সরকারি খাতের স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও দক্ষতা বাড়াতে ২৫ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক
Published: 14th, June 2025 GMT
বাংলাদেশে সরকারি খাতের স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও দক্ষতা বাড়াতে ২৫০ মিলিয়ন বা ২৫ কোটি ডলারের ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালকদের পর্ষদে এই অর্থ অনুমোদন করা হয়েছে।
স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির জন্য প্রতিষ্ঠান শক্তিশালীকরণ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ সরকারি প্রতিষ্ঠানের সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়িত হবে। এই প্রতিষ্ঠানগুলো হলো বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস), জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), পরিকল্পনা বিভাগ, সরকারি ক্রয় কর্তৃপক্ষ (বিপিপিএ) ও মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের দপ্তর (সিএজি)।
প্রকল্পটির লক্ষ্য হলো, সরকারি কার্যক্রম ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে দুর্নীতি কমানো, সেবা আরও জনবান্ধব করা ও প্রতিষ্ঠানগুলোর দক্ষতা বাড়ানো। খবর বিজ্ঞপ্তি
বাংলাদেশে নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান গেইল মার্টিন বলেন, ‘প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়িয়ে আমরা সরকার পরিচালনার স্বচ্ছতা ও কার্যকারিতা বাড়াতে চাই। এতে দুর্নীতি হ্রাসের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের জন্য সরকারি সেবা আরও সহজলভ্য ও বিশ্বাসযোগ্য হবে।’
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এই প্রকল্পের আওতায় কর প্রশাসনের আধুনিকায়ন করা হবে; সেই সঙ্গে করদাতার সংখ্যা বাড়বে ও রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পাবে। একই সঙ্গে সরকারি ব্যয়েও আসবে জবাবদিহি। জনগণের অর্থের সর্বোচ্চ সুফল নিশ্চিত করাই এর লক্ষ্য। এ ছাড়া সরকারি পরিসংখ্যান ব্যবস্থা হবে আরও তথ্যনির্ভর ও নির্ভরযোগ্য; থাকবে সরকারি ক্রয়ে দ্বিতীয় প্রজন্মের ডিজিটাল পদ্ধতি ও নিরীক্ষা ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ।
বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ও প্রকল্পের প্রধান সুলেমানে কুলিবালি বলেন, ‘পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ সরকারি প্রতিষ্ঠানে একসঙ্গে সংস্কার আনা গেলে সরকারের সার্বিক সক্ষমতা অনেকটা বাড়বে। সুশাসনই টেকসই অর্থনৈতিক অগ্রগতির মূল ভিত্তি।’
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বিশ্বব্যাংক ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে আরেকটি ঋণ নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। এ মাসের শেষ দিকে বিষয়টি নিয়ে বিশ্বব্যাংকের পর্ষদে আলোচনা হবে। এই ঋণ ব্যাংক খাত, কর ব্যবস্থাপনা, সরকারি ব্যয় ও সামাজিক সেবা খাতে আরও স্বচ্ছতা আনতে সহায়তা করবে।
স্বাধীনতার পর থেকেই বাংলাদেশে অন্যতম বড় উন্নয়ন সহযোগী বিশ্বব্যাংক। এখন পর্যন্ত বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশে ৪৫ বিলিয়ন বা ৪ হাজার ৫০০ কোটি ডলারের বেশি অনুদান, সুদমুক্ত ও স্বল্প সুদের ঋণ দিয়েছে। বাংলাদেশ বিশ্বব্যাংকের স্বল্প সুদের ঋণের অন্যতম বড় গ্রহীতা।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব শ বব য প রকল প সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েলে মার্কিন অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর চেষ্টা সিনেটে ব্যর্থ
গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক নিন্দার মধ্যে, ইসরায়েলের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রি আটকাতে মার্কিন সিনেটে তোলা একটি বিল পাস হতে ব্যর্থ হয়েছে।
ব্যর্থ হলেও, বুধবারের ভোটে দেখা গেছে, মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ভেতরে ইসরায়েলের যুদ্ধের বিরোধিতা জোরদার হয়ে উঠেছে।
আজ বৃহস্পতিবার কাতারভিত্তিক আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর প্রচেষ্টায় এবারের ভোটে উল্লেখযোগ্য সংখ্যাক ডেমোক্র্যাট যোগ দিয়েছেন।
ইসরায়েলের কাছে ২০ হাজার স্বয়ংক্রিয় অ্যাসল্ট রাইফেল বিক্রি বন্ধ করার প্রস্তাবের পক্ষে ২৭ জন ডেমোক্র্যাট ভোট দিয়েছেন, আর ৬৭৫ মিলিয়ন ডলারের বোমার চালান বন্ধ করার পক্ষে ২৪ জন ভোট দিয়েছেন।
অন্যদিকে, ভোটদারকারী সব রিপাবলিকান সিনেটররা প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন।
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান হামলার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রির দুটি চুক্তি আটকে দিতে প্রস্তাবগুলো সিনেটে আনেন ভার্মন্টের সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স। তিনি প্রগতিশীল ঘরানার স্বতন্ত্র সিনেটর।
ভোটের আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে স্যান্ডার্স বলেন, “ওয়াশিংটন ইসরায়েলের ‘বর্ণবাদী সরকার’কে এমন অস্ত্র সরবরাহ করা চালিয়ে যেতে পারে না, যা নিরীহ মানুষদের হত্যা করার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে।”
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে একজন ‘জঘন্য মিথ্যাবাদী’ হিসেবে উল্লেখ করে স্যান্ডার্স ‘এক্স’ পোস্টে আরো বলেন, “গাজায় শিশুরা না খেয়ে মারা যাচ্ছে।”
প্রথমবারের মতো স্যান্ডার্সের প্রস্তাবকে সমর্থনকারী আইন প্রণেতাদের মধ্যে, ওয়াশিংটন রাজ্যের সিনেটর প্যাটি মারে বলেছেন, প্রস্তাবগুলো ‘নিখুঁত’ না হলেও, তিনি গাজার নিষ্পাপ শিশুদের অব্যাহত দুর্ভোগকে সমর্থন করতে পারেন না।
মারে এক বিবৃতিতে বলেন, “ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের বন্ধু ও সমর্থক হওয়া সত্ত্বেও আমি প্রস্তাবের পক্ষে ‘হ্যাঁ’ ভোট দিচ্ছি এই বার্তা দিতে: নেতানিয়াহু সরকার এই কৌশল চালিয়ে যেতে পারবে না।”
তিনি বলেন, “নেতানিয়াহু ক্ষমতায় থাকার জন্য প্রতিটি পদক্ষেপে এই যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করেছেন। আমরা গাজায় মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ প্রত্যক্ষ করছি- সীমান্তের ওপারে যখন প্রচুর পরিমাণে সাহায্য ও সরবরাহ পড়ে আছে, তখন শিশু এবং পরিবারগুলোর অনাহার বা রোগে মারা যাওয়া উচিত নয়।”
মার্কিন জনগণের মধ্যে গাজা যুদ্ধের বিরোধিতা ক্রমবর্ধমান হওয়ার পাশাপাশি ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন নিয়ে ব্যাপক আকারে বিভক্তি দেখা দিয়েছে।
মঙ্গলবার প্রকাশিত গ্যালাপের একটি জরিপে দেখা গেছে, ৩২ শতাংশ আমেরিকান বলেছেন, তারা গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান সমর্থন করেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ৪২ শতাংশ আমেরিকান ইসরায়েলের অভিযান সমর্থন করেছিলেন।
গ্যালাপের মতে, পরিচয় প্রকাশ করে মাত্র ৮ শতাংশ ডেমোক্র্যাট বলেছেন যে তারা ইসরায়েলের অভিযানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন, যেখানে ৭১ শতাংশ রিপাবলিকান বলেছেন জানিয়েছেন যে, তারা ইসরায়েলি পদক্ষেপকে সমর্থন করেছেন।
ঢাকা/ফিরোজ