ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির তীব্র সমালোচনা করেছেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ। বলেছেন, মোদি ভারতের সংসদের ভেতরে এবং বাইরে ব্যাপক চাপের মুখে রয়েছেন। খবর দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের। 

মঙ্গলবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পাকিস্তানের ফেডারেল প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, “মোদির দিন ফুরিয়ে আসছে। চূড়ান্ত রায় ভারতীয় জনগণের উপর নির্ভর করবে।”

খাজা আসিফ ভারতের সঙ্গে যেকোনো সম্ভাব্য সংলাপের আগে পাকিস্তানের অবস্থান তুলে ধরে বলেন, “তাদের (ভারতের) সঙ্গে আলোচনার টেবিলে তিনটি মূল বিষয় সন্ত্রাসবাদ, কাশ্মীর এবং পানি চুক্তি এজেন্ডায় থাকবে।”

আরো পড়ুন:

পাল্টাপাল্টি কূটনীতিক বহিষ্কার ভারত ও পাকিস্তানের

আমাদের ক্ষেপণাস্ত্রের কথা ভেবে পাকিস্তান অনেকদিন ঘুমাতে পারবে না: মোদি

সন্ত্রাসবাদ দমনে পাকিস্তানের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে আসিফ বলেন, “পাকিস্তান ২৫ বছর ধরে সন্ত্রাসবাদের শিকার এবং অন্যায়ভাবে দোষারোপ করা হচ্ছে।”

তিনি আরো বলেন, “বিশ্বকে এখনই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী যুদ্ধে পাকিস্তান সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সন্ত্রাসবাদ নির্মূলে পাকিস্তানের প্রচেষ্টা এবং ত্যাগ বিশ্বকে স্বীকার করা উচিত।”

পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী স্মরণ করিয়ে দেন, প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ ইতিমধ্যেই সাম্প্রতিক পহেলগাম সন্ত্রাসী ঘটনা তদন্তের প্রস্তাব দিয়েছেন এবং বলেছেন যে, পাকিস্তান সংলাপের জন্য উন্মুক্ত- যদি সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় পাকিস্তানের ভূমিকা স্বীকার করা হয়।

কানাডা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভারত বছরের পর বছর ধরে সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করছে বলে অভিযোগ করেন খাজা আসিফ। পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, ভারত কেবল দেশে নয়, বিদেশেও সন্ত্রাসবাদ ছড়িয়েছে।

খাজা আসিফ ভারতকে ‘আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী’ হিসেবে অভিহিত করে বলেন, “ভারতের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের প্রমাণগুলো ভবিষ্যতের যেকোনো আলোচনায় উপস্থাপন করা উচিত।” 

ভারতের রাজনৈতিক পরিবেশ সম্পর্কে আবারো মন্তব্য করে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, “ভারতের রাজনীতিতে মোদি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছেন। তিনি তার সাম্প্রতিক বক্তৃতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু পরিস্থিতি তার ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে গেছে।”

কাশ্মীর প্রসঙ্গে খাজা আসিফ জোর দিয়ে বলেন, “বিরোধটি এখনো অমীমাংসিত এবং যেকোনো আলোচনায় এর সমাধান করা উচিত। পানি সমস্যা প্রসঙ্গে তিনি বিষয়টিকে রাজনীতিকরণের প্রচেষ্টার সমালোচনা করেন এবং সতর্ক করে দেন যে, সিন্ধু পানিচুক্তিকে নষ্ট করা উচিত নয়।”

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

৮ বছরেও শুরু হয়নি কুবির ২ বিভাগের কার্যক্রম

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) দীর্ঘ ৮ বছর আগে অনুমোদন পাওয়া দুটি বিভাগ এখনো চালু হয়নি। অনুমোদন সত্ত্বেও প্রয়োজনীয় শিক্ষক নিয়োগ, অবকাঠামোগত প্রস্তুতি এবং প্রশাসনিক কার্যক্রমের ধীরগতির কারণে বিভাগ দুটি কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

জানা গেছে, ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বিজ্ঞান অনুষদের অধীনে ‘বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ’ এবং ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের অধীনে ‘মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগ’ চালুর অনুমোদন দেওয়া হয়। ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ থেকেই বিভাগ দুটি চালু হওয়ার কথা থাকলেও, তখন বিশ্ববিদ্যালয়ে অবকাঠামোগত ও শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে তা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে নতুন অ্যাকাডেমিক ভবন নির্মাণের পরে বিভাগ দুটি চালুর পরিকল্পনা করা হয়। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে নতুন ভবন নির্মাণ হয়নি।

আরো পড়ুন:

শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় কুবি প্রক্টরের জরুরি নির্দেশনা 

সিএনজি চালকের বিরুদ্ধে কুবি শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ

এছাড়া, তৎকালীন অর্গানোগ্রামে ৩১টি বিভাগের মধ্যে এই দুইটি বিভাগ অন্তর্ভুক্ত ছিল না, যা পরবর্তীতে চালু করা নিয়ে জটিলতা তৈরি করে।

সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সঙ্গে বৈঠক করে এই বিষয়ে পুনরায় আলোচনা করে। ইউজিসি নির্দেশনা অনুযায়ী, নতুন অর্গানোগ্রামে বিভাগের অন্তর্ভুক্তি ও নতুন বিভাগের প্রস্তাব রাখা হয়েছে।

সে অনুযায়ি ১৫ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত কুবির ৮৯তম অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল মিটিংয়ে পূর্বের ‘মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগ’ এর পরিবর্তে ‘লজিস্টিক্স ও মার্চেন্ডাইজিং বিভাগ’ এবং ‘বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ’-এর পরিবর্তে ‘পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ’ নামে অন্তর্ভুক্তির সুপারিশ করা হয়। এছাড়াও অর্গানোগ্রামে নতুন আরও ১৮টি বিভাগের নাম অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে।

তৎকালীন বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের প্রস্তাবক রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সৈয়দুর রহমান বলেন, “২০১৭ সালে অনুমোদন থাকলেও জায়গা সংকটের কারণে বিভাগ চালু করা সম্ভব হয়নি। পরে প্রশাসন পাল্টালেও কেউ উদ্যোগ নেয়নি।”

এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, “অর্গানোগ্রামে অন্তর্ভুক্তি মানে এখনই চালু হবে না। অনুমোদন থাকলেও তৎকালীন সময়ে চালু করা সম্ভব হয়নি। এখন ইউজিসি নির্দেশনায় নতুন করে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, “তৎকালীন প্রশাসন বলতে পারবে কেন বিভাগ চালু হয়নি। আমরা সবার সঙ্গে আলোচনা মাধ্যমে নতুন করে উদ্যোগ নিয়েছি। আগামী ২ বছরের মধ্যে আশা করি বিভাগ চালু করা সম্ভব হবে, তখন নতুন ক্যাম্পাসও প্রস্তুত থাকবে।”

ঢাকা/এমদাদুল/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ