প্রধান উপদেষ্টাকে জানানোর পর সিদ্ধান্ত: মন্ত্রিপরিষদ সচিব
Published: 28th, May 2025 GMT
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে জানানোর পর সচিবালয়ে আন্দোলনরত সরকারি কর্মচারীদের দাবি দাওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আবদুর রশীদ।
বুধবার (২৮ মে) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এ এস এম সালেহ আহমেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, “মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে কর্মচারীদের কথা ও গতকালের আলোচনার বিষয়টি জানানো হয়েছে। এখন এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের পক্ষে থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব নয়। তাই তিনি বিষয়টি প্রধান উপদেষ্টার কাছে তুলে ধরবেন। তারপর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসবে।”
সালেহ আহমেদ বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা দেশে ফিরলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বিষয়টি তার কাছে তোলা হবে।”
এরআগে বুধবার (২৮ মে) আন্দোলনরত কর্মচারীদের ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ প্রতাহারের বিষয় নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সঙ্গে বৈঠক করেন সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ পর্যালোচনায় কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত ভূমি সচিব এ এস এম সালেহ আহমেদ।
এদিকে কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের নেতারা জানিয়েছেন, তারা ভূমি মন্ত্রণালয় সিনিয়র সচিবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সঙ্গে বৈঠকের আপডেট জানবেন। এরপর তারা তাদের পরবর্তী কর্মসূচি জানাবেন।
চার ধরনের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অপরাধের জন্য বিভাগীয় মামলা ছাড়াই শুধুমাত্র কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে চাকরিচ্যুত করা যাবে। এমন বিধান রেখে ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করা হয়।
গত ২২ মে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় অধ্যাদেশটির খসড়া অনুমোদনের পর গত শনিবার (২৪ মে) থেকেই কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আইনটি প্রত্যাহারের দাবিতে সচিবালয়ে বিক্ষোভ করে আসছিলেন। এরপর সচিবালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সবগুলো সংগঠন সম্মিলিতভাবে মঙ্গলবার পর্যন্ত বিক্ষোভ চালিয়ে যায়। তারা এই অধ্যাদেশটিকে নিবর্তনমূলক ও কালো আইন হিসেবে অবহিত করছেন।
তারা টানা আন্দোলনের এক পর্যায়ে মঙ্গলবার সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ পর্যালোচনায় কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত ভূমি সচিব এ এস এম সালেহ আহমেদের আশ্বাসে কর্মসূচি স্থগিত করেন।
মঙ্গলবার ভূমি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে কর্মচারী নেতাদের সঙ্গে ভূমি সচিব এ এস এম সালেহ আহমেদের সভাপতিত্বে বৈঠক হয়। সভায় আরও পাঁচজন সচিব অংশ নেন। এছাড়া সচিবালয়ে আন্দোলনরত কর্মচারীদের বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা সভায় যোগ দেন।
সভায় সিদ্ধান্ত হয়, সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ বাতিলে আন্দোলনরত কর্মচারীদের দাবির বিষয়টি বুধবার মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে জানাবেন সচিবেরা। এরপর সরকার এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। বৈঠক শেষে উভয়পক্ষ প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান।
বৈঠকের বিষয় তুলে ধরে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এ এস এম সালেহ আহমেদ বলেন, “আমরা কয়েকজন সচিব বসে তাদের (আন্দোলনকারী) বক্তব্য শুনেছি। আসলে আমরা উভয়পক্ষই সরকারের কর্মচারী। সরকার একটা আইন করেছে। তারা এ বিষয়ে সংক্ষুব্ধ হয়েছে। আইনটি বাতিল চেয়েছে। আমরা তাদের দাবির সারাংশ বুধবার (২৮ মে) মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে উপস্থাপন করব। পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে সরকার।”
তিনি বলেন, “আলোচনার স্বার্থে আন্দোলনকারীরা তাদের কর্মসূচি স্থগিত করেছেন।”
এসময় আন্দোলনকারীদের পক্ষে সচিবালয় কর্মকর্তা কর্মাচরী সংযুক্ত পরিষদের মহাসচিব নিজাম উদ্দিন আহমেদ জানান, তারা কমিটির প্রধানের আশ্বাসে আপাতত আন্দোলন স্থগিত করেছেন। তবে বুধবার পরবর্তী করণীয় জানাবেন।
সচিবালয়ে কর্মচারীদের লাগাতার আন্দোলনের মধ্যে মঙ্গলবার সকালে মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশিদ বেশ কয়েকজন সচিবকে নিয়ে জরুরি সভা করেন। ওই সভায় সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ পর্যালোচনায় কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। সেই সভা থেকেই কর্মচারী নেতাদের সঙ্গে কথা বলতে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এ এস এম সালেহ আহমেদকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
রোববার (২৫ মে) সন্ধ্যায় চার ধরনের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অপরাধের জন্য বিভাগীয় মামলা ছাড়াই শুধুমাত্র কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে চাকরিচ্যুত করা যাবে এমন বিধান রেখে ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করা হয়।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপদ ষ ট সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
গাজায় পাগলের মতো বোমা ফেলছে ইসরায়েল
গাজা শহর দখলের লক্ষ্যে বৃহৎ পরিসরে অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। ইসরায়েলি হামলার মুখে হাজার হাজার পরিবার গাজা শহর থেকে পালানোর চেষ্টা করছে। মঙ্গলবার বিবিসি এ তথ্য জানিয়েছে।
শহরের শেখ রাদওয়ান পাড়ার তিন সন্তানের জননী ৩২ বছর বয়সী লিনা আল-মাঘরেবি বিবিসিকে জানিয়েছেন, বিপদ সত্ত্বেও তিনি তার বাড়ি ছেড়ে যেতে অনিচ্ছুক ছিলেন। তবে একজন ইসরায়েলি অফিসার ফোন দিয়ে তাকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
রাদওয়ান বলেন, “স্থানচ্যুতির খরচ এবং একটি তাঁবুর খরচ মেটাতে আমাকে আমার গয়না বিক্রি করতে বাধ্য করা হয়েছিল। খান ইউনিসে পৌঁছাতে আমাদের ১০ ঘন্টা সময় লেগেছিল এবং আমরা যাত্রার জন্য তিন হাজার ৫০০ শেকেল (৭৩৫ পাউন্ড) দিয়েছিলাম। গাড়ি এবং ট্রাকের লাইন অনেক দীর্ঘ।”
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, গাজা শহরে একটি ‘শক্তিশালী অভিযান’ শুরু করা হয়েছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী আল-রশিদ উপকূলীয় সড়ককে বেসামরিক নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য একমাত্র অনুমোদিত পথ হিসেবে মনোনীত করেছে। অনেকেই তীব্র যানজট, গাড়ি ও ট্রাকের অবিরাম সারি এবং দীর্ঘ বিলম্বের বর্ণনা দিয়েছেন। সেখানে পরিবারগুলো রাস্তার ধারে আটকা পড়ে আছে এবং আকাশে বিমান হামলা অব্যাহত রয়েছে।
সোমবার রাতভর ইসরায়েলি যুদ্ধবিমানগুলো গাজা শহরজুড়ে ভারী বিমান হামলা চালিয়েছে। কেন্দ্রীয় আল-দারাজ পাড়া, পশ্চিমে সৈকত শরণার্থী শিবির এবং উত্তরে শেখ রাদওয়ানে ঘনীভূত বোমাবর্ষণ করেছে। এই হামলাগুলোর সাথে কামান, ড্রোন এবং হেলিকপ্টার গানশিপ তৎপরতাও ছিল।
ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনী জানিয়েছে, তারা তাদের আক্রমণের ‘পরবর্তী পর্যায়ে’ গাজা শহরে ‘ধীরে ধীরে’ অগ্রসর হচ্ছে। বিমান এবং স্থল বাহিনী সামরিক অভিযানের এই পরবর্তী পর্যায়ে অংশ নেবে।
বাসিন্দারা রাতভর হামলাগুলোকে ‘নরক’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
গাজার উত্তরাঞ্চল থেকে বাস্তুচ্যুত বাসিন্দা গাজি আল-আলৌল বিবিসিকে বলেন, “ঘন্টা ধরে বোমাবর্ষণ উন্মাদনাপূর্ণ এবং সেনাবাহিনী এলাকার বেশ কয়েকটি আবাসিক ভবন ভেঙে ফেলার হুমকি দিচ্ছে।”
ঢাকা/শাহেদ