মা-বাবারা তাদের সন্তানকে শর্তহীনভাবে ভালোবাসবেন এটাইতো স্বাভাবিক। কিন্তু সন্তান যাতে আত্মনির্ভশীল, আত্মপ্রত্যায়ী হয়ে বেড়ে উঠতে পারে সেজন্য সন্তানের ‘ইমোশনালি ম্যাচিউর’ আচরণ করার পরামর্শ দেন মনোবিদরা। ফারজানা পিয়াস, মেন্টাল হেলথ প্রফেশনাল, এইচ এস লন্ডন- একটি পডকাস্টে বাবা মায়েদের ‘ইমোশনালি ম্যাচিউর’ আচরণের পাঁচটি দিক উল্লেখ করেছেন। বাবা, মায়েরা একবার মিলিয়ে দেখুনতো আপনি কি ঠিক এই পাঁচটি দিক মেনে চলছেন কি না!

নিজের ভুল স্বীকার করে শিশুকে দুঃখিত বলা: ইমোশনালি ম্যাচিউর বাবা মায়েরা নিজের ভুল স্বীকারে করেন। এবং যে ভুলটি হয়েছে সেটি ফিক্সড করার চেষ্টা করেন। এখান থেকে শিমুর বুঝতে পারে, যে কারও ভুল হতে পারে। ভুল করাটা একজন মানুষের ব্যক্তিত্ব নির্ধারণ করে না। কিন্তু ভুলটাকে আমরা কীভাবে রিটায়ার করছি বা ফিক্স করছি; এটা ব্যক্তিত্ব নির্ধারণ করে। 

শিশুর সক্ষমতা অনুযায়ী দায়িত্ব নিতে শেখানো: ইমোশনালি ম্যাচিউর বাবা মায়েরা শিশুর নিজের রেসপনসিবিলিটি নিতে শেখান। শিশুর নিজের কাজ নিজে করতে গাইড করেন, এনকারেজ করেন। ইমোশনালি ম্যাচিউর বাবা মায়েরা শিশুর কাজগুলো সব সময় নিজেরা করে দেন না। এতে করে শিশু নিজে নিজের কাজগুলো অল্প অল্প করে করা শেখে এবং অল্প অল্প করে করা শেখে। আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে কাজ করা শেখে।

আরো পড়ুন:

বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশের ‘রিকশা গাউন’

আজ মা দিবস

বাউন্ডারি সেট করেন এবং বাউন্ডারি মেনে চলা: ইমোশনালি ম্যাচিউর বাবা মায়েরা শিশুর জন্য বাউন্ডারি সেট করে দেন। শিশু যদি সেটা মেনে না চলে তাহলেও তার জন্য  একটি মেসেজ দেন। যেমন—শিশুর ট্যাবলেট দিলেন এবং একটি টাইম সেট করে দিলেন। কিন্তু শিশু বেশি সময় ব্যায় করলো এবং আরও কিছু সময় ট্যাবলেট পাওয়ার জন্য চিৎকার চেঁচামেচি করলো। তাহলে ইমোশনালি ম্যাচিউর বাবা মায়েরা শিশুর কাছ থেকে ট্যাবলেটটি নিয়ে এই মেজেসটা দিতে পারেন, ‍তুমি ট্যাবলেটটা তখনই পাবে, যখন তুমি এটা আর ছুঁড়ে ফেলবে না। 

শিশুকে শর্তহীনভাবে ভালোবাসা: প্রত্যেক বাবা-মা তাদের সন্তানদেরকে অনেক ভালোবাসেন। কিন্তু ইমোশনালি ম্যাচিউর বাবা মায়েরা শিশুকে শর্তহীন ভালোবাসেন।

শিশুর অর্জনকে নয়, চেষ্টাকে উদযাপন করা: ইমোশনালি ম্যাচিউর বাবা মায়েরা শিশুর হার্ড ওয়ার্ককে নয়, চেষ্টাকে সেলিব্রেট করেন। এতে শিশু তার কাজকে এগিয়ে নেওয়ার দিকে মনোযোগী হয়। বাস্তবতা মেনে নেওয়া ওই শিশুর পরবর্তী জীবনেও সহজ হয়ে যায়।

ঢাকা/লিপি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ট য বল ট

এছাড়াও পড়ুন:

নারীদের নিয়ে বারে ‘অগ্রহণযোগ্য’ আচরণ, আমিরাতের ক্ষোভে রাষ্ট্রদূতকে ফেরত নিচ্ছে ইসরায়েল

সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) এক পানশালায় ‘অমর্যাদাকর’ আচরণের জেরে ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূতকে দেশে ফেরত পাঠানো হচ্ছে বলে হিব্রু সংবাদমাধ্যমের এক খবরে জানা গেছে।

ইসরায়েলের চ্যানেল ১২ টেলিভিশনের প্রতিবেদনে গতকাল মঙ্গলবার বলা হয়েছে, আবুধাবি কর্তৃপক্ষ স্পষ্ট করে জানিয়েছে যে তারা আর ওই রাষ্ট্রদূতকে গ্রহণ করতে প্রস্তুত নয়। এরপরই তেল আবিব সরকার উপসাগরীয় অঞ্চলের দেশটি থেকে রাষ্ট্রদূত ইয়োসি আব্রাহাম শেলিকে ফিরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এর আগে হিব্রু সংবাদমাধ্যম এন১২ বলেছে, শেলি কয়েকজন ইসরায়েলিকে নিয়ে আমিরাতের একটি বারে হাজির হন এবং এমন আচরণ করেন, যা আরব আমিরাতের কর্মকর্তারা ‘অগ্রহণযোগ্য ও মর্যাদাহানিকর’ বলে ইসরায়েলকে জানান। রাষ্ট্রদূতের সঙ্গীদের মধ্যে নারীরাও ছিলেন।

২০২০ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত আব্রাহাম চুক্তির আওতায় সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ইসরায়েলের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক হয়। গাজা যুদ্ধ ঘিরে বিশ্বজুড়ে ইসরায়েলের তুমুল সমালোচনা চললেও আবুধাবি এখনো দেশটির ঘনিষ্ঠতম আরব মিত্র হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর অভিযোগ, গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরায়েল।

গাজা যুদ্ধ শুরুর পর এখন পর্যন্ত ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী যে একমাত্র আরব দেশে সফর করতে পেরেছেন, তা হলো আরব আমিরাত। গত জানুয়ারিতে গাজায় এক সাময়িক যুদ্ধবিরতির আগে ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডিওন সার আমিরাত সফর করেন।

শেলির বিরুদ্ধে এমন পদক্ষেপ আমিরাতের নজিরবিহীন এক পদক্ষেপ হিসেবেই বিবেচিত হচ্ছে। মাত্র এক কোটি জনসংখ্যার এ দেশের ৯০ শতাংশ মানুষই আমিরাতি নন। দেশটিতে দক্ষিণ এশিয়ার শ্রমিক, ব্রিটিশ অভিবাসী, রুশ ধনকুবের ও অন্য প্রভাবশালীদের উপস্থিতি রয়েছে। আর দুবাই উপসাগরীয় অঞ্চলের নৈশকালীন বিনোদনকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত।

গত সপ্তাহে হিব্রু গণমাধ্যমে প্রকাশিত এক খবরে বলা হয়, গত শুক্রবার রাতে আবুধাবিতে বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে শেলি এমন ‘অমর্যাদাকর’ আচরণ করেন, যা ব্যক্তি পরিসরের সীমা অতিক্রম করে। এর আগে তিনি ব্রাজিলে ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন এবং সেখানে দুটি বিতর্কিত ঘটনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন।

এক ঘটনায় শেলি ব্রাজিলের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারোর সঙ্গে নৈশভোজে অংশ নেন। ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করা সেই ডিনারের ছবিতে দেখা যায়, টেবিলে একটি লবস্টার কালো মার্কার দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, ইহুদি খাদ্যবিধি অনুযায়ী ঝিনুক–জাতীয় খাবার নিষিদ্ধ।

২০২৩ সালে হারেৎজ পত্রিকার এক প্রতিবেদনে উঠে আসে, এক ব্রাজিলীয় নারীর ভিসা–সংক্রান্ত আবেদনের জবাবে শেলি নিজে ই-মেইল ও ভিডিও কলে যোগাযোগ করেন। তিনি জানান, ইসরায়েলের ভিসা পেতে হলে ওই নারীকে তাঁর সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে দেখা করতে হবে। পরে ওই নারী বলেন, এক ভিডিও কলে তিনি দেখেন, শেলি বিছানায় অর্ধনগ্ন অবস্থায় শুয়ে আছেন।

‘আমি যখন ক্যামেরা চালু করলাম, দেখি তিনি বিছানায় শুয়ে ঘামছেন। বললেন, তিনি হাঁটাহাঁটি করে ফিরেছেন। খুবই অনুচিত ছিল ব্যাপারটা। আমি বলি, পরে কথা বললে হয় না? উনি বলেন, ‘‘না, এখনই বলি।’’ এরপর ব্যক্তিগতভাবে দেখা করার কথা বলেন ও ব্রাসিলিয়ায় রাতের খাবারের আমন্ত্রণ জানান। আমি ভীষণ চাপে ও অস্বস্তিতে পড়ে যাই’, বলেন ওই নারী।

পরে শেলিকে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের মহাপরিচালক পদে নিযুক্ত করা হয়। ২০২৪ সালের নভেম্বরে তাঁকে আমিরাতে রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।

তখন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছিলেন, ‘ইয়োসি ব্রাজিলে অত্যন্ত দক্ষ রাষ্ট্রদূতের ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি শুধু ব্রাজিলের প্রেসিডেন্টের সঙ্গেই নন, স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের সঙ্গেও ভালো সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ ও কঠিন দায়িত্ব পালন করেছেন।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইসরায়েলি কূটনীতিকদের আরব আমিরাত ছাড়ার নির্দেশ
  • গাজায় ত্রাণ নেওয়ার কয়েক মিনিট পর হত্যা করা হয় ক্ষুধার্ত শিশুটিকে: সাবেক মার্কিন সেনা কর্মকর্তা
  • থানা হোক ন্যায়বিচারের প্রথম ঠিকানা: আইজিপি
  • থানায় হয়রানিমুক্ত সেবা দেওয়ার আহ্বান আইজিপির
  • ট্রাম্পবিরোধী স্লোগান দিয়ে উড়োজাহাজে গ্রেপ্তার ভারতীয় বংশোদ্ভূত যুক্তরাজ্যের নাগরিক
  • শিক্ষার গতিপথ ও উন্নয়ন নিয়ে ঢাবিতে সেমিনার
  • শিশু ছাত্রীকে যৌন নির্যাতন, মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা 
  • ‘আমি কী অপরাধ করেছি’— সবাই জানেন শিরোনামটা...
  • নারীদের নিয়ে বারে ‘অগ্রহণযোগ্য’ আচরণ, আমিরাতের ক্ষোভে রাষ্ট্রদূতকে ফেরত নিচ্ছে ইসরায়েল