চলতি বছরের বাজেটে নোবেল পুরস্কারসহ ১০টি আন্তর্জাতিক পুরস্কারের অর্থকে করমুক্ত রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। বাজেটে বলা হয়েছে, বাংলাদেশি কেউ যদি এসব পুরস্কার পান, তবে এই পুরস্কার থেকে প্রাপ্ত অর্থ সেই ব্যক্তি মোট আয় থেকে বাদ দিতে পারবেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এই ১০ পুরস্কারের মধ্যে ৪টিতে সরাসরি কোনো অর্থমূল্যের পুরস্কার নেই। এসব পুরস্কার বিজয়ীরা কোনো অর্থ পান না। এই পুরস্কারগুলো হলো একাডেমি অ্যাওয়ার্ড (অস্কার), গ্র্যামি, এমি ও গোল্ডেন গ্লোব।

এবারের বাজেটে নোবেল পুরস্কারসহ র‍্যামন ম্যাগসাইসাই, বুকার, পুলিৎজার, সাইমন বলিভার, একাডেমি অ্যাওয়ার্ড (অস্কার), গ্র্যামি, এমি, গোল্ডেন গ্লোব ও কান চলচ্চিত্র উৎসব পুরস্কারে বাংলাদেশি বিজয়ীদের প্রাপ্ত অর্থ করমুক্ত রাখা হয়েছে।

আগামী অর্থবছরের বাজেটে আয়কর আইনের ষষ্ঠ তফসিলে সংশোধন করে এসব পুরস্কারের অর্থকে করমুক্ত রাখার প্রস্তাব করা হয়। বিদ্যমান আয়কর আইন অনুসারে, বিদেশ থেকে কোনো আয় যদি রেমিট্যান্সের শর্ত মেনে দেশে আনা হয়, তাহলে তা করমুক্ত। কিন্তু আলোচ্য বিদেশি পুরস্কার কেউ যদি পান, তাহলে পুরস্কারের অর্থ কীভাবে আয়করের আওতায় আসবে, কিংবা করমুক্ত থাকবে কি না, তা পরিষ্কার বলা নেই। এখন পরিষ্কার করে বলা হলো ওই ১০ পুরস্কারের অর্থ করমুক্ত থাকবে।

কোন পুরস্কারে কত অর্থ মেলে

সুইডিশ একাডেমি প্রদত্ত নোবেল পুরস্কারের আর্থিক মূল্য প্রতিবছর ভিন্ন হলেও ২০২৪ সালে বিজয়ীরা পেয়েছেন প্রায় ১১ মিলিয়ন সুইডিশ ক্রোনা, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৩ কোটি ৯৯ লাখ ২০ হাজার টাকা (১ সুইডিশ ক্রোনা ১২ দশমিক ৭২ টাকা দর হিসেবে ধরা হয়েছে)। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ২০০৬ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার পান।

এ ছাড়া এশিয়ার নোবেলখ্যাত র‍্যামন ম্যাগসাইসাই পুরস্কার বিজয়ী একজন পান ৫০ হাজার মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় টাকায় ৬১ লাখ টাকা (১ ডলার সমান ১২২ টাকা ধরে)। এ পর্যন্ত কয়েকজন বাংলাদেশি এই পুরস্কার পান।

আন্তর্জাতিক বুকার পুরস্কারে বিজয়ী একজন লেখক পান ৫০ হাজার ব্রিটিশ পাউন্ড বা ৭৫ লাখ টাকা। এ ছাড়া সংক্ষিপ্ত তালিকায় জায়গা পাওয়া প্রতিটি লেখক ও অনুবাদকও পান ২ হাজার ৫০০ পাউন্ড করে।

বিশ্বের সাংবাদিকতার সবচেয়ে বড় পুরস্কার পুলিৎজার। এই পুরস্কারের বিজয়ী সাংবাদিক পান ১৫ হাজার ডলার, যা বাংলাদেশি টাকায় ১৮ লাখ ৩০ হাজার টাকা।

সাইমন বলিভার পুরস্কারটি প্রতি দুই বছর পরপর ২৪ জুলাই প্রদান করে ইউনেস্কো কর্তৃপক্ষ। পুরস্কারটি অর্থায়ন করে ভেনেজুয়েলা সরকার। এ পুরস্কারের আর্থিক মূল্য ২৫ হাজার মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি টাকায় ৩০ লাখ ৫০ হাজার টাকা। মানুষের স্বাধীনতা, মর্যাদা, ন্যায্যতা,  অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ব্যবস্থা গঠনে অবদান রাখার কারণে এই পুরস্কার দেওয়া হয়।

যে পুরস্কারে নেই কোনো অর্থ

একাডেমি অ্যাওয়ার্ড (অস্কার), গ্র্যামি, এমি ও গোল্ডেন গ্লোব—এই চার পুরস্কারে কোনো আর্থিক পুরস্কার নেই। তবে অস্কার পুরস্কার পাওয়ার পর তারকারা ব্র্যান্ড ভ্যালু ও চুক্তিতে বিভিন্ন অর্থ পেয়ে থাকেন। এই অর্থ সরাসরি পুরস্কার থেকে আসে না। অস্কার বিজয়ীরা একটি ২৪ ক্যারেট সোনার প্রলেপযুক্ত ব্রোঞ্জের পদক পান, যার আনুমানিক মূল্য ৪০০ ডলার। গ্র্যামি বিজয়ীরা একটি ২৪ ক্যারেট সোনার প্রলেপযুক্ত ব্রোঞ্জের পদক পান, যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ৮০০ ডলার। এমি অ্যাওয়ার্ড বিজয়ীরা সরাসরি কোনো নগদ অর্থ পুরস্কার পান না। বিজয়ীরা একটি ২৪ ক্যারেট সোনার প্রলেপযুক্ত ব্রোঞ্জের পদক পান। এই অ্যাওয়ার্ডের আনুমানিক মূল্য ৩০০ থেকে ৪০০ ডলার। গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার বিজয়ীদের কোনো নগদ অর্থ প্রদান করা হয় না।

তবে চলচ্চিত্র জগতের সবচেয়ে বড় উৎসব কানে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র পুরস্কারে আর্থিক সম্মাননা থাকে না। তবে শ্রেনিভেদে অন্যান্য কিছু পুরস্কারে অর্থ পুরস্কার দেওয়া হয়। তবে একাডেমি অ্যাওয়ার্ড, গ্র্যামি, এমি, গোল্ডেন গ্লোব ও সাইমন বলিভার পুরস্কারে এখনো কোনো বাংলাদেশি পুরস্কার পাননি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রস ক র প ন র প রস ক র ই প রস ক র ব প রস ক র ক র ব জয় করম ক ত আর থ ক অর থ প ব জয় র এক ড ম

এছাড়াও পড়ুন:

টিউলিপের আয়করসহ অন্যান্য নথি জব্দ করেছে দুদক

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার কন্যা যুক্তরাজ্যের এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের ১৩ বছরের আয়করসহ অন্যান্য নথিপত্র জব্দ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ঢাকার শ্যামলীর রিংরোডের জনতা হাউজিং সোসাইটিতে টিউলিপের নামের একটি ফ্ল্যাট-সংক্রান্ত কাগজপত্রও জব্দ করা হয়েছে রাজউক থেকে।
 
বুধবার দুদক মহাপরিচালক ও মুখপাত্র মো. আক্তার হোসেন এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের ওই তথ্য জানান। 

জানা গেছে, ক্রয়মূল্য পরিশোধ না করে রাজধানীর গুলশানে ইস্টার্ন হাউজিংয়ের একটি ফ্ল্যাট দখল করার অভিযোগে টিউলিপসহ তিন জনের বিরুদ্ধে সম্প্রতি মামলা করে দুদক। এই মামলা তদন্ত পর্যায়ে আয়কর নথি ও অন্য কাগজপত্র জব্দ করা হয়েছে। 

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে দুদক মুখপাত্র বলেছেন, তদন্তের প্রয়োজনে তদন্ত কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট যে কোনো নথিপত্র জব্দ করতে পারেন। এটি তারই একটি অংশ। 

মঙ্গলবার দুদকের উপসহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন কর অঞ্চল-৬-এর কর সার্কেল-১২২ এর উপকর কমিশনারের কার্যালয় থেকে ওইসব নথি জব্দ করেন। টিউলিপের ২০০৬-০৭ করবর্ষ থেকে ২০১৮-১৯ করবর্ষ পর্যন্ত দাখিল করা আয়কর রিটার্ন এবং সংশ্লিষ্ট নথি এখন দুদকের হাতে। মোট ৮৭টি পৃষ্ঠার এসব নথির মধ্যে ২০০৬-১৫ করবর্ষ পর্যন্ত প্রতিটি আয়কর রিটার্নে ‘অ্যাডভান্স টুওয়ার্ডস ডেভেলপার্স’ শিরোনামে ৫ লাখ টাকা ব্যয়ের তথ্য রয়েছে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • টিউলিপের আয়করসহ অন্যান্য নথি জব্দ করল দুদক
  • টিউলিপের আয়করসহ অন্যান্য নথি জব্দ করেছে দুদক
  • টিউলিপ সিদ্দিকের ১৩ বছরের আয়কর নথি জব্দ করেছে দুদক
  • সরকারের বক্তব্যের সঙ্গে বাজেটের ব্যাপক অমিল