ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) তালিকাভুক্তি ৬০টি কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন নূন্যতম নির্ধারিত সীমার নিচে রয়েছে। বিদ্যমান নিয়ম অনুযায়ী, মূল বোর্ডে তালিকাভুক্ত থাকতে হলে কোম্পানিগুলোর কমপক্ষে ৩০ কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধন থাকতে হবে। দীর্ঘদিন ধরে কোম্পানিগুলো তালিকাভুক্তি বিধিমালার ওই শর্ত পরিপালন করছে না, যা সিকিউরিটিজ আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন বলে মনে করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

এমন পরিস্থিতিতে ৬০টি কোম্পানির ন্যূনতম পরিশোধিত মূলধনের শর্ত পূরণে কি পরিকল্পনা রয়েছে তা জানতে চেয়েছে কমিশন। সম্প্রতি বিএসইসি উভয় স্টক এক্সচেঞ্জকে কোম্পানিগুলোর পরিকল্পনা সংগ্রহের বিষয়ে চিঠি দিয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

কোম্পানিগুলো হলো-সাভার রিফ্র্যাক্টরিজ, হামি ইন্ডাস্ট্রিজ, এপেক্স ফুটওয়্যার, ইস্টেম লুব্রিকেন্টস, এএমসি (প্রাণ), মেঘনা কনডেন্সড মিল্ক, জুট স্পিনার্স, দেশ গার্মেন্টস, প্রগতি লাইফ ইন্সুরেন্সে, রেনউইক রেনউইক যজ্ঞেশ্বর, এপেক্স স্পিনিং, উসমানিয়া গ্ল্যাস, নর্দন জুট, জিকিউ বলপেন, আনলিমা ইয়ার্ন, লিব্রা ইনফিউশনস, রহিম টেক্সটাইল, হাক্কানি পাল্প, ইউনিলিভার কনজুমার, অ্যামবি ফার্মা, রংপুর ফাউন্ড্রি, রহিমা ফুড, ফার্মা এইডস, সমাতা লেদার, ওরিয়ন ইনফিউশন, বাংলাদেশ অটোকারস, বাংলাদেশ ল্যাম্পস, সামোরিতা হাসপাতাল, মুন্নু অ্যাগ্রো, সোনালী আঁশ, আল-হাজ্জ টেক্সটাইল, রেকিট বেনকিজার, ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক, ইস্টার্ন কেবলস, শ্যামপুর সুগার, ন্যাশনাল টি, সোনারগাঁও টেক্সটাইলস, আজিজ পাইপস, সিভিও পেট্রোকেমিক্যাল, জেমিনি সি ফুড, এপেক্স ফুডস, এইচ আর টেক্সটাইল, মেঘনা পেট, মাগুরা মাল্টিপ্লেক্স, অ্যারামিট, বাটা সু, সাফিকো স্পিনিংস, জিল বাংলা সুগার, স্টাইল ক্রাফ্ট, স্ট্যান্ডার্ড সিরামিক, ফাইন ফুডস, কে অ্যান্ড কিউ, ওয়াটা কেমিক্যালস, দুলামিয়া কটন, লিন্ডে বাংলাদেশ, বঙ্গজ, এপেক্স ট্যানারি, প্রিমিয়ার ব্যাংক পারপেচুয়াল বন্ড, প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড ও ঢাকা ব্যাংক পারপেচুয়াল বন্ড।

আরো পড়ুন:

পুঁজিবাজার অংশীজনদের সঙ্গে বিএসইসির ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়

বাংলাদেশ ফাইন্যান্সের নাম পরিবর্তনে ডিএসইর সম্মতি

৬০ কোম্পানির পরিশোধিত মূলধনের চিত্র
বর্তমানে ১১টি কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ৫ কোটি টাকার নিচে, ১৫টি কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ১০ কোটি টাকার নিচে, ২১টি কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ২০ কোটি টাকার নিচে এবং বাকি ১৩টি কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ৩০ কোটি টাকার নিচে রয়েছে।

কমিশনের অবস্থান
এর আগে ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে স্টক এক্সচেঞ্জের মূল বোর্ডে তালিকাভুক্ত থাকতে ৬৪টি কোম্পানিকে ন্যূনতম পরিশোধিত মূলধনের মানদণ্ড মেনে চলতে একইভাবে চিঠি দিয়েছিল বিএসইসি। কিন্তু বেশিরভাগ কোম্পানি সেই নির্দেশ পরিপালন করেনি। এরই ধারাবাহিকতা রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বে পুনর্গঠিত বিএসইসি কোম্পানিগুলো বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে নূন্যতম পরিশোধিত মূলধনের শর্ত পরিপালনে ব্যর্থ হলে কোম্পানিগুলোকে মূল বোর্ড থেকে এসএমই প্ল্যাটফর্ম বা এটিবি প্ল্যাটফর্মে স্থানান্তর করা যেতে পারে। তবে, কেস-বাই-কেস ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। প্রতিটি কোম্পানিকে তাদের জমা দেওয়া রোডম্যাপের ওপর ভিত্তি করে একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা দেওয়া হবে এবং কমিশন পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার আগে তাদের অগ্রগতি পর্যালোচনা করবে। যদি কোনো কোম্পানি এসএমই প্ল্যাটফর্মের জন্য যোগ্য না হয়, তাহলে বিকল্প কিছু চিন্তা করা হবে। এ তালিকায় কিছু বহুজাতিক কোম্পানি তালিকায় রয়েছে। তাদের পর্যাপ্ত রিজার্ভের কারণে এ শর্ত পরিপালন করা সহজ হবে।

বিএসইসি মনে করে, এসব কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন কম থাকায় শেয়ারের লেনদেনে অস্বাভাবিকতা ও কারসাজির ঝুঁকি বাড়ছে। কিছু বিনিয়োগকারী অস্বচ্ছ পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে শেয়ার কারসাজিতে লিপ্ত হয়ে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের ক্ষতির মুখে ফেলছে। তাই বাজারে শৃঙ্খলা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও বিনিয়োগকারী সুরক্ষায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসইসির মুখপাত্র ও পরিচালক আবুল কালাম রাইজিংবিডিকে বলেন, “কোম্পানিগুলোর পরিশোধিত মূলধন কিভাবে বাড়িয়ে ন্যুনতম পর্যায়ে নিয়ে আসা যায় সে বিষয়ে কাজ করছে কমিশন। এটি একটি তাগাদা। যদি কোনো কোম্পানি নতুন মূলধন সংগ্রহ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে বিকল্প ব্যবস্থা বিবেচনা করা হবে।”

ঢাকা/এনটি/এসবি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এসইস

এছাড়াও পড়ুন:

ঈদ পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময়ে বিনিয়োগকারীদের আমন্ত্রণ বিএসইসির

পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগকারীদের সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে ঈদ পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ। শুভেচ্ছা বিনিময়কালে পুঁজিবাজারের সার্বিক পরিস্থিতি ও বিভিন্ন সমস্যার সমাধানের বিষয়ে আলোচনা হতে পারে।

রবিবার (১৫ জুন) দুপুর ১২টায় ঢাকার আগারগাঁওয়ে সিকিউরিটিজ কমিশন ভবনে এ শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

এ জন্য দেশের পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগকারীদের বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। উভয় পক্ষের এ বৈঠকে পুঁজিবাজারের উন্নয়নে বিভিন্ন সমস্যার সমাধান, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে কিছু সুপারিশ অন্তুর্ভুক্তিসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হবে। এ বৈঠকে বিনিয়োগকারীদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন দাবি তুলে ধরা হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সহ-সভাপতি নজরুল ইসলাম রাইজিংবিডিকে বলেন, “বিএসইসির চেয়ারম্যানের সঙ্গে আজকে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে আমরা পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা আনার লক্ষ্যে বিভিন্ন দাবি তুলে ধরব। বিশেষ করে প্রস্তাবিত ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে কিছু সুপারিশ অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে আমরা বিএসইসি চেয়ারম্যানের কাছে দাবি জানাবো। আলোচনার মাধ্যমেই যে কোনো সমস্যার সমাধান হতে পারে।”

বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী সম্মিলিত পরিষদের সভাপতি আ ন ম আতাউল্লাহ নাঈম রাইজিংবিডিকে বলেন, “ঈদের আগেই এ বৈঠকের বিষয়ে আমন্ত্রণ জানিয়েছে বিএসইসি। আমরা বিএসইসির সঙ্গে আলোচনা করব। আলোচনার মাধ্যমে পুঁজিবাজারের সমস্যাগুলোর সমাধান করা হবে।”

তবে বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট ইনভেস্টর অ্যাসোসিয়েশনের (বিসিএমআইএ) সভাপতি এস এম ইকবাল হোসেন রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেন, “আমরা বিএসইসির এ আমন্ত্রণকে প্রত্যাখ্যান করেছি। একই সঙ্গে আমরা বিএসইসি চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবি করছি।”

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র আবুল কালাম রাইজিংবিডিকে বলেন, “বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে ঈদ পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময় করা হবে। এ জন্য আজকে বিনিয়োগকারীদের সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।”

ঢাকা/এনটি/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিএসইসি ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিজম অ্যাওয়ার্ডস-ফেলোশিপ আহ্বান
  • শরিয়াহ অ্যাডভাইজরি কাউন্সিল সদস্য মনোনয়নে বিএসইসির কমিটি
  • ৯ ব্রোকার-মার্চেন্ট ব্যাংকের কার্যক্রম তদন্তে বিএসইসির কমিটি
  • পুঁজিবাজার অংশীজনদের সঙ্গে বিএসইসির ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়
  • ঈদ পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময়ে বিনিয়োগকারীদের আমন্ত্রণ বিএসইসির