করমুক্ত ঘোষণা দেওয়া ১০টি আন্তর্জাতিক পুরস্কারের চারটিতে অর্থ পান বিজয়ীরা
Published: 4th, June 2025 GMT
চলতি বছরের বাজেটে নোবেল পুরস্কারসহ ১০টি আন্তর্জাতিক পুরস্কারের অর্থকে করমুক্ত রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। বাজেটে বলা হয়েছে, বাংলাদেশি কেউ যদি এসব পুরস্কার পান, তবে এই পুরস্কার থেকে প্রাপ্ত অর্থ সেই ব্যক্তি মোট আয় থেকে বাদ দিতে পারবেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এই ১০ পুরস্কারের মধ্যে ৪টিতে সরাসরি কোনো অর্থমূল্যের পুরস্কার নেই। এসব পুরস্কার বিজয়ীরা কোনো অর্থ পান না। এই পুরস্কারগুলো হলো একাডেমি অ্যাওয়ার্ড (অস্কার), গ্র্যামি, এমি ও গোল্ডেন গ্লোব।
এবারের বাজেটে নোবেল পুরস্কারসহ র্যামন ম্যাগসাইসাই, বুকার, পুলিৎজার, সাইমন বলিভার, একাডেমি অ্যাওয়ার্ড (অস্কার), গ্র্যামি, এমি, গোল্ডেন গ্লোব ও কান চলচ্চিত্র উৎসব পুরস্কারে বাংলাদেশি বিজয়ীদের প্রাপ্ত অর্থ করমুক্ত রাখা হয়েছে।
আগামী অর্থবছরের বাজেটে আয়কর আইনের ষষ্ঠ তফসিলে সংশোধন করে এসব পুরস্কারের অর্থকে করমুক্ত রাখার প্রস্তাব করা হয়। বিদ্যমান আয়কর আইন অনুসারে, বিদেশ থেকে কোনো আয় যদি রেমিট্যান্সের শর্ত মেনে দেশে আনা হয়, তাহলে তা করমুক্ত। কিন্তু আলোচ্য বিদেশি পুরস্কার কেউ যদি পান, তাহলে পুরস্কারের অর্থ কীভাবে আয়করের আওতায় আসবে, কিংবা করমুক্ত থাকবে কি না, তা পরিষ্কার বলা নেই। এখন পরিষ্কার করে বলা হলো ওই ১০ পুরস্কারের অর্থ করমুক্ত থাকবে।
কোন পুরস্কারে কত অর্থ মেলে
সুইডিশ একাডেমি প্রদত্ত নোবেল পুরস্কারের আর্থিক মূল্য প্রতিবছর ভিন্ন হলেও ২০২৪ সালে বিজয়ীরা পেয়েছেন প্রায় ১১ মিলিয়ন সুইডিশ ক্রোনা, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৩ কোটি ৯৯ লাখ ২০ হাজার টাকা (১ সুইডিশ ক্রোনা ১২ দশমিক ৭২ টাকা দর হিসেবে ধরা হয়েছে)। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ২০০৬ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার পান।
এ ছাড়া এশিয়ার নোবেলখ্যাত র্যামন ম্যাগসাইসাই পুরস্কার বিজয়ী একজন পান ৫০ হাজার মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় টাকায় ৬১ লাখ টাকা (১ ডলার সমান ১২২ টাকা ধরে)। এ পর্যন্ত কয়েকজন বাংলাদেশি এই পুরস্কার পান।
আন্তর্জাতিক বুকার পুরস্কারে বিজয়ী একজন লেখক পান ৫০ হাজার ব্রিটিশ পাউন্ড বা ৭৫ লাখ টাকা। এ ছাড়া সংক্ষিপ্ত তালিকায় জায়গা পাওয়া প্রতিটি লেখক ও অনুবাদকও পান ২ হাজার ৫০০ পাউন্ড করে।
বিশ্বের সাংবাদিকতার সবচেয়ে বড় পুরস্কার পুলিৎজার। এই পুরস্কারের বিজয়ী সাংবাদিক পান ১৫ হাজার ডলার, যা বাংলাদেশি টাকায় ১৮ লাখ ৩০ হাজার টাকা।
সাইমন বলিভার পুরস্কারটি প্রতি দুই বছর পরপর ২৪ জুলাই প্রদান করে ইউনেস্কো কর্তৃপক্ষ। পুরস্কারটি অর্থায়ন করে ভেনেজুয়েলা সরকার। এ পুরস্কারের আর্থিক মূল্য ২৫ হাজার মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি টাকায় ৩০ লাখ ৫০ হাজার টাকা। মানুষের স্বাধীনতা, মর্যাদা, ন্যায্যতা, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ব্যবস্থা গঠনে অবদান রাখার কারণে এই পুরস্কার দেওয়া হয়।
যে পুরস্কারে নেই কোনো অর্থ
একাডেমি অ্যাওয়ার্ড (অস্কার), গ্র্যামি, এমি ও গোল্ডেন গ্লোব—এই চার পুরস্কারে কোনো আর্থিক পুরস্কার নেই। তবে অস্কার পুরস্কার পাওয়ার পর তারকারা ব্র্যান্ড ভ্যালু ও চুক্তিতে বিভিন্ন অর্থ পেয়ে থাকেন। এই অর্থ সরাসরি পুরস্কার থেকে আসে না। অস্কার বিজয়ীরা একটি ২৪ ক্যারেট সোনার প্রলেপযুক্ত ব্রোঞ্জের পদক পান, যার আনুমানিক মূল্য ৪০০ ডলার। গ্র্যামি বিজয়ীরা একটি ২৪ ক্যারেট সোনার প্রলেপযুক্ত ব্রোঞ্জের পদক পান, যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ৮০০ ডলার। এমি অ্যাওয়ার্ড বিজয়ীরা সরাসরি কোনো নগদ অর্থ পুরস্কার পান না। বিজয়ীরা একটি ২৪ ক্যারেট সোনার প্রলেপযুক্ত ব্রোঞ্জের পদক পান। এই অ্যাওয়ার্ডের আনুমানিক মূল্য ৩০০ থেকে ৪০০ ডলার। গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার বিজয়ীদের কোনো নগদ অর্থ প্রদান করা হয় না।
তবে চলচ্চিত্র জগতের সবচেয়ে বড় উৎসব কানে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র পুরস্কারে আর্থিক সম্মাননা থাকে না। তবে শ্রেনিভেদে অন্যান্য কিছু পুরস্কারে অর্থ পুরস্কার দেওয়া হয়। তবে একাডেমি অ্যাওয়ার্ড, গ্র্যামি, এমি, গোল্ডেন গ্লোব ও সাইমন বলিভার পুরস্কারে এখনো কোনো বাংলাদেশি পুরস্কার পাননি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রস ক র প ন র প রস ক র ই প রস ক র ব প রস ক র ক র ব জয় করম ক ত আর থ ক অর থ প ব জয় র এক ড ম
এছাড়াও পড়ুন:
আয়কর রিটার্নে ভুল হলে কীভাবে ঠিক করবেন
বার্ষিক আয়কর বিবরণী বা রিটার্ন জমায় ইচ্ছায় হোক আর অনিচ্ছায় হোক, ভুল হতেই পারে। করের হিসাবেই বেশি ভুল হয়। কর রেয়াতের হিসাবেও ভুল করেন অনেক করদাতা। এ ছাড়া করদাতারা এমনিতেই আয়কর নিয়ে ভয় ও শঙ্কায় থাকেন।
যদি কোনো কারণে রিটার্ন ভুল হয়ে যায়, তাহলে আপনার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়বে না। আপনি রিটার্ন জমার পরও তা সংশোধন করতে পারবেন। দুশ্চিন্তার কারণ নেই।
এবার দেখা যাক, কীভাবে রিটার্নের ভুল সংশোধন করবেন।
তিন ভুল সংশোধন করা যাবে
রিটার্নে তিন ধরনের ভুল সংশোধন করা যাবে। রিটার্ন দাখিলের পর যদি করদাতার কাছে প্রতীয়মান হয় যে তাঁর প্রদেয় কর সঠিকভাবে পরিগণিত হয়নি বা সঠিক অঙ্কে পরিশোধিত হয়নি, তাহলে তিনি সংশোধিত রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন। যেসব ভুল সংশোধন করা যাবে, তা হলো—১. প্রদর্শিত আয়, ২. দাবি করা কর অব্যাহতি বা ক্রেডিট ও ৩. অন্য যেকোনো যৌক্তিক কারণে ভুল।
যাঁরা ভুল সংশোধন করতে পারবেন না
রিটার্নে তিন ধরনের কারণে ভুল সংশোধন করা যাবে না। এগুলো হলো—১. রিটার্ন দাখিল করার তারিখ থেকে ১৮০ দিন শেষ হওয়ার পর, ২. সংশোধিত রিটার্ন প্রথমবার দাখিলের পর ও ৩. মূল রিটার্নটি নিরীক্ষার জন্য নির্বাচিত হওয়ার পর।
অনলাইনে সংশোধিত রিটার্ন
করদাতাদের জন্য অনলাইনে সংশোধিত রিটার্ন জমার সুবিধা চালু করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এ জন্য ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে সংশোধন অপশন ব্যবহার করতে হবে। সংশোধনী রিটার্নে যদি করের পরিমাণ বাড়ে, তাহলে নিয়ম অনুসারে বাড়তি করসহ জরিমানা দিতে হবে।
যেসব করদাতা অনলাইনে মূল আয়কর রিটার্ন দাখিলের পর ভুলত্রুটির কারণে অনলাইনে সংশোধিত রিটার্ন দাখিল করতে চান, তাঁদের জন্য অনলাইনে সংশোধিত আয়কর রিটার্ন দাখিলের ব্যবস্থা চালু আছে। যাঁরা সংশোধন অপশন ব্যবহারের জন্য অনলাইনে প্রবেশ করবেন, তাঁদের অবশ্যই সংশোধিত রিটার্ন দাখিল করতে হবে।
আয়কর দিবস–পরবর্তী সময়েও বছরব্যাপী অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল করার সুবিধাও চালু আছে।
সরাসরি রিটার্ন দাখিল
আয়কর আইনে কর কার্যালয়ে গিয়েও ভুল সংশোধনী রিটার্ন দেওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে। সর্বজনীন স্বনির্ধারণী পদ্ধতিতে কোনো করদাতা রিটার্ন দেওয়ার পর যদি দেখেন যে অনিচ্ছাকৃত ভুলে রিটার্নে কম আয় দেখিয়েছেন, কম কর পরিশোধ করেছেন কিংবা বেশি কর রেয়াত, কর অব্যাহতি বা অন্য কোনো কারণে কম কর পরিশোধ করেছেন। হিসাবের ভুলেও এমন হতে পারে। তাহলে সংশ্লিষ্ট উপকর কমিশনারের কাছে এই রিটার্ন জমা দিতে হয়।
আপনি ভুল সংশোধনী রিটার্ন জমার পর উপকর কমিশনার যদি সন্তুষ্ট হন যে সব শর্ত পূরণ করা হয়েছে, তাহলে তিনি রিটার্নটি গ্রহণ করবেন। প্রাপ্তি স্বীকার রসিদ দেবেন।