ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়ক দিয়ে প্রতিদিন উত্তরবঙ্গসহ আশপাশের ২৩ জেলার ২২-২৫ হাজার যানবাহন চলাচল করে। কয়েকদিন পরই ঈদুল আজহা। এই মহাসড়ক দিয়ে কয়েক লাখ মানুষ বাড়ি ফিরবেন। তবে, এবার ঈদের আগে যাত্রী ও বাস চালকদের মধ্যে ডাকাত আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।  

গত ২০ মে রাতে মহাসড়কে আল ইমরান পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি হয়। এ সময় ডাকাতরা যাত্রীদের জিম্মি করে লুটপাট চালায়। করা হয় শ্লীলতাহানি। ফলে, এই মহাসড়কে যাত্রী ও বাস চালকদের মধ্যে আতঙ্ক বাড়ছে।

এরইমধ্যে গত সোমবার মধ্যরাতে ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কের এলেঙ্গা থেকে টাঙ্গাইল শহরে পরিবার নিয়ে ফেরার সময় ডাকাতের কবলে পড়েন মাসুদ রানা নামে এক যুবক। মোটরসাইকেলে আসা ডাকাতরা তাদের বহনকৃত ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার গতি রোধ করে। দেশীয় অস্ত্র দিয়ে ভয় দেখিয়ে মাসুদ রানার পরিবারের কাছ থেকে নগদ ৩০ হাজার টাকা ও একটি ল্যাপটপ ছিনিয়ে নেয় তারা। এ ঘটনায় মাসুদ রানা মঙ্গলবার (২৭ মে) টাঙ্গাইল সদর থানায় অভিযোগ করেছেন।

আরো পড়ুন:

মোটরসাইকেল আরোহী নিহত, বিক্ষুব্ধ জনতার বাসে আগুন

গাছে অটোরিকশার ধাক্কা, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা ও ব্যবসায়ী নিহত

পরিবহন সংশ্লিষ্টরা জানান, মহাসড়কের টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা থেকে গোলচত্বর পর্যন্ত এবং মির্জাপুরের পাকুল্যা থেকে টাঙ্গাইল শহরের রাবনা বাইপাস পর্যন্ত ডাকাতি হচ্ছে। দুইটি স্থান অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। ডাকাতি রুখতে প্রশাসনকে আরো কঠোর হতে হবে। কিছুদিন পর পর মহাসড়কে ডাকাতির ঘটনা ঘটছে। এ কারণে করে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। 

সোমবার রাতের ঘটনার ভুক্তভোগী মাসুদ রানা বলেন, ‍“ঈদকে ঘিরে ডাকাতরা সক্রিয় হতে শুরু করেছে। এ বিষয়ে প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানো জরুরি।”

বগুড়াগামী বাসের চালক আজগর আলী বলেন, “টেলিভিশন ও ফেসবুকে দেখতে পাচ্ছি, এই মহাসড়কে ডাকাতি হচ্ছে। আমরা আতঙ্কের মধ্যে থাকি। এখন মানুষের নিরাপত্তা খুবই কম। রাতে ও দিনে সড়ক-মহাসড়কে ছিনতাই ও ডাকাতি হচ্ছে। মহাসড়কে আরো জোরালোভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে প্রশাসনকে।”

যাত্রী হেলেনা বেগম বলেন, “ঈদে যেন আমরা নির্বিঘ্নে বাড়ি পৌঁছাতে এবং ফিরে আসতে পারি এজন্য যা করার তার সবকিছুই করতে হবে সরকারকে।”

বাস চালক ইকবাল হোসেন বলেন, “ডাকাতরা যাত্রী বেশে বাসে ওঠে। কে ডাকাত ও সাধারণ যাত্রী তা বোঝা যায় না। মহাসড়ক ফাঁকা পেলেই ডাকাতি শুরু হয়। সব মিলিয়ে আমরা আতঙ্কে রয়েছি।”

টাঙ্গাইল জেলা বাস কোচ মিনিবাস মালিক সমিতির সাবেক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক শফিকুর রহমান শফিক বলেন, “ডাকাতদের বিরুদ্ধে পুলিশকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। টহল কার্যক্রম বৃদ্ধি করা হলে ডাকাতি রোধ করা সম্ভব। মালিক সমিতি প্রশাসনকে সার্বিক সহযোগিতা করবে।”

জেলা বাস কোচ মিনিবাস মালিক সমিতির সাবেক সভাপতি খন্দকার ইকবাল হোসেন বলেন, “ডাকাতি প্রতিরোধে প্রতিটি বাসের সব যাত্রীদের ছবি তুলে রাখার জন্য আমরা প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছি। ডাকাতির ঘটনা ঘটলেও ভিডিও বা ছবিগুলো ডাকাত ধরার ক্ষেত্রে কাজে আসবে।”

গোড়াই হাইওয়ে থানার ওসি জসিম উদ্দিন বলেন, “ডাকাতি প্রতিরোধে মহাসড়কে হাইওয়ে পুলিশের টহল কার্যক্রম বৃদ্ধি করা হয়েছে। আগের তুলনায় নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। রাতে যেসব এলাকায় আলো কম থাকে সেসব স্থানে টহল জোরদার করা হয়েছে।”

পুলিশ সুপার মো.

মিজানুর রহমান বলেন, “মহাসড়কে পুলিশের টহল কার্যক্রম বৃদ্ধি করা হয়েছে। যাত্রীরা যাতে নিরাপদে বাড়িতে পৌঁছাতে পারেন, সে বিষয়ে আমরা চেষ্টা করছি।”

ঢাকা/কাওছার/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সড়ক পর বহন ন বল ন আতঙ ক

এছাড়াও পড়ুন:

ইউক্রেনকে টমাহক দেওয়ার বিষয়ে ট্রাম্প কী ভাবছেন

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গতকাল রোববার বলেছেন, তিনি আপাতত এমন কোনো চুক্তির কথা ভাবছেন না, যা ইউক্রেনকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবহারের জন্য দূরপাল্লার টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র পেতে সহায়তা করবে।

পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর কাছে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র বিক্রির মার্কিন পরিকল্পনা নিয়েও ট্রাম্প অনাগ্রহ প্রকাশ করেছেন। কারণ, এসব দেশ পরে ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ইউক্রেনকে দিতে পারে। বিষয়টি নিয়ে ট্রাম্পের ভাষ্য হলো, তিনি যুদ্ধকে আরও তীব্র করতে চান না।

মার্কিন প্রেসিডেন্টকে বহনকারী উড়োজাহাজ এয়ার ফোর্স ওয়ানে বসে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ট্রাম্পের সবশেষ এ মন্তব্য থেকে বোঝা যায়, ইউক্রেনকে টমাহক দিতে তিনি এখনো অনিচ্ছুক।

যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার পাম বিচ থেকে ওয়াশিংটনে ফেরার পথে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ট্রাম্প। সাংবাদিকেরা ট্রাম্পের কাছে জানতে চান, তিনি কি ক্ষেপণাস্ত্র বিক্রির বিষয়টি বিবেচনা করছেন?

জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘না, আসলে তা নয়।’ তবে তিনি যোগ করেন, ভবিষ্যতে নিজের মত বদলাতে পারেন।

গত ২২ অক্টোবর হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করেন ন্যাটো মহাসচিব মার্ক রুত্তে। বৈঠকে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহের ধারণা নিয়ে আলোচনা হয়।

গত শুক্রবার মার্ক রুত্তে বলেন, বিষয়টি এখনো পর্যালোচনার পর্যায়ে আছে। সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব যুক্তরাষ্ট্রের।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি দীর্ঘদিন ধরে ওয়াশিংটনের কাছে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র চেয়ে আসছেন। তবে ক্রেমলিন সতর্ক করে বলেছে, ইউক্রেনকে টমাহক দেওয়া হলে পরিণতি ভালো হবে না।

আরও পড়ুনটমাহক কত দূরে আঘাত হানতে পারে, রাডারে কেন ধরা পড়ে না২০ ঘণ্টা আগে

দ্য গার্ডিয়ান ও সিএনএনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, টমাহক যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি দূরপাল্লার ক্রুজ মিসাইল, যা যুদ্ধজাহাজ বা সাবমেরিন থেকে ছোড়া হয়।

ভূপৃষ্ঠে নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে অত্যন্ত নিখুঁতভাবে আঘাত হানতে পারে টমাহক। নিচু উচ্চতায় ওড়ে বলে টমাহক রাডারে ধরা পড়ে না। এতে আছে উন্নত জিপিএস ও নেভিগেশন ব্যবস্থা।

যুক্তরাষ্ট্রের একটি যুদ্ধজাহাজ থেকে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হচ্ছে

সম্পর্কিত নিবন্ধ