ঈদের আগে অনেক ভাড়া হবে বলে মালিকের কাছ থেকে মাইক্রোবাস এনে নামেন ডাকাতিতে
Published: 3rd, June 2025 GMT
ঈদের আগে অনেক ভাড়া হবে, আয় হবে অনেক বেশি—এ কথা বলে বরিশালের মালিকের কাছ থেকে একটি মাইক্রোবাস নিয়ে আসেন সোহাগ। পরে আরিফ ও হাকিমের মাধ্যমে ডাকাতি করার জন্য একটি দল গড়ে তোলেন। গত শনিবার রাতে তাঁরা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের মির্জাপুরে এক নারী প্রবাসীর মাইক্রোবাসে ডাকাতি করেন।
টাঙ্গাইলের গোয়েন্দা পুলিশ সোহাগ, আরিফ, হাকিমসহ পাঁচজনকে সাভার ও ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে। টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মো.
পুলিশ সুপার জানান, গত শনিবার রাতে ঢাকার হজরত শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে বিউটি আক্তার নামের একজন জর্ডানপ্রবাসী মাইক্রোবাস ভাড়া করে বগুড়ার উদ্দেশে রওনা দেন। মাইক্রোবাসটি ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের মির্জাপুর উপজেলার ইচাইল এলাকায় পৌঁছালে তাঁদের পথ রোধ করে একটি মাইক্রোবাস। এ সময় সেখান থেকে আট থেকে নয়জন নেমে পিস্তল, চাপাতি, ছুরি নিয়ে মারপিট ও ভয় দেখিয়ে প্রবাসী নারীর মাইক্রোবাসে থাকা লোকজনের কাছ থেকে ৫৯ হাজার ৫০০ টাকা লুট করেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ডাকাতি চলাকালে হাইওয়ে পুলিশের একটি রেকার গাড়ি পেছন থেকে ডাকাতদের মাইক্রোবাসের সামনে চলে আসে। রেকারের সহকারী মাইক্রোবাসটির যাত্রীদের মহাসড়কে দাঁড়িয়ে থাকার কারণ জিজ্ঞাসা করার সঙ্গে সঙ্গে রেকার গাড়ি লক্ষ্য করে একটি গুলি ছোড়া হয়। এতে রেকারের সহকারী তুহিন মিয়া গুলিবিদ্ধ হন। পরে ডাকাত দলের সদস্যরা ফাঁকা গুলি ছোড়ে মাইক্রোবাস ফেলে পালিয়ে যান। এ বিষয়ে প্রবাসী বিউটি আক্তারের ছোট বোন মির্জাপুর থানায় মামলা করেন।
গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আহসানুজ্জামান জানান, ঘটনার পর তথ্যপ্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে প্রথমে মাইক্রোবাসের চালক সোহাগকে চিহ্নিত করা হয়। পরে গতকাল সোমবার গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল সাভারের তেতুঁলঝড়া এলাকা থেকে সোহাগ (২৭), আরিফ হোসেন (৩২) ও রোমানকে (২৫) গ্রেপ্তার করে। তাঁদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পরে সাভারের কাউনদিয়া এলাকা থেকে মিলন সিকদার ওরফে রিপনকে (৪৫) গ্রেপ্তার করা হয়। শেষে ঢাকার মিরপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয় আবদুল হাকিমকে (৪৫)।
এসআই আহসানুজ্জামান আরও জানান, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বাড়ি বরিশাল, বাগেরহাট ও পটুয়াখালী জেলায়। তাঁরা ঢাকা ও সাভার এলাকায় অবস্থান করে ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধ করতেন। গত শনিবার মির্জাপুরে ডাকাতির ঘটনার সমন্বয় করেন গ্রেপ্তার আবদুল হাকিম। তিনি অস্ত্র সংগ্রহ করেন।
গ্রেপ্তার সবাইকে আজ আদালতে হাজির করে রিমান্ডের আবেদন করা হয়। টাঙ্গাইলের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রুমেলিয়া সিরাজাম আসামিদের ছয় দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আদালত পুলিশের পরিদর্শক লুৎফর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর প রব স
এছাড়াও পড়ুন:
কুষ্টিয়ার সাবেক এসপি তানভীর আরেক হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় বিএনপি কর্মী কুদরত আলীকে গুলি করে হত্যা মামলার আসামি কুষ্টিয়ার সাবেক পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আরাফাতকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
সোমবার (২৮ জুলাই) দুপুর ১টা ৪১ মিনিটে কড়া নিরাপত্তায় কারাগার থেকে এস এম তানভীর আরাফাতকে কুষ্টিয়া আদালতে আনা হয়। এরপর দৌলতপুর আমলি আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তফা পারভেজের আদালতে হাজিরা করা হয়। এরপর তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরে ১টা ৫১ মিনিটে আদালত থেকে তাকে আবার কারাগারে পাঠানো হয়।
গত ২৬ ডিসেম্বর বিএনপির আরেক কর্মী সুজন মালিথাকে গুলি করে হত্যা মামলার প্রধান আসামি এই পুলিশ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর থেকে তিনি কুষ্টিয়া কারাগারে আছেন।
আরো পড়ুন:
মেহেরপুরে হত্যা মামলায় একজনের মৃত্যুদণ্ড
গজারিয়ায় প্রতিপক্ষের গুলিতে ‘শুটার’ মান্নান নিহত
উপপুলিশ কমিশনার এস এম তানভীর আরাফাত সিলেট রেঞ্জ ডিআইজি অফিসে সংযুক্ত ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি খুলনার খালিশপুর উপজেলায়। কুষ্টিয়ায় চাকরিকালে বিতর্কিত ছিলেন এই পুলিশ কর্মকর্তা। কুষ্টিয়া জেলায় আসার পর থেকে নানা কর্মকান্ডে সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। এমনকি, তখন এ সব কর্মকাণ্ডের জন্য তাকে আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয়। বিভাগীয় শাস্তিও পেতে হয়।
নিহত বিএনপি কর্মী কুদরত আলীর ছেলে বাদী হয়ে ২০২৪ সালের ২ অক্টোবর দৌলতপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেছেন, কুদরত আলী বিএনপির সক্রিয় সমর্থক ছিলেন। বিএনপির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে তিনি দলের সঙ্গে আছেন। এ কারণে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা ও কিছু সুবিধাভোগী পুলিশ সদস্য কুদরত আলীকে মিথ্যা মামলায় আটক ও হত্যার পরিকল্পনা করে। এই ষড়যন্ত্রের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ পরিদর্শক নিশিকান্ত সরকার, এসআই রোকনুজ্জামান, এসআই মেহেদী হাসান, এসআই শাহজাহান, এএসআই আনিচুর রহমান, পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আহমেদসহ অন্য পুলিশ সদস্যরা কুদরত আলীকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে। ২০২০ সালের ২৩ জুলাই রাত ২টার দিকে ১০-১২ জন পুলিশ কুদরত আলীকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। ২৫ জুলাই তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। তার বুকের ডান দিকে ও বাম দিকে দুটি গুলির চিহ্ন, দুই হাতে, পিঠে, মুখে ও পায়ে আঘাতের চিহ্ন ছিল।
বাদী মামলায় দাবি করেন, কুদরত আলীকে গুম করে নির্যাতন ও গুলি করে হত্যা করে লাশ হাসপাতালের মর্গে রেখে চলে যায়।
দৌলতপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোলাইমান শেখ জানান, দৌলতপুর থানার একটি মামলায় এস এম তানভীর আরাফাতকে গ্রেপ্তারের আবেদন করা হয়েছিল। সেই আবেদন আদালত মঞ্জুর করেছেন।
২০১৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর বিএনপির কর্মী সুজন মালিথাকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে কুষ্টিয়া সাবেক এসপি এস এম তানভীর আরাফাতের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। গত ২৯ সেপ্টেম্বর নিহত সুজনের রাজনৈতিক বড় ভাই সুজন হোসেন (৪২) বাদী হয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলা করেন। মামলায় মোট ১৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
নিহত সুজন মালিথা কুষ্টিয়া সদর উপজেলার টাকিমারা গ্রামের ইসমাইল মালিথার ছেলে।
ঢাকা/কাঞ্চন/বকুল