ডিসেম্বরে না হয়ে এপ্রিলে কেন নির্বাচন, বোধগম্য নয় বাম জোটের
Published: 7th, June 2025 GMT
জাতির উদ্দেশে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের দেওয়া ভাষণে সাধারণ মানুষের চাওয়া-পাওয়ার প্রতিফলন ঘটেনি বলে মনে করে বাম গণতান্ত্রিক জোট। তারা বলেছে, ডিসেম্বরে না হয়ে এপ্রিলে কেন নির্বাচন, তা বোধগম্য নয়। ভাষণে ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করার অভিলাষ ফুটে উঠেছে।
শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো বাম গণতান্ত্রিক জোটের এক বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়েছে। জোটের নেতারা বলেন, রাখাইনকে করিডর, চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কন্টিনেন্টাল টার্মিনাল বিদেশিদের কাছে লিজ দেওয়ার বিষয়ে এবং এ নিয়ে বিরোধিতাকারীদের নিয়ে ভাষণে যা বলা হয়েছে এবং যে সময়ের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের কথা বলা হয়েছে, তা মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়।
ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচন ঘোষণা এবং দেশের সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা ও জনস্বার্থে বিরোধী যেকোনো কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়ানোর জন্য সব বাম-প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও ব্যক্তির প্রতি আহ্বান জানায় বাম জোট। জোটের নেতারা বলেন, অধিকাংশ দল ও জনগণের মতকে উপেক্ষা করে বিশেষ দল-গোষ্ঠীর স্বার্থে এপ্রিলে নির্বাচন ঘোষণার মধ্য দিয়ে অধ্যাপক ইউনূস নিরপেক্ষতা হারিয়েছেন।
প্রধান উপদেষ্টা নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল বিদেশিদের কাছে লিজ দেওয়ার বিষয়ে যেসব কথার অবতারণা করেছেন, তা কোনো দেশপ্রেমিক মানুষ গ্রহণ করতে পারে না উল্লেখ করে উদ্বেগ জানান বাম জোটের নেতারা। তাঁদের ভাষ্য, তিনি (প্রধান উপদেষ্টা) এ বিষয়ে ভিন্নমত পোষণকারী আন্দোলনকারীদের প্রতিরোধ করার যে ঘোষণা দিয়েছেন, তা প্রকারান্তরে ‘মব সন্ত্রাস’কেই উসকে দিচ্ছে। সরকারের দায়িত্বপূর্ণ কোনো পদে থেকে এ ধরনের উসকানি জনগণ গ্রহণ করবে না; বরং প্রত্যাখ্যান করবে।
বাম জোটের বিবৃতিতে বলা হয়, চট্টগ্রাম বন্দর লাভজনক। এই বন্দর বিদেশিদের কাছে লিজ দেওয়ার অর্থ দেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তার ওপর আঘাত হানার পথ পরিষ্কার করা। ইতিমধ্যে দেশের বামপন্থী গণতান্ত্রিক দল ও দেশপ্রেমিক দলসমূহ সরকারের এই পদক্ষেপ রুখে দাঁড়াতে ২৭ ও ২৮ জুন ঢাকা-চট্টগ্রাম ‘রোড মার্চ’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। জোটের নেতা বলেন, এই কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। কোনো হুমকিধমকি দিয়ে এই কর্মসূচি থেকে দেশপ্রেমিক জনগণকে পিছু হটানো যাবে না।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ঈদের আগে শ্রমজীবী মানুষ শ্রমিক-কর্মচারীরা অনেকে বেতন–ভাতা পাননি। ভাষণে বকেয়া বেতন-বোনাসের কোনো কথা নেই। এমনকি গত রোজার ঈদের সময় সরকার ও মালিকপক্ষ যে ওয়াদা করেছিল, তা-ও বাস্তবায়িত হয়নি।
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন বাম জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন (প্রিন্স), সিপিবির সভাপতি মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গণত ন ত র ক সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
একাত্তরের গণহত্যার জন্য জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে হবে: আলাল
বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেছেন, ‘‘বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি তোলা উচিত, চব্বিশ এবং আগের গণহত্যা, নির্যাতন-নিপীড়ন, ভোটাধিকার হরণ—এসবের জন্য যদি আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হতে পারে। তাহলে একাত্তরে গণহত্যা, ধর্ষণ, নারকীয় হত্যাযজ্ঞের জন্য জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করতে হবে। তাদের কার্যক্রমও নিষিদ্ধ করতে হবে। একই অপরাধে দুই রকমের বিচার হতে পারে না।’’
শনিবার (১ নভেম্বর) রাজধানী ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের আয়োজনে ‘স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র রক্ষায় আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অপরিহার্য’ শীর্ষক মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
দ্রুত নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করুন: দুলু
নৌকা ডুবেছে, শাপলা ভাসবে: এনসিপির তুষার
মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ‘‘যদি আওয়ামী লীগের মতো একই ধরনের অপরাধে জামায়াতের বিচার না হয়, তাহলে সেটা হবে ইতিহাসের প্রতি অবিচার।’’
তিনি বলেন, ‘‘আজকে জামায়াত তাদের পোশাক-চেহারা, আচরণ পাল্টে নতুন রূপে হাজির হয়েছে। তারা হিন্দু সম্প্রদায়ের সঙ্গে বৈঠক করছে। কিন্তু, মূল উদ্দেশ্য বিএনপিকে আক্রমণ করা। এই বহুরূপীদের চেহারা জনগণ চিনে ফেলেছে।’’
বিএনপির এই নেতা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে বিএনপিই একমাত্র শক্তি। অথচ এই শক্তিকে দুর্বল করার ষড়যন্ত্র চলছে। সরকার নিজের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে নির্বাচনের নামে প্রক্রিয়া চালালেও জনগণের সার্বভৌম ক্ষমতা কেড়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
আলাল আরো বলেন, ‘‘বর্তমান সরকার মনে করেছে, দেশের সব অনাচারের মূলে সংবিধান। কিন্তু সমস্যার মূল সংবিধান নয়—ক্ষমতার অপব্যবহার ও জনগণের ভোটাধিকার হরণ। শেখ হাসিনার ১৬-১৭ বছরের শাসনে এই অন্যায়, নির্যাতন, দুর্নীতি ও অর্থ পাচারই হয়েছে সবচেয়ে বড় বাস্তবতা।’’
ঢাকা/রায়হান/রাজীব