Samakal:
2025-11-03@20:52:53 GMT

তুমি নদীর মতো বয়ে যাও...

Published: 12th, May 2025 GMT

তুমি নদীর মতো বয়ে যাও...

আমার গন্তব্য তুমি
আব্দুল্লাহ নেওয়াজ

স্বাধীন তো আমি সবসময় ছিলাম,
পরাধীন তো হয়েছি তোমার জন্য
ভালো তো তোমায় সবাই বাসে,
আমি তো বাসি পাওয়ার জন্য
ক্লান্ত তো আমিও হই কিন্তু 
হাঁটি তোমার দেওয়া সুখের জন্য
গন্তব্য তো সবারই আছে,
আমার গন্তব্য তুমি…।

 

নিরাপদ আকাশ
শারমিন নাহার ঝর্ণা

উত্তপ্ত রোদ ছুঁয়ে দিচ্ছে সজীব পাতার শরীর
পাখিদের মিষ্টি মধুর গান
থেমে যাচ্ছে মিসাইলের বিকট শব্দে
আতঙ্কিত চোখ খুঁজে বেড়ায় ঘন সবুজ,
শুভ্রনীল আকাশের বুকে বেদনার অনল
কোথায় হারালো নিরীহ পাখির ঝাঁক?
নিরানন্দ শহরজুড়ে হিংস্রতার মহাউৎসব।
আমিও উড়তে চাই পাখিদের সঙ্গে
নিরাপদ একটা নীল আকাশ পেলে,
সমস্ত কোলাহল ছেড়ে সুখে ডানা মেলে।

 

বৃষ্টি নামুক 
তুহীন বিশ্বাস 

আমার শহরটাতে বৃষ্টি নামুক মুষলধারে 
নকল ধুয়ে বেরিয়ে আনুক আসলটারে,
যেমনি করে শুদ্ধ মানুষ সব বেঁচে থাকে 
সুগন্ধি তাই ছড়িয়ে পড়ুক জীবন বাঁকে।

আসুক তবে বৃষ্টির ফোঁটা চৌচির মাঠে 
পুণ্যের ফসল জমিয়ে থাকুক কর্ম পাঠে, 
অন্তর পোড়া দুর্গন্ধে সমাজ নষ্ট করে 
ছাইগুলো তাই উড়ে যাক হঠাৎ ঝড়ে। 

তোমার শহর আমার মতো সাজাও যদি 
সুখের আমেজে ভাসবে তুমিও নিরবধি, 
বিষের বাঁশিটা ছাড় এবার তওবা করে 
নইলে কিন্তু পচতে হবে সারা জনম ভরে।

 

নদী ও নারী
জহিরুল হক বিদ্যুৎ

নারী, এক প্রবহমান নদী,
উৎস এক প্রবহমান নীরবতা থেকে।
জন্ম নেয়, বয়ে চলে আকাশের নীলে,
পৃথিবীর বুকে, মানুষের ভেতরে।
কখনও পবিত্র, তীর্থ, শুদ্ধি
আবার কখনও বিরাট, খরস্রোতা, ক্ষুধার্ত।
নিজেই সৃষ্টির বুকে সংগীত বাজায়,
আবার বুকে লুকিয়ে রাখে কান্না।
তুমি নদীর মতো বয়ে যাও
সীমারেখা ভেঙে পথ তৈরি কর।
তোমার প্রেম জলের মতো ঠান্ডা,
আবার আগুনের মতো জ্বলন্ত।
তোমার দুঃখ বৃষ্টির মতো ঝরে 
তুমি কেবল স্রোত নও, তুমি তীরও
যেখানে দাঁড়িয়ে স্বপ্ন দেখে কেউ,
আবার কেউ হারায় সবকিছু।

 

কেন আড়ালে থাক
মহসিন আলম মুহিন

আশা দিয়ে তুমি আড়ালে চলে গেলে,
কীসের ছুতায়, কী দোষ খুঁজে পেলে।
ভরা ভাদরে বল কেন আছ দূরে সরে,
নদী যৌবনা, তবুও মিশে না কেন সাগরে।
নয়নের জলে বেদনারা ভিজে ভিজে সিক্ত–
ফল নাহি মেলে, সবই লাগে যেন রিক্ত।
ফুল আসে, কেন ফল নাই গাছের ডালে,
ঘুংঘুর পরা পাখিরা বসে না কেন চালে।
কেন আড়ালে থেকে বিরহের দাও জ্বালা,
তোমারই বিহনে অন্তর পুড়ে হলো কালা।
মেঘে ঢাকা চাঁদ যায় না দেখা চোখ ভরে,
বিষাদ লাগে, সারাক্ষণ মনটা শুধুই পোড়ে।
 

 

আমি আর নৈঃশব্দ্য
রবিন ইসলাম 

আমি আর নৈঃশব্দ্য—
চুপচাপ হই মুখোমুখি।
জাগে না কোনো সুর, বাজে না কোনো বাঁশি,
শুধু শূন্যতা বয়ে আনে বাতাস—
তাতে নেই শব্দ, নেই ছন্দ, নেই অনুরণন।

আমি আর নৈঃশব্দ্য—
এই ধূসর বিকেলে কেউ ফেরে না পেছনে,
কেউ রাখে না হাত, কেউ ডাকে না নামে।
সব শব্দ গেছে পলায়ন করে,
রয়ে গেছে শুধু এক অদৃশ্য স্তব্ধতা।

তবু দাঁড়িয়ে থাকি আমি—
নৈঃশব্দ্যের চোখে চোখ রেখে।
আমার ভেতরে তার আশ্রয়,
তার ভেতরে আমার অস্তিত্ব।

শুধু আমরা—
আমি আর নৈঃশব্দ্য।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

প্রস্থেটিক মেকআপ আর্টে সোনালী মিতুয়ার বাজিমাত

বাংলাদেশের মেকআপ আর্ট জগতে নীরবে নতুনত্ব যোগ করে যাচ্ছেন সোনালী মিতুয়া। তার শৈল্পিক ইলিউশন এবং বডি পেইন্টিংগুলো আন্তর্জাতিক মানের, যা দেখে চোখ ফেরানো দায়। বর্তমানে ফিনল্যান্ডে মেকআপের ওপর উচ্চশিক্ষা নিচ্ছেন এই শিল্পী, যার ক্যানভাসে শৈশবের প্রথম গন্ধ ছিল তেল রং আর থিনারের তীব্রতা। মেকআপ ব্যবহার করে তিনি যে ক্যানভাস তৈরি করেন-তা এক কথায় অনন্য, অসাধারণ। 

সোনালী মিতুয়া কখনও তার মুখে ফুটে ওঠে ফাটল ধরা পৃথিবী, যেখান থেকে গজিয়ে ওঠে সবুজ লতা। কখনও দেখা যায় তার মুখটাই এক অর্ধেক যন্ত্র, অর্ধেক প্রকৃতি, যেন মানুষ আর মেশিনের মাঝের এক অদ্ভুত, কাব্যময় দ্বন্দ্ব।আর কখনও সেই মুখটাই অন্ধকারে মিলিয়ে যায়, শুধু দেখা যায় এক ভয়ঙ্কর কালো গহ্বর — যেন মানুষের শূন্য আত্মা। এগুলো কোনো সিনেমার দৃশ্য না।এগুলো এক তরুণী মেকআপ আর্টিস্টের সৃষ্ট জীবন্ত শিল্পকর্ম।

আরো পড়ুন:

একা বাস করতে পারে যে পাখি

কেউ কটূক্তি করলে কী করবেন?

সোনালী মিতুয়ার মেকআপে একটা গল্প, একটা দর্শন, একটা গভীর বার্তা লুকিয়ে থাকে। যেখানে অধিকাংশ মানুষ মেকআপকে শুধু প্রসাধনের জগতে দেখে, সে সেখানে মেকআপকে তুলেছে এক উচ্চমাত্রার শিল্প হিসেবে। তার হাতে রঙ মানে—চামড়ার ওপরে নয়, বরং আত্মার ভাষা প্রকাশের এক মাধ্যম।

তার কাজে দেখা যায় প্রস্থেটিক মেকআপের প্রভাব— যেখানে মুখ বদলে যায়, গড়ে ওঠে নতুন রূপ, নতুন চরিত্র। এমন কৌশল একদিন তাকে সিনেমার পর্দায় প্রস্থেটিক আর্টিস্ট হিসেবে বড় জায়গায় নিয়ে যাবে—
এ কথা বলার জন্য বিশেষজ্ঞও হতে হয় না। 

এই মেয়েটির সবচেয়ে বড় শক্তি তার কল্পনাশক্তি। সে মুখের ভেতরেই ফুটিয়ে তোলে গল্প—একদিকে প্রকৃতি, ফুল, প্রজাপতি; অন্যদিকে প্রযুক্তি, ধ্বংস আর শূন্যতা। দেখলে মনে হয়, এই দুইয়ের টানাপোড়েনেই গড়ে উঠেছে তার শিল্পজগৎ।

বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের জন্য এই মেয়েটি এক অনুপ্রেরণা। সে প্রমাণ করছে—শিল্পের ভাষা যদি শক্ত হয়, তাহলে দেশের সীমা পেরিয়ে বিশ্বেও পৌঁছানো যায়। যেখানে মেকআপকে এখনো অনেকেই কেবল সাজের কাজ মনে করেন, এই মেয়েটি সেখানে দেখিয়েছে — মেকআপও হতে পারে দর্শন, প্রতিবাদ আর সৃষ্টির ক্যানভাস। 

তিনি জানেন,  প্রস্থেটিক আর্টে (বিশেষত কৃত্রিম অঙ্গ, ক্ষত বা ফ্যান্টাসি চরিত্র তৈরি) করা যায় দক্ষতার সাথে।  বর্তমানে বাংলাদেশের সিনেমায় যেখানে প্রস্থেটিকের ব্যবহার খুবই সীমিত, সেখানে সোনালী মিতুয়ার মতো একজন আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিল্পী আছেন, তার হাতেই তৈরি হতে পারে বাংলাদেশের ইতিহাসের চরিত্রদের নিখুঁত রূপ, অথবা আমাদের ফ্যান্টাসি সিনেমার ভিনগ্রহের প্রাণী।

সোনালী মিতুয়ার কাজগুলো দেখলেই বোঝা যায়, তিনি মেকআপকে স্রেফ সৌন্দর্যবর্ধনের মাধ্যম হিসেবে দেখেন না, বরং এটিকে একটি শক্তিশালী গল্প বলার হাতিয়ার মনে করেন। 

একটা ছবিতে দেখা যাচ্ছে একজন মানুষ প্রকৃতির মাঝে ফাটল ধরা পাথরের মতো এক রূপ ধারণ করেছেন। সবুজ, হলুদ ও লালের মিশ্রণে চোখের অংশটি গভীর এবং রহস্যময়, আর ফাটলের ভেতর দিয়ে বেরিয়ে আসা লতা-পাতা জীবনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। এটি তার পরিবেশ-সচেতনতা এবং ফ্যান্টাসি আর্টের দক্ষতা প্রমাণ করে।

সাদাকালো স্কেচের মতো দেখতে এই মেকআপটি অত্যন্ত কঠিন এবং চোখে পড়ার মতো। মুখের প্রতিটি অংশে পেন্সিল বা চারকোল দিয়ে আঁকা হ্যাচিংয়ের মতো স্ট্রোকগুলো ত্রিমাত্রিক চেহারাটিকে দ্বিমাত্রিক কমিক-বুক বা নয়ার চলচ্চিত্রের চরিত্র হিসেবে ফুটিয়ে তুলেছে।

চোখ ও মুখের চারপাশে মাকড়সার জাল এবং ফুলা, রক্তবর্ণ চোখের পাপড়ি ভীতি ও কষ্টের এক শক্তিশালী অনুভূতি জাগায়। এটি বিশেষ করে হ্যালোইন বা হরর থিমের জন্য পারফেক্ট।

গভীর অন্ধকারে তোলা এই ছবিটি ‘অন্ধকার গহ্বর’ বা ‘কৃষ্ঞগহ্বর’ থিমের একটি চমকপ্রদ ইলিউশন মেকআপ। নিখুঁত কনট্যুরিং এবং রঙের ব্যবহারে মুখের এক অংশে যেন সত্যিই একটি ফাঁকা, গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কারা বেশি কাঁদেন? 
  • বর্তমান সংকটের জন্য সরকার দায়ী, দলগুলোর চাপে সিদ্ধান্ত বদল
  • প্রস্থেটিক মেকআপ আর্টে সোনালী মিতুয়ার বাজিমাত