এক দশকেরও বেশি সময় ধরে দেশের শোবিজে আলোচিত-সমালোচিত নাম নুসরাত ফারিয়া। ক্যারিয়ারের শুরুতে কেবল একজন উপস্থাপিকা ছিলেন। সময়ের পরিক্রমায় এ অভিনেত্রী দুই বাংলার বড় পর্দার পরিচিত মুখ হয়ে উঠেন। নুসরাতের এই রূপান্তর মসৃণ বা সহজ ছিল না; বরং তার পথচলায় ছিল চড়াই-উতরাই, প্রশংসা আর সমালোচনার পাশাপাশি আত্মপ্রতিষ্ঠার এক কঠিন সংগ্রাম।

চট্টগ্রামে জন্ম নেওয়া ফারিয়া বেড়ে উঠেছেন ঢাকার ক্যান্টনমেন্টে। ছোটবেলায় তার স্বপ্ন ছিল আর্মি অফিসার হওয়ার। কিন্তু জীবনের পথ বদলে দেয় অন্য এক আহ্বান। মিডিয়ায় পা রাখেন একজন রেডিও জকি হিসেবে। তারপর ধাপে ধাপে এগিয়ে যান জনপ্রিয় টিভি উপস্থাপিকার কাতারে।

২০১২ সালে আরটিভির ‘ঠিক বলছেন তো’ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে টিভি পর্দায় আবির্ভাব ঘটে তার নুসরাত ফারিয়ার। এর আগেই এনটিভির ‘থার্টিফাস্ট ধামাকা কক্সবাজার’ অনুষ্ঠানে কাজ করে নজর কাড়েন। ২০১৩ সালে বলিউড গায়িকা সুনিধি চৌহানের কনসার্ট উপস্থাপনার সুযোগ তার জনপ্রিয়তাকে আরো পোক্ত করে।

আরো পড়ুন:

অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়া ডিবি কার্যালয়ে

বিমানবন্দর থেকে নুসরাত ফারিয়া আটক 

ফারিয়া শুধু সঞ্চালনায় থেমে থাকেননি। বড় স্বপ্ন নিয়ে ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান একজন অভিনেত্রী হিসেবে। ২০১৫ সালে জাজ মাল্টিমিডিয়া এবং কলকাতার এসকে মুভিজের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত সিনেমা ‘আশিকি’ দিয়ে চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে। এরপর শুরু হয় একের পর এক সিনেমায় কাজ করার অধ্যায়। 

‘হিরো ৪২০’, ‘বাদশা দ্য ডন’, ‘প্রেমী ও প্রেমী’, ‘অপারেশন সুন্দরবন’, ‘বস ২’, ‘বিবাহ অভিযান’— প্রায় প্রতিটি কাজেই তিনি চেষ্টা করেছেন নিজেকে আলাদাভাবে উপস্থাপন করতে। 

শুধু নায়িকা হিসেবেই নয়, ফারিয়া নিজেকে মেলে ধরেছেন গায়িকা ও মডেল হিসেবেও। ‘পটাকা’ গান দিয়ে গায়িকা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে অনলাইনে ঝড় তোলেন। আবার ‘ডোর’ ফ্যাশন হাউজের ব্র্যান্ড মডেলসহ নানা বিজ্ঞাপনচিত্রে কাজ করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন একজন পরিচিত মুখ হিসেবে।

নুসরাত ফারিয়ার ক্যারিয়ার সবসময় চূড়ায় থাকেনি। এক সময় সিনেমার কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও সাম্প্রতিক সময়ে নতুন কোনো সিনেমায় তাকে খুব একটা দেখা যাচ্ছে না। সে জায়গা থেকে কেউ কেউ বলছেন, “ফারিয়া হয়তো সিনেমা খড়ায় ভুগছেন।” সোশ্যাল মিডিয়ায় খোলামেলা ছবি বা বক্তব্য দিয়ে একাধিকবার বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন, যা নিয়েও কম কথা হয়নি।

নায়িকা, উপস্থাপিকা, মডেল, গায়িকা— নুসরাত ফারিয়া একাধিক পরিচয়ে নিজেকে হাজির করতে চেয়েছেন। কিন্তু কোনোটিতেই দীর্ঘ মেয়াদি ধারাবাহিকতা দেখাতে পারেননি। মিডিয়ায় তার অবস্থান অনেকটাই ফ্ল্যাশি, কিন্তু গভীর নয়। বিজ্ঞাপন, টক শো, মিউজিক ভিডিও কিংবা সিনেমা— সব জায়গায় তিনি ছিলেন, কিন্তু কোনো জায়গায় ‘দর্শকের নির্ভরতার জায়গা’ হয়ে উঠতে পারেননি।

২০২১ সালে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন নুসরাত ফারিয়া। এটি নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। কিন্তু এত উচ্চতর শিক্ষাগত ব্যাকগ্রাউন্ডের পরও তার পেশাগত অবস্থান স্থির নয়। শোবিজে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে কখনো স্পষ্টভাবে কিছু বলেননি।

একসময় নুসরাত ফারিয়া শোবিজে সম্ভাবনার নাম ছিলেন। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই সম্ভাবনা কোথাও গিয়ে থেমে গেছে। আলোচনায় থেকেছেন ঠিকই, কিন্তু একজন পূর্ণাঙ্গ শিল্পী হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করতে পারেননি। তারপরও বলা যায়, নুসরাত ফারিয়া এখনো একজন পরিচিত মুখ। যদিও শিল্পী হিসেবে তার অবস্থান প্রশ্নের মুখে। হয়তো তার ক্যারিয়ার এখনো শেষ হয়নি। কিন্তু কোথায় যাচ্ছে— সে প্রশ্নটা ক্রমশ জোরালো হচ্ছে!

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র উপস থ প

এছাড়াও পড়ুন:

কক্সবাজার সৈকতে গোসলে নেমেছিলেন চার বন্ধু, ঢেউয়ে ভেসে একজনের মৃত্যু

কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে গোসল করতে নেমে আবারও এক পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে। আজ শুক্রবার বেলা একটার দিকে সৈকতের শৈবাল পয়েন্টে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ওই পর্যটকের নাম মোহাম্মদ সামির (২২)। তিনি চট্টগ্রামের হালিশহরের বাসিন্দা।

পুলিশ জানায়, মোহাম্মদ সামির পেশায় রেফ্রিজারেটর কারিগর। তিনিসহ চার বন্ধু আজ সকালে কক্সবাজার বেড়াতে এসেছিলেন। দুপুরে তাঁরা একসঙ্গে সৈকতে এসে গোসলে নামেন। এ সময় সামির সাগরের ঢেউয়ে ভেসে যান। একপর্যায়ে তিন বন্ধু মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে তাঁকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেন। সেখানে চিকিৎসক সামিরকে মৃত ঘোষণা করেন।

জানতে চাইলে কক্সবাজার সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক সুস্ময় দাশ প্রথম আলোকে বলেন, খবর পেয়ে তাঁরা হাসপাতালে গিয়েছেন। প্রাথমিকভাবে নিহতের তিন বন্ধুর কাছ থেকে ঘটনার বিষয়ে জেনেছেন। আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁদের পুলিশি হেফাজতে রাখা হয়েছে। নিহতের পরিবারকে খবর দেওয়া হয়েছে। তাঁরা কক্সবাজারের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন।

উল্লেখ্য, চলতি বছর কক্সবাজারে সাগরে গোসলে নেমে মৃত্যুর ঘটনা এবারই প্রথম নয়। গত সাত মাসে এ ১২ জন পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া উদ্ধার করা হয়েছে আরও ৭৮ জনকে। গত ১০ বছরে সাগরে মৃত্যু হয়েছে ৬৪ পর্যটকের। এ ছাড়া ৭৮২ জনকে জীবিত উদ্ধার করেছে লাইফ গার্ড।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঢাবির হলে চিকিৎসাহীন মৃত্যুর দায় কার
  • সৌন্দর্য সৃষ্টি করতে থাকুন রফিকুন নবী 
  • মাছের ঘের দখল নিয়ে দুই পক্ষের গোলাগুলিতে একজন নিহত
  • সোনালি সাফল্যের আড়ালে ধূসর বাস্তবতা
  • গোমস্তাপুরে ২ শিশুর অস্বাভাবিক মৃত্যু নিয়ে গুঞ্জন
  • পাথর লুটে জড়িত বড় নেতারা গ্রেপ্তার হচ্ছেন না
  • ‘রুকন না হলে চাকরি থাকবে না’ বিষয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ব্যাখ্যা
  • বিপ্লবের এক বছর পর আশা হতাশায় রূপ নিচ্ছে
  • ডাকসু নির্বাচন: চতুর্থ দিনে মনোনয়ন ফরম নিলেন একজন
  • কক্সবাজার সৈকতে গোসলে নেমেছিলেন চার বন্ধু, ঢেউয়ে ভেসে একজনের মৃত্যু