আসামি ছিনিয়ে নিয়ে গণপিটুনিতে হত্যার ‘মূলহোতা’ গ্রেপ্তার
Published: 19th, June 2025 GMT
রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় পুলিশের ওপর হামলা করে আসামি ছিনিয়ে নিয়ে গণপিটুনিতে হত্যার ঘটনার ‘মূলহোতা’ গোলাম প্রামানিককে (৩৫) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
বুধবার (১৮ জুন) দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে নওগাঁর আত্রাই উপজেলার গোয়ালবাড়ি গ্রাম থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার গোলাম প্রামানিক ওই গ্রামের মৃত আবদুর রহমান প্রামানিকের ছেলে। র্যাব-৫ এর রাজশাহীর মোল্লাপাড়া ক্যাম্পের একটি দল তাকে গ্রেপ্তার করে। বৃহস্পতিবার দুপুরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
র্যাব জানায়, একটি হত্যাকাণ্ডের পর পুলিশের ওপর হামলা করে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে ছিনিয়ে নিয়ে গণপিটুনিতে হত্যার সন্দিগ্ধ প্রধান অভিযুক্ত এই গোলাম প্রামানিক। তাকে গ্রেপ্তার করে বাগমারা থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৪ এপ্রিল বাগমারার রনশিবাড়ি গ্রামে আমিনুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি টাকা ছিনিয়ে নিতে আবদুর রাজ্জাক নামের এক ব্যক্তিকে ছুরিকাঘাত করলে তিনি মারা যান। এসময় বাজারের লোকজন আমিনুলকে ধাওয়া করে ধরে ফেলেন এবং মারধর করে আটকে রাখেন। খবর পেয়ে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে আমিনুলকে হেফাজতে নিতে চায়।
এসময় প্রায় হাজারখানেক মানুষ পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা চালান। তারা আমিনুলকে ছিনিয়ে নিয়ে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করেন।
এসময় বিক্ষুব্ধ জনতাকে সামাল দিতে গিয়ে বাগমারা থানার সাতজন পুলিশ সদস্যও আহত হন। এ ঘটনায় ১ হাজার ২০০ ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা হয়।
ঢাকা/কেয়া/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গ র প ত র কর গণপ ট ন আম ন ল ব গম র
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক।
এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”
বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।”
চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”
ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।”
হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে।
গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।
কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”
ঢাকা/রাঙামাটি/এস