নোয়াখালীতে এনআইডি করতে এসে রোহিঙ্গা আটক
Published: 3rd, June 2025 GMT
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলায় জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) করতে আসা দালাল ও এক রোহিঙ্গা নাগরিককে আটক করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৩ জুন) বিকালে উপজেলা নির্বাচন অফিসে তাকে আটক করা হয়।
আটক রোহিঙ্গা কক্সবাজার উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ২২ নম্বর ক্যাম্পের ৩৯৫ রুমের আমির হোসেনের ছেলে নুরুল আমিন (৩০)। আটক দালাল সোনাইমুড়ীর জয়াগ ইউনিয়নের বাওর কোট গ্রামের স্বর্ণকার বাড়ির বেলায়েত হোসেন (৪৩)।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রামে বসবাসরত সোনাইমুড়ীর বাসিন্দা রাজু দালালের মাধ্যমে রোহিঙ্গা যুবক নুরুল আমিনের জয়াগ ইউনিয়নে জন্ম সনদ তৈরি করে। এরপর মঙ্গলবার (৩ জুন) কক্সবাজারের উখিয়া ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গা যুবক নুরুল আমিন সোনাইমুড়ীতে আসে। এরপর বিকেল ৩টার দিকে জাতীয় পরিচয়পত্র করার জন্য উপজেলা নির্বাচন অফিসে যায়। ওই সময় দালাল রাজুর চাচা বেলায়েত হোসেন রোহিঙ্গা যুবকের ভোটার হওয়ার সকল কাগজপত্র সংগ্রহ করে উপজেলা নির্বাচন অফিসে আসে। পরে সেখানে রোহিঙ্গা যুবককে ভোটার হওয়ার জন্য ছবি তোলার চেষ্টা করেন। নির্বাচন অফিসে তাদের কথাবার্তায় গরমিল পাওয়ায় তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। একপর্যায়ে রোহিঙ্গা যুবক জানান, দালালের মাধ্যমে তিনি ভোটার হতে এসেছেন। রাজু তাকে তার চাচা অপর দালাল বেলায়েতের হাতে তুলে দেন। ঘটনার পর থেকে গা ঢাকা দেয় জন্ম সনদ করে দেয়া দালাল মো.
আরো পড়ুন:
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সব শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা
শিক্ষকদের সড়ক অবরোধ
৭ ঘণ্টা পর উখিয়া-টেকনাফ মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক
সোনাইমুড়ী উপজেলা নির্বাচন অফিসের সহকারী মো. আলী হোসেন জানান, তাদের আচরণ, তথ্য ও কথায় গরমিল থাকায় সন্দেহ হয়। এক পর্যায়ে তাদের কাগজপত্রের বিষয়ে চ্যালেঞ্জ করা হলে তারা ধরা পড়েন। আটক দুইজনকে সন্ধ্যায় থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্ততি চলছে।
সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোরশেদ আলম জানান, লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ঢাকা/সুজন/বকুল
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
প্রেমের টানে চীনা যুবকের বাংলাদেশে এসে বিয়ে
মাদারীপুরে মেয়ে সুমাইয়া আক্তারের প্রেমের টানে চীনের নাগরিক শি তিয়ান জিং বাংলাদেশে এসেছেন। বিয়ে করে বর্তমানে মাদারীপুরে শশুরবাড়িতে আছেন। ভিনদেশি যুবককে দেখার জন্য ওই বাড়িতে মানুষ ভিড় করছেন।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মাদারীপুরের সদর উপজেলার পাঁচখোলা ইউনিয়নের উত্তর মহিষেরচর এলাকার বাসিন্দা সাইদুল হোসেনের মেয়ে সুমাইয়া আক্তার (১৯)। সুমাইয়া মাদারীপুর শহরের সরকারি সুফিয়া মহিলা কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। তারা তিন বোন। সুমাইয়া বড়। মেঝ সাদিয়া আক্তার (১২) মাদ্রাসায় পড়ে। ছোট বোন আরিফা (৬)।
চীনের সাংহাই শহরের সি জিং নিং এর ছেলে শি তিয়ান জিং (২৬)। তারা দুই ভাই। বড় শি তিয়ান জিং। তার চীনের সাংহাই শহরে রেস্টুরেন্টের ব্যবসা আছে।
আরো পড়ুন:
‘একজন ছেলে মানুষ আমাদের পরিবারের বৌ হয়েছিল’
এক বিয়ের বরযাত্রী খেয়ে ফেলল অন্য বিয়ের খাবার
শি তিয়ান জিংকে টিকটকে দেখেন সুমাইয়া। এরপর ইউচ্যাটের মাধ্যমে কথা আদান-প্রদান হয়। উভয়ই গুগলের মাধ্যমে লেখা অনুবাদ করে মনের ভাব আদান- প্রদান করেন। এক পর্যায় তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক হয়। মাত্র চার মাসের প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে গত ২৪ জুলাই চীন থেকে বাংলাদেশ আসেন শি তিয়ান জিং। এরপর এক দিন ঢাকার একটি হোটেলে থাকেন। ২৬ জুলাই মাদারীপুর সদর উপজেলার মহিষেচরের সুমাইয়ার বাড়িতে আসেন।
সুমাইয়া, সুমাইয়ার বাবা সাইদুল ইসলাম ও তার দুইজন আত্মীয় মিলে ঢাকা থেকে শি তিয়ান জিংকে মাদারীপুরে নিয়ে আসেন। বাংলা ভাষায় কথা বলতে না পারায় মোবাইলে অনুবাদ করে কথা আদান-প্রদান করেন শি তিয়ান জিং। এরপর ২৭ জুলাই তারা বিয়ে করেন। এই খবর ছড়িয়ে পড়লে সুমাইয়ার বাড়িতে মানুষ ভিড় করতে থাকে।
সুমাইয়া আক্তার বলেন, ‘‘টিকটক দেখে আমি ওর ভক্ত হই। এরপর ইউচ্যাটের মাধ্যমে কথা হয়। পরে দুজনেই প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ি। মাত্র চার মাসের প্রেমের সূত্র ধরে চীন থেকে বাংলাদেশ আমার কাছে চলে আসবে, তা কখনো ভাবিনি। ও প্লেনে উঠার সময় বলেছে, আমি বাংলাদেশে আসছি। আমি বিশ্বাস করিনি। যখন ইন্ডিয়া এসে আমাকে জানায়, তখন বিশ্বাস করেছি।’’
সুমাইয়া আক্তার আরো বলেন, ‘‘ও ওর মা-বাবাকে আমার কথা বলেছে। তারাও মুসলিম। ওর মা বলেছেন, আমাকে বিয়ে করে চীনে নিয়ে যেতে। তাই শি তিয়ান জিং বাংলাদেশে এসে আমাকে বিয়ে করেছেন।’’
সুমাইয়া বলেন, ‘‘এরই মধ্যে পাসপোর্ট করতে দিয়েছি। শি তিয়ান জিং এক মাস বাংলাদেশে থাকবে। এর মধ্যে আমার কাগজপত্র রেডি করা হবে। তারপর ও আমাকে চীনে নিয়ে যাবে। আমিও চীনে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’’
শি তিয়ান জিং বলেন, ‘‘বাংলাদেশ আমার ভালো লেগেছে। তবে অনেক গরম। আর অনেক মানুষ আমাকে দেখতে আসে। তাই আমার ভয় লাগে। আমি ভালোবেসে চীন থেকে এখানে এসেছি। সুমাইয়াকে বিয়ে করেছি। এখন ওর কাগজপত্র রেডি করে চীনে নিয়ে যাবো। আমার পরিবার সব জানে। তারাই সুমাইয়াকে চীনে নিয়ে যেতে বলেছেন।’’
সুমাইয়ার বাবা সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘‘শি তিয়ান জিং আমাদের এখানে আছে। ও খুব ভালো ছেলে। খুবই অমায়িক। কোনো অহংকার নেই। এক মাস থাকবে এবং আমার মেয়েকে নিয়ে যাবে। আমরা খুব খুশি।’’
পাঁচখোলা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য রুবেল হাওলাদার জানান, প্রথমে আদালতের মাধ্যমে তাদের বিয়ে হয়। পরে সামাজিকভাবে গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে বিয়ে হয়। চীনে ওই ছেলের ব্যবসা আছে। কিছু দিনের মধ্যে সুমাইয়াকে চীনে নিয়ে যাবে।
ঢাকা/বকুল