কিছুদিন ধরে ভ্যাপসা গরমে হাঁসফাঁস করছিলেন নগরবাসী। এরই মধ্যে রবিবার (১১ মে) দুপুর ৩টার পর থেকে ময়মনসিংহ নগরীর বিভিন্ন এলাকা ও ত্রিশাল উপজেলায় ঝড় ও শিলা বৃষ্টি শুরু হয়। বৃষ্টির ফলে যেমন কমেছে গরমের তীব্রতা, তেমনি মানুষের মধ্যে ফিরেছে স্বস্তি।
এলাকাবাসী জানান, গরমের কারণে ঘরের বাইরে থাকা কঠিন হয়ে যাচ্ছিল। খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষদের কষ্ট হচ্ছিল আরো বেশি। বৃষ্টি হওয়ায় তাপমাত্রা কমেছে। অনেকেই ঘরের বাইরে বের হয়ে বৃষ্টিতে ভিজেছেন।
বৃষ্টি হওয়ায় বাড়ির পাশে ফুটবল খেলতে নেমে পড়েন কয়েকজন কিশোর-কিশোরী
আরো পড়ুন:
গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন, মুক্তি মিলছে না সহসা
ঝড়-বৃষ্টি থাকবে কত দিন, জানাল আবহাওয়া অফিস
ময়মনসিংহ নগরীর রিকশাচালক হাতেম আলী বলেন, “অনেক গরম পড়ছিল। রিকশা চালানো কঠিন হয়ে পড়েছিল। আজ বৃষ্টি হলো। বৃষ্টির পানিতে ভিজেই রিকশা চালাচ্ছি। খুব ভালো লাগছে। যাত্রীরাও আনন্দ পাচ্ছেন বৃষ্টিতে ভিজতে।”
ঢাকা/মিলন/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বনিপদের দেখা পেলাম
গত ঈদুল আজহার ছুটিতে বাড়ি গিয়েছিলাম। ৫ জুন শেষ বিকেলে গেলাম ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলা সদরের দক্ষিণে রাংসা নদীর ব্রিজের কাছে। কিছুক্ষণ দাঁড়ালাম সেখানে। দুই দিকে নদীতে কচুরিপানার আবরণ। মাঝেমধ্যে জাল দিয়ে মাছ ধরার বাঁশের ফ্রেম চোখে পড়ল। নদীর ধারে ছায়াঢাকা গ্রাম। পশ্চিম আকাশে সূর্য তখন অস্তাচলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। পাখিরা উড়ছে নীড়ে ফেরার জন্য। মনোরম পরিবেশ।
বেশ কিছু সময় ব্রিজের ওপর কাটিয়ে ব্রিজ পেরিয়ে নদীর ধারের কাঁচা সড়ক দিয়ে পূর্ব দিকে হাঁটতে শুরু করলাম। যাঁরা ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ হয়ে হালুয়াঘাট, ফুলপুর, নালিতাবাড়ী কিংবা শেরপুরে যান, তাঁদের কাছে এই ব্রিজ পরিচিত।
হাঁটতে হাঁটতে দেখছিলাম নদীর ধারের গাছপালাগুলো। নদীর স্বচ্ছ পানিতে পানিকলাসহ কিছু নিমজ্জিত জলজ উদ্ভিদ চোখে পড়ল। হঠাৎ নদীর ধারে একটি গুল্ম বা ঝোপালো গাছে নিমের মতো ফল ও চমৎকার সাদা রঙের ফুল দেখতে পেলাম। আরে, এ যে বনিপদ! ছবি তুলে ফেললাম ঝটপট। বাড়ির পেছনের জঙ্গলের ধারে বা নদীর ধারে সাধারণত এ উদ্ভিদ দেখা যায়। এর কাঠ নরম এবং ভালো মানের নয়, তাই শুধু জ্বালানি হিসেবে একে ব্যবহার করা হয়। আর এ উদ্ভিদের ভেষজ গুণ অনেকেরই জানা না থাকায় বাড়ির পেছনের বা নদীর ধারের ঝোপঝাড় কেটে ফেলার কারণে বনিপদের বংশবৃদ্ধি খুব সংকুচিত হয় পড়েছে। এ উদ্ভিদ সংরক্ষণে আমাদের সচেতন ও যত্নবান হওয়া দরকার।
বনিপদ গুল্ম বা ছোট বৃক্ষজাতীয় উদ্ভিদ। এ উদ্ভিদের বৈজ্ঞানিক নাম Alangium chinense, এটি Cornaceae পরিবারের সপুষ্পক গুল্ম। এ উদ্ভিদের অন্য নাম অক্ষিফলা। নেপালি ভাষায় একে বামনপাত্তি বলা হয়। ইংরেজিতে এ উদ্ভিদ সাধারণত চায়নিজ অ্যালানজিয়াম বা মার্লিয়া নামে পরিচিত। আকরকণ্ট অনেকের কাছে পরিচিত। আকরকণ্ট আর বনিপদ একই গোত্র আর গণের উদ্ভিদ।
উদ্ভিদটি উচ্চতায় ১৫ থেকে ২৫ ফুট পর্যন্ত হতে পারে। শাখা–প্রশাখা অনুভূমিক। ছোটবেলায় শাখা–প্রশাখাগুলো রোমশ থাকে, পরে চকচকে বা খুব কমই রোমশ হয়। পাতা মোটা, চিরসবুজ, মূলত ডিম্বাকার, রোমশ, নিচের পৃষ্ঠটি চকচকে। পাতার কিনারা দাঁতের মতো খাঁজকাটা, শীর্ষভাগ তীক্ষ্ণ। ফুল সুগন্ধযুক্ত, পাপড়ি সাদা থেকে কমলা রঙের, চকচকে, বাঁকানো। ফুলের ভেতরে হলুদ কেন্দ্র থাকে। ফল উপবৃত্তাকার, পাকলে গাঢ় বেগুনি রঙের হয়।
বনিপদগাছের ফলসহ শাখা