মোদির সময় ফুরিয়ে এসেছে: পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী
Published: 14th, May 2025 GMT
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির তীব্র সমালোচনা করেছেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ। বলেছেন, মোদি ভারতের সংসদের ভেতরে এবং বাইরে ব্যাপক চাপের মুখে রয়েছেন। খবর দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের।
মঙ্গলবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পাকিস্তানের ফেডারেল প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, “মোদির দিন ফুরিয়ে আসছে। চূড়ান্ত রায় ভারতীয় জনগণের উপর নির্ভর করবে।”
খাজা আসিফ ভারতের সঙ্গে যেকোনো সম্ভাব্য সংলাপের আগে পাকিস্তানের অবস্থান তুলে ধরে বলেন, “তাদের (ভারতের) সঙ্গে আলোচনার টেবিলে তিনটি মূল বিষয় সন্ত্রাসবাদ, কাশ্মীর এবং পানি চুক্তি এজেন্ডায় থাকবে।”
আরো পড়ুন:
পাল্টাপাল্টি কূটনীতিক বহিষ্কার ভারত ও পাকিস্তানের
আমাদের ক্ষেপণাস্ত্রের কথা ভেবে পাকিস্তান অনেকদিন ঘুমাতে পারবে না: মোদি
সন্ত্রাসবাদ দমনে পাকিস্তানের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে আসিফ বলেন, “পাকিস্তান ২৫ বছর ধরে সন্ত্রাসবাদের শিকার এবং অন্যায়ভাবে দোষারোপ করা হচ্ছে।”
তিনি আরো বলেন, “বিশ্বকে এখনই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী যুদ্ধে পাকিস্তান সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সন্ত্রাসবাদ নির্মূলে পাকিস্তানের প্রচেষ্টা এবং ত্যাগ বিশ্বকে স্বীকার করা উচিত।”
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী স্মরণ করিয়ে দেন, প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ ইতিমধ্যেই সাম্প্রতিক পহেলগাম সন্ত্রাসী ঘটনা তদন্তের প্রস্তাব দিয়েছেন এবং বলেছেন যে, পাকিস্তান সংলাপের জন্য উন্মুক্ত- যদি সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় পাকিস্তানের ভূমিকা স্বীকার করা হয়।
কানাডা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভারত বছরের পর বছর ধরে সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করছে বলে অভিযোগ করেন খাজা আসিফ। পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, ভারত কেবল দেশে নয়, বিদেশেও সন্ত্রাসবাদ ছড়িয়েছে।
খাজা আসিফ ভারতকে ‘আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী’ হিসেবে অভিহিত করে বলেন, “ভারতের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের প্রমাণগুলো ভবিষ্যতের যেকোনো আলোচনায় উপস্থাপন করা উচিত।”
ভারতের রাজনৈতিক পরিবেশ সম্পর্কে আবারো মন্তব্য করে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, “ভারতের রাজনীতিতে মোদি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছেন। তিনি তার সাম্প্রতিক বক্তৃতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু পরিস্থিতি তার ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে গেছে।”
কাশ্মীর প্রসঙ্গে খাজা আসিফ জোর দিয়ে বলেন, “বিরোধটি এখনো অমীমাংসিত এবং যেকোনো আলোচনায় এর সমাধান করা উচিত। পানি সমস্যা প্রসঙ্গে তিনি বিষয়টিকে রাজনীতিকরণের প্রচেষ্টার সমালোচনা করেন এবং সতর্ক করে দেন যে, সিন্ধু পানিচুক্তিকে নষ্ট করা উচিত নয়।”
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা অর্ধেকে নামিয়ে আনতে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনা
চট্টগ্রাম নগরের জলাবদ্ধতা চলতি মৌসুমে অর্ধেকে নামিয়ে আনতে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বুধবার চট্টগ্রাম সার্কিট হাউস সম্মেলন কক্ষে চট্টগ্রাম মহানগরের জলাবদ্ধতা নিরসন বিষয়ক এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই নির্দেশনা দেন তিনি। এ সময় তিনি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন, জেলা প্রশাসনসহ স্থানীয় সেবা কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত অন্যান্য প্রতিষ্ঠান এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের নানা উদ্যোগ ও অভিজ্ঞতার কথা শোনেন প্রধান উপদেষ্টা। পরে প্রধান উপদেষ্টা চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা চলতি বছরের বর্ষা মৌসুমে আগের তুলনায় অর্ধেকে এবং ক্রমান্বয়ে শূন্যে নামিয়ে আনতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেন।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘আমরা অনেক রকম তাত্ত্বিক আলোচনা করেছি। সেসব আর করতে চাই না, আমরা চাই জলাবদ্ধতার সমস্যা থেকে চিরতরে বের হয়ে আসতে। কিন্তু সেটা একবারেই হবে না, তাই আমাদের ক্রমান্বয়ে অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে হবে।’
তিনি বলেন,‘এ বছর যেহেতু বর্ষা মৌসুম ইতোমধ্যে এসে গেছে। তাই এবার সমস্যা পুরোপুরি সমাধান সম্ভব হবে না। কিন্তু গত কয়েক মাসে সিটি করপোরেশনসহ স্থানীয় সরকারের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলো সম্মিলিতভাবে যে প্রচেষ্টা চালিয়েছে তাতে যদি এ বছর আশানুরূপ ফল না আসে তাহলে তো সব কিছু মনে হবে জলে গেল।’
চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক অর্জনের কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসন হচ্ছে একটি প্রতীকী সমস্যা এবং খুবই জটিল সমস্যা। এই সমস্যা নিরসনের মাধ্যমে অন্যান্য শহর ও জেলা উৎসাহিত হবে, তাই চট্টগ্রামকে এই কাজে দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করতে হবে।’
এই সমস্যা নিরসনে নিয়মিত তাগিদ দেওয়ার নির্দেশনা দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘চট্টগ্রাম শহরের যে সক্ষমতা রয়েছে অন্য অনেক শহরের সেই সক্ষমতা নেই। তাই চট্টগ্রামের সকল প্রতিষ্ঠানকে সক্রিয় হতে হবে এবং নাগরিক সমাজকে বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখে নিজেদের সক্ষমতার প্রমাণ দিতে হবে।’
সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘মূলত প্রধান উপদেষ্টা জানতে চেয়েছিলেন, আমরা যে এত কাজ করেছি, এবার কত শতাংশ জলাবদ্ধতার হাত থেকে জনগণকে মুক্তি দিতে পারব? এটা কি ২০ শতাংশ, ৩০ শতাংশ নাকি ৪০ শতাংশ, না ৫০ শতাংশ? আমি বলেছি, আমি ১০০ শতাংশ বলব না, ইনশাল্লাহ ৫০ শতাংশ।’
জলাবদ্ধতা সংক্রান্ত বিভিন্ন কাজের বরাদ্দ পেতে প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়। সভায় অক্সিজেন-হাটহাজারী মহাসড়কের যানজট এবং উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা হয়।
চট্টগ্রাম মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন এবং অক্সিজেন-হাটহাজারী মহাসড়কের উন্নয়ন সংক্রান্ত মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, শিক্ষা উপদেষ্টা সি. আর আবরার, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নুরজাহান বেগম, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন, এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ প্রমুখ।