সেই তরুণকে পুলিশের হাতে তুলে দিলেন বাবা
Published: 17th, May 2025 GMT
সিরাজগঞ্জের তাড়াশের একটি উচ্চ বিদ্যালয়ে এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণচেষ্টার ঘটনায় আসামি মো. লিখন হোসেনকে (১৮) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার মামলা নথিভুক্ত হওয়ার পর তাকে তার বাবা পুলিশের হাতে তুলে দেন। গত ৩০ এপ্রিল বিদ্যালয়ের টিফিন বিরতিতে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তাড়াশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.
গ্রেপ্তার লিখনের বাবা বলেন, ‘আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে পুলিশের ডাকে সাড়া দিয়ে ছেলেকে থানায় সোপর্দ করেছি। আমার ছেলে অপরাধ করেনি। সে মনোবল থেকেই আশা রাখি, লিখন আদালতের বিচারে ছাড়া পাবে।’
মামলার এজাহার, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে বিয়ে ও কুপ্রস্তাব প্রস্তাব দিলেও তাতে রাজি হয়নি সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া ভুক্তভোগী কিশোরী (১৪)। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বিদ্যালয় চলাকালে শৌচাগারে ডেকে নিয়ে লিখন নামের তরুণ শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের চেষ্টা করে।
এ ঘটনায় সমকালসহ গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে রাতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মো. শিমুল হোসেন মোবাইল ফোনে লিখনের বাবার সঙ্গে কথা কলেন। তিনি ছেলেকে পুলিশের হাতে তুলে দিতে বলেন। পরে বাবা কয়েকজন স্বজনকে নিয়ে রাত সাড়ে ১১টার দিকে থানায় এসে ছেলেকে পুলিশে সোপর্দ করেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর মায়ের গত ১ মে করা লিখিত অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় একই শুক্রবার রাতেই মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়। এ মামলার একমাত্র আসামি লিখন হোসেন। তাকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করবে পুলিশ। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. শিমুল হোসেন জানান, আসামি লিখনকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
ভুক্তভোগীর পরিবারের অভিযোগ, বিষয়টি ধামাচাপা দিতে গ্রামের এক প্রভাবশালী সালিশের নামে একাধিকবার বসেও সুরাহা করেননি। তাদের নানাভাবে হুমকি দেওয়া হয়েছে। ঘটনার পর থেকে ক্লাসে যাওয়া বন্ধ হয়ে যায় মেয়েটির।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
শাহরিয়ার হত্যার বিচার বিশেষ ট্রাইব্যুনালে হবে: ডিএমপি কমিশনার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার তদন্ত দ্রুত সময়ের মধ্যে শেষ করে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতে এই মামলা বিশেষ ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হবে। আজ শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা শেষে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী।
গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চের পাশে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে নিহত হন শাহরিয়ার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন শাহরিয়ার। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা বিভাগের স্নাতকোত্তর শ্রেণির শিক্ষার্থী।
সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপি কমিশনার বলেন, এই মামলা বিশেষ ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হবে। অভিযোগপত্র দিয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে এই অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শেখ সাজ্জাত আলী বলেন, ‘এ ঘটনার পর আমি তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করেছি। আমি বলতে চাই, আমরা চেষ্টা করব এ অপরাধের রহস্য উদ্ঘাটন করতে। সেই তদন্ত দ্রুততম সময়ের মধ্যে শেষ করে আদালতে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করা হবে।’
এ সময় ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘এ ঘটনার তদন্ত একটি জটিল কাজ। ঘটনাটি গভীর রাতে ঘটেছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত অনেকেই অসুস্থ ছিলেন। তাঁদের বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে হেফাজতে নিই। পরে আদালতের মাধ্যমে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, আগামী সাত দিনে তদন্ত শেষ করে চেষ্টা করব পুলিশের পক্ষ থেকে পূর্ণাঙ্গ ব্রিফ দিতে।’
পুলিশের আন্তরিকতার কোনো অভাব নেই জানিয়ে শেখ সাজ্জাত আলী বলেন, ‘আমরা অনেক দূর এগিয়েছি; কিন্তু তদন্তের খাতিরে সব বলতে পারছি না। তবে মনে করছি, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এটার মূল ঘটনা উদ্ঘাটিত হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খান বলেন, অপরাধীদের চিহ্নিত করে দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যৌথভাবে কাজ করছে। রোববার বিকেল তিনটায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে এ–সংক্রান্ত একটি বিশেষ সভা হবে।
আরও পড়ুনশাহরিয়ার হত্যায় গ্রেপ্তার তিনজন ৬ দিনের রিমান্ডে৭ ঘণ্টা আগেএর আগে উপাচার্যের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে অন্যদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ–উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সায়মা হক বিদিশা, সহ–উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মামুন আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক এম জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, কলা অনুষদের ডিন ও বিশ্ববিদ্যালয় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান অধ্যাপক ছিদ্দিকুর রহমান খান, প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমদ, ডিএমপির রমনা বিভাগের উপকমিশনার মো. মাসুদ আলমসহ ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।