ফরিদপুরে যৌতুক না পেয়ে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামী আসাদুজ্জামান বাচ্চু শেখ (৪০) নামে এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে ৫০ হাজার টাকা জরিমানারও আদেশ দেওয়া হয়। তবে তিনি উচ্চ আদালতে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবেন বলে জানানো হয়েছে।

আজ বুধবার দুপুর ১টায় ফরিদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক শামীমা পারভীন রায় প্রদান করেন।

রায় ঘোষণার সময় আসামি আসাদুজ্জামান ওরফে বাচ্চু শেখ উপস্থিত ছিলেন। তিনি রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার কানাই মাতুব্বর পাড়ার ছাত্তার শেখের ছেলে।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ২৬ অক্টোবর ফরিদপুর জেলা সদরের দ্বিরাজতুল্লাহ মাতুব্বরের ডাঙ্গী এলাকার এমবিএ নামক একটি মুরগির খামারের ঘর থেকে শান্তার মরদেহ উদ্ধার করেন কোতোয়ালী থানা পুলিশ। স্বামী-স্ত্রী দুজনেই ওই খামারে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। ঘটনার পর স্বামী বাচ্চু শেখ ওই খামার থেকে পালিয়ে যান। এর দু’দিন পর কোতোয়ালী থানায় বাচ্চু শেখকে একমাত্র আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের মা জরিনা বেগম।

আদালত ও এজাহার সূত্রে জানা যায়, বিয়ের পর থেকে যৌতুকের জন্য শান্তাকে বিভিন্ন সময় নির্যাতন করে আসছিল স্বামী আসাদুজ্জামান বাচ্চু শেখ। একপর্যায়ে শান্তাকে ডিভোর্সও দিয়ে দেন। কিছুদিন পর নিজের ভুল হয়েছে বলে ক্ষমা চেয়ে শান্তাকে পুনরায় বিয়ে করেন। এরপর তারা ওই মুরগির খামারে কাজ করা শুরু করেন। কিন্তু যৌতুকের জন্য পুনরায় বিভিন্ন সময় নির্যাতন চালাতে থাকেন।

মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, ২০২২ সালের ২৫ অক্টোবর আসামি তাকে ফোন করে জানান তার মেয়ে খুব অসুস্থ। এরপর রাতে আর ফোন রিসিভ না করলে পরেরদিন ওই এলাকায় এসে তালাবদ্ধ ঘরে তার মেয়ের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন। পরে পুলিশ গিয়ে মরদেহটি উদ্ধার করেন।

ঘটনার পর আসামি পালিয়ে গেলেও ২০২৩ সালের ২৫ মার্চ তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ এবং একই বছরের ১৬ জুলাই আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক সুজন বিশ্বাস ও জাহাঙ্গীর আলম।

রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী গোলাম রব্বানী ভুঁইয়া রতন বলেন, ১০ জনের সাক্ষ্যর ভিত্তিতে মামলাটি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় বিজ্ঞ বিচারক মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন। আমরা এই আদেশে সন্তোষ প্রকাশ করছি। এই রায়ের মধ্য দিয়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হয়েছে যে- যৌতুকের দাবিতে নির্যাতন ও হত্যা করে পার পাওয়া যাবে না।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ত র ক হত য

এছাড়াও পড়ুন:

শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন তিন বছর ধরে আয়নাঘরে ছিলেন, দাবি আইনজীবীর

শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইনের আইনজীবী আদালতে দাবি করেছেন, ২০২২ সালের পর থেকে সুব্রত বাইন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে ছিলেন। ছাত্র–জনতার গণ–অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাঁকে নারায়ণগঞ্জের ভূলতায় ফেলে চলে যান।

ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে আজ বুধবার বিকেলে সুব্রত বাইনের রিমান্ড শুনানিতে এসব কথা বলেন তাঁর আইনজীবী মোহাম্মদ বাদল মিয়া।

আইনজীবী বাদল মিয়া আরও বলেন, সুব্রত বাইনকে গত বছরের ৫ আগস্ট ভূলতায় ফেলে যাওয়ার পর তাঁর মক্কেল ভয় পেয়ে যান। তিন বছর ধরে আয়নাঘরে নির্যাতিত হওয়ার তথ্য জানাতে সংবাদ সম্মেলন করার কথাও ভেবেছিলেন; কিন্তু জীবন বাঁচাতে শেষ পর্যন্ত সুব্রত বাইন ওই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন।

সুব্রত বাইনকে ২০২২ সালে ভারত সরকার বাংলাদেশে পাঠিয়েছিল বলে আদালতে দাবি করেন তাঁর এই আইনজীবী।

২০০১ সালে তৎকালীন সরকার ২৩ জনকে শীর্ষ সন্ত্রাসী উল্লেখ করে একটি তালিকা প্রকাশ করে ছিল। সেই তালিকায় সুব্রত বাইনের নাম ছিল।

সুব্রত বাইনে ‘মিডিয়ার সৃষ্টি’ দাবি করে আদালতে আইনজীবী মোহাম্মদ বাদল মিয়া বলেন, তাঁর মক্কেল নিরপরাধ। তিনি অসুস্থ।

রাষ্ট্রপক্ষ থেকে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী আদালতকে বলেন, সুব্রত বাইন ও মোল্লা মাসুদ তালিকাভূক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী। তাঁদের বিরুদ্ধে হত্যা, চাঁদাবাজিসহ গুরুতর ফৌজদারি অপরাধে জড়িত থাকার প্রমাণ রয়েছে। তাঁদের কাছ থেকে ৫টি বিদেশি পিস্তল, ১০টি ম্যাগাজিন, ৫৩টি গুলি এবং ১টি স্যাটেলাইট ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। মামলার ঘটনার রহস্য উদঘাটনের জন্য তাঁদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি।

উভয়পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত সুব্রত বাইনকে আট দিন এবং আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী মোল্লা মাসুদসহ তিনজনকে ছয় দিন করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন। রিমান্ডপ্রাপ্ত অপর দুই আসামি হলেন মোল্লা মাসুদের সহযোগী শুটার আরাফাত ও শরীফ।

এর আগে সুব্রত বাইনসহ চারজনকে কড়া পুলিশ পাহারায় বিকেল সাড়ে তিনটার পর হাজতখানা থেকে আদালত কক্ষে তোলা হয়। কাঠগড়ায় তোলার পর সুব্রত বাইনসহ অন্যদের পরানো হেলমেট খুলে দেওয়া হয়। সাংবাদিকদের দেখার পর সুব্রত বাইন বলতে থাকেন, সংবাদকর্মীরা তাঁর বিরুদ্ধে মনগড়া কাহিনি লিখে যাচ্ছেন বহু বছর ধরে। তিনি এর কোনো প্রতিবাদ করেননি। বাস্তব কাহিনি সাংবাদিকেরা জানেন না বলেও দাবি করেন সুব্রত বাইন।

মোল্লা মাসুদেরও তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ বুধবার বিকেলে ঢাকার সিএমএম আদালত প্রাঙ্গণে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিএনপি নেতা ইশরাকের গাড়িবহরে হামলার মামলায় আওয়ামী লীগ নেতা গিয়াস রিমান্ডে
  • কুষ্টিয়ায় সুদ মওকুফের নামে ব্যাংকের ৩৫ লাখ টাকা লোপাট
  • মেজর (অব.) সিনহা হত্যা মামলায় ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের ওপর রায় ২ জুন
  • শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন তিন বছর ধরে আয়নাঘরে ছিলেন, দাবি আইনজীবীর
  • ফরিদপুরে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড
  • এমএফএসের মাধ্যমে ২০২২ সালে ৭৫,০০০ কোটি টাকা পাচার: টিআইবি
  • সড়কের মান উন্নয়নে ৪৫১ কোটি টাকা ব্যয়ে অনুমোদন
  • সৈয়দপুরে মরুর প্রাণী দুম্বার খামার, কোরবানি ঘিরে চাহিদা বাড়ার প্রত্যাশা
  • তালিকায় কৃষকের নাম নেই যন্ত্রেরও খোঁজ নেই