সিরাজগঞ্জের তাড়াশের একটি উচ্চ বিদ্যালয়ে এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণচেষ্টার ঘটনায় আসামি মো. লিখন হোসেনকে (১৮) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার মামলা নথিভুক্ত হওয়ার পর তাকে তার বাবা পুলিশের হাতে তুলে দেন। গত ৩০ এপ্রিল বিদ্যালয়ের টিফিন বিরতিতে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তাড়াশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

জিয়াউর রহমান। 

গ্রেপ্তার লিখনের বাবা বলেন, ‘আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে পুলিশের ডাকে সাড়া দিয়ে ছেলেকে থানায় সোপর্দ করেছি। আমার ছেলে অপরাধ করেনি। সে মনোবল থেকেই আশা রাখি, লিখন আদালতের বিচারে ছাড়া পাবে।’

মামলার এজাহার, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে বিয়ে ও কুপ্রস্তাব প্রস্তাব দিলেও তাতে রাজি হয়নি সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া ভুক্তভোগী কিশোরী (১৪)। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বিদ্যালয় চলাকালে শৌচাগারে ডেকে নিয়ে লিখন নামের তরুণ শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। 

এ ঘটনায় সমকালসহ গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে রাতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মো. শিমুল হোসেন মোবাইল ফোনে লিখনের বাবার সঙ্গে কথা কলেন। তিনি ছেলেকে পুলিশের হাতে তুলে দিতে বলেন। পরে বাবা কয়েকজন স্বজনকে নিয়ে রাত সাড়ে ১১টার দিকে থানায় এসে ছেলেকে পুলিশে সোপর্দ করেন।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর মায়ের গত ১ মে করা লিখিত অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় একই শুক্রবার রাতেই মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়। এ মামলার একমাত্র আসামি লিখন হোসেন। তাকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করবে পুলিশ। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. শিমুল হোসেন জানান, আসামি লিখনকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

ভুক্তভোগীর পরিবারের অভিযোগ, বিষয়টি ধামাচাপা দিতে গ্রামের এক প্রভাবশালী সালিশের নামে একাধিকবার বসেও সুরাহা করেননি। তাদের নানাভাবে হুমকি দেওয়া হয়েছে। ঘটনার পর থেকে ক্লাসে যাওয়া বন্ধ হয়ে যায় মেয়েটির।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

জিম্মিদশা থেকে নারীকে উদ্ধার, পুলিশ বলছে মাদক নিয়ে বিরোধ

কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের পূর্ব ডুমখালী রিজার্ভপাড়া এলাকার একটি বসতঘরের জিম্মিদশা থেকে এক নারীকে (৪৬) উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় অস্ত্রসহ একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গতকাল বুধবার বিকেল পাঁচটার দিকে পুলিশ এ অভিযান চালায়। ওই নারীর বাড়ি খাগড়াছড়ি জেলার রামগড় উপজেলায়।

গ্রেপ্তার ব্যক্তির নাম রমজান আলী (৩৬)। তিনি পূর্ব ডুমখালী এলাকার নজির আহমদের ছেলে। তাঁর কাছ থেকে দেশে তৈরি একটি একনলা বন্দুক (এলজি), একটি গুলি ও একটি গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় গতকাল রাতে চকরিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আরকানুল ইসলাম বাদী হয়ে অস্ত্র আইনে একটি মামলা করেন।

চকরিয়া থানার পুলিশ ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, খাগড়াছড়ি থেকে চকরিয়ার ডুলাহাজারায় এলে ১৫ সেপ্টেম্বর ওই নারীকে দুর্বৃত্তরা রিজার্ভপাড়া এলাকার একটি ঘরে আটকে রাখে। এরপর ওই নারীকে মুক্ত করতে থানায় অভিযোগ দেন তাঁর মেয়ে। অভিযোগে বলা হয়, ওই নারীর সামনে কিছু ইয়াবা ও অস্ত্র রেখে ভিডিও করা হয়। এরপর সেসব ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে পরিবারের কাছ থেকে এক লাখ টাকা আদায় করা হয়। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ওই নারীকে উদ্ধার করে।

উদ্ধারের পর ওই নারী সাংবাদিকদের বলেন, একটি চক্র কৌশলে তাঁকে চকরিয়ায় নিয়ে এসে আটকে রাখে। মাদক ও অস্ত্র দিয়ে ফাঁসিয়ে ভিডিও ধারণ করে। পরে সেই ভিডিও পরিবারের কাছে পাঠিয়ে চাঁদা দাবি করে।

পুলিশের একটি সূত্র জানায়, উদ্ধার হওয়া নারীর বিরুদ্ধে ঢাকার মতিঝিলসহ দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক মাদক মামলা রয়েছে। মূলত ইয়াবা কেনাবেচার টাকার ভাগ–বাঁটোয়ারার দ্বন্দ্বে তাঁকে পূর্ব ডুমখালী রিজার্ভপাড়া এলাকায় আটকে রাখা হয়।

চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুল আনোয়ার প্রথম আলোকে বলেন, এক নারীকে আটকে রেখে মুক্তিপণ দাবির অভিযোগ পেয়ে পুলিশ অভিযান চালায়। এ সময় ভুক্তভোগী নারীকে উদ্ধার ও অপহরণকারী চক্রের একজনকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশের অভিযান টের পেয়ে চক্রের অন্য তিন সদস্য পালিয়ে গেছেন।

তৌহিদুল আনোয়ার আরও বলেন, গ্রেপ্তার রমজান আলীকে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালতে হাজির করা হলে তিনি জবানবন্দি দেন। ভুক্তভোগী নারীকে আটকে রাখার কথাও স্বীকার করেন তিনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ