Samakal:
2025-09-17@23:36:04 GMT

নৌকা বানিয়ে বছরে আয় ৫ লাখ

Published: 12th, June 2025 GMT

নৌকা বানিয়ে বছরে আয় ৫ লাখ

বর্ষা মৌসুম আসার আগেই গ্রামে গ্রামে চোখে পড়ত নৌকা তৈরি কিংবা মেরামতের কাজ। সেই ভেজা বা শুকনো কাঠ, তারপিন আর আলকাতরার গন্ধে ভরা ঘাটপাড় এখন আর নেই। এর মাঝেও অনেকে ধরে রেখেছেন নৌকা তৈরির এই পেশা।
বিয়ানীবাজারের নৌকার অনেক কারিগর পেশা বদলে কেউ কাঠমিস্ত্রী হয়েছেন, কেউ চালাচ্ছেন অটোরিকশা। অনেকে ছোটখাটো ব্যবসায় যুক্ত হয়েছেন। এর মাঝে ব্যতিক্রম দুবাগ ইউনিয়নের মইয়াখালী গ্রামের আলতাফ হোসেন আতা। চতুর্থ প্রজন্মের প্রতিনিধি হিসেবে তিনি পারিবারিক এই পেশা ধরে রেখেছেন। এ থেকে বছরে প্রায় ৫ লাখ টাকা আয় হয় তার।
আলতাফ হোসেন আতা জানান, দাদার কাছ থেকে নৌকা তৈরির কলাকৌশল আয়ত্ত করেন তাঁর বাবা প্রয়াত কুতুব উদ্দিন। তিনি ১২ বছর বয়সে বাবার কাছ থেকে দীক্ষা নেন। আয় রোজগার ভালো হওয়ায় ছেলেকেও শিখিয়েছেন নৌকা তৈরির কারিগরি।
আলতাফ হোসেন আতার ছেলে পারভেজ আহমদ এখন বাবাকে নৌকা তৈরিতে সহযোগিতা করছেন। আতা বলেন, এক যুগ আগেও নৌকার চাহিদা খুব কম ছিল। বহু এলাকায় কৃষিকাজে মানুষের অনীহা, গবাদিপশু লালন-পালন ছেড়ে দেওয়ায় নৌকা তৈরি হতো হাতেগোনা। এ সময়ে সংসার চালাতে হতো খুব কষ্টে। বহুবার এই পেশা ছেড়ে দেওয়ার চিন্তা করেও পারিবারিক ঐতিহ্যের কথা ভেবে সম্ভব হয়নি। আতা জানান, ৭ থেকে ৮ বছর আগে থেকে একটু করে দিন ফিরতে শুরু করে নৌকা তৈরির ক্ষেত্রে। মানুষজন চাষাবাদ ও গবাদিপশু লালন-পালনে মনোযোগী হওয়ায় নৌকার চাহিদা বাড়তে থাকে। এখন বছরে ৪০টির মতো নতুন নৌকা তৈরি করেন তিনি। এ ছাড়া ২০ থেকে ২৫টি পুরাতন নৌকা মেরামত করতে হয়। বলতে গেলে সারা বছরই থাকে ব্যস্ততা।
আলতাফ হোসেন আতা ১৬ হাত লম্বা নৌকা তৈরিতে প্রতি হাতের মজুরি নেন এক হাজার ১০০ টাকা। বিশ হাতের ওপরে হলে মজুরি আরও বেশি। অর্ডার এলে কাঠসহ মজুরি মিলিয়ে একেকটি ১৬ হাত লম্বা নৌকা তৈরি করে দেন ৩৫ হাজার টাকায়।
নৌকা তৈরির এই কারিগর জানান, এখন জারুল গাছ নেই। তাই জারুল গাছের নৌকার চাহিদা থাকলেও সেটি পূরণ করা যায় না। গাছটি প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেছে। সেজন্য জারুল গাছের বিকল্প হিসেবে কেউ কেউ রেইনট্রি ব্যবহার করেন।
মইয়াখালী এলাকার প্রবীণ ব্যক্তি রস্তুম আলী গ্রামের পথ দেখিয়ে বলেন, ২০০৫ সালে এ রাস্তা তৈরি হয়েছে। এর আগে গ্রামের বাজারে বর্ষাকালে নৌকা ছাড়া যাওয়া যেতো না। এখন বাড়িতে অটোরিকশা আসে। নৌকার প্রয়োজন পড়ে না। আতা দীর্ঘদিন ধরে নৌকা তৈরির কাজ না পেয়ে খুব কষ্টে ছিল। এখন তার ভাগ্য পাল্টে গেছে।
একই গ্রামের বদরুল ইসলাম বলেন, বড়লেখার হাকালুকি হাওর এলাকা থেকে নৌকা তৈরি করতে আতার কাছে মানুষ আসে। শুধু বিয়ানীবাজার নয়, তার সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে বড়লেখা, জকিগঞ্জ, গোলাপগঞ্জ ও কানাইঘাট উপজেলায়ও।
আলতাফ হোসেন আতা বলেন, বাবা-দাদার পেশা ধরে রাখতে পারায় টাকাও রোজগার করছেন, পরিচিতিও ছড়িয়ে পড়েছে চারদিকে। বছরে একবার হলেও এক মাসের জন্য বড়লেখার হাকালুকি এলাকায় যেতে হয় নৌকা মেরামতের জন্য। তাঁর ইচ্ছা পেশাটি যেন তার ছেলে ধরে রাখেন।
এ সময় পাশে থাকা পারভেজ আহমদ বলেন, এখন পাঁচ গ্রাম ঘুরে নৌকার কারিগর পাওয়া যায় না। বাবার কাজের চাপ বেশি। তাই তিনি তাঁকে সহযোগিতা করতে করতে তাঁর মতো করে নৌকা তৈরি শিখছেন।

 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যুর সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব।’’

তিনি মনে করেন, আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান এলে যেকোনো অসাংবিধানিক প্রক্রিয়া ঠেকানো যাবে।

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘‘আগামী নির্বাচনকে যদি অনিশ্চিত করা হয় বা বিলম্বিত করা হয়, তাহলে তার সুযোগ নেবে ফ্যাসিবাদী বা অসাংবিধানিক শক্তি। এর পরিণতি জাতি অতীতে বহুবার ভোগ করেছে। আমরা আবার সে পরিস্থিতি চাই না।’’

অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা নিয়ে পৃথক এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের মতামতের ভিত্তিতেই সাংবিধানিকভাবে এই সরকার গঠিত হয়েছে। রাষ্ট্রপতির রেফারেন্সে দেওয়া সেই মতামত এখনো বহাল আছে। এর বিপরীতে সুপ্রিম কোর্ট কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। তাই এ বিষয়ে প্রশ্ন তোলা আসলে রাজনৈতিক বক্তব্য, এর কোনো আইনি ভিত্তি নেই।’’

সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘যেকোনো সাংবিধানিক আদেশ জারি হলে তা আগামীকাল বা পরশু চ্যালেঞ্জ হতে পারে। আমরা এমন খারাপ নজির জাতির সামনে আনতে চাই না। তাই সমাধানের বিকল্প প্রস্তাব উত্থাপন করেছি। সবাইকে বিবেচনায় নিতে আহ্বান জানাচ্ছি।’’

পিআর পদ্ধতি প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দলের আন্দোলনের অধিকার আছে। তবে পিআর পদ্ধতি চাপিয়ে দেওয়ার বিষয় নয়, শেষ পর্যন্ত জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে।’’

তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘‘পিআর পদ্ধতিতে ঝুলন্ত পার্লামেন্টের ঝুঁকি থেকে যায়। তাতে রাষ্ট্র ও জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ সম্ভব হয় না। আমরা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে যেতে পারি না।’’

সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘জনগণই হলো সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ। এই দেশের জনগণ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে এবং বারবার গণতন্ত্রকে সংকট থেকে উদ্ধার করেছে।’’

আগামী সংসদে কিছু মৌলিক বিষয়ে সংশোধনের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন তিনি বলেন, ‘‘আমরা কিছু বিষয়ে ইতোমধ্যে একমত হয়েছি। তবে, ঐকমত্য কমিশনের সনদের ভেতরে যেসব পরিবর্তন হবে, সেগুলোতে অবশ্যই গণভোট নিতে হবে।’’

ঢাকা/আসাদ/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • খাজা শরফুদ্দীন চিশতির মাজারে হাত দিলে পরিণাম হবে ভয়াবহ: আহলে সুন্
  • জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ
  • যারা জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলকে নিষিদ্ধ চায়, তারা আদালতে অভিযোগ দিতে পারে: সালাহউদ্দিন আহমদ
  • প্রাথমিকে গানের শিক্ষক বাদ দিয়ে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে
  • মাঠের জবাব মাঠে দেওয়া হবে: সালাহউদ্দিন 
  • পনেরো বছরে থেমে গেল শিশুশিল্পীর জীবন
  • পাকিস্তানে ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে ৫ সেনা নিহত
  • আলোচনা অব্যাহত থাকা অবস্থায় কর্মসূচি দেওয়া স্ববিরোধিতা মনে করছে বিএনপি