পঞ্চগড় সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) ঠেলে পাঠানো নারী, শিশুসহ ২১ জনকে একটি আশ্রয়ণ প্রকল্পের কমিউনিটি সেন্টারে রাখা হয়েছে। সেখানে তাঁদের খাবার ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাঁদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে এই ২১ জনকে পঞ্চগড় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) তত্ত্বাবধায়নে সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের ডোলোপুকুর আশ্রয়ণ প্রকল্পের কমিউনিটি সেন্টারে আনা হয়। এতে পুলিশ ও বিজিবি সহায়তা করে।

আরও পড়ুন‘প্লেনে, গাড়িতে কইরা আইনা কোন বর্ডার পার করে দিছে জানি না’২২ মে ২০২৫

ইউএনও জাকির হোসেন মুঠেফোনে প্রথম আলোকে বলেন, হাড়িভাসা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের মাধ্যমে ওই ব্যক্তিদের খাবারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে অনেকের পরিবার যোগাযোগ করছে। সবার পরিবারের লোকজন চলে এলে পুলিশের মাধ্যমে তাঁদের হস্তান্তর করা হবে।

এর আগে বৃহস্পতিবার ভোরে বিজিবির জয়ধরভাঙ্গা বিওপির আওতাধীন সীমান্তের ৭৫৭ নম্বর মেইন পিলারে ১০ নম্বর সাবপিলার সংলগ্ন সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের বড়বাড়ী এলাকা দিয়ে ওই ২১ জনকে ঠেলে পাঠিয়ে দেয় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। এ সময় সীমান্ত এলাকা থেকে বিজিবি তাঁদের আটক করে বিকেলে পঞ্চগড় সদর থানায় হস্তান্তর করে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই ২১ জনের মধ্যে ২২ বছর বয়সী একজন তরুণ, ৩ মাস থেকে ১৭ বছর বয়সী ১৪ জন শিশু-কিশোর এবং ১৯ বছর থেকে ৫৫ বছর বয়সী ৬ জন নারী আছেন। তাঁদের বাড়ি বাংলাদেশের খুলনা ও নড়াইল জেলায়। তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে ভারতেই ছিলেন এবং প্রাপ্তবয়স্করা সেখানে বিভিন্ন কাজ করতেন। তাঁদের ভারতের গুজরাট থেকে ভারতীয় পুলিশ আটক করে বিমান ও বাসযোগে সীমান্ত এলাকায় নিয়ে এসে গতকাল বুধবার বিকেলে ৯৩ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের টিয়াপাড়া ক্যাম্পে হস্তান্তর করে। পরে টিয়াপাড়া বিএসএফ ক্যাম্পের সদস্যরা তাঁদের বাংলাদেশে ঠেলে দেয় (পুশ ইন)। যদিও ঘটনার পর বিজিবি-বিএসএফের পতাকা বৈঠকে বিএসএফ পুশ ইনের বিষয়টি অস্বীকার করেছে।

আজ শুক্রবার দুপুরে ডোলোপুকুর আশ্রয়ণ প্রকল্পে গিয়ে দেখা যায়, বাইরে কয়েকজন পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন। কমিউনিটি সেন্টারের ঘরের মেঝেতে কেউ শুয়ে, কেউ বসে সময় কাটাচ্ছেন। হাড়িভাসা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইয়েদ নূর-ই-আলম তাঁদের সঙ্গে কথা বলছিলেন, পরিবারের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছেন। তিন মাস বয়সী একটি শিশু অসুস্থ হওয়ায় তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। অসুস্থ শিশুটির দাদি ও মা–বাবা জানান, বিএসএফ সীমান্তে পার করে দেওয়ার সময় তাঁরা বৃষ্টিতে ভিজেছিলেন। এ জন্য শিশুটির ঠান্ডা লেগেছে। এ ছাড়া বাংলাদেশে আসার পর অন্যরা সবাই ভালো আছেন।

হাড়িভাসা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইয়েদ নূর-ই-আলম বলেন, ‘উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দিকনির্দেশনায় আমরা এখানে ২১ জনের খাবারের ব্যবস্থা করছি। এখানে পুলিশের পাশাপাশি আমাদের গ্রাম পুলিশ দায়িত্ব পালন করছেন।’

পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ হিল জামান জানান, ওই ২১ জনকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিতে স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ব যবস থ পর ব র র ২১ জনক ব এসএফ র পর ব উপজ ল ২১ জন

এছাড়াও পড়ুন:

১২ হাজার তরুণ–তরণীকে বিনা মূল্যে প্রশিক্ষণ দেবে পিকেএসএফ

পেশাগত দক্ষতা বাড়াতে দেশের ১২ হাজার তরুণ-তরুণীকে বিনা মূল্যে প্রশিক্ষণ দেবে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)। কারিগরি ও পেশাগত শিক্ষানির্ভর তিন বছর মেয়াদি এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে স্কিলস ফর ইন্ডাস্ট্রিজ কম্পিটিটিভনেস অ্যান্ড ইনোভেশন প্রোগ্রামের (এসআইসিআইপি) আওতায়। এ প্রকল্পে সহায়তা করছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।

আজ সোমবার রাজধানীর পিকেএসএফ ভবনে এসআইসিআইপি ও পিকেএসএফের প্রকল্পের উদ্বোধন ও প্রশিক্ষণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়।

প্রকল্পের আওতায় প্রশিক্ষণার্থী তরুণেরা ১২টি খাতের প্রশিক্ষণ পাবেন। প্রশিক্ষণ চলাকালে থাকা-খাওয়ার সব খরচ প্রকল্প থেকে বহন করা হবে। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৩০ শতাংশ আসন নারীদের জন্য সংরক্ষিত। বাকি ৭০ শতাংশের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন নিম্ন আয়ের ও প্রান্তিক অঞ্চলের তরুণেরা। প্রশিক্ষণ শেষ হওয়ার পর অংশগ্রহণকারীদের আত্মকর্মসংস্থান বা মজুরিভিত্তিক চাকরির ক্ষেত্রেও সহায়তা করা হবে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থসচিব খায়েরুজ্জামান মজুমদার বলেন, দেশে দক্ষ জনশক্তির চাহিদা রয়েছে, বিশেষ করে বিদেশে। এই প্রকল্পের সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে পিকেএসএফ ও এর সহযোগী সংস্থাগুলো সেই চাহিদা পূরণে ভূমিকা রাখতে পারবে।

পিকেএসএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফজলুল কাদের বলেন, ‘প্রতিবছর ২০ লাখের বেশি তরুণ শ্রমবাজারে প্রবেশ করছেন। এটি একই সঙ্গে আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা। প্রকল্পের আওতায় জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের স্বীকৃত কোর্স অনুযায়ী প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে, যাতে প্রশিক্ষণ শেষে তাঁরা সহজেই কর্মসংস্থানে যুক্ত হতে পারেন।’

অনুষ্ঠানে পিকেএসএফের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জসীম উদ্দিন বলেন, বর্তমানে ১২ হাজার ছাড়াও আরও ৮ হাজার ৫০০ তরুণকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার প্রস্তাব সরকারের কাছে দেওয়া হয়েছে। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও তৃতীয় লিঙ্গের তরুণদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। পাশাপাশি ২ হাজার এতিম ও দুস্থ তরুণকেও প্রশিক্ষণের আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে।

এ সময় অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ ওয়ালিদ হোসেন ও পিকেএসএফের চেয়ারম্যান জাকির আহমেদ খান বক্তব্য দেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাংনী সীমান্ত দিয়ে ১৮ জনকে ঠেলে পাঠিয়েছে বিএসএফ
  • চোরাচালানে গিয়ে বিএসএফের হাতে আটক, ফিরিয়ে এনে ব্যবস্থা নিচ্ছে বিজিবি
  • মেহেরপুর সীমান্ত দিয়ে ১৮ জনকে ঠেলে পাঠাল বিএসএফ
  • বড়লেখা সীমান্ত দিয়ে ১০ রোহিঙ্গাকে ঠেলে দিয়েছে বিএসএফ
  • ১২ হাজার তরুণ–তরণীকে বিনা মূল্যে প্রশিক্ষণ দেবে পিকেএসএফ
  • বাংলাদেশ সীমান্তে নজরদারি বাড়াতে বডি ক্যামেরা পাচ্ছে বিএসএফ
  • বাংলাদেশ সীমান্তের জন্য ৫ হাজার বডিক্যাম পাচ্ছে বিএসএফ