‘শ্রাবণ জ্যোৎস্নায়’ সিনেমার ঝুলিতে ২২ আন্তর্জাতিক পুরস্কার
Published: 1st, June 2025 GMT
ইমদাদুল হক মিলনের উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত হয়েছে ‘শ্রাবণ জ্যোৎস্নায়’ সিনেমা। এটি পরিচালনা করেছেন আব্দুস সামাদ খোকন। তামান্না সুলতানা প্রযোজিত সিনেমাটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন প্রার্থনা ফারদিন দীঘি, গাজী আব্দুন নূর, সুব্রত বড়ুয়া, বাপ্পা শান্তনু, মাসুম বাশার, মিলি বাশার, সাদিয়া শিমুল প্রমুখ।
সর্বশেষ ব্যাংকক মুভি অ্যাওয়ার্ডসে শ্রেষ্ঠ প্রযোজক, শ্রেষ্ঠ পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র এবং ‘আইকন অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছে পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘শ্রাবণ জ্যোৎস্নায়’। তাছাড়া সুইজারল্যান্ডের আলপাইন ফ্রেমস ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল, সুইডেন ফিল্ম অ্যাওয়ার্ডস, আইডিয়াল ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল, আর্টোডি এন্টারটেইনমেন্ট অ্যাওয়ার্ডস, এশিয়ান ট্যালেন্ট আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব, ইন্দো-দুবাই আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব, স্টকহোম সিটি ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল, রোশনি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব, দ্য ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল অব শ্রীনগর, আন্তর্জাতিক আইকনিক এক্সেলেন্স অ্যাওয়ার্ডস-সহ মোট ২২টি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে সিনেমাটি।
‘শ্রাবণ জ্যোৎস্নায়’ সিনেমার প্রযোজক তামান্না সুলতানা
আরো পড়ুন:
খন্দকার’স ফ্যাশনে বুবলী-দীঘির সিনেমার প্রচারণা
দেখা গেল সিয়াম-দীঘির রোমান্স!
প্রাপ্তির অনুভূতি ব্যক্ত করে প্রযোজক তামান্না সুলতানা বলেন, “শ্রাবণ জ্যোৎস্নায়’ সিনেমার এই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পুরো দেশের চলচ্চিত্র অঙ্গনের জন্য অনুপ্রেরণামূলক। এটি প্রমাণ করে, মানসম্পন্ন গল্প, দক্ষ নির্মাণ ও নিখুঁত অভিনয় থাকলে বাংলা চলচ্চিত্রও বিশ্বজয় করতে পারে।”
প্রযোজক হিসেবে এই জার্নির গল্প জানিয়ে তামান্না সুলতানা বলেন, “সিনেমায় বিনিয়োগ আমার জন্য খুব ব্যয়বহুল একটি সিদ্ধান্ত ছিল। কিন্তু আমার বাবা মোহাম্মদ সামসুল হক মল্লিক যদি শুরু থেকেই পাশে না থাকতেন, তাহলে এই কাজ সম্ভব হতো না। আমার বাবা-মা দুজনই আমাকে সবসময় সাহস ও উৎসাহ দিয়ে গেছেন।”
জনপ্রিয় গায়ক মনির খানের গাওয়া ‘ভবপারে লও আমারে বাইয়া’ গানটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোটি মানুষের হৃদয় ছুঁয়েছে। এছাড়া বিশেষ একটি চরিত্রে অভিনয় ও গান গেয়েছেন কণ্ঠশিল্পী অনিমা রায়। সিনেমাটির সংগীত পরিচালনা করেছেন মিল্টন খন্দকার ও বিনোদ রায় দাস। চিত্রগ্রহণে ছিলেন আসাদুজ্জামান মজনু, সম্পাদনায় মনিরুল ইসলাম।
প্রযোজক তামান্না সুলতানা পিরোজপুরের সন্তান। ছোটবেলা থেকেই সাংস্কৃতিক অঙ্গনের সঙ্গে যুক্ত। ২০১০ সাল থেকে অডিও-ভিডিও প্রযোজনায় কাজ শুরু করেন। পাশাপাশি ইডেন মহিলা কলেজ থেকে দর্শনে মাস্টার্সে ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট, এরপর বাংলাদেশে এলএলবি ডিগ্রি নেন। কিছুদিন আগে ব্রিটিশ এলএলবি সম্পন্ন করেন তামান্না।
ঢাকা/রাহাত/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র চলচ চ ত র
এছাড়াও পড়ুন:
খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৬০ দিন পর শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীরা, উৎসবের আমেজ
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) দীর্ঘ ১৬০ দিন পর একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে টানা বৃষ্টি উপেক্ষা করে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে এসেছেন। সকাল থেকেই ক্যাম্পাসে বইছে উৎসবের আমেজ।
সকালে কুয়েট ক্যাম্পাসে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস। ছাতা মাথায় দল বেঁধে ছুটছেন ক্লাসরুমের দিকে। কখনো এক ছাতার নিচে দু-তিনজন। কারও সঙ্গে অভিভাবকও এসেছেন। সকাল নয়টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি শিক্ষাবর্ষের প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থী ক্লাসে যোগ দেন। নতুন উপাচার্য অধ্যাপক মাকসুদ হেলালী বিভিন্ন বিভাগ ঘুরে শ্রেণি কর্মসূচি পর্যবেক্ষণ করেন।
ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং (ইসিই) বিভাগের ২২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী দীপ্ত বলেন, ‘আমাদের প্রায় এক সেমিস্টার নষ্ট হয়ে গেছে। এই সময়টা খুব অস্বস্তিতে কেটেছে। ক্ষতি যা হওয়ার হয়েছে, তবে এখন আবার ক্লাস শুরু হওয়াটা ইতিবাচক দিক। আমরা আশাবাদী।’ একই ব্যাচের শিক্ষার্থী আম্মান বলেন, ‘অনেক দিন জীবনটা থেমে ছিল। আজকের দিনটা বিশেষ মনে হচ্ছে। ঠিক যেন স্কুলজীবনের প্রথম দিনের মতো। সব হতাশা কাটিয়ে আমরা অনেকটা নতুন করে শুরু করছি।’
হুমায়ুন কবির নামের এক অভিভাবক বলেন, ‘আমার ছেলে বিল্ডিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে পড়ে। পাঁচ মাস ধরে ক্লাস বন্ধ থাকায় ও মানসিকভাবে খুব চাপের মধ্যে ছিল। একসময় অসুস্থও হয়ে পড়ে। কুয়েটে এমন পরিস্থিতি আগে দেখিনি। কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব ঠিকভাবে পালন করলে হয়তো আগেই খুলে যেত। তারপরও এখন অন্তত খুলেছে, এটা বড় স্বস্তি।’
কুয়েটের ছাত্র পরিচালক আবদুল্লাহ ইলিয়াস আক্তার বলেন, আজ থেকে কুয়েটে ক্লাস শুরু হয়েছে। তবে এখনো সব শিক্ষার্থী আসেননি। যাঁদের কেবল ক্লাস রয়েছে, তাঁরা অংশ নিচ্ছেন। যাঁদের পরীক্ষা ছিল, তাঁরা প্রস্তুতির জন্য কিছুটা সময় চেয়েছে। প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ওরিয়েন্টেশন হবে ১৪ আগস্ট, ক্লাস শুরু ১৭ আগস্ট।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে শতাধিক ব্যক্তি আহত হন। ওই রাতেই তৎকালীন উপাচার্য ও কয়েকজন শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ ওঠে। এরপর শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ২৬ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয় উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ মাছুদ ও সহ-উপাচার্য অধ্যাপক শরিফুল আলমকে অব্যাহতি দেয়। ১ মে চুয়েটের অধ্যাপক হজরত আলীকে অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। পরবর্তী সময়ে শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনার বিচার দাবিতে ৪ মে থেকে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বর্জনের ঘোষণা দেয় শিক্ষক সমিতি। এরপর কোনো শিক্ষকই ক্লাসে ফেরেননি। শিক্ষক সমিতির বিরোধিতার মুখে হজরত আলী দায়িত্ব পালন করতে না পেরে ২২ মে পদত্যাগ করেন।
এরপর ১০ জুন নতুন উপাচার্য নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয় সরকার। সেই ধারাবাহিকতায় গত বৃহস্পতিবার কুয়েটের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান বুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক মাকসুদ হেলালী। পরদিন শুক্রবার তিনি খুলনায় এসে দায়িত্ব নেন। দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেন। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভায় আন্দোলন কর্মসূচি তিন সপ্তাহের জন্য স্থগিত করে ক্লাসে ফেরার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে গতকাল সোমবার ক্লাস শুরুর নোটিশ জারি করা হয়।