ঈদের আগে অনেক ভাড়া হবে, আয় হবে অনেক বেশি—এ কথা বলে বরিশালের মালিকের কাছ থেকে একটি মাইক্রোবাস নিয়ে আসেন সোহাগ। পরে আরিফ ও হাকিমের মাধ্যমে ডাকাতি করার জন্য একটি দল গড়ে তোলেন। গত শনিবার রাতে তাঁরা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের মির্জাপুরে এক নারী প্রবাসীর মাইক্রোবাসে ডাকাতি করেন।

টাঙ্গাইলের গোয়েন্দা পুলিশ সোহাগ, আরিফ, হাকিমসহ পাঁচজনকে সাভার ও ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে। টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মো.

মিজানুর রহমান আজ মঙ্গলবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান। এদিকে গ্রেপ্তার পাঁচজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ছয় দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

পুলিশ সুপার জানান, গত শনিবার রাতে ঢাকার হজরত শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে বিউটি আক্তার নামের একজন জর্ডানপ্রবাসী মাইক্রোবাস ভাড়া করে বগুড়ার উদ্দেশে রওনা দেন। মাইক্রোবাসটি ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের মির্জাপুর উপজেলার ইচাইল এলাকায় পৌঁছালে তাঁদের পথ রোধ করে একটি মাইক্রোবাস। এ সময় সেখান থেকে আট থেকে নয়জন নেমে পিস্তল, চাপাতি, ছুরি নিয়ে মারপিট ও ভয় দেখিয়ে প্রবাসী নারীর মাইক্রোবাসে থাকা লোকজনের কাছ থেকে ৫৯ হাজার ৫০০ টাকা লুট করেন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ডাকাতি চলাকালে হাইওয়ে পুলিশের একটি রেকার গাড়ি পেছন থেকে ডাকাতদের মাইক্রোবাসের সামনে চলে আসে। রেকারের সহকারী মাইক্রোবাসটির যাত্রীদের মহাসড়কে দাঁড়িয়ে থাকার কারণ জিজ্ঞাসা করার সঙ্গে সঙ্গে রেকার গাড়ি লক্ষ্য করে একটি গুলি ছোড়া হয়। এতে রেকারের সহকারী তুহিন মিয়া গুলিবিদ্ধ হন। পরে ডাকাত দলের সদস্যরা ফাঁকা গুলি ছোড়ে মাইক্রোবাস ফেলে পালিয়ে যান। এ বিষয়ে প্রবাসী বিউটি আক্তারের ছোট বোন মির্জাপুর থানায় মামলা করেন।

গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আহসানুজ্জামান জানান, ঘটনার পর তথ্যপ্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে প্রথমে মাইক্রোবাসের চালক সোহাগকে চিহ্নিত করা হয়। পরে গতকাল সোমবার গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল সাভারের তেতুঁলঝড়া এলাকা থেকে সোহাগ (২৭), আরিফ হোসেন (৩২) ও রোমানকে (২৫) গ্রেপ্তার করে। তাঁদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পরে সাভারের কাউনদিয়া এলাকা থেকে মিলন সিকদার ওরফে রিপনকে (৪৫) গ্রেপ্তার করা হয়। শেষে ঢাকার মিরপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয় আবদুল হাকিমকে (৪৫)।

এসআই আহসানুজ্জামান আরও জানান, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বাড়ি বরিশাল, বাগেরহাট ও পটুয়াখালী জেলায়। তাঁরা ঢাকা ও সাভার এলাকায় অবস্থান করে ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধ করতেন। গত শনিবার মির্জাপুরে ডাকাতির ঘটনার সমন্বয় করেন গ্রেপ্তার আবদুল হাকিম। তিনি অস্ত্র সংগ্রহ করেন।

গ্রেপ্তার সবাইকে আজ আদালতে হাজির করে রিমান্ডের আবেদন করা হয়। টাঙ্গাইলের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রুমেলিয়া সিরাজাম আসামিদের ছয় দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আদালত পুলিশের পরিদর্শক লুৎফর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর প রব স

এছাড়াও পড়ুন:

ল্যুভর জাদুঘর থেকে মূল্যবান গয়না চুরির ঘটনায় আরও পাঁচজন গ্রেপ্তার

প্যারিসের ল্যুভর জাদুঘর থেকে অতিমূল্যবান গয়না চুরির ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আরও পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছেন প্যারিসের সরকারি প্রসিকিউটর লর বেকো। এ নিয়ে গ্রেপ্তারের মোট সংখ্যা দাঁড়াল সাত। আগের দিন লর বেকো বলেছিলেন, আগে গ্রেপ্তার দুই সন্দেহভাজন চুরি ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগ ‘আংশিকভাবে’ স্বীকার করেছেন।

আজ বৃহস্পতিবার স্থানীয় রেডিও আরটিএলকে লর বেকো বলেন, নতুন গ্রেপ্তার পাঁচ ব্যক্তির মধ্যে একজনকে ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া ডিএনএর মাধ্যমে শনাক্ত করা হয়েছে। পাঁচজনের মধ্যে তিনিই ছিলেন ‘অন্যতম প্রধান সন্দেহভাজন’।

প্রধান সন্দেহভাজনকে ‘নজরদারিতে’ রাখা হয়েছিল মন্তব্য করে লর বেকো জানান, এই পাঁচজনকে সেন-সাঁ-দনিসহ প্যারিসের বিভিন্ন থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে তাঁদের বিস্তারিত তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।

১৯ অক্টোবর সকালে একদল চোর ল্যুভর জাদুঘরের অ্যাপোলো গ্যালারিতে ওপরের তলার জানালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে চার মিনিটের মধ্যে অতিমূল্যবান আটটি গয়না চুরি করে নিয়ে যায়। চুরির ঘটনার সময় দর্শনার্থীরা বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় জাদুঘরটি ঘুরে দেখছিলেন। এ ঘটনা সারা বিশ্বে ব্যাপক আলোড়ন তৈরি করে।

চুরি হওয়া গয়নাগুলোর মধ্যে ১৯ শতকের টিয়ারা, নেকলেস, কানের দুল এবং ব্রোচ (ব্লাউজ বা কোটে লাগানো ছোট বা বড় ধাতব বা রত্নজাত অলংকার) রয়েছে। এসব গয়না ফরাসি সম্রাট প্রথম নেপোলিয়ন ও তৃতীয় নেপোলিয়নের স্ত্রীর মালিকানায় ছিল।

চুরির পরপরই তদন্ত শুরু হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয়েছিল, চুরির ঘটনার সঙ্গে চারজন সংশ্লিষ্ট রয়েছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হলেও চুরি যাওয়া গয়নার কোনোটি এখনো উদ্ধার করা যায়নি।

বুধবার সংবাদ সম্মেলনে বেকো জানান, দুজন সন্দেহভাজনকে আদালতের সামনে হাজির করা হবে। ‘সংঘবদ্ধ চুরির’ দায়ে তাঁদের সর্বোচ্চ সাজা ১৫ বছর এবং ‘অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের’ জন্য সর্বোচ্চ ১০ বছর কারাদণ্ড হতে পারে।

প্রথম যে দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাঁদের একজনের বয়স ৩৪ বছর। তিনি আলজেরিয়ার নাগরিক। অন্যজনের বয়স ৩৯ বছর। তিনি কোন দেশের নাগরিক, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। গত শনিবার (১৫ অক্টোবর) প্যারিসের উত্তরের অবেরভিলিয়েরস শহরতলি থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ল্যুভর জাদুঘর থেকে মূল্যবান গয়না চুরির ঘটনায় আরও পাঁচজন গ্রেপ্তার