Prothomalo:
2025-09-18@03:38:10 GMT

গ্যাস সরবরাহ সংকট কাটছেই না

Published: 31st, May 2025 GMT

দেশে গ্যাসের উৎপাদন নিয়মিত কমছে। ঘাটতি মেটাতে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি বাড়িয়েও পরিস্থিতি সামলানো যাচ্ছে না। চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ তেমন বাড়ছে না। ফলে গ্যাস সরবরাহের সংকট কাটছেই না। বসিয়ে রাখতে হচ্ছে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা। গ্যাস না পেয়ে বিতরণ সংস্থাগুলোতে নিয়মিত অভিযোগ করছেন আবাসিক ও শিল্প খাতের গ্রাহকেরা।

বাংলাদেশ তেল, গ্যাস, খনিজ সম্পদ করপোরেশন (পেট্রোবাংলা) সূত্র বলছে, বর্তমানে দিনে গ্যাসের চাহিদা ৩৮০ কোটি ঘনফুট। ৩০০ কোটি ঘনফুট সরবরাহ পেলে রেশনিং করে (এক খাতে কমিয়ে, আরেক খাতে বাড়ানো) পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হয়। দিনে এখন সরবরাহ হচ্ছে গড়ে ২৭০ কোটি ঘনফুট। বিদ্যুৎ খাতে কমিয়ে সম্প্রতি শিল্পে গ্যাস সরবরাহ বাড়ানো হয়েছে।

দেশীয় গ্যাসক্ষেত্র থেকে উৎপাদন বাড়াতে কূপ খননে জোর দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। যদিও এতে শিগগিরই উৎপাদন বৃদ্ধির তেমন সম্ভাবনা নেই। নতুন তিনটি কূপ থেকে কিছু উৎপাদন বেড়েছে।

দেশে একসময় দিনে ২৭০ কোটি ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন হতো। ২০১৮ সালে উৎপাদন কমতে থাকলে এলএনজি আমদানি শুরু হয়। উৎপাদন কমে এখন ১৮৫ কোটি ঘনফুটে নেমে এসেছে। মূলত এলএনজি আমদানির ওপর সরবরাহ বাড়া-কমা নির্ভর করে। আমদানি করা এলএনজি থেকে ১০৫ কোটি ঘনফুট সরবরাহের পরিকল্পনা পেট্রোবাংলার। ২৫ মে একটি এলএনজি কার্গো জাহাজ আসার কথা ছিল। জাহাজটি ২৮ মে এলেও আবহাওয়ার কারণে এলএনজি খালাসে সময় লাগছে। গত মঙ্গলবার এলএনজি থেকে সরবরাহ করা হয়েছে ৮০ থেকে ৮৫ কোটি ঘনফুট। বৃহস্পতিবার যা ৬০ কোটি ঘনফুটে নেমে আসে। এ ছাড়া দেশীয় গ্যাসক্ষেত্র থেকে উৎপাদন বাড়াতে কূপ খননে জোর দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। যদিও এতে শিগগিরই উৎপাদন বৃদ্ধির তেমন সম্ভাবনা নেই। নতুন তিনটি কূপ থেকে কিছু উৎপাদন বেড়েছে।

গত ২৫ মে ব্যবসায়ীদের শীর্ষস্থানীয় কয়েকটি সংগঠন যৌথ সংবাদ সম্মেলন করে শিল্প খাতে গ্যাস-সংকটের অভিযোগ করেন। এর পরদিন জ্বালানি বিভাগ বিবৃতি দিয়ে বলেছে, গত বছরের চেয়ে শিল্পে এবার বাড়তি গ্যাস সরবরাহ করা হয়েছে। ২৮ মে থেকে শিল্প খাতে দিনে আরও ১৫ কোটি ঘনফুট গ্যাস বাড়তি সরবরাহ করা হবে।

বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ) সূত্রে পাওয়া তথ্য বলছে, আশুলিয়ার লিটল স্টার স্পিনিং মিলের সঙ্গে তিতাসের চুক্তি অনুসারে দিনে ১০ পিএসআই (প্রতি বর্গইঞ্চি) চাপে ঘণ্টায় ৩৭ হাজার ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করার কথা। চাপ কম থাকায় সরবরাহ বাড়ছে না। তাঁরা পাচ্ছেন গড়ে ৯ হাজার ঘনফুট।

তবে কয়েকজন ব্যবসায়ী প্রথম আলোকে বলেছেন, গত বছরও গ্যাসের সংকট ছিল। দেড় মাস ধরে তাঁরা বেশি ভুগছেন। গ্যাসের অভাবে কারখানা চালাতে পারছেন না, সেটাই তাঁদের উদ্বেগের বিষয়। শিল্প খাতে সরবরাহ বাড়ানোর কথা বলা হলেও তাঁরা তেমন উন্নতি দেখছেন না। মঙ্গলবার বেশ কয়েকটি কারখানার গ্যাস সরবরাহের তথ্য সংগ্রহ করা হয় তাঁদের কাছ থেকে। এতে দেখা যায়, পরিস্থিতির তেমন কোনো উন্নতি নেই। বরং কোথাও সরবরাহ আরও কমেছে।

বস্ত্র খাতের লিটল গ্রুপ অব কোম্পানিজের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ খোরশেদ আলম প্রথম আলোকে বলেন, ২০১৪ সালে গ্যাসের সরবরাহ থাকায় ১২৫ কোটি থেকে বাড়িয়ে ৪০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন। এখন গ্যাসের অভাবে কারখানার ৬০ শতাংশ সক্ষমতা বন্ধ আছে। মঙ্গলবার শিল্পে সরবরাহ আরও বাড়ানোর কথা থাকলেও কোথায় বাড়ানো হয়েছে, তা তিনি জানেন না। তাঁর কোনো কারখানায় বাড়েনি।

জানুয়ারিতে দিনে গড়ে ১০ কোটি ঘনফুট, ফেব্রুয়ারিতে ৪ কোটি ঘনফুট ও মার্চে ১২ কোটি ঘনফুট বাড়তি সরবরাহ করা হয়েছে। তবে গত বছরের তুলনায় এবারের এপ্রিলে দিনে গড়ে ১০ কোটি ঘনফুট গ্যাস কম সরবরাহ করা হয়েছে। মে মাসেও আগের বছরের তুলনায় সার্বিক সরবরাহ কমেছে বলে জানা গেছে।

বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ) সূত্রে পাওয়া তথ্য বলছে, আশুলিয়ার লিটল স্টার স্পিনিং মিলের সঙ্গে তিতাসের চুক্তি অনুসারে দিনে ১০ পিএসআই (প্রতি বর্গইঞ্চি) চাপে ঘণ্টায় ৩৭ হাজার ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করার কথা। চাপ কম থাকায় সরবরাহ বাড়ছে না। তাঁরা পাচ্ছেন গড়ে ৯ হাজার ঘনফুট। গত বুধবার বিকেল ৪টা ১৩ মিনিটে চাপ ছিল ২ পিএসআই। অথচ গত ৯ মে চাপ ছিল ৬ পিএসআই। নান্নু স্পিনিংয়ে এদিন সকাল সাড়ে ১০টায় চাপ ছিল ১ পিএসআই। একই সময়ে আনোয়ার গ্রুপের একটি কারখানায় চাপ ছিল ১–এর কম। এনজেড টেক্সটাইলে চাপ ছিল আড়াই পিএসআই। মঙ্গলবার কোনো গ্যাস না পেয়ে কারখানা বন্ধ রাখে ইনটিমেট স্পিনিং মিল।

পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান মো.

রেজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, দেশীয় গ্যাস উৎপাদন কমায় চ্যালেঞ্জ বেড়েছে। প্রতি মাসে বাড়তি এলএনজি জাহাজ কেনা হচ্ছে। তবে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে ঘোষণা অনুযায়ী মঙ্গলবার শিল্পে সরবরাহ বাড়ানো যায়নি। সমুদ্রে নিম্নচাপ পরিস্থিতির উন্নতি হলে সরবরাহ বাড়বে।

গত বছরের চেয়ে কিছুটা বাড়তি সরবরাহ করাটা কোনো যৌক্তিক বিবেচনা নয়। গ্রাহকেরা চাহিদামতো গ্যাস পেলেন কি না, সেটা হলো আসল বিবেচ্য। আসলে জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের কৌশলে কোনো পরিবর্তন আসেনি। এম শামসুল আলম, জ্বালানি উপদেষ্টা, ভোক্তা অধিকার সংগঠন ক্যাব সার্বিক সরবরাহ তেমন বাড়েনি

জ্বালানি বিভাগ থেকে পাঠানো বিবৃতির তথ্য বলছে, গত বছরের তুলনায় এ বছরের প্রথম চার মাসে শিল্পে বাড়তি গ্যাস সরবরাহ করা হয়েছে। যদিও পেট্রোবাংলার দৈনিক গ্যাস উৎপাদন ও সরবরাহ প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, দেশে মোট গ্যাস সরবরাহ তেমন বাড়েনি। গত জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত প্রথম তিন মাস গত বছরের তুলনায় দিনে গড়ে বাড়তি গ্যাস সরবরাহ করা হয়েছে। এর মধ্যে জানুয়ারিতে দিনে গড়ে ১০ কোটি ঘনফুট, ফেব্রুয়ারিতে ৪ কোটি ঘনফুট ও মার্চে ১২ কোটি ঘনফুট বাড়তি সরবরাহ করা হয়েছে। তবে গত বছরের তুলনায় এবারের এপ্রিলে দিনে গড়ে ১০ কোটি ঘনফুট গ্যাস কম সরবরাহ করা হয়েছে। মে মাসেও আগের বছরের তুলনায় সার্বিক সরবরাহ কমেছে বলে জানা গেছে।

ভোর ৬টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত চুলা জ্বালানো যায়। বাকি সময় একটু গ্যাসও থাকে না। এক মাসের বেশি সময় ধরে এই অবস্থা। তিতাসে একাধিকবার অভিযোগ করেও সুরাহা হয়নি।এলিফ্যান্ট রোডের বাসিন্দা কামাল ভূঁইয়া

জ্বালানি খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বিদ্যুৎ খাতে দিনে গ্যাসের চাহিদা ২০৫ কোটি ঘনফুট। এর বিপরীতে এবার সর্বোচ্চ ১০৫ কোটি ঘনফুট সরবরাহ করা হয়। এপ্রিলে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ চাহিদার কথা বিবেচনায় রেখে গ্যাসের সরবরাহ বাড়ানো হয়। এতে করে শিল্প ও আবাসিকে গ্যাসের সংকট তৈরি হয়। এরপর সম্প্রতি বিদ্যুৎ খাতে সরবরাহ কমিয়ে ৯২ কোটি ঘনফুটে নামিয়ে আনা হয়। এর ফলে কম খরচের গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বসিয়ে রেখে বেশি খরচের তেলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র চালাতে হচ্ছে। এতে সরকারের ভর্তুকি বাড়ছে। তবে বিদ্যুৎ খাতে কমানোয় শিল্পে সরবরাহ কিছুটা বাড়লেও আবাসিকে বাড়ানো যাচ্ছে না। এতে করে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকার গ্রাহকেরা রান্নার চুলায় গ্যাস পাচ্ছেন না।

মঙ্গলবার এলিফ্যান্ট রোডের বাসিন্দা কামাল ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, ভোর ৬টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত চুলা জ্বালানো যায়। বাকি সময় একটু গ্যাসও থাকে না। এক মাসের বেশি সময় ধরে এই অবস্থা। তিতাসে একাধিকবার অভিযোগ করেও সুরাহা হয়নি।

তিতাস গ্যাস বলছে, তাদের দিনে চাহিদা ১৯০ কোটি ঘনফুট। এর বিপরীতে পাচ্ছে ১৫২ থেকে ১৫৫ কোটি ঘনফুট। তাই গ্রাহকদের চাহিদামতো গ্যাস সরবরাহ করা যাচ্ছে না।

কারখানা চালাতে হিমশিম

গ্যাসের চাপ ওঠানামায় সংকটে নারায়ণগঞ্জে শিল্পকারখানার উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। সদর উপজেলা ফতুল্লার পঞ্চবটী বিসিক শিল্পনগরীতে অবস্থিত ফেয়ার অ্যাপারেলস লিমিটেডের ডাইং ইউনিটে মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত গ্যাসের চাপ ছিল ১ পিএসআই। বেলা তিনটার দিকে গ্যাসের চাপ বেড়ে হয় ৪ পিএসআই। চাপ বাড়লেও আবার কমে যায়, স্থির থাকে না। প্রতিষ্ঠানের উপমহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মাসুম প্রথম আলোকে জানান, গ্যাসের চাপ কম থাকায় বয়লারে তাপমাত্রা উঠতে সময় লাগছে। এক শিফটে কাপড় ডাইং করতে ১০ ঘণ্টার জায়গায় লাগছে ১৬ থেকে ১৭ ঘণ্টা। এতে উৎপাদন কমে যাচ্ছে।

একই দিনে বিসিকের এমএস ডাইং অ্যান্ড প্রিন্টিং ফিনিশিং লিমিটেডে সকাল ৬টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত গ্যাসের চাপ ছিল শূন্য দশমিক ৮ পিএসআই থেকে ১ পিএসআই। বেলা দুইটার দিকে চাপ আসে ৪ পিএসআই। ফোপ টেক্স লিমিটেড ডাইংয়ে প্রতিদিন উৎপাদন ক্ষমতা ৮ টন। গ্যাস–সংকটের কারণে প্রতিষ্ঠানটিতে উৎপাদন ৩ টনে নেমে গেছে।

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক এলাকার সাদমা গ্রুপের পরিচালক সোহেল রানা বলেন, কয়েক মাস ধরে গ্যাসের সংকট চলে আসছে। গাজীপুরের কাশিমপুর এলাকার একটি পোশাক কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক হজরত আলী বলেন, গ্যাসের চাপ থাকলে কারখানার উৎপাদন খরচ কম হয়। ডিজেল–নির্ভর হওয়ার কারণে উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে।

ভোক্তা অধিকার সংগঠন ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা এম শামসুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, গত বছরের চেয়ে কিছুটা বাড়তি সরবরাহ করাটা কোনো যৌক্তিক বিবেচনা নয়। গ্রাহকেরা চাহিদামতো গ্যাস পেলেন কি না, সেটা হলো আসল বিবেচ্য। আসলে জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের কৌশলে কোনো পরিবর্তন আসেনি।

[প্রতিবেদনে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেছেন মাসুদ রানা, গাজীপুর ও মুজিবুল হক, নারায়ণগঞ্জ]

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সরবর হ ব ড় ন ঘনফ ট গ য স হ জ র ঘনফ ট প রথম আল ক পর স থ ত গ র হক র প এসআই ১০ ক ট সরক র ব যবস আমদ ন

এছাড়াও পড়ুন:

বাংলাদেশ ব্যাংক এক দিনে ২৬ ব্যাংক থেকে ৩৫ কোটি ডলার কিনল কেন

অর্থ পাচার রোধে সরকার কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ায় প্রবাসী আয় ও রপ্তানি আয়—দুটিই বেড়েছে। এতে বাজারে ডলারের সরবরাহ বেড়েছে। সাধারণত এমন পরিস্থিতিতে ডলারের দাম কমে আসার কথা। কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংক ডলার কিনে দাম স্থিতিশীল রাখার চেষ্টা করছে। এর কারণে আজ সোমবার ২৬ ব্যাংক থেকে ৩৫ কোটি ৩০ লাখ ডলার কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আজ ১২১ টাকা ৭৫ পয়সা দামে ডলার কেনা হয়েছে।

ফলে চলতি অর্থবছরে ডলার কেনা দাঁড়িয়েছে ১৭৪ কোটি ৭৫ লাখ ডলার। এর ফলে একদিকে যেমন বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ছে, অন্যদিকে ডলারের দামও ১২০ টাকার ওপরে থাকছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

এখন বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিদিন বাংলাদেশের সঙ্গে যেসব দেশের বেশি বাণিজ্য সম্পর্ক আছে, সেই দেশগুলোর মুদ্রার গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করছে। পাশাপাশি দেশের বাজারে ডলারের সরবরাহ ও চাহিদার পাশাপাশি দামও নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। এ জন্য প্রতিদিন সকালে ডলারের দাম (রেফারেন্স রেট) প্রকাশ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। কোনো কারণে দেশের ডলারের দাম ঘোষিত এই রেফারেন্সের চেয়ে কমে এলে ডলার কেনার জন্য নিলাম ডাকছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, জুলাই থেকে গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ডলার কিনছে। যেসব ব্যাংকের কাছে অতিরিক্ত ডলার ছিল, তারা নিলামে অংশ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে এই ডলার বিক্রি করেছে। এই পদক্ষেপের ফলে ডলারের দাম এখন পুরোপুরি বাজারের ওপর নির্ভরশীল হয়ে উঠেছে। এটি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) একটি অন্যতম শর্ত ছিল। আইএমএফের ঋণের শর্ত অনুযায়ী, বাংলাদেশের যে পরিমাণ রিজার্ভ থাকার কথা, বর্তমানে তার চেয়ে বেশি রিজার্ভ রয়েছে।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে ২০২২ সাল থেকে বাংলাদেশে ডলারের দাম বাড়তে শুরু করে। তাতে ডলারের সরবরাহ ও চাহিদার মধ্যে বড় ঘাটতি দেখা দেয়। ফলে প্রতি ডলারের দাম ৮৫ টাকা থেকে বেড়ে ১২২ টাকায় পৌঁছায়। এতে দেশের অর্থনীতিতে মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে যায়, যা সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রাকে কঠিন করে তোলে। বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভ থেকে প্রচুর ডলার বিক্রি করেও দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি।

গত তিন অর্থবছরে বাংলাদেশ ব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে ২৫ বিলিয়নের বেশি ডলার বিক্রি করেছে, যা মূলত জ্বালানি, সার ও খাদ্য আমদানি বিল মেটাতে ব্যবহার হয়েছে। গত বছরের আগস্টে গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কম থাকায় বাংলাদেশ ব্যাংক সরকারি আমদানির জন্য ডলার সহায়তা বন্ধ করে দেয়। এ বছরের মার্চে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি ও ডলারের দাম কমতে শুরু করলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাজার থেকে ডলার কেনা শুরু করে।

এদিকে দেশে ডলার-সংকট কাটাতে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছে প্রবাসীদের পাঠানো আয়। গত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশে প্রবাসী আয় এসেছে ৩০ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলার, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ২৭ শতাংশ বেশি। আর চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) প্রবাসী আয় এসেছে প্রায় পাঁচ কোটি ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৮ দশমিক ৪১ শতাংশ বেশি। এ ছাড়া গত অর্থবছর শেষে দেশে রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধি ছিল ৭ দশমিক ৭২ শতাংশ। আর একই বছর আমদানিতে খরচ হয় ৬৮ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলার, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ২ দশমিক ৪৪ শতাংশ বেশি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গুদামে খাওয়ার অনুপযোগী চাল নিয়ে রাজশাহী খাদ্য বিভাগে তোলপাড়, ৮ তদন্ত কমিটি
  • ‘কেনতো পারমু না, হেইতে ইলশার সুরতটা দেইখ্যা যাই’
  • আন্তর্জাতিক দর যাচাই করে আমদানি হচ্ছে এলএনজি
  • পিটার হাস কোন কোম্পানিতে আছেন, ভালো করে জানি না: অর্থ উপদেষ্টা
  • জাল টাকা বহন: ২ জনের ১৪ বছর কারাদণ্ড
  • বাংলাদেশ ব্যাংক এক দিনে ২৬ ব্যাংক থেকে ৩৫ কোটি ডলার কিনল কেন
  • যুক্তরাজ্য থেকে আসছে মাদক এমডিএমএ, গ্রেপ্তার ৫
  • চাপে পড়ে নয়, অনুরোধে ভারতে ইলিশ পাঠানোর অনুমোদন: ফরিদা আখতার
  • ভোটের সরঞ্জাম আসছে ইসিতে
  • যশোরে সড়ক দুর্ঘটনায় এসআইসহ নিহত ৩