মাদরাসার অ্যাডহক কমিটি গঠনে দুর্নীতি, এলাকাবাসীর মানববন্ধন
Published: 26th, May 2025 GMT
পটুয়াখালী সদর উপজেলার দক্ষিণ ছোট বিঘাই ইসহাকিয়া দাখিল মাদরাসার এডহক কমিটি গঠন প্রক্রিয়ায় অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন এলাকাবাসী। একইসঙ্গে অবৈধ কমিটি অনুমোদন না-দেওয়ার দাবিতে বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডে লিখিত আবেদন করেছেন মাদরাসার প্রতিষ্ঠাদের অন্যতম এবং জমিদাতাদের ওয়ারিশ ব্যাংক কর্মকর্তা তোফায়েল আহমাদ।
বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডে দেওয়া লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৪ সালে উল্লেখিত মাদরাসার ৫৮ শতাংশ জমি দান করেন আবেদনকারী তোফায়েল আহমাদের বাবা ও চাচা। জমির দলিল নাম্বার ৩৯৯২। বিগত তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে তিনি এবং তার পরিবার প্রতিষ্ঠানটির উন্নয়নে ধারাবাহিক অবদান রেখেছেন। মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার গত ১৯ মে অ্যাডহক কমিটির প্যানেল গঠনের জন্য মিটিং আহ্বান করেন। অজ্ঞাত কারণে সেই মিটিং না করে এবং কাউকে না জানিয়ে তিনি দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে রেজুলেশন করে ঢাকায় বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডে পাঠান। সেখানে তিনজনের প্যানেলে প্রথমে যাকে রাখা হয়েছে তার বাড়ি মাদরাসা থেকে ৮০ কিলোমিটার দূরে। তার কাছ থেকে মাদরাসার অফিস সহকারী নিজামউদ্দিন অর্থ লেনদেন করেছেন বলে তোফায়েল আহমাদের অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে। তার দাবি অপর যে দুজনের নাম অ্যাডহক কমিটির প্যানেলে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে তারা পদের জন্য আগ্রহী নন। তাদের ডামি প্রার্থী করা হয়েছে।
ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে গত ২৪ মে দক্ষিণ ছোট বিঘাই ইসহাকিয়া দাখিল মাদরাসা প্রাঙ্গণে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন এলাকাবাসী। মানববন্ধনে তারা বলেন, ‘‘দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে যে কমিটি প্রেরণ করা হয়েছে তা বাতিল করে সরাসরি মিটিংয়ের মাধ্যমে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় কমিটি করতে হবে।’’
অভিযোগের বিষয়ে মাদরাসার অফিস সহকারী মো.
আবদুস সাত্তারের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এ দিকে বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডের রেজিস্ট্রারের দপ্তর থেকে প্রস্তাবিত কমিটির বিরুদ্ধে লিখিত আবেদন প্রাপ্তির সত্যতা নিশ্চিত করা হয়েছে।
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ল দ শ ম দর স ম দর স র কর ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
‘ডাকসু হলো, রাকসু হলো, চাকসু কেন থেমে গেল’
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (চাকসু) দ্রুত তফসিল ঘোষণার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (৩০ জুলাই) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা ‘হয় মোদের চাকসু দে, নইলে গদি ছাইড়া দে’, ‘ডাকসু হলো, রাকসু হলো, চাকসু কেন থেমে গেল’, ‘চাকসু মোদের অধিকার, রুখে দেওয়ার সাধ্য কার’—এমন স্লোগান দেন।
আরো পড়ুন:
আনাতোলিয়ান রোভার চ্যালেঞ্জে বিশ্বে তৃতীয় ইউআইইউ
জবির প্রভাবশালী আওয়ামীপন্থি ‘ক্যাডার’ শিক্ষকরা যেখানে আছেন
আইন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাব্বির হোসেন রিয়াদ বলেন, “জুলাই মাসে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে শহীদ হওয়ার ঘটনাগুলো আমাদের জানা। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন শিক্ষার্থীও সে সময় শহীদ হয়েছিলেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়েই সবার আগে চাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কথা ছিল, কিন্তু এখনও কোনো অগ্রগতি নেই। অথচ ডাকসু, রাকসু, জাকসুর তফসিল ঘোষণা হয়েছে।”
তিনি আরও জানান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে আগামী ১ আগস্ট সিন্ডিকেট সভায় চাকসুর নীতিমালা অনুমোদনের বিষয়টি চূড়ান্ত হবে। এরপর আগস্টের প্রথম সপ্তাহেই তফসিল ঘোষণার প্রত্যাশা করা হচ্ছে। “যদি তা না হয়, তাহলে আমরা দুর্বার ছাত্রআন্দোলনের দিকে যাব,” বলেন তিনি।
বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক ও নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী খান তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, “দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এরইমধ্যে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত হলেও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছে। আমরা এতদিন রোডম্যাপ চেয়েছিলাম, এখন আর রোডম্যাপ নয়—তফসিল চাই।”
তিনি আরো বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল সমস্যার একমাত্র সমাধান হচ্ছে সক্রিয় ছাত্র সংসদ। তাই আগামী আগস্টের প্রথম সপ্তাহে তফসিল এবং সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন চাই।”
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, “আগামী ১ আগস্ট সিন্ডিকেট সভায় চাকসুর নীতিমালা চূড়ান্ত হলে নির্বাচন কমিশনার তফসিল ঘোষণা করবেন।”
চাকসু গঠনের ধারণা মূলত এসেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসুর আদলে। বাংলাদেশে ১৯৭৩ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রসংসদ গঠন প্রক্রিয়া শুরু হয়।
১৯৭০ সালে চাকসুর প্রথম কেবিনেট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সর্বশেষ নির্বাচন হয় ১৯৯০ সালের ৮ মে। এই নির্বাচনে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল বিজয়ী হয়েছিল। এরপর দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে আর কোনো চাকসু নির্বাচন হয়নি।
২০২৫ সালে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হওয়ায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাকসু ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জাকসুর মতো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও চাকসু নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করছেন।
ঢাকা/মিজানুর রহমান/ইভা