বিএনপি-জামায়াতের নেতারা আগেভাগেই ভোটের মাঠে
Published: 12th, June 2025 GMT
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনক্ষণ এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তবে খুলনায় আগেভাগেই মাঠে নেমে পড়েছেন বিএনপি ও জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থীরা। খুলনার ছয় আসনের দুটিতে বিএনপির একজন করে প্রার্থী সক্রিয় থাকলেও অন্য চারটিতে একাধিক নেতা তৎপরতা চালাচ্ছেন।
অন্যদিকে চার মাস আগেই ছয় আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে জামায়াতে ইসলামী। দলীয় কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি দলটির প্রার্থীরা নির্বাচনকেন্দ্রিক কর্মকাণ্ডও চালাচ্ছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, খুলনা-১ (দাকোপ-বটিয়াঘাটা) আসনে ২০০১, ২০০৮ ও ২০১৮ সালে নির্বাচন করেছিলেন জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আমীর এজাজ খান। আগামী নির্বাচনেও ধানের শীষ প্রতীকের মনোনয়ন পেতে এলাকায় তৎপর তিনি। পাশাপাশি এ আসনে দলীয় ও নির্বাচনী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রদল নেতা জিয়াউর রহমান পাপুল। এলাকার লোকজনের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়ের পাশাপাশি তিনি দলীয় নেতাকর্মীকে পক্ষে রাখার চেষ্টা করছেন।
খুলনা-২ (খুলনা সদর ও সোনাডাঙ্গা) আসনে এখন পর্যন্ত সক্রিয় রয়েছেন মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম তুহিন। এরই মধ্যে সব ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও নগর বিএনপির সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠনের মধ্য দিয়ে দলের মধ্যে শক্ত অবস্থান তৈরি করেছেন তিনি। সামাজিক বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে আলোচনায় রয়েছেন এই বিএনপি নেতা। এ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলী আসগার লবী অন্য আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী। শফিকুল আলম তুহিন বলেন, দল যদি মনোনয়ন দেয় তাহলে নির্বাচন করব।
খুলনা-৩ (খালিশপুর, দৌলতপুর ও খানজাহান আলী) আসনে দলীয় ও নির্বাচনী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল। ২০১৮ সালের নির্বাচনে তিনি এ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। রকিবুল ইসলাম বকুল বলেন, মাঠ পর্যায়ে দলকে সুসংগঠিত করার কাজ করছি। আমরা জনগণের স্বার্থসংশ্লিষ্ট কাজে সহযোগিতা করে যাচ্ছি।
খুলনা-৪ (রূপসা, তেরখাদা, দিঘলিয়া) আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী তিনজন। তারা হলেন– কেন্দ্রীয় তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, যুক্তরাজ্য বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ পারভেজ মল্লিক ও কেন্দ্রীয় সাবেক তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক শরীফ শাহ কামাল তাজ। এর মধ্যে হেলাল ২০১৮ সালে ও তাজ ২০০৮ সালে এ আসন থেকে দলীয় প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন।
খুলনা-৫ (ডুমুরিয়া, ফুলতলা) আসনে এতদিন মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোল্লা মোশাররফ হোসেন মফিজ, জেলা যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক ইবাদুল হক রুবায়েদ, আমেরিকা প্রবাসী টিকু রহমান ও সাবেক ছাত্রদল নেতা শফি মোহাম্মদ খান। তবে গত ৩০ মে থেকে নির্বাচনী তৎপরতা শুরু করেছেন মহানগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ও বিসিবির সাবেক সভাপতি আলী আসগার লবী। তিনি দাবি করেন, দলের শীর্ষ পর্যায় থেকে নির্বাচনী কর্মকাণ্ড চালাতে বলেছে। সে অনুযায়ী কাজ করছি।
খুলনা-৬ আসনে বিএনপির মনোনয়ন চান পাঁচজন। তারা হলেন– জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক মো.
জামায়াতে ইসলামী
জামায়াতে ইসলামী গত ৯ ফেব্রুয়ারি খুলনার তিনটি আসনের প্রার্থী আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করে। এর কয়েকদিন আগে অন্য তিনটি আসনের প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছিল।
তারা হলেন খুলনা-১ আসনে বটিয়াঘাটা উপজেলার আমির শেখ আবু ইউসুফ, খুলনা-২ আসনে মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি শেখ জাহাঙ্গীর হুসাইন হেলাল, খুলনা-৩ আসনে মহানগর আমির অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান, খুলনা-৪ আসনে জেলা নায়েবে আমির মাওলানা কবিরুল ইসলাম, খুলনা-৫ আসনে কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এবং খুলনা-৬ আসনে খুলনা অঞ্চলের সহকারী পরিচালক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ। এর মধ্যে খুলনা-১, ২, ৩ ও ৪ আসনের প্রার্থীরা ভোটের মাঠে নতুন মুখ। খুলনা-৫ আসনে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার ২০০১ সালের নির্বাচনে জিতলেও ১৯৯১, ২০০১, ২০০৮ ও ২০১৮ সালে হারেন। অন্যদিকে খুলনা-৬ আসনে মাওলানা আবুল কালাম আজাদ হেরেছিলেন ২০১৮ সালের নির্বাচনে।
খুলনা-৫ ও ৬ আসনে জামায়াতের তৎপরতা বেশি দেখা যাচ্ছে। এরই মধ্যে দলের কেন্দ্রীয় আমিরের উপস্থিতিতে এ দুটি নির্বাচনী এলাকায় বেশ কয়েকটি সভা-সমাবেশ করেছে দলটি। তবে অন্য চার আসনের প্রার্থীরাও বসে নেই। তারা নির্বাচনী এলাকায় দলকে আরও সংগঠিত ও বিস্তৃত করার পাশাপাশি জনসম্পৃক্ততা বাড়ানোর কাজ করছেন।
এ ব্যাপারে জামায়াত নেতা মাওলানা আবুল কালাম আজাদ বলেন, জামায়াত প্রার্থীরা গণসংযোগ, বিভিন্ন পেশাজীবীর সঙ্গে মতবিনিময় ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছেন। আমরা জনগণের কাছ থেকে ভালো সাড়া পাচ্ছি।
অন্যান্য দল
জাতীয় পার্টি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, সিপিবি, ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ, বাসদসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল এখনও নির্বাচনকেন্দ্রিক তৎপরতা শুরু করেনি। নতুন দল এনসিপি একাধিক আসনে প্রার্থী দেবে বলে জনশ্রুতি রয়েছে। তবে এখনও তাদের নির্বাচনী প্রচারণা দৃশ্যমান হয়নি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আসন র প র র থ ব এনপ র স ২০১৮ স ল ল ইসল ম ৬ আসন এ আসন
এছাড়াও পড়ুন:
কৃষি ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে রয়ে গেছে আন্তঃবৈষম্য: উপদেষ্টা ফরিদা
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, কৃষি মন্ত্রণালয় এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে আন্তঃবৈষম্য এখনও রয়ে গেছে। এই বৈষম্য থাকার কারণে এখনও প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষক, ছোট খামারি ও জেলেরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। আমরা চেষ্টা করছি এ বৈষম্য দূর করার। দুই মন্ত্রণালয়ের মধ্যে আন্তঃসমস্যাগুলো সমাধান করা গেলে মানুষ উপকৃত হবে।
বৃহস্পতিবার পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলা মৎস্য বীজ উৎপাদন খামার পরিদর্শন শেষে গণমাধ্যমকে এসব কথা বলেন তিনি। উপদেষ্টা বলেন, দেশের মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য উৎপাদন এবং মাছ, দুধ, ডিম, মাংসসহ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে হলে প্রান্তিক পর্যায়ের জেলে ও কৃষকদের সহায়তা করতে হবে। আমরা সেই চেষ্টা করে যাচ্ছি।
পরে উপদেষ্টা ঈশ্বরদীর সুগারক্রপ গবেষণা ইনস্টিটিউটে (বিএসআরআই) বিজ্ঞানী, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও স্থানীয়দের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এ সময় উপদেষ্টা বলেন, লবণ, সাদা চিনি ও পালিশ করা ধবধবে সাদা চাল এই তিনটিই মানবদেহের জন্য বিষ। এই বিষ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে হলে আমাদের ঢেঁকি ছাঁটা চালের ভাত খেতে হবে। পরিমাণের অতিরিক্ত লবণ পরিহার করতে হবে এবং আমদানি করা সাদা চিনির পরিবর্তে ব্যবহার করতে হবে লাল চিনি। ইতোমধ্যে সরকার বন্ধ চিনিকল চালু করে লাল চিনির সরবরাহ বাড়াতে কাজ করছে। অচিরেই পাবনা চিনিকলসহ বন্ধ থাকা ৬টি চিনিকল চালু করা হবে।
ঈশ্বরদীর বিএসআরআই মিলনায়তনে আয়োজিত মতবিনিময় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএসআরআই মহাপরিচালক ড. কবির উদ্দিন আহমেদ। বক্তব্য দেন প্রতিষ্ঠানের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এ কে এম রাশেদুল ইসলাম, প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মনির হোসেন মিতুল, রাষ্ট্রীয় স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত কৃষক সাজাহান আলী প্রমুখ।
মৎস্য খামারে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পাবনা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা দীপক কুমার পাল। বক্তব্য দেন ঈশ্বরদী উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহাদাত হোসেন খান, জেলা মৎস্য খামার ব্যবস্থাপক ড. মোনাশিষ চৌধুরী, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুর রহমান খান, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আকলিমা খাতুন, উপজেলা মৎস্য খামার ব্যবস্থাপক রেজাউল ইসলাম প্রমুখ।