এফডিসির প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক নাজির আহমদের একটি সাক্ষাৎকার
Published: 12th, June 2025 GMT
সংবাদ: কর্মজীবনের শুরুতে অন্য পেশায় না গিয়ে চলচ্চিত্রশিল্পে এসেছিলেন কেন?
নাজির আহমদ: আমার পিতা মির্জা ফকির মোহাম্মদ ১৯৪৭-এর দেশ বিভাগের অনেক আগে থেকেই চলচ্চিত্র পরিবেশন এবং প্রদর্শন ব্যবসা করে আসছিলেন। দেশের অনেক জেলা শহরে আমাদের সিনেমা হল ছিল। ঢাকার সব সাংস্কৃতিক কর্মীর সাথে বাবার ওঠা-বসা ছিল। এছাড়া ছোটকালে পিতার সাথে আমি কলকাতা এবং বোম্বের অনেক চলচ্চিত্র নির্মাণ কেন্দ্র ঘুরে দেখেছি। সে হিসেবে বলা চলে একটি সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলেই আমি বড় হয়েছি। ছোট বয়সেই পাড়ায়, স্কুলে, কলেজে নাটক, আবৃত্তি ইত্যাদি করেছি। কাজেই রক্তের মধ্যেই সংস্কৃতির ধারা বহমান ছিল মনে হয়। সে পথ ধরেই পরে চলচ্চিত্র নির্মাণকর্মী হবার প্রেরণা পেয়েছিলাম।
সংবাদ: এ দেশে ফিল্ম ডিভিশন এবং পরে এফডিসি নির্মাণে আপনার সক্রিয় অবদান ছিল বলে আমরা জানি। এ সম্পর্কে কিছু বলবেন কি?
নাজির আহমদ: আমি বিবিসিতে থাকাকালে দেশের বিভিন্ন ডকুমেন্টারি ফিল্ম লন্ডনে বসে তৈরি করতাম। একবার পাকিস্তানের চিফ মিনিস্টার নুরুল আমিন লন্ডনে এসে আমার প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ পদ্ধতি দেখে মুগ্ধ হয়ে আমাকে দেশে এসে ফিল্ম ডিভিশন গড়ে তোলার অনুরোধ জানান। তাঁর পরামর্শমতো ’৫৩ সালে একটি ক্যামেরা সাথে নিয়ে দেশে এসে ফিল্ম ডিভিশন গড়ে তোলার প্রচেষ্টা নিই। পরে এখানে টেন্ডার দিয়ে একটি ক্যামেরা কেনা হয়। ’৫৪ সালের নির্বাচনের জন্য ফিল্ম প্রসেস করার সুযোগ-সুবিধা গড়ে তোলার বাজেট পাওয়া যাচ্ছিল না। কিন্তু নুরুল আমিন নির্বাচনে হেরে গেলে সে পরিকল্পনা প্রায় বাতিল হওয়ার উপক্রম হয়। পরে যুক্তফ্রন্ট সরকারের মন্ত্রী হিসেবে শেখ মুজিবুর রহমান এ ব্যাপারে সক্রিয় অবদান রাখেন। আমি অপারেটিভ ডাইরেক্টর হিসেবে অনারারি দায়িত্ব নিই এবং চলচ্চিত্র নির্মাণ প্রক্রিয়া শুরু হয়।
নাজির আহমদ, ১৯৪৯, লন্ডন.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন জ র আহমদ চলচ চ ত র
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যুর সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব।’’
তিনি মনে করেন, আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান এলে যেকোনো অসাংবিধানিক প্রক্রিয়া ঠেকানো যাবে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘‘আগামী নির্বাচনকে যদি অনিশ্চিত করা হয় বা বিলম্বিত করা হয়, তাহলে তার সুযোগ নেবে ফ্যাসিবাদী বা অসাংবিধানিক শক্তি। এর পরিণতি জাতি অতীতে বহুবার ভোগ করেছে। আমরা আবার সে পরিস্থিতি চাই না।’’
অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা নিয়ে পৃথক এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের মতামতের ভিত্তিতেই সাংবিধানিকভাবে এই সরকার গঠিত হয়েছে। রাষ্ট্রপতির রেফারেন্সে দেওয়া সেই মতামত এখনো বহাল আছে। এর বিপরীতে সুপ্রিম কোর্ট কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। তাই এ বিষয়ে প্রশ্ন তোলা আসলে রাজনৈতিক বক্তব্য, এর কোনো আইনি ভিত্তি নেই।’’
সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘যেকোনো সাংবিধানিক আদেশ জারি হলে তা আগামীকাল বা পরশু চ্যালেঞ্জ হতে পারে। আমরা এমন খারাপ নজির জাতির সামনে আনতে চাই না। তাই সমাধানের বিকল্প প্রস্তাব উত্থাপন করেছি। সবাইকে বিবেচনায় নিতে আহ্বান জানাচ্ছি।’’
পিআর পদ্ধতি প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দলের আন্দোলনের অধিকার আছে। তবে পিআর পদ্ধতি চাপিয়ে দেওয়ার বিষয় নয়, শেষ পর্যন্ত জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে।’’
তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘‘পিআর পদ্ধতিতে ঝুলন্ত পার্লামেন্টের ঝুঁকি থেকে যায়। তাতে রাষ্ট্র ও জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ সম্ভব হয় না। আমরা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে যেতে পারি না।’’
সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘জনগণই হলো সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ। এই দেশের জনগণ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে এবং বারবার গণতন্ত্রকে সংকট থেকে উদ্ধার করেছে।’’
আগামী সংসদে কিছু মৌলিক বিষয়ে সংশোধনের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন তিনি বলেন, ‘‘আমরা কিছু বিষয়ে ইতোমধ্যে একমত হয়েছি। তবে, ঐকমত্য কমিশনের সনদের ভেতরে যেসব পরিবর্তন হবে, সেগুলোতে অবশ্যই গণভোট নিতে হবে।’’
ঢাকা/আসাদ/রাজীব