ঈদের আগের রাত। রাজধানীর উত্তর শাহজাহানপুর কোরবানির পশুর হাট। কাউন্টারের মাইক থেকে নানা রকম ঘোষণা। স্বেচ্ছাসেবকদের উদ্দেশে ঘোষণা এলো- একসাথে অনেক গরু বিক্রি হয়েছে; বের হওয়ার পথে রশিদ দেখে যেন গরু ছাড়া হয়। এই যখন ঘোষণা মাইকে তখনও পাশেই চলছে ক্রেতাবিক্রেতাদের মাঝে পশু নিয়ে দামাদামি। শেষ রাতে এভাবেই যেন জমে উঠেছে রাজধানীর পশুর হাটগুলো।

আজ শুক্রবার রাতে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ক্রেতা-বিক্রেতায় ভরা শাহজাহানপুর হাট। হাটে তখনও হাজার দুয়েক গরুর দরদাম চলছে। আবার ট্রাকে ট্রাকেও আসছে নতুন গরু। ছাগলের হাটেও রাতে ছিল ব্যাপক আমদামি। তবে সবাই দরদামে ব্যস্ত। অনেকে খামারি যখন গরু বিক্রি করে ফিরছিলেন। তখন কেউ কেউ শেষ গরুটি কাঙ্ক্ষিত দরের জন্য ক্রেতা খুঁজছেন। 

যশোর থেকে বেপারী রকি আহমেদ ১৫টি গরু এনেছিলেন বেশি লাভের আশায়। ১৪টি গরু শুক্রবার সন্ধ্যার মধ্যে বিক্রি হলেও বড় গরুটা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। গত তিনদিন বড় গরুটার দাম হাঁকিয়েছিলেন আড়াই লাখ টাকা। তবে আজকে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকায় অনড়। এখন পর্যন্ত তার এই গরুটার দাম ১ লাখ ৫৬ হাজার টাকা পর্যন্ত বলেছে।

রকি আহমেদ সমকালকে বলেন, ‘ছোট ও মাঝারি গরু বিক্রিতে আশানুরূপ লাভ হয়েছে। এই গরুটা ১৫-১৬ হাজার লসেই বিক্রি করতে হবে। আজ রাতে বিক্রি হলে কাল সকালে ঈদের নামাজ পড়েই বাড়ির দিকে রওনা করব।’

রংপুর মিঠাপুকুর থেকে ১৬টি গরু নিয়ে এসেছেন জাহাঙ্গীর। এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলার সময় হেসেই বললেন, ‘১২টা গরু বিক্রি হয়েছে। এখন আছে আর ৪টা। রাতেই বিক্রি হবে। অনেকেই শেষ রাতে গরু কিনেন। দাম এ বছর ততটা খারাপ না। ক্রেতা-বিক্রেতা সবার লাভই হচ্ছে।’

রাতের হাটে বাবাকে নিয়ে ব্যাংক কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম এসেছিলেন পশুর হাটে। সমকালের সঙ্গে আলাপে বলেন, ‘ব্যাংকারদের শেষ রাতেই গরু কিনতে হয়। এর আগে হাটে বাবা এসেছিলেন। তবে তার গরু পছন্দ হয়নি। তাই আজকে বাবার সঙ্গে আসা। ছোট আর মাঝারি গরু তেমন একটা হাটে নেই। যা আছে সব বড়। দাম এখনও বেশি ছাড়েনি। কয়েকটি গরু দেখেছি দামে যেটা মিলবে সেটাই নিয়ে যাবো।’

হাটের স্বেচ্ছাসেবকদের একজন বলেন, ‘বড় গরু বিক্রি না হওয়ার পেছনে বেপারী আর দালালরা দায়ী। তারা দাম বাড়িয়ে বলেছেন। তাই এখন পর্যন্ত অনেকের সব গরু বিক্রি শেষে একটা গরুর জন্য বসে আছে। তবে শেষ মুহূর্তে কম দামে বিক্রি করতে হবে।’

গরুর হাটের পাশেই ছাগলের হাট। তবে সংখ্যার দিক থেকে হাটে এখনও ছাগল বেশি। অনেকেই আজ দুপুরে ছাগল নিয়ে হাটে এসেছেন। জামালপুরের শামীম বলেন, ‘সকালে ২০টি ছাগল নিয়ে হাটে এসেছি। এরমধ্যেই ১০টি বিক্রি হয়েছে। কাল সকালের মধ্যে সবগুলো বিক্রি করে যাবে। এ বছর ছাগলের দাম একটু বেশি। কারণ খাবারের দাম বেশি।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ক রব ন র হ ট

এছাড়াও পড়ুন:

কোরবানির পশুর হাট: শেষ রাতেও চলছে দরকষাকষি

ঈদের আগের রাত। রাজধানীর উত্তর শাহজাহানপুর কোরবানির পশুর হাট। কাউন্টারের মাইক থেকে নানা রকম ঘোষণা। স্বেচ্ছাসেবকদের উদ্দেশে ঘোষণা এলো- একসাথে অনেক গরু বিক্রি হয়েছে; বের হওয়ার পথে রশিদ দেখে যেন গরু ছাড়া হয়। এই যখন ঘোষণা মাইকে তখনও পাশেই চলছে ক্রেতাবিক্রেতাদের মাঝে পশু নিয়ে দামাদামি। শেষ রাতে এভাবেই যেন জমে উঠেছে রাজধানীর পশুর হাটগুলো।

আজ শুক্রবার রাতে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ক্রেতা-বিক্রেতায় ভরা শাহজাহানপুর হাট। হাটে তখনও হাজার দুয়েক গরুর দরদাম চলছে। আবার ট্রাকে ট্রাকেও আসছে নতুন গরু। ছাগলের হাটেও রাতে ছিল ব্যাপক আমদামি। তবে সবাই দরদামে ব্যস্ত। অনেকে খামারি যখন গরু বিক্রি করে ফিরছিলেন। তখন কেউ কেউ শেষ গরুটি কাঙ্ক্ষিত দরের জন্য ক্রেতা খুঁজছেন। 

যশোর থেকে বেপারী রকি আহমেদ ১৫টি গরু এনেছিলেন বেশি লাভের আশায়। ১৪টি গরু শুক্রবার সন্ধ্যার মধ্যে বিক্রি হলেও বড় গরুটা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। গত তিনদিন বড় গরুটার দাম হাঁকিয়েছিলেন আড়াই লাখ টাকা। তবে আজকে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকায় অনড়। এখন পর্যন্ত তার এই গরুটার দাম ১ লাখ ৫৬ হাজার টাকা পর্যন্ত বলেছে।

রকি আহমেদ সমকালকে বলেন, ‘ছোট ও মাঝারি গরু বিক্রিতে আশানুরূপ লাভ হয়েছে। এই গরুটা ১৫-১৬ হাজার লসেই বিক্রি করতে হবে। আজ রাতে বিক্রি হলে কাল সকালে ঈদের নামাজ পড়েই বাড়ির দিকে রওনা করব।’

রংপুর মিঠাপুকুর থেকে ১৬টি গরু নিয়ে এসেছেন জাহাঙ্গীর। এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলার সময় হেসেই বললেন, ‘১২টা গরু বিক্রি হয়েছে। এখন আছে আর ৪টা। রাতেই বিক্রি হবে। অনেকেই শেষ রাতে গরু কিনেন। দাম এ বছর ততটা খারাপ না। ক্রেতা-বিক্রেতা সবার লাভই হচ্ছে।’

রাতের হাটে বাবাকে নিয়ে ব্যাংক কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম এসেছিলেন পশুর হাটে। সমকালের সঙ্গে আলাপে বলেন, ‘ব্যাংকারদের শেষ রাতেই গরু কিনতে হয়। এর আগে হাটে বাবা এসেছিলেন। তবে তার গরু পছন্দ হয়নি। তাই আজকে বাবার সঙ্গে আসা। ছোট আর মাঝারি গরু তেমন একটা হাটে নেই। যা আছে সব বড়। দাম এখনও বেশি ছাড়েনি। কয়েকটি গরু দেখেছি দামে যেটা মিলবে সেটাই নিয়ে যাবো।’

হাটের স্বেচ্ছাসেবকদের একজন বলেন, ‘বড় গরু বিক্রি না হওয়ার পেছনে বেপারী আর দালালরা দায়ী। তারা দাম বাড়িয়ে বলেছেন। তাই এখন পর্যন্ত অনেকের সব গরু বিক্রি শেষে একটা গরুর জন্য বসে আছে। তবে শেষ মুহূর্তে কম দামে বিক্রি করতে হবে।’

গরুর হাটের পাশেই ছাগলের হাট। তবে সংখ্যার দিক থেকে হাটে এখনও ছাগল বেশি। অনেকেই আজ দুপুরে ছাগল নিয়ে হাটে এসেছেন। জামালপুরের শামীম বলেন, ‘সকালে ২০টি ছাগল নিয়ে হাটে এসেছি। এরমধ্যেই ১০টি বিক্রি হয়েছে। কাল সকালের মধ্যে সবগুলো বিক্রি করে যাবে। এ বছর ছাগলের দাম একটু বেশি। কারণ খাবারের দাম বেশি।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ