১ কোটি শিশু শিক্ষার্থীর অধিকার নিশ্চিতের দাবিতে মানববন্ধন, স্মারকলিপি
Published: 28th, July 2025 GMT
বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কিন্ডারগার্টেনর এক কোটি শিশু শিক্ষার্থীর অধিকার নিশ্চিতের দাবিতে বন্দরে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশনের শিক্ষক-শিক্ষকারা।
সোমবার (২৮ জুলাই) সকাল ১১টায় বন্দর উপজেলা কার্যালয়ের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধন শেষে বন্দর উপজেলা শিক্ষা অফিসারের মাধ্যমে শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবারে স্মারকলিপি দাখিল করা হয়।
মানববন্ধরে বক্তব্য রাখেন নারায়ণগঞ্জ জেলা কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশনের প্রধান এ এইচ এম শামীম আহমেদ, মহাসচিব সিদ্দিকুর রহমান, সদস্য সচিব সাইফুল ইসলাম রুবেল, শিক্ষক হাসান কবির, আনোয়ার হোসেন, আরিফ হোসেন, মাহবুব আলম, শামীমা আক্তার বর্ণা, রোকসানা আক্তার প্রমুখ।
বক্তরা বলেন, বাংলাদেশে ৬৫ হাজার ৭শ’ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কিন্ডারগার্টেন স্কুল রয়েছে। যা দেশেরন ৫০ শতাংশ শিক্ষার চাহিদা পূরণ করে থাকে। আর এ সকল স্কুলে প্রায় ১ কোটির অধিক শিশু শিক্ষার্থী লেখা পড়া করে। আর ৫ম শ্রেণীতে প্রায় ১০ লাখ শিক্ষার্থী রয়েছে। যারা ২০০৯ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত সরকারি বৃত্তিতে অংশ নিয়েছে।
কিন্তু গত ১৭ জুলাই বর্তমান সরকার একটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে বেসরকারি কিন্ডারগার্টেন স্কুলের বৃত্তিতে অংশ গ্রহণ বাতিল করে। যার কারণে ১ কোটি শিক্ষার্থীর ভবিষ্যত অনিশ্চয়তার মুখে পতিত হয়েছে।
বক্তরা আরো বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানে ১৭ অনুচ্ছেদে দেশের সকল শিশুদের সমান অধিকার দেয়া হয়েছে। বেসরকারি কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিশুদের বুত্তিতে অংশগ্রহণ করতে না দেয় মানে সংবিধানের ও মানবাধিকার লঙ্ঘন। আমরা এ প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবি জানাচ্ছি। যাতে শিশুরা তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত না হয়।
.উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ক ন ড রগ র ট ন ব সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ফার্মেসি উচ্ছেদের উদ্যোগ, প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট, ভোগান্তিতে রোগীরা
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজের মার্কেটের দোকানঘরে চার দশকের বেশি সময় ধরে চলছে ফার্মেসির ব্যবসা। কলেজ কর্তৃপক্ষ এসব দোকানকে অবৈধ ঘোষণা করে উচ্ছেদের উদ্যোগ নেওয়ায় প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন জেলার ওষুধ ব্যবসায়ীরা।
আজ সোমবার সকাল ছয়টা থেকে জেলা শহরের সব ফার্মেসি বন্ধ রেখে ধর্মঘট পালন করছেন ব্যবসায়ীরা। শহরের প্রায় এক হাজার ফার্মেসি বন্ধ থাকায় ওষুধ না পেয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন রোগী ও তাঁদের স্বজনেরা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজের সামনে অবৈধ বাণিজ্যিক স্থাপনা উচ্ছেদ, সীমানাপ্রাচীর ও দৃষ্টিনন্দন ফটক নির্মাণের দাবিতে শিক্ষার্থীরা কয়েক সপ্তাহ ধরে বিক্ষোভ, মানববন্ধন ও স্মারকলিপি কর্মসূচি পালন করে আসছেন। গতকালও শিক্ষার্থীরা কলেজের সামনে সড়কে অবস্থান নিয়ে পরিত্যক্ত কাঠের বেঞ্চে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন এবং উচ্ছেদের দাবিতে বিক্ষোভ করেন। এ ঘটনায় ওষুধ ব্যবসায়ীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়।
ওই ঘটনার পর গতকাল রাতে বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির ব্রাহ্মণবাড়িয়া শাখা জরুরি বৈঠক করে। বৈঠকে জেলা শহরের সব ফার্মেসি বন্ধ রেখে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সমিতির নেতারা জানান, প্রশাসন থেকে কোনো সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত ধর্মঘট চলবে।
ওষুধ ব্যবসায়ীরা দাবি করেন, তাঁদের দোকানগুলো বৈধভাবে স্থাপিত। ১৯৮৪ সালে কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পৃথক পৃথক চুক্তির ভিত্তিতে দোকান বরাদ্দ দেওয়া হয়। প্রতিটি দোকানের বিপরীতে ২৮ হাজার টাকা পরিশোধ করে তাঁরা চুক্তি করেন এবং নিয়মিত ভাড়াও দিয়ে আসছেন। তবে দুই মাস আগে থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষ ভাড়া নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, চুক্তি অনুযায়ী উচ্ছেদের অন্তত ছয় মাস আগে নোটিশ দেওয়ার কথা। কিন্তু কোনো নোটিশ ছাড়াই হঠাৎ উচ্ছেদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাঁরা অবিলম্বে উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ ও আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান দাবি করেছেন।
আরও পড়ুনব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দোকান উচ্ছেদ অভিযান বন্ধে ওষুধ ব্যবসায়ীদের মানববন্ধন১৭ অক্টোবর ২০২৫ওষুধ ব্যবসায়ীদের পক্ষে ফখরুল ইসলাম ছিদ্দিকী দোকান উচ্ছেদ বন্ধে দুটি মামলা করেছেন। একটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জ্যেষ্ঠ সহকারী জজ আদালতে, অন্যটি বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে। ১৯ অক্টোবর আদালত মামলার বিবাদীদের (কলেজ অধ্যক্ষ, জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক-রাজস্ব, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার-ভূমি) ১০ দিনের মধ্যে কারণ দর্শাতে বলেছেন। মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী বছরের ১৯ জানুয়ারি।
অন্যদিকে শিক্ষার্থীরাও তাঁদের দাবিতে অটল। তাঁরা ১৫, ২১, ২৩ ও ২৬ অক্টোবর বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করে জেলা প্রশাসক এবং কলেজ অধ্যক্ষের কাছে স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন। শিক্ষার্থীরা বলছেন, কলেজের সৌন্দর্য ও নিরাপত্তার স্বার্থে এই উচ্ছেদ প্রয়োজন।
ফার্মেসি বন্ধ থাকায় সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। সদর উপজেলার সুহিলপুর ইউনিয়নের হারিয়া গ্রামের রুবেল মিয়া অসুস্থ মায়ের জন্য ওষুধ কিনতে শহরে আসেন। কিন্তু ফার্মেসি বন্ধ থাকায় ওষুধ না কিনেই বাড়ি ফিরে যান। শহরের দক্ষিণ মৌড়াইল গ্রামের বাসিন্দা তৌহিদা ইসলাম বলেন, তাঁর এক বছর বয়সী শিশু তালহা জোবায়েরের ১০২ ডিগ্রি জ্বর। ওষুধ কিনতে এক ঘণ্টা ছোটাছুটি করেও সফল হননি তিনি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আবুল হান্নান খন্দকার বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো অযৌক্তিক নয়। কলেজের সীমানাপ্রাচীর ও ফটক নির্মাণকাজের একটি বরাদ্দ আগেই ফেরত গেছে। এখন নতুন বরাদ্দ এসেছে। দোকানগুলো খাস খতিয়ানভুক্ত সম্পত্তি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির পরিচালক ও একটি ফার্মেসির মালিক নূর আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘দোকান সরাতে আপত্তি নেই, তবে চুক্তি অনুযায়ী অন্তত ছয় মাস সময় দিতে হবে। প্রশাসনের সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত ধর্মঘট চলবে।’ তিনি আরও বলেন, জেলা শহরের এক হাজার ফার্মেসি বন্ধ রয়েছে। দাবি আদায় না হলে পরবর্তী ধাপে পুরো জেলার ৯টি উপজেলাতেই ফার্মেসি বন্ধ থাকবে।’