বিপুলসংখ্যক অ্যাপল, গুগল ও ফেসবুক অ্যাকাউন্টের তথ্য ফাঁস
Published: 2nd, June 2025 GMT
বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা কোটি কোটি অ্যাপল, গুগল ও ফেসবুক অ্যাকাউন্টের তথ্য ফাঁস হয়েছে। ফাঁস হওয়া তথ্যগুলো অনলাইনে অনিরাপদ একটি তথ্যভান্ডারে সংরক্ষণ করায় নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন ব্যবহারকারীরা। তথ্য ফাঁসের বিষয়টি প্রথম চিহ্নিত করেন সাইবার নিরাপত্তা গবেষক জেরেমিয়া ফাওলার। তিনি জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যেসব তথ্য ফাঁসের ঘটনা সামনে এসেছে, তার মধ্যে এটি সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। এটি এমন এক তথ্যভান্ডার, যেখানে সরাসরি ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে প্রবেশের তথ্য রয়েছে। যেকোনো সাইবার অপরাধীর জন্য এটি একটি স্বপ্নের মতো।
জানা গেছে, তথ্যভান্ডারটিতে প্রায় ৪৭ গিগাবাইট তথ্য রয়েছে। তথ্যভান্ডারটিতে অ্যাপল, গুগল ও ফেসবুক অ্যাকাউন্টের পাশাপাশি ইনস্টাগ্রাম, মাইক্রোসফট, নেটফ্লিক্স, পেপালসহ বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারকারীদের ১৮ কোটি ৪০ লাখ ইউজারনেম ও পাসওয়ার্ড রয়েছে। এ বিষয়ে ফাওলার জানিয়েছেন, চলতি বছরের মে মাসের শুরুতে তিনি তথ্যভান্ডারটির সন্ধান পান। এটি পরিচালনা করছিল ওয়ার্ল্ড হোস্ট গ্রুপ নামের একটি ওয়েব হোস্টিং প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ডোমেইন, ক্লাউড হোস্টিং ও কারিগরি সেবা দিয়ে থাকে। বিষয়টি ওয়ার্ল্ড হোস্ট গ্রুপকে জানানোর পর তারা দ্রুত তথ্যভান্ডরটি অনলাইন থেকে মুছে ফেলে। বিষয়টি স্বীকার করে ওয়ার্ল্ড হোস্ট গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেব দে লেমস বলেন, ‘আমাদের ধারণা, কোনো প্রতারক চক্র বেআইনিভাবে আমাদের সার্ভারে এসব তথ্য আপলোড করেছিল।’
তথ্যভান্ডারটির মালিকানা বা উৎস সম্পর্কে নিশ্চিত কোনো তথ্য জানা যায়নি। তবে ফাওলারের ধারণা, তথ্যগুলো ইনফোস্টিলার নামের ম্যালওয়্যার ব্যবহার করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সার্ভার থেকে চুরি করা হতে পারে। ইনফোস্টিলার ম্যালওয়্যার কম্পিউটারে সংরক্ষণ করা পাসওয়ার্ড চুরির পাশাপাশি কুকিজ বা ব্রাউজারের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পূরণ হওয়া ইউজারনেম সংগ্রহ করতে পারে। এসব ম্যালওয়্যার সাধারণত সন্দেহজনক অ্যাপ বা ই–মেইলের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুনসবচেয়ে বেশি ফাঁস হওয়া ১০ পাসওয়ার্ড২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, তথ্যভান্ডারটিতে থাকা তথ্যের মাধ্যমে সরাসরি ব্যবহারকারীদের অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করে অর্থ, পরিচয় বা গোপন তথ্য হাতিয়ে নেওয়া সম্ভব। এমনকি এসব তথ্য ব্যবহার করে ফিশিং বা প্রতারণাও করা সম্ভব। আর তাই অ্যাপল, গুগল, ফেসবুকসহ তালিকায় থাকা যেকোনো অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারকারীদের দ্রুত নিজেদের অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করা উচিত।
সূত্র: ডেইলি মেইল
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অ য ক উন ট র ব যবহ র ফ সব ক অ য পল
এছাড়াও পড়ুন:
যে কারণে নেদারল্যান্ডসে জোট সরকারের পতন
নেদারল্যান্ডসের কট্টর ডানপন্থী দল ‘পার্টি ফর ফ্রিডম’ (পিভিভি) সরকার থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে নিয়েছে। মঙ্গলবার দলটির নেতা গির্ট উইল্ডারস এ ঘোষণা দেন। এর মধ্য দিয়ে দেশটির ক্ষমতাসীন জোট সরকারের পতন ঘটল।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকালে সাংবাদিকদের উইল্ডারস বলেন, ‘সবচেয়ে কঠোর অভিবাসন নীতির প্রতিশ্রুতি দিয়ে মন্ত্রিসভায় যোগ দিয়েছিলাম, নেদারল্যান্ডসের পতনের জন্য নয়। তাই এই সরকারে আমাদের দায়িত্ব এখানেই শেষ হলো।’
ডাচ ইতিহাসের সবচেয়ে ডানঘেঁষা সরকার থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে উইল্ডারস দেশটির রাজনীতিকে অস্থিরতার দিকে ঠেলে দিলেন। সমর্থন প্রত্যাহার করে নেওয়ায় ১৫০ আসনের পার্লামেন্টে প্রধানমন্ত্রী ডিক শুফের নেতৃত্বাধীন সরকারের আসন মাত্র ৫১টিতে দাঁড়ায়।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, উইল্ডারসের দল জোট ত্যাগ করলে পদত্যাগ করেন প্রধানমন্ত্রী ডিক শুফ। বিরোধী নেতারা ইতিমধ্যে দ্রুত নির্বাচন দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
জরিপ বলছে, এখনই যদি নির্বাচন হয়, তাহলে কিছু আসন হারালেও পিভিভি সবচেয়ে বড় দল হিসেবে টিকে থাকবে। মধ্য ডানপন্থী পিপলস পার্টি ফর ফ্রিডম অ্যান্ড ডেমোক্রেসি থেকে সামান্য এগিয়ে থাকবে দলটি।
তবে পিভিভি সহজে নতুন সরকার গঠন করতে পারবে এমন নিশ্চয়তা নেই। নেদারল্যান্ডসের রাজনৈতিক ব্যবস্থায় বহু সক্রিয় দল রয়েছে। এককভাবে কোনো দল কখনো সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারেনি। জনমত জরিপ ইঙ্গিত করছে, নতুন নির্বাচনে মধ্য ডান ও মধ্য বাম উভয় পক্ষই লাভবান হতে পারে।
আরও পড়ুননেদারল্যান্ডসে ডানপন্থীদের জয়ের পর উদ্বেগে মুসলমানেরা২৪ নভেম্বর ২০২৩২০২৩ সালের নভেম্বরে আয়োজিত নির্বাচনে বড় জয় পেয়েছিল গির্ট উইল্ডারসের পিভিভি। তবে দীর্ঘ আলোচনা ও দর-কষাকষির পর চুক্তি হয়। দল জোট সরকারে যোগ দিলেও উইল্ডারস পার্লামেন্টে অনেকটা প্রভাবহীন ছিলেন।
ইসলাম ও অভিবাসনবিরোধী বক্তব্যের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে উইল্ডারসের। ২০১৪ সালের নির্বাচনী সমাবেশে মরক্কোর এক অভিবাসীকে অপমান করায় বৈষম্যমূলক আচরণের জন্য দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন তিনি। তাঁর দল খোলামেলাভাবেই দেশটিতে ইসলামি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পবিত্র কোরআন ও মসজিদের বিরোধিতা করে আসছে।
গত সপ্তাহে বিরল এক আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে সরকারের প্রতি দেশের অভিবাসন নীতি আরও কঠোর করার আলটিমেটাম দেন গির্ট উইল্ডারস। যদিও অভিবাসন ও আশ্রয়বিষয়ক মন্ত্রী ছিলেন তাঁরই দলের একজন। এরই ধারাবাহিকতায় শেষ পর্যন্ত সরকার থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে নেন তিনি।