উপকরণ

১টি মাঝারি আকারের কাঁচা আম লম্বা করে কাটা, ২টি মাঝারি আকারের মিষ্টি আলু লম্বা করে কাটা, লবণ স্বাদমতো, চিনি ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া আধা চা-চামচ, জিরাগুঁড়া আধা চা-চামচ, রসুনকুচি সিকি কাপ, সয়াবিন তেল সিকি কাপ, কালো জিরা ১ চিমটি, পানি পরিমাণমতো, ফোড়নের জন্য সাদা শর্ষে ১ গ্রাম, পাঁচফোড়ন ১ গ্রাম, আস্ত শুকনো মরিচ ২টি।

আরও পড়ুনগরমে খেয়ে আরাম পাবেন, এমন দুই ডালের রেসিপি দেখুন০৯ মে ২০২৫প্রণালি

প্রথমে আম কেটে ধুয়ে নিন। বলক ওঠা পানিতে একটু ভাপিয়ে নিতে হবে। মিষ্টি আলু কেটে ধুয়ে নিতে হবে। চুলায় হাঁড়ি বসিয়ে সয়াবিন তেল দিয়ে ফোড়নের মসলা দিয়ে দিন। একটু নেড়ে রসুনকুচি দিয়ে বাদামি রং না হওয়া পর্যন্ত ভেজে নিতে হবে। এরপর মসলা, লবণসহ আম আর মিষ্টি আলু হালকা নেড়ে পরিমাণমতো পানি দিয়ে দিন। সেদ্ধ হওয়া পর্যন্ত রান্না করতে হবে। আম একটু গলে যাবে। গ্রেভিটা ঘন হয়ে এলে চিনি দিয়ে একটু নেড়ে নামিয়ে পরিবেশন পাত্রে ঢেলে দিন। ওপরে সাদা শর্ষে, কালো জিরা ছিটিয়ে পরিবেশন করতে হবে। গ্রেভিটা একটু টক হয়। সাদা ভাতে মসুরের ডাল বা বিভিন্ন রকমের মাছের তরকারির সঙ্গে খেতে মজা লাগে।

আরও পড়ুনজালিতে মুরগির ঝোলের রেসিপি০৯ মে ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

লাখপুরের রংবাহারি রাম্বুটান

১৯ জুলাই সকাল ১০টা। নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার মরজাল বাজারে গাড়ি থেকে নামলাম। ততক্ষণে ব্যাপারীদের পাইকারি কেনাকাটা শেষ। মালপত্র বেঁধেছেঁদে গাড়িতে তোলা হচ্ছে। কিন্তু ফুটপাতে তখনো ভিড়। খুচরা ক্রেতারা পছন্দের জিনিস কিনতে দরদাম করছেন। ভিড়ের মধ্যে ঢুকে পড়লাম, দেখা যাক কী পাওয়া যায়।

কাঁঠালের দোকানে তেমন ভিড় নেই। লটকনের দোকান বেশি, বিক্রিও ভালো। আকার অনুযায়ী দাম। এখানে না এলে জানতামই না, এত বড় আকারের লটকন হতে পারে! এক গৃহস্থ টুকরিতে কলম্বো লেবু নিয়ে বসে আছেন। এই লেবু আকৃতি ও সুগন্ধের জন্য বিখ্যাত। আরেকটু এগিয়ে গিয়ে থামতেই হলো। কয়েকটি দোকানে সাজানো হলুদ আর লাল রঙের রাম্বুটান!

দেখতে ফুলের মতো আকর্ষণীয় রঙের এই ফল সবার নজর কাড়ছে। ক্রেতারা দাম জানতে চাইছেন। কেউ কেউ কিনছেনও। জানতে চাইলাম, এই রাম্বুটান কোথা থেকে এল? দোকানির উত্তর শুনে চোখ ছানাবড়া। নরসিংদীর কয়েকটি গ্রামেই নাকি ইদানীং চাষ হচ্ছে রাম্বুটান। দারুণ ব্যাপার। এ খবর জানা ছিল না।

কাছাকাছি দূরত্বে কোনো গ্রামে গেলে কি রাম্বুটানের বাগান দেখতে পাওয়া যাবে? এ প্রশ্নের উত্তর দিলেন স্থানীয় কৃষি উদ্যোক্তা মো. সুজন মিয়া। তিনি জানালেন,Ñকাছেই বেলাব উপজেলার লাখপুর গ্রামে চমৎকার একটি বাগান আছে।

আমরা দ্রুত বাগানের পথ ধরি। বাগানে যেতে যেতে মনে হলোÑ ঘন গাছপালার ছাউনির ভেতর দিয়ে ক্রমেই যেন হারিয়ে যাচ্ছি! এখানকার বেশির ভাগ গাছই লটকনের। বাগানগুলো এতই বড় যে এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত ভালোভাবে দেখা যায় না।

অল্প সময়ের মধ্যে পৌঁছে গেলাম লাখপুর গ্রামে। উয়ারী ও বটেশ্বর–লাগোয়া এই গ্রামে রাম্বুটানের বাগানে গিয়ে চমকে উঠি। বেশ বড় বড় অনেক গাছ। গাছে গাছে দুই রঙের রাম্বুটান। চমৎকার দৃশ্য।

এ রংবাহারি ফল দেখার জন্য সারা দিন অনেক মানুষ ভিড় করেন সেখানে। কেউ কেউ দেখছেন, আবার কিনছেনও। একটু সময় নিয়ে বাগানটি ঘুরে দেখি। ছয়-সাত বছর বয়সী সব গাছই ফলভারে আনত। পাকা ফলগুলো দেখতে রঙের ঝরনাধারার মতো, বহুবর্ণিল। বাগান থেকে তরতাজা কিছু ফল কিনি। মন ভরে ছবি তুলি।

একসময় রাম্বুটান চিনতাম না। ২০০৫ সালে হংকংয়ে বেড়াতে গিয়ে বন্ধু মোস্তাফিজুর রহমান শাহিনের বাসায় প্রথম এ ফল খাই। পরে কুয়ালালামপুর শহরের আশপাশে রাম্বুটানের অনেক গাছ দেখেছি। দুই বছর পর বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্মপ্লাজম সেন্টারে গাছভর্তি রাম্বুটান দেখে চমৎকৃত হয়েছিলাম। বীজ থেকে তৈরি চারাগুলো সেখানে প্রথম লাগানো হয় ১৯৯৮ সালে। প্রায় সাত বছর পর গাছগুলোতে ফল আসতে শুরু করে। আকৃতি ও স্বাদের দিক থেকেও ফলগুলো সমমানের।

বাগানে সুদর্শন হলুদ রঙের রাম্বুটান

সম্পর্কিত নিবন্ধ