সড়কে ছিনতাই-ডাকাতি রোধে পৌর প্রশাসক-ওসির উদ্যোগ
Published: 28th, May 2025 GMT
গাজীপুরে কালীগঞ্জ-টঙ্গী-ঘোড়াশাল আঞ্চলিক সড়ক দীর্ঘদিন ধরেই ভীতিকর হয়ে উঠেছে স্থানীয় মানুষ ও পরিবহন চালকদের কাছে। বিশেষ করে রাতের বেলা সড়কের নির্জন ও অন্ধকারাচ্ছন্ন ঝোপে ওঁৎপেতে থাকত ছিনতাইকারী ও ডাকাত দলের সদস্যরা। চলন্ত গাড়িতে ঢিল ছুড়ে কিংবা কৌশলে চাকা পাংচার করে গাড়ি থামাতে বাধ্য করে, মুহূর্তেই চালক ও যাত্রীদের সর্বস্ব লুটে নিতো তারা।
এই চিত্র পাল্টাতে এবার সক্রিয় হয়েছে কালীগঞ্জ পৌর প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগ। কালীগঞ্জ পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার তনিমা আফ্রাদ এবং থানার অফিসার ইনচার্জ মো.
সড়কে যাতায়াতকারী চালকেরা জানান, রাতের অন্ধকারে হঠাৎ ঝোপ থেকে ঢিল ছোড়া হয় গাড়ি লক্ষ্য করে। এভাবে অনেক ডাকাতির ঘটনা এ সড়কে ঘটেছে।
মোহাম্মদ হোসেন আলী নামে এক প্রাইভেট কার চালক বলেন, ‘‘ছুরি ঠেকিয়ে মোবাইল, মানিব্যাগ, এমনকি গাড়ির যন্ত্রাংশ পর্যন্ত খুলে নিয়ে গেছে- এমন ঘটনাও ঘটেছে। এ সময় প্রতিরোধ করতে গিয়ে অনেকে আহত হয়েছেন।’’
সড়কের পাশে বসবাসকারী স্থানীয়রা জানান, প্রায় রাতেই কেউ না কেউ ডাকাতের কবলে পড়ে তাদের বাড়িতে ছুটে আসে। তখন তারা সাধ্যমত তাদের সহযোগিতা করেন। কিন্তু প্রতিকারের উপায় না থাকায় তারা বরাবরই অসহায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, ‘‘আমাদের বাড়ির সামনে অনেকবারই এমন ঘটনা ঘটেছে। আমরা নিজেরাও আতঙ্কে থাকি। তবে এই ঝোপঝাড় পরিষ্কারের উদ্যোগ ভালো। এতে অন্তত নিরাপত্তা কিছুটা ফিরবে।’’
ঝোপঝাড় পরিষ্কারে নিয়োজিত পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা জানান, তারা অভিযানের সময় মোটা রড, লোহার লাঠি, টর্চলাইট পেয়েছেন, যা স্পষ্টতই ছিনতাইকারীদের ব্যবহৃত অস্ত্র ও সরঞ্জাম। এসব দেখে বোঝা যায়, এই এলাকাগুলো পূর্বপরিকল্পিত অপরাধের ঘাঁটি।
স্থানীয় মানুষ ও চালকেরা প্রশাসনের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। তারা বলছেন, শুধু ঝোপ পরিষ্কার নয়, নিয়মিত টহল, পর্যাপ্ত সড়কবাতি, সিসিটিভি স্থাপন করলে সড়কটি আরও নিরাপদ হবে।
কালীগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ আলাউদ্দিন বলেন, ‘‘সন্ত্রাসীদের দমন করতে হলে আগে তাদের লুকিয়ে থাকার জায়গা ধ্বংস করতে হবে। ঝোপঝাড় পরিষ্কার করা আমাদের প্রথম ধাপ। আমরা রাতে টহলও বাড়াচ্ছি। সড়কজুড়ে সিসি ক্যামেরা বসানোর ব্যাপারেও পরিকল্পনা রয়েছে।’’
উপজেলা নির্বাহী অফিসার তনিমা আফ্রাদ বলেন, ‘‘এটি শুধু পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান নয়, এটি জননিরাপত্তার সঙ্গে সরাসরি জড়িত। স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ ও পৌর কর্তৃপক্ষ একসাথে কাজ করে এই সড়ক নিরাপদ করে তুলতে চায়। আমরা ভবিষ্যতেও এ ধরনের অভিযানের ধারাবাহিকতা বজায় রাখব।’’
ঢাকা/তারা//
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
দায়িত্ব ছাড়ছেন ট্রাম্পের ‘ঘনিষ্ঠজন’ ইলন মাস্ক
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘ঘনিষ্ঠজন’ হিসেবে পরিচিত ধনকুবের ইলন মাস্ক মার্কিন প্রশাসনে তাঁর বিশেষ দায়িত্ব ছাড়ছেন। হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা স্থানীয় সময় বুধবার গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। ওই কর্মকর্তা জানান, ইলন মাস্ক প্রশাসন ছেড়ে যাচ্ছেন। দ্রুতই এ প্রক্রিয়া শুরু হবে।
ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণায় বিশ্বের শীর্ষ ধনী এবং টেসলা ও স্পেসএক্সের প্রধান ইলন মাস্ক জোরালো ভূমিকা রেখেছিলেন। তিনি নির্বাচনে সবচেয়ে বড় অনুদানদাতাও ছিলেন। তাঁর সঙ্গে প্রেসিডেন্টের ঘনিষ্ঠতা সব মহলে আলোচনার কেন্দ্রে থেকেছে। রয়টার্স জানায়, গত মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করেন মাস্ক। তিনি লেখেন, ট্রাম্প প্রশাসনের ‘সরকারি দক্ষতা বিভাগে’র (ডোজ নামে পরিচিত) অংশ হিসেবে তাঁর বিশেষ সরকারি কর্মকর্তার দায়িত্ব শেষ হয়ে আসছে।
গত জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর ট্রাম্প তাঁর নতুন প্রশাসনে ইলন মাস্ককে যুক্ত করেন। তাঁকে নবগঠিত ডোজের দায়িত্ব দেওয়া হয়। নতুন এ বিভাগের কাজ যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যয় ও কর্মিবহর কমানো।
বিবিসি জানায়, ইলন মাস্কের দায়িত্ব ছিল সাময়িক। তাই এ বিদায় কোনো অপ্রত্যাশিত ঘটনা নয়। বিশেষ সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে তাঁর সরকারি দায়িত্বের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা আগামী ৩০ মে। ১৩০ দিনের মেয়াদে তিনি দায়িত্বে এসেছিলেন। তবে ট্রাম্প প্রশাসন জানিয়েছে, ফেডারেল সরকারকে পুনর্গঠন ও ব্যয়-কর্মী কমাতে ডোজের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। মাস্ক বলেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ডোজের কার্যক্রম আরও জোরদার হবে। সরকারের মাধ্যমে এটা জীবনের অংশ হয়ে উঠবে।
দ্য নিউইয়র্ক টাইমস লিখেছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অভ্যন্তরীণ নীতি নিয়েও সমালোচনা করেছেন মাস্ক। এতে মূল্যস্ফীতি বাড়বে বলেও তিনি সতর্ক করেন। মধ্যপ্রাচ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা-সংক্রান্ত তথ্যকেন্দ্র স্থাপনের চুক্তি প্রতিদ্বন্দ্বী কোম্পানির হাতে চলে যাওয়া নিয়েও তিনি ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সমালোচনা করেন।
এক সময় মাস্ককে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ’ মনে করা হতো। তবে এখন তাদের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে। ইলন মাস্ক জানান, নিজের কোম্পানিগুলোকে বেশি সময় দিতেই তিনি সরকারি দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন।