৫০০ ফুট ওপর থেকে লাফ দেন। আর ম্যাককার্থি প্রায় আট হাজার ফুট দূরে অবস্থান করেছিলেন। স্কাইডাইভার অবশ্যই সূর্যের কাছে ছিলেন না। শুধু ক্যামেরার দৃষ্টিকোণ থেকে নিখুঁত অবস্থানের কারণে স্কাইডাইভারকে অসম্ভব কাছাকাছি দেখাচ্ছিল। আসলে লাফ দেওয়ার আগে বিমানটিকে সঠিক অবস্থানে আনার জন্য ছয়বার চেষ্টা করতে হয়েছে। স্কাইডাইভারকে ফ্রেমে ধরার জন্য মাত্র একবারের সুযোগ ছিল। ম্যাককার্থি তাঁর মনিটরে সেই ক্ষুদ্র অবয়বটিকে সূর্যের আলোর সঙ্গে মিলিয়ে একটি নিখুঁত অবয়ব ধারণ করেন।

এই ছবিকে অনেকেই পৌরাণিক রূপকথার সঙ্গে তুলনা করছেন। গ্রিক মিথের ইকারাসের সঙ্গে তুলনা করেছেন। ম্যাককার্থির এ ছবিটি সেই আখ্যানকেই একটি আধুনিক ও স্পষ্ট রূপে যেন তুলে ধরছে।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘১৫ হাজার সেফটিপিন শাড়িতে লাগালেও, তারা খুঁত বের করবে’
  • এপস্টেইনের নথি প্রকাশের পক্ষে হঠাৎ কেন অবস্থান নিলেন ট্রাম্প
  • এশিয়ার প্রভাবশালী নারী ব্যবসায়ী কারা, কীসের ব্যবসা তাঁদের
  • করদাতা মারা গেলেও যে কারণে কর দিতে হয়, কীভাবে দেওয়া হয়
  • ৩ কোটি টাকা, ব্যক্তিগত উড়োজাহাজসহ আরও যা যা পান একজন মিস ইউনিভার্স
  • গায়িকা থেকে বিধায়ক, মৈথিলীর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনুসারী চমকে ওঠার মতো
  • সরকারি গাড়ি ব্যবহার করে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিলেন উপদেষ্টার এপিএস
  • বিএনপি নেতা খুন: অভিযুক্ত ছাত্রদল কর্মী ফেসবুকে লিখলেন ‘আউট’
  • সাজা হলে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ইন্টারপোলে ‘কনভিকশন ওয়ারেন্টের’ আবেদন করা হবে
  • সূর্যের সামনে স্কাইডাইভার, তৈরি হয়েছে এক অলীক আলোকচিত্র