ভারতে পাচারের ২৫ বছর পর দেশে ফিরলেন নারী
Published: 8th, June 2025 GMT
প্রায় ২৫ বছর আগে প্রতারণার ফাঁদে পড়ে ভারতে পাচার হন খুলনার রূপসা উপজেলার কিলো গ্রামের আনোয়ারা গাজী (৪৫)। শুক্রবার (৬ জুন) বিকেলে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ফরাজীপাড়া সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশের সময় বিএসএফ-এর হাতে আটক হন তিনি।
শনিবার (৭ জুন) সকালে কুষ্টিয়া ৪৭ বিজিবি ও বিএসএফ-এর মধ্যকার পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে আনোয়ারা গাজীকে বাংলাদেশে ফেরত আনা হয়।
বিজিবি সূত্রে জানা যায়, পাচারের পর আনোয়ারা গাজী ভারতের কেরালায় অবস্থান করছিলেন। গত ২৫ বছর তার কোনো খোঁজ না পেয়ে পরিবার ধরে নিয়েছিল তিনি মারা গেছেন। বিজিবি আনোয়ারা গাজীর ছবি সংগ্রহ করে সম্ভাব্য ঠিকানা শনাক্ত করে এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্টদের সহায়তায় ছবিটি তার পরিবারের কাছে পৌঁছে দেয়। ছবি দেখে আবেগে ভেঙে পড়েন তার স্বজনরা এবং নতুন করে ফিরে পাওয়ার আশায় বুক বাঁধেন।
আরো পড়ুন:
চামড়া পাচাররোধে হিলি সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার
কাঁচা চামড়া পাচার ঠেকাতে সীমান্তে কড়া অবস্থানে বিজিবি
শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কুষ্টিয়া বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধীনস্থ উদয়নগর বিওপির দায়িত্বপূর্ণ সীমান্ত পিলার ৮৪/৬-এস সংলগ্ন স্থানে ভারতের চরভদ্রা বিএসএফ ক্যাম্পের সঙ্গে কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে আনোয়ারা গাজীকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে আনোয়ারাকে আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
৪৭ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহাবুব মুর্শেদ রহমান বলেন, “সীমান্ত এলাকায় মানব পাচারসহ সব ধরনের অপরাধ প্রতিরোধে বিজিবি সর্বদা কঠোর এবং মানবিক অবস্থানে রয়েছে। আনোয়ারা গাজীকে ফিরিয়ে আনার ঘটনাটি তারই একটি বাস্তব উদাহরণ।”
ঢাকা/কাঞ্চন/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
জঙ্গি সন্দেহে কলকাতায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশি যুবক
জঙ্গি সন্দেহে কলকাতা পুলিশের বিশেষ টাস্ক ফোর্সের (এসটিএফ) হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে এক বাংলাদেশি নাগরিক। মুফতি আবদুল্লাহ আল মাসুদ নামে ওই বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয় পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার গয়েশপুর পুলিশ ফাঁড়ি এলাকা থেকে। এরপর তাকে ফাঁড়িতে নিয়ে এসে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ চলে। বৃহস্পতিবার এই ঘটনাটি ঘটেছে।
ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও ভারত থেকে নিজের দেশে ফিরে যাননি মাসুদ। তিনি অবৈধভাবে পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার কাটাগঞ্জ এলাকায় বসবাস করতেন। সম্প্রতি তার বেশ কিছু কর্মকান্ডে সন্দেহ প্রকাশ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এর পরই মাসুদকে ইসলামী উগ্রপন্থী বলে দাবি করে পুলিশে অভিযোগ করা হয়। যেহেতু তার ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, তাই পুলিশ তাকে একজন অবৈধ অভিবাসী হিসেবে বিবেচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভারতীয় আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করা হয়েছে।
বিষয়টি সামনে আসার পরই যথেষ্ট উত্তেজনা ছড়িয়েছে। যদিও এ ব্যাপারে কলকাতা পুলিশের পক্ষে কিছুই জানানো হয়নি।
অন্যদিকে, গত ২৪ ঘন্টায় ভারত বাংলাদেশের দিনাজপুর সীমান্ত ও ভোমরা ঘোজাডাঙা সীমান্তে এলাকায় অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন আরো ১১ জন বাংলাদেশি নাগরিক।
পুলিশ ও বিএসএফের যৌথ অভিযানে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় এক বাংলাদেশি নাগরিককে। আটককৃতে ওই ব্যক্তির নাম পঞ্চানন পাল। তিনি বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গা থানার বাসিন্দা। ভারতে তিনি পরিচয় বদল করে রূপায়ণ পাল নামে বসবাস করছিলেন বলে অভিযোগ। তার কাছ থেকে বাংলাদেশি পাসপোর্ট ছাড়াও ভারতের আধার কার্ড, ভোটার কার্ড ও এমনকি ভারতীয় পাসপোর্ট পর্যন্ত উদ্ধার হয়েছে।
একইদিনে ভারত থেকে অবৈধ পথে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময়ে ঘোজাডাঙ্গা ভোমরা সীমান্তের কাছে সরুপনগর এলাকার তারালি সীমান্ত থেকে বিএসএফের ১৪৩নম্বর ব্যাটালিয়নের হাতে আটক হয়েছেন আরো বাংলাদেশি নাগরিক।
সীমান্তরক্ষী বাহিনী জানিয়েছে আটকের পর তাদের স্বরূপনগর থানার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। আটককৃতদের মধ্যে রয়েছে তিন শিশু, তিনজন পুরুষ ও চারজন নারী। এর সবাই বাংলাদেশের সাতক্ষীরা এবং খুলনার বাগেরহাটের বাসিন্দা।
সুচরিতা/শাহেদ