বাংলাদেশে কখন নির্বাচন হবে, সে বিষয়ে দিল্লির কোনো প্রেসক্রিপশন (ব্যবস্থাপত্র) কাজ করবে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। তিনি বলেছেন, দিল্লির কথায় বাংলাদেশে কোনো দল যদি রাজপথ দখলের চেষ্টা করে, তাহলে ১৮ কোটি জনতা তাদের ঠেকিয়ে দিতে প্রস্তুত থাকবে।

বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে এক অনুষ্ঠানে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী এসব কথা বলেন। এনসিপির প্রকৌশল উইংয়ের আত্মপ্রকাশ উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘ভারতীয় একজন বক্তব্য দিয়েছেন, ডিসেম্বরে নাকি বাংলাদেশে নির্বাচন হতে হবে। বাংলাদেশে কখন নির্বাচন হবে, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে বাংলাদেশের জনগণ। সে বিষয়ে দিল্লির কোনো প্রেসক্রিপশন বাংলাদেশে কাজ করবে না। আর দিল্লির কথায় বাংলাদেশে কোনো দল যদি রাজপথ দখলের চেষ্টা করে, দিল্লির কোনো প্রেসক্রিপশন বাস্তবায়নে যদি কোনো দল বা ব্যক্তি বাংলাদেশে কাজ শুরু করে,  তাহলে বাংলাদেশের ১৮ কোটি জনতা যেভাবে ৫ আগস্টে নেমে এসেছিল, (সেভাবে) তারা ভবিষ্যতে রাজপথে নেমে এসে দিল্লি এবং দিল্লির প্রেসক্রিপশনে যারা কাজ করছে, তাদের ঠেকিয়ে দিতে প্রস্তুত থাকবে।’

কোনো রাজনৈতিক দলের নাম উল্লেখ না করে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন অফিসকে দলীয় অফিসে পরিণত করে সেখান থেকে তারা চট্টগ্রামের মেয়র নিল এবং ঢাকাতেও তারা এ ধরনের একটি গেজেট প্রকাশ করল। আমরা তাদের কাছে আহ্বান জানাব, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় উত্তরণের কাঠামোগত জায়গায় সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হলো নির্বাচন কমিশন। এই নির্বাচন কমিশন তাদের লিটমাস টেস্ট বা পরীক্ষায় ফেল করেছে। তারা যে দলীয় এজেন্ডা বাস্তবায়নে তৎপর হয়েছে, সেটা আমরা ইশরাক হোসেনের গেজেট প্রকাশের মধ্য দিয়ে দেখলাম।’

নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘তারা আইন-আদালতে গিয়ে জবরদস্তি করে আমাদের বিচারালয়কে যেভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে, তা–ও বাংলাদেশের ইতিহাসে লেখা থাকবে। আমরা গণ-অভ্যুত্থানের পরে কোনো বিভেদ চাই না। কিন্তু কেউ যদি গুন্ডামি-মাস্তানি করে, সন্ত্রাস করে, নগর ভবন দখল করে রাখে, নির্বাচন অফিসকে দলীয় অফিসে পরিণত করে, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন দখল করে রাখে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দখল করে রাখে, এসব গুন্ডামি আর বাংলাদেশে চলবে না৷ যদি গুন্ডামি করতে হয়, তাহলে বাংলাদেশের বাইরে গিয়ে করুন।’

অনুষ্ঠানে এনসিপির প্রকৌশল উইংয়ের কমিটি ঘোষণা করেন নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। এই কমিটিতে শেখ মোহাম্মদ শাহ মঈনকে সমন্বয়ক করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও সদস্যসচিব আখতার হোসেন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব নাহিদা সারোয়ার, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুল্লাহ আল আমিন ছাড়াও প্রকৌশল উইংয়ের নেতারা বক্তব্য দেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন স র দ দ ন প টওয় র অন ষ ঠ ন এনস প র প রক শ র জপথ

এছাড়াও পড়ুন:

জোয়ারে বাঁধে ধস, বিধ্বস্ত দুই সহস্রাধিক ঘর

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে দেশের বেশির ভাগ নদ-নদীর পানি বেড়েছে। এর ফলে দেশের ছয় জেলায় স্বল্পমেয়াদি বন্যা হতে পারে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। গত দুই দিনে ভারী বৃষ্টি ও উচ্চ জোয়ারের কারণে লক্ষ্মীপুর ও কক্সবাজারের দ্বীপ উপজেলা মহেশখালী ও কুতুবদিয়ায় ৭৮টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে দুই লাখের বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

খুলনার কয়রায় কপোতাক্ষ নদের বেড়িবাঁধে ৩০০ মিটার ধসে পড়েছে। ঝোড়ো হাওয়ার কারণে পটুয়াখালী ও কক্সবাজার জেলায় দুই সহস্রাধিক বসতঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। সারা দেশের মতো ঢাকায়ও গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে মুষলধারে বৃষ্টি হয়। এতে নিউমার্কেট, কাজীপাড়া, মিরপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় ভোগান্তি পোহান হাজারো মানুষ।

আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকেই স্থল নিম্নচাপটি সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়। এটি রাত আটটার দিকে শেরপুর জেলা পার হয়ে ভারতের মেঘালয়ের দিকে এগোচ্ছিল।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের জ্যেষ্ঠ আবহাওবিদ মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক গতকাল রাত আটটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, শনিবার রাজশাহী বিভাগ বাদ দিয়ে বাকি সব বিভাগের বিভিন্ন স্থানে বাড়ি থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। লঘুচাপের প্রভাব এবং এর সঙ্গে সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর কারণেই এই বৃষ্টিপাত হতে পারে। গতকাল দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয় চট্টগ্রামে ২২৯ মিলিমিটার।

জোয়ারে লক্ষ্মীপুর ও কক্সবাজারে ৭৮ গ্রাম প্লাবিত

লক্ষ্মীপুর জেলার উপকূলীয় এলাকার অন্তত ৪০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এর ফলে দুর্ভোগে পড়েছেন এসব গ্রামের প্রায় দুই লাখ মানুষ। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এসব গ্রাম প্লাবিত হয়। এদিকে ঝোড়ো হাওয়ায় গাছ উপড়ে লক্ষ্মীপুরের অনেক স্থানে বিদ্যুতের লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে গতকাল সকাল থেকেই বিদ্যুৎহীন পুরো জেলা।

স্থানীয় বাসিন্দা ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় লক্ষ্মীপুর সদরের চর রমনী মোহন; রায়পুর উপজেলার উত্তর চরবংশী, দক্ষিণ চরবংশী; কমলনগর উপজেলার চর মার্টিন, পাটারির হাট, চর কালকিনি, সাহেবের হাট, চর ফলকন; রামগতি উপজেলার আলেকজান্ডার, চর রমিজ, বড়খেরী ও চরগাজী ইউনিয়নের মেঘনা নদীসংলগ্ন অন্তত ৪০টি গ্রামে পানি ঢুকে পড়ে। বাড়িঘরের পাশাপাশি এসব গ্রামের ফসলি জমি, হাটবাজার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হাঁটুপানিতে তলিয়ে যায়।

জোয়ারের পানিতে কপোতাক্ষ নদের বেড়িবাঁধের কিছু অংশ ধসে পড়ে। গতকাল সকালে খুলনার কয়রা উপজেলার হরিণখোলা এলাকায়

সম্পর্কিত নিবন্ধ