তৃতীয় সর্বোচ্চ দরদাতা পেল ডিএনসিসির পশুর হাটের ইজারা
Published: 26th, May 2025 GMT
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) পশুর হাটের ইজারায় অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট সংলগ্ন খালি জায়গার হাটটিতে সর্বোচ্চ দরদাতা দুই প্রতিষ্ঠানকে ইজারা না দিয়ে তৃতীয় সর্বোচ্চ দরদাতা প্রতিষ্ঠানকে ইজারা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। আর এসব অনিয়মের অভিযোগে সোমবার দুপুরে ডিএনসিসি নগর ভবনের সামনে মানববন্ধন করেছে হাটের সর্বোচ্চ দরদাতা ইজারাদার জায়ান এন্টারপ্রাইজ।
মানববন্ধনে তারা অভিযোগ করেন, ‘ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট সংলগ্ন খালি জায়গায় পশুর হাটটিতে জায়ান এন্টারপ্রাইজ সর্বোচ্চ দর দেয়। তবে করপোরেশন পিপিআর আইন ভঙ্গ করে তাকে হাটের ইজারা না দিয়ে তৃতীয় দরদাতাকে ইজারার জন্য নির্ধারণ করেছে।
করপোরেশন সূত্রে জানা যায়, গত ২৯ এপ্রিল ডিএনসিসি এলাকায় ১০টি পশুর হাটের ইজারা বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। এর মধ্যে ৯টি হাটের ইজারার দরপত্র বাক্স গত ১৮ মে উন্মুক্ত করে যাচাই-বাছাই শেষে গত শনিবার খিলক্ষেত মস্তুল সংলগ্ন হাটটি সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে সুরমি এন্টারপ্রাইজকে ১ কোটি ৫১ টাকায় ইজারা দেওয়া হয়। তবে ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট সংলগ্ন খালি জায়গায় পশুর হাটটি সর্বোচ্চ দুই দরদাতাকে না দিয়ে তৃতীয় সর্বোচ্চ দরদাতাকে ইজারা দেয় করপোরেশন।
সম্পত্তি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট সংলগ্ন খালি জায়গায় পশুর হাটটির উন্মুক্ত ইজারায় মোট এগারজন ইজারা দর দাখিল করেন। হাটটির সরকারি মূল্য ছিল ৬৪ লাখ টাকা। আর এতে জায়ান এন্টারপ্রাইজ ২ কোটি ১৭ লাখ টাকা সর্বোচ্চ দর দাখিল করেন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দর দাখিল করেন মেসার্স বিএম এন্টারপ্রাইজ ১ কোটি ৫১ লাখ টাকা। তবে সিটি করপোরেশনের যাচাই-বাছাই কমিটি সর্বোচ্চ দুই দরদাতাকে ইজারা না দিয়ে এস এফ কর্পোরেশনকে ১ কোটি ৪০ লাখ টাকায় ইজারা দেয়। কারণ হিসেবে করপোরেশন উল্লেখ করেছে- প্রতিষ্ঠান দুইটির ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করা হয়নি, এছাড়া ভ্যাট ট্যাক্সও বাকি রয়েছে।
করপোরেশন সূত্র জানায়, ইজারা পাওয়া এস এফ কর্পোরেশনের বিরুদ্ধে চলতি মাসের শুরুতে মিরপুর গাবতলী পশুর হাটের ইজারায় পে-অর্ডার জালিয়াতির প্রমাণ পেয়েছিল ডিএনসিসি। ওই হাটের বিজ্ঞপ্তিতে অংশ নিয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২১ কোটি ৬৫ লাখ টাকা ইজারা দর দেয় প্রতিষ্ঠানটি। তবে ইজারা যাচাই-বাছাইয়ের সময় অগ্রণী ব্যাংকের আগ্রাবাদ শাখা তাদের দুইটি পে–অর্ডারের মধ্যে একটির ৮ কোটি ৫০ লাখ টাকার পে-অর্ডার সঠিক নয় বলে করপোরেশনকে জানায়। কিন্তু পরবর্তী সময়ে পিপিআর অনুযায়ী প্রতারণার অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি করপোরেশন।
এদিকে জায়ান এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান সমকালকে বলেন, ‘পিপিআর নিয়ম অনুযায়ী করপরোশেনর অস্থায়ী পশুর হাটে শুধু জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি দিয়ে একজন ব্যক্তি ইজারায় অংশ নিতে পারেন। তবে আমি আমার প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ইজারায় অংশগ্রহণ করেছি। আমার প্রতিষ্ঠানটির ট্রেড লাইসেন্স নবায়নকৃত আর ভ্যাট ট্যাক্সও নিয়মিত পরিশোধ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, যেখানে অস্থায়ী হাটের ইজারায় সর্বোচ্চ দরদাতার কাগজপত্র নিয়ে সংশয় থাকলে প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে করপোরেশনের যোগাযোগ করার কথা, সেখানে আমি কয়েকবার প্রশাসক, প্রধান নির্বাহী আর প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তারা কাগজপত্রের বিষয়ে কখনই কিছু বলেনি। অথচ গাবতলী পশুর হাটে পে-অর্ডার জালিয়াতি করা প্রতিষ্ঠানটিকে নিয়ম অনুযায়ী ব্লাকলিস্ট না করে তাদেরকে ইজারা দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী আবু সাঈদ মো.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ড এনস স ইজ র য় অ ড এনস স দরদ ত ক অর ড র
এছাড়াও পড়ুন:
না’গঞ্জে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের মানববন্ধন : হুশিয়ারী
বেসরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বাদ দিয়ে শুধুমাত্র সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দিয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের জারি করা প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবিতে নারায়ণগঞ্জে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকরা। সমাবেশ শেষে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেয়া হয়।
বুধবার (৩০ জুলাই) সকাল ১১টায় নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সিদ্ধিরগঞ্জ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঐক্য পরিষদ আয়োজিত এই কর্মসুচিতে সিদ্ধিরগঞ্জের দেড় শতাধিক কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষক, ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা অংশ নেয়। শিক্ষার্থীদের হাতে " প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা ২০২৫ এ বৈষম্য কেন? শিক্ষা উপদেষ্টা জবাব চাই" সহ বিভিন্ন স্লোগান সম্বলিত প্লেকার্ড শোভা পায়।
সিদ্ধিরগঞ্জ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঐক্য পরিষদের সভাপতি মজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা বিল্লাল হোসেন রবিন, ঢাকা কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশনের সভাপতি জি এইচ ফারুক, বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন পরিচালক ঐক্য পরিষদের সভাপতি মো: সামসুজ্জামান, প্রধান সমন্বয়ক মো: সাইফুল ইসলাম রুবেল, মহাসচিব মো: সাখাওয়াত হোসেন খান, সিদ্ধিরগঞ্জ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফ হোসেন ঢালী, শিক্ষক কাওসার আহমেদ, এসএম বিজয়, আল মামুন , তরিকুল ইসলাম, বাহাউদ্দিন সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, গত ১৭ জুলাই প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের জারি করা প্রজ্ঞাপনে শুধুমাত্র সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ রাখা হয়েছে। এতে দীর্ঘদিন ধরে এই পরীক্ষায় অংশ নেওয়া বেসরকারি, কিন্ডারগার্টেন ও এমপিও-বহির্ভূত বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত ও হতাশ হয়েছে।
বক্তারা আরও বলেন, “আজকের শিশু আগামীর ভবিষ্যৎ। অথচ কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত কোমলমতি শিশুদের বৃত্তি পরীক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করে তাদের মৌলিক অধিকার হরণ করা হচ্ছে।”
তারা বলেন, দেশের প্রায় ৬০ হাজার কিন্ডারগার্টেনে প্রায় এক কোটি শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে, যাদের একটি বড় অংশ দীর্ঘ প্রস্তুতি নিয়ে বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের আশায় এগিয়ে এসেছে। এখন এই সিদ্ধান্ত তাদের স্বপ্ন ও শ্রমের প্রতি অবিচার।
বক্তারা অভিযোগ করেন, সরকার বৈষম্যহীন শিক্ষাব্যবস্থা গড়ার অঙ্গীকার করলেও বাস্তবে এই প্রজ্ঞাপন সেই প্রতিশ্রুতির পরিপন্থী। তারা প্রশ্ন তোলেন, “ই আই আই এন নম্বরধারী নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে যদি এসএসসি পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব হয়, তবে কেন নিবন্ধিত কিন্ডারগার্টেন শিক্ষার্থীরা বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে না?”
বক্তারা আরও বলেন ইতোমধ্যেই দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে অভিভাবক, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন, প্রতিবাদ ও স্মারকলিপি প্রদানের মাধ্যমে এই বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।
সমাবেশ থেকে অবিলম্বে প্রজ্ঞাপন বাতিল করে সরকারি ও বেসরকারি সব প্রাথমিক শিক্ষার্থীর জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়। অন্যথায় কঠোর আন্দোলন গড়ে তোরা হবে।
মানববন্ধন ও সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন, ১নং ওয়ার্ড প্রতিনিধি নেজাম উদ্দিন শাহীন, ২নং ওয়ার্ড প্রতিনিধি জাকির উল্লাহ সুজুন, ৩নং ওয়ার্ড প্রতিনিধি মো: আজহারুল ইসলাম, ৫নং ওয়ার্ড প্রতিনিধি মো: শামীম, ৬নং ওয়ার্ড প্রতিনিধি মো: জাবের হোসেন, ৮নং ওয়ার্ড প্রতিনিধি মো: আল আমিন, ১০ নং ওয়ার্ড প্রতিনিধি এড: মো: খোরশেদ আলম প্রমুখ।