পল্লবীতে মেট্রো স্টেশনের নিচের ফুটপাতে ধারালো অস্ত্রের মুখে মুঠোফোন ছিনতাই
Published: 26th, May 2025 GMT
রাজধানীর পল্লবীতে মেট্রো স্টেশনের নিচের ফুটপাতে এক ব্যক্তির গতি রোধ করে ধারালো অস্ত্রের মুখে তাঁর মুঠোফোন ছিনিয়ে নিয়েছেন তিন ছিনতাইকারী। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে (ভাইরাল) পড়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে গত শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে। ভুক্তভোগী ব্যক্তির নাম আল-আমিন রানা। তিনি রাজধানীর নিকুঞ্জ এলাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। থাকেন পল্লবী এলাকায়।
আল-আমিন প্রথম আলোকে বলেন, এই ঘটনায় তিনি পল্লবী থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন, কিন্তু কোনো সহায়তা পাননি।
ভিডিওতে দেখা যায়, পিঠে ব্যাগ থাকা এক ব্যক্তি মুঠোফোন হাতে মেট্রো স্টেশনের নিচের সড়কের ফুটপাত ধরে হেঁটে যাচ্ছিলেন। তাঁর পেছন পেছন আসছিলেন তিনজন। তাঁদের একজন ওই ব্যক্তির আগে চলে যান। ওই ব্যক্তি ফুটপাতের সংকীর্ণ স্থানে যেতেই তিনজন তাঁর গতি রোধ করেন। তাঁরা ওই ব্যক্তির সঙ্গে ধ্বস্তাধ্বস্তি করে তাঁর মুঠোফোন ছিনিয়ে নেন। এ সময় ছিনতাইকারীদের একজন ধারালো অস্ত্র দিয়ে ওই ব্যক্তিকে আঘাত করেন। তারপর তিনজনই দৌড়ে একটি অটোরিকশায় উঠে পালিয়ে যান।
ভুক্তভোগী আল-আমিন প্রথম আলোকে বলেন, সেদিন রাতে কাজ শেষে খিলক্ষেত থেকে বাসে করে মিরপুরের পল্লবী মেট্রো স্টেশনের কাছে নামেন তিনি। এরপর হেঁটে বাসার দিকে যাওয়ার পথে তিনি ছিনতাইকারীদের কবলে পড়েন। ছিনতাইকারীরা ধারালো অস্ত্রের মুখে তাঁর হাতে থাকা আইফোনটি ছিনিয়ে নেন। এ সময় তাঁর হাতে ও পায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে এক ছিনতাইকারী। এতে তিনি আহত হন। মুঠোফোন ছিনিয়ে নেওয়ার পর তিনি ছিনতাইকারীদের পেছন পেছন দৌড়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু ছিনতাইকারীরা অটোরিকশায় করে পালিয়ে যায়।
ঘটনার পর সেদিন রাতেই পল্লবী থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ করেন বলে জানান আল-আমিন। তিনি বলেন, তবে এখন পর্যন্ত পুলিশের কাছ থেকে কোনো সহায়তা পাননি।
আল-আমিন বলেন, একজন উপপরিদর্শকের (এসআই) মুঠোফোন নম্বর থানা থেকে তাঁকে দেওয়া হয়। বলা হয়, এই এসআই ঘটনাটি তদন্ত করবেন। কিন্তু পুলিশের দিক থেকে আর কোনো সাড়া পাচ্ছিলেন না তিনি। এমন পরিস্থিতিতে তিনি নিজে গতকাল রোববার ঘটনাস্থলের পাশের একটি সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেন, পুলিশকে তা দেখান। আজ সোমবার সকালেও ওই এসআইয়ের সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন। এসআই তাঁকে বলেছেন, তিনি ঘটনাস্থলে আসছেন।
থানা থেকে আল-আমিনকে যে এসআইয়ের নম্বর দেওয়া হয়েছিল, তিনি হলেন জয় দাশ। জানতে চাইলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, পল্লবী এলাকাটি খুবই জনবহুল। তাঁরা অপরাধ নিয়ন্ত্রণে সর্বাত্মক চেষ্টা করছেন। এর মধ্যে কিছু ঘটনা ঘটে যায়। আল-আমিন ছিনতাইয়ের শিকার হয়েছেন—এমন ঘটনা তিনি জানেন না। তিনি খোঁজ নিচ্ছেন।
জানতে চাইলে পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিউল আলম প্রথম আলোকে বলেন, তিনি গতকালই এই থানায় যোগ দিয়েছেন। ঘটনাটির বিষয়ে তিনি এখনো কিছু জানেন না।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রথম আল ক ফ টপ ত
এছাড়াও পড়ুন:
কুবিতে নতুন ১৮ বিভাগ ও ৪ ইনস্টিটিউট চালুর সুপারিশ
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ৮৯তম একাডেমিক কাউন্সিল মিটিংয়ে সার্বিকভাবে আসন সংখ্যা কমানোসহ অর্গানোগ্রামে আরো ১৮টি নতুন বিভাগের অন্তর্ভুক্তি, চারটি ইনস্টিটিউট চালু এবং ১২টি বিভাগে পিএইচডি ডিগ্রি চালুর সুপারিশ করা হয়েছে।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ল্যাবভিত্তিক বিভাগগুলোতে আসন সংখ্যা ৪০টি এবং ল্যাববিহীন বিভাগগুলোতে ৫০টি আসন রাখার সুপারিশ করা হয়েছে। নতুন ১৮টি বিভাগ অন্তর্ভুক্তির সুপারিশ করা হয়েছে। এর মধ্যে বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত বিভাগগুলো হলো—পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ, জৈব রসায়ন ও আণবিক জীববিজ্ঞান বিভাগ এবং জৈবপ্রযুক্তি ও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ। সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত বিভাগগুলো হলো—সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, জনসংখ্যা বিজ্ঞান বিভাগ এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ। কলা ও মানবিক অনুষদভুক্ত গুলো হলো—ইসলামিক স্টাডিজ ও সংস্কৃতি বিভাগ, ইতিহাস বিভাগ এবং দর্শন বিভাগ। ব্যবসায় অনুষদভুক্ত বিভাগগুলো হলো— পর্যটন ও আতিথেয়তা ব্যবস্থাপনা বিভাগ, ব্যবসায়িক তথ্যবিজ্ঞান বিভাগ, আন্তর্জাতিক ব্যবসা বিভাগ এবং লজিস্টিক ও মার্চেন্ডাইজিং বিভাগ। প্রকৌশল অনুষদভুক্ত বিভাগগুলো হলো— বৈদ্যুতিক ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগ, রাসায়নিক প্রকৌশল বিভাগ, পুরকৌশল বিভাগ এবং যন্ত্রকৌশল বিভাগ। আইন অনুষদভুক্ত বিভাগটি হলো— অপরাধবিদ্যা বিভাগ।
পাশাপাশি চারটি ইনস্টিটিউট গঠনের সুপারিশ করা হয়েছে। সেগুলো হলো—আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় উন্নত গবেষণা কেন্দ্র এবং একাডেমিক মান বৃদ্ধি কেন্দ্র। এগুলোর গঠন কাঠামোও সুপারিশ করা হয়েছে।
এর মধ্যে আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের জন্য পরিচালক হিসেবে একজন অধ্যাপক, নিয়মিত অধ্যাপক দুইজন, তিনজন সহযোগী অধ্যাপক, সেকশন অফিসার বা ম্যানেজার একজন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা একজন, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার টাইপিস্ট একজন, অফিস সহায়ক দুইজন এবং একজন ক্লিনার।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় উন্নত গবেষণা কেন্দ্র এবং একাডেমিক মান বৃদ্ধি কেন্দ্রের জন্য পরিচালক হিসেবে একজন অধ্যাপক, একজন অতিথি অধ্যাপক, অতিরিক্ত পরিচালক হিসেবে একজন অধ্যাপক অথবা সহযোগী অধ্যাপক, সেকশন অফিসার অথবা ম্যানেজার হিসেবে একজন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা একজন, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার টাইপিস্ট একজন, অফিস সহায়ক দুইজন এবং ক্লিনার একজন।
১২টি বিভাগে পিএইচডি ডিগ্রি চালুর প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতিটি বিভাগে ন্যূনতম ২৬ জন করে শিক্ষক রাখার ব্যাপারেও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন বলেছেন, “আমরা মিটিংয়ে এগুলো সুপারিশ করেছি। অর্গানোগ্রাম অনুসারে বিশ্ববিদ্যালয় ডিপার্টমেন্টের জন্য ছাড়পত্র চায়, তারপর কমিশন (ইউজিসি) যদি অনুমোদন দেয়, তখন সেটা অর্গানাগ্রামে যুক্ত হয়। অর্গানোগ্রামে থাকলেই যে বিভাগ হয়ে যাবে, এমন না। একটা অনুমোদন দিয়ে রাখে। এই অনুমোদনের আলোকে আবার যখন দরখাস্ত দেওয়া হয়, তখন কমিশন বসে সিদ্ধান্ত নেবে।”
তিনি আরো বলেন, “ইউজিসি আমাদের নির্দেশনা দিয়েছে আসন সংখ্যা কমাতে, যাতে কোয়ালিটি এডুকেশনের নিশ্চিত হয়। তারা ল্যাববেজড বিভাগের জন্য ৪০টি আসন এবং ল্যাববিহীন বিভাগের জন্য ৫০টি আসন বরাদ্দ দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে।”
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেছেন, “অনেকগুলো সিদ্ধান্তই নেওয়া হয়েছে। তবে, এখনই না দেখে বলা যাচ্ছে না। রেজ্যুলেশন পাস হলে বিস্তারিত বলতে পারব।”
ঢাকা/এমদাদুল/রফিক