এশিয়ার ৩০ তারকার তালিকায় অনন্যা পান্ডে, আছেন ঈশানও
Published: 18th, May 2025 GMT
বিশ্ববিখ্যাত অর্থনৈতিক সাময়িকী ফোর্বস প্রকাশ করেছে দশম বর্ষের ৩০ জন এশিয়ান তারকাশিল্পীর তালিকা, যাদের প্রত্যেকের বয়স ৩০ এর নীচে। বিনোদন, শিল্প, প্রযুক্তি ও উদ্যোক্তা খাতে উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য এই ৩০ তারকাকে মননীত করা হয়। বলিউড থেকে তালিকায় স্থান পেয়েছেন অভিনেত্রী অনন্যা পান্ডে ও অভিনেতা ঈশান খট্টর।
২০১৯ সালে ‘স্টুডেন্ট অব দ্য ইয়ার ২’ ছবির মাধ্যমে বলিউডে অভিষেক হওয়া অনন্যা পান্ডে হিন্দি চলচ্চিত্রে ধীরে ধীরে নিজের একটি জায়গা তৈরি করছেন। সেইসঙ্গে ফ্যাশন দুনিয়াতেও সক্রিয় তিনি। তার সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা ‘কেসরি চ্যাপ্টার ২’। এই সিনেমায় তিনি অক্ষয় কুমার ও আর.
সিনেমার বাইরেও অনন্যার প্রভাব বাড়ছে। চলতি বছরের শুরুতেই তিনি বিশ্বখ্যাত ফ্যাশন ব্র্যান্ড চ্যানেল-এর প্রথম ভারতীয় ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে নিয়োগ পান। পাশাপাশি, ‘সো পজিটিভ’ নামে তার সাইবার বুলিংবিরোধী সামাজিক উদ্যোগ তরুণদের মাঝে তাকে একজন সচেতন আইকন হিসেবে তুলে ধরেছে।
অন্যদিকে, ঈশান খট্টর ক্যারিয়ার শুরু করেন ‘বিয়ন্ড দ্য ক্লাউডস’ ছবির মাধ্যমে। এছাড়া ‘ধড়ক’ ছবির মাধ্যমে বাণিজ্যিক সফলতা লাভ করেন। ২০২৫ সালে ঈশান তার চলচ্চিত্র ‘হোমবাউন্ড’-এর মাধ্যমে কান চলচ্চিত্র উৎসবে অভিষেক করতে চলেছেন, যেটি উৎসবের একটি বিশেষ বিভাগে প্রদর্শিত হবে।
তিনি সম্প্রতি নেটফ্লিক্সের রোমান্টিক কমেডি সিরিজ ‘দ্য রয়্যালস’-এ অভিনয় করেছেন এবং নিকোল কিডম্যানের সঙ্গে আন্তর্জাতিক প্রজেক্ট ‘দ্য পারফেক্ট কাপল’-এর মাধ্যমে বিশ্বের দর্শকের কাছেও নিজেকে তুলে ধরেছেন।
অনন্যা ও ঈশান দুইজনই এমন এক প্রজন্মের প্রতিনিধিত্ব করছেন যারা বাণিজ্যিক সফলতার পাশাপাশি শিল্পমানেও নিজেদের উচ্চতায় নিয়ে যাচ্ছেন। ফোর্বস ৩০ আন্ডার ৩০ এশিয়া ২০২৫-এ তাদের অন্তর্ভুক্তি শুধু তাদের পূর্ববর্তী সাফল্যের স্বীকৃতিই নয় বরং দক্ষিণ এশিয়ার বিনোদন অঙ্গনে তাদের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনাকেও ইঙ্গিত করে। সূত্র: বলিউড হাঙ্গামা।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: অনন য প ণ ড ফ র বস অনন য
এছাড়াও পড়ুন:
১৭ বছর পর অ্যাঞ্জেলিনা জোলি, নতুন পরিচয়ে এলেন ক্রিস্টেন স্টুয়ার্ট
স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা। লালগালিচা এলাকা তীব্র অপেক্ষায়। চারদিকে শত শত ক্যামেরার চোখ। যে চোখ অপেক্ষায় তাঁর জন্য। নিরাপত্তাবলয়ের বাইরে দাঁড়িয়ে আছেন হাজার হাজার দর্শক। কারও হাতে মোবাইল, কারও হাতে অটোগ্রাফ নেওয়ার খাতা কিংবা প্রিয় তারকার ছবি। মৃদু শব্দে বেজে চলছে ফরাসি শিল্পীর কণ্ঠে গান। যে গানের সুর অন্যরকম আবেশ সৃষ্টি করছে। এমন সময় ঘোষণা এলো লালগালিচায় আসছেন হলিউড তারকা অ্যাঞ্জেলিনা জোলি। হই হই রব পড়ে গেল চারদিকে।
অপেক্ষায় থাকা তরুণ-তরুণী ও বয়োবৃদ্ধরাও চিৎকার করে উঠলেন। ঘোষণামাত্রই রাজকীয়ভাবে আগমন ঘটল জোলির। এ যেন স্বয়ং চাঁদের আলো নেমে এলো লালগালিচায়। এসেই শুভ্র হাসির সঙ্গে চুমু উড়িয়ে অভিবাদন জানালেন সবাইকে। নিজেও কুর্নিশ করে নিলেন উপস্থিতি সবার পক্ষ থেকে উড়ে আসা ভালোবাসা।
১৭ বছর পর লালগালিচায়
পরিচালক আরি অ্যাস্টারের নতুন চলচ্চিত্র ‘এডিংটন’-এর প্রিমিয়ার উপলক্ষে কান চলচ্চিত্র উৎসবের লালগালিচায় ১৭ বছর পর দেখা গেল অ্যাঞ্জেলিনা জোলিকে। এবার উৎসবের ৭৮তম এ আসরের মূল প্রতিযোগিতা বিভাগের ছবি ‘এডিংটন’-এ তিনি অভিনয় করছেন সম্মানজনক ভূমিকা শপার্ড ট্রফির মেরিন বা শুভেচ্ছাদূত হিসেবে। কান উৎসবে অ্যাঞ্জেলিনা জোলির এই প্রত্যাবর্তন শুধু গ্ল্যামারেই নয়, ইতিহাসেও অনন্য। কারণ, ২০০৮ সালে তিনি শেষবারের মতো এই লালগালিচায় হেঁটেছিলেন। তাও ছিলেন তাঁর যমজ সন্তান নক্স ও ভিভিয়েনকে গর্ভে ধারণ করে। তখন তাঁর পাশে ছিলেন ব্র্যাড পিট। পরেছিলেন ফরাসি ব্র্যান্ড জেরার দারে’র ডিজাইন করা একটি পিস্টাচিও-সবুজ গাউন। তাঁর এবারের উপস্থিতি যেন সেই স্মরণীয় মুহূর্তেরই এক গৌরবময় পুনরাবৃত্তি। এবার তিনি এলেন নিজের বলিষ্ঠ উপস্থিতি, নিজের ইতিহাস আর নিজস্ব সৌন্দর্য নিয়ে।
নতুন পরিচয়ে এলেন ক্রিস্টেন স্টুয়ার্ট
কান চলচ্চিত্র উৎসবে এ বছর আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন হলিউড অভিনেত্রী ক্রিস্টেন স্টুয়ার্ট। এবার তিনি এসেছেন ভিন্ন পরিচয়ে–নির্মাতা হিসেবে। তাঁর পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘দ্য ক্রনোলজি অব ওয়াটার’ প্রদর্শিত হয়েছে মর্যাদাপূর্ণ এ উৎসবে। লিডিয়া ইউকনাভিচের আত্মজীবনীমূলক উপন্যাস La Mécanique des Fluides (২০১১) অবলম্বনে নির্মিত এই চলচ্চিত্রে এক তরুণ সাঁতারুর জীবনকাহিনি তুলে ধরা হয়েছে, যে বেড়ে ওঠে সহিংসতা ও মদ্যপানে ক্ষতবিক্ষত এক পরিবারে। সেই অন্ধকার পরিবেশ থেকে বেরিয়ে এসে সাহিত্যে আশ্রয় খুঁজে পায় সে, বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে খুঁজে পায় নিজের নতুন পরিচয় ও মুক্তির পথ।
প্রযোজকদের ভাষ্য অনুযায়ী, এটি শুধু একজন নারীর জীবনের গল্প নয়, বরং তা সংগ্রাম, আত্ম-অন্বেষণ ও শিল্পের মাধ্যমে আত্মমুক্তির এক গভীর মানবিক চিত্র। ফটোকল ইভেন্টে ক্রিস্টেন স্টুয়ার্টের উপস্থিতি আলো ছড়িয়েছে, আর তাঁর সাহসী নির্মাণভঙ্গি কুড়িয়েছে প্রশংসা। এ ছবির মাধ্যমে অভিনয়ের গণ্ডি পেরিয়ে সৃজনশীলতার এক নতুন অধ্যায়ে পা রাখলেন ক্রিস্টেন স্টুয়ার্ট। চলচ্চিত্রবোদ্ধারা বলছেন, এটি হতে পারে তাঁর দীর্ঘ ও শক্তিশালী নির্মাতাযাত্রার শুরু।
লালগালিচায় দাঁড়িয়ে বিদ্রোহের ইঙ্গিত
লালগালিচায় নতুন পোশাকবিধির কড়াকড়ির মধ্যে এক সাহসী, সচেতন ফ্যাশনের বার্তা নিয়ে উপস্থিত হয়েছিলেন ক্রিস্টেন স্টুয়ার্ট। লালগালিচায় তিনি হাজির হলেন এক অভিনব পোশাকে। হালকা গোলাপি, স্বচ্ছ ম্যাক্সি স্কার্ট, যার নিচে ছিল একটি টুইড শর্ট স্যুট। মাথায় এলোমেলোভাবে বাঁধা খোলা চুল, যেন হাওয়ায় খেলা করছিল তা। সেই চুলের ডগায় হট পিংক ডিপ-ডাই রঙের সাবলীল এক প্রতিবাদের ইঙ্গিত। ওপরে পরেছিলেন ম্যাচিং টুইড ব্লেজার, যার বাটনে ছিল কালো-রুপালি ‘CC’ চিহ্ন। গলায় হীরার চকচকে চোকার, পায়ে হালকা গোলাপি পাম্প হিল– একদিকে পরিমার্জিত, অন্যদিকে অনমনীয়।
এবারের কান উৎসবের নতুন ড্রেস কোড অনুযায়ী, লালগালিচায় এবং উৎসবের যেকোনো অংশে নগ্নতা নিষিদ্ধ। বিষয়টি বিবেচনা করে নতুন স্টাইল বেছে নিয়েছিলেন এ তারকা। পোশাকে আংশিক স্বচ্ছতা থাকলেও, তিনি কৌশলে ঢেকে রেখেছেন শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অংশ– শুধু সামান্য উন্মোচিত হয়েছে কোমর ও উরুর নিচের কিছুটা। তিনি সরাসরি এই নতুন বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে মুখ খোলেননি। এই উপস্থিতিতে যেন প্রতিধ্বনিত হলো তাঁর আগের প্রতিবাদ। মনে পড়ে ২০১৮ সালের সে ঘটনা, যখন উঁচু হিলের ওপর নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে তিনি লালগালিচায় নিজের হাই হিল খুলে ফেলেছিলেন। সেই প্রতিবাদের পর বদলেছিল সেই নিয়ম। ক্রিস্টেন স্টুয়ার্ট শুধু ‘টোয়াইলাইট’-এর তারকা নন। তিনি এখন নিজেই এক প্রতিবাদী শিল্পভাষা। কানের মতো প্রতিষ্ঠানে দাঁড়িয়ে তিনি বোঝালেন, নিয়ম মানা যায়, তবে তাতে নিজের অবস্থান ও মতামত প্রকাশের পথও থাকে।
ড্রেসকোড নিয়ে আরও প্রতিবাদ
ক্রিস্টেন সীমার মধ্যে থেকে প্রতিবাদ জানালেও, অনেকেই সরাসরি নিয়ম অমান্য করলেন। যেমন হেইডি ক্লুম, যিনি এলি সাবের এক বিরাট ট্রেইনযুক্ত গাউনে হাজির হয়ে স্পষ্টত নতুন নিয়ম ভাঙলেন। কারণ, নতুন নিয়মে বলা হয়েছে, ‘অতিরিক্ত আয়তনের পোশাক, যা অতিথিদের চলাফেরায় সমস্যা সৃষ্টি করে, তা নিষিদ্ধ।’ অন্যদিকে, বিচারক হিসেবে নিযুক্ত হ্যালি বেরি শেষ মুহূর্তে বদলে ফেললেন নিজের পোশাক। প্রথমে তাঁর নির্বাচিত গৌরব গুপ্তার নকশা করা একটি ট্রেইনযুক্ত গাউন ছিল, কিন্তু নিয়মে সেটি নিষিদ্ধ হওয়ায় পরে তিনি পরেন একটি জাকেমাস স্ট্রাইপড পোশাক, যার পেছনে ছিল একটি বিনম্র গোলাপি রাফল।