বাজেটে কালোটাকা সাদা করার বিধান, সংবিধান পরিপন্থি: টিআইবি
Published: 2nd, June 2025 GMT
প্রস্তাবিত বাজেটে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
সংস্থাটি জানিয়েছে, সরকার দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সংস্কারের মূল উদ্দেশ্যের সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী অবস্থান নিয়েছে, যা অনৈতিক, বৈষম্যমূলক ও সংবিধান পরিপন্থি।
সোমবার (২ জুন) ২০২৫–২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের প্রতিক্রিয়ায় দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথাগুলো বলেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান।
আরো পড়ুন:
বাজেটের আকার আরো ছোট হওয়া উচিত ছিল: আমির খসরু
তামাকবিরোধী জোটের বাজেট প্রতিক্রিয়া
সিগারেটে অতিরিক্ত ২০ হাজার কোটি টাকা আয়ের সুযোগ হাতছাড়া
ইফতেখারুজ্জামান জানান, সরকারের এমন সিদ্ধান্ত স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে রাষ্ট্র সংস্কার, বিশেষ করে দুর্নীতিবিরোধী সংস্কারের মূল উদ্দেশ্যকে রীতিমতো উপেক্ষা করেছেন তারা। তিনি মনে করেন, সরকার দুর্নীতিকে উৎসাহ দিয়ে রিয়েল এস্টেট লবির ক্ষমতার কাছে আত্মসমর্পণ করেছে।
ইফতেখারুজ্জামান জানান, করহার যা–ই হোক না কেন, এটি সংবিধানের ২০(২) অনুচ্ছেদের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন, যেখানে বলা হয়েছে, রাষ্ট্র এমন ব্যবস্থা নিশ্চিত করবে যে অনুপার্জিত আয় অবৈধ হবে।
তিনি জানান, কালোটাকা সাদা করার সুযোগ একই সঙ্গে বৈষম্যমূলক। কারণ, এই সিদ্ধান্তের ফলে আবাসন খাতে অবৈধ অর্থের মালিকদের অধিকতর একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হবে এবং সৎ উপার্জনকারীদের ফ্ল্যাট বা ভবনের অংশীদার হওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করবে।
সরকারের এমন সিদ্ধান্ত দুর্নীতিকে উৎসাহ দেবে, এমন আশঙ্কার কথা জানান টিআইবির নির্বাহী পরিচালক। তিনি জানান, এর মাধ্যমে সরকার বছরজুড়ে অবৈধ ও অপ্রদর্শিত অর্থ–সম্পদ অর্জনের জন্য নাগরিকদের উৎসাহিত করছে এবং বছর শেষে কালোটাকাকে বৈধতা দেওয়ার অঙ্গীকার করছে। আবাসন খাতকে দেশের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত খাত হিসেবে চিহ্নিত করেন তিনি।
বিজ্ঞপ্তিতে অবিলম্বে কালোটাকা সাদা করার দুর্নীতিবান্ধব সুযোগ বাতিল করার জোর দাবি জানিয়েছে টিআইবি। পাশাপাশি কালোটাকার উৎস অনুসন্ধান করে সংশ্লিষ্টদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা, কর ব্যবস্থায় সমতা ও ন্যায় নিশ্চিতের দাবিও জানানো হয়েছে।
ইফতেখারুজ্জামান জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে বাজেটে তাদের প্রত্যাশা ছিল, দেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারের অগ্রগতির বিষয়ে ধারণা দেওয়া হবে। অর্থ উপদেষ্টা এ ব্যাপারে একটিমাত্র বাক্য ব্যবহার করেই দায় সেরেছেন। একই সঙ্গে দেশ থেকে অর্থ–সম্পদ পাচার করেছেন এবং পরে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পরিত্যাগ করেছেন, এমন ব্যক্তিদের অর্থ–সম্পদের ওপর কর ও জরিমানা আরোপের বিধান করা হলেও কী প্রক্রিয়ায় তা বাস্তবায়ন করা হবে, তা পরিষ্কার করা হয়নি।
তিনি জানান, রাজস্ব আদায় বাড়াতে এর ব্যবস্থাপনা থেকে নীতিকে আলাদা করার সঙ্গে এ খাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিতের কৌশলগুলো বাজেট বক্তৃতায় উঠে না আসা হতাশার।
ঢাকা/এনএফ/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ট আইব ইফত খ র জ জ ম ন ট আইব সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
মুজিবনগর সরকারের মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি বাতিলের খবর ‘মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর’
মুজিবনগর সরকারের রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান, অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদসহ শীর্ষ নেতাদের মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি বাতিলের যে খবর কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে, তা ‘সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, মিথ্যা এবং বিভ্রান্তিকর’ বলে জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
বুধবার (৪ জুন) মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম এ বিষয়ে বলেছেন, “মুজিবনগর সরকারে যারা ছিলেন, তারাও মুক্তিযোদ্ধা। যারা সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ করেছেন, যারা তা পরিচালনা করেছেন, সবাই মুক্তিযোদ্ধা। তবে, সরকারের অধীন কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে চিহ্নিত হন।”
তিনি জানান, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) অধ্যাদেশ অনুযায়ী, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কর্মীসহ বিদেশে কর্মরত কূটনীতিকরাও ‘সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা’ হিসেবে স্বীকৃতি পান।
আরো পড়ুন:
চাঁদপুরে মুক্তিযোদ্ধাকে মৃত দেখিয়ে ভাতা নিচ্ছেন তার স্ত্রী
কুমিল্লার সেই মুক্তিযোদ্ধা কানুর বাড়িতে গভীর রাতে হামলা
ফারুক-ই-আজম বলেছেন, “সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা মানে তাদের সম্মান বা মর্যাদা ক্ষুণ্ন করা হয়নি। মুক্তিযোদ্ধা ও সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা—দুয়েরই মর্যাদা, সম্মান এবং সুযোগ-সুবিধা সমান থাকবে।”
তিনি উল্লেখ করেন, ১৯৭২ সালের মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা অনুযায়ীই বর্তমানে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হয়েছে। পরে ২০১৮ ও ২০২২ সালে এই সংজ্ঞায় কিছু পরিবর্তন আনা হয়, যা আইনি কাঠামোর মধ্যে থেকেই করা হয়েছে।
এ নিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
ঢাকা/হাসান/রফিক