সময়ের দাবি নাকি সহজ পন্থা বেছে নেওয়া
Published: 22nd, June 2025 GMT
সিনেমার মৌলিক গানগুলো যুগ যুগ ধরে দর্শক-শ্রোতার প্রত্যাশা পূরণ করে আসছে। তারপরও বিভিন্ন সময় বিদেশি গানের অনুকরণ ছিল চোখে পড়ার মতো। সাম্প্রতিক সময়ে প্রাধান্য পাচ্ছে পুরোনো গানের ফিউশনধর্মী আয়োজন। এটি কি সময়ের দাবি নাকি সংগীতায়োজনে সহজ পন্থা বেছে নেওয়া? এ প্রশ্ন নিয়ে এবারের আয়োজন।
খুব একটা পেছনে না গিয়ে যদি গত কয়েক মাসের চিত্র সামনে তুলে ধরি, তাহলে কী দেখতে পাই? দেখি শহর-নগর-গ্রাম-গঞ্জের পথে-ঘাটে সিনেমার গানগুলোই বেশি বাজছে। এমনকি তা শ্রোতার মুখে মুখে ফিরছে। যদিও যুগ যুগ ধরেই সিনেমার গান শ্রোতার প্রত্যাশা পূরণ করে আসছে, তবে এই সময়ে প্রাধান্য পাচ্ছে ফিউশনধর্মী আয়োজনগুলো। পুরোনো জনপ্রিয় গানের অবলম্বনে ‘লাগে উরাধুরা’, ‘লিচুর বাগানে’, ‘আকাশেতে লক্ষ তারা ২.
এর জবাবে নন্দিত সংগীত পরিচালক শওকত আলী ইমন বলেন, ‘অভিনব কিছু করে দেখাতে চাইলে সহজ পন্থা অবলম্বনের সুযোগ নেই। তাই ফিউশনধর্মী আয়োজন যে একেবারে সহজ, এটি ভাবা ভুল। সময় বদলের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের চাহিদাও বদলে যায়। তাই এখন যে ফিউশন গানের ট্রেন্ড চলছে, সেটিও ছিল সময়ের দাবি। কারণ, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অনেক আগেই পুরোনো গান ফিউশন শুরু হয়েছে। অডিওর পাশাপাশি সিনেমাতে হরহামেশা জনপ্রিয় গানের ফিউশন তুলে ধরা হচ্ছে। বলিউডেও কয়েক দশক ধরে চলেছে এই রীতি। আমি নিজেই ২০০৮ সালে রুনা লায়লার গাওয়া ‘মন দিলাম প্রাণ দিলাম’ গানটির ফিউশন করেছিলাম। তখনও ফিউশনধর্মী আয়োজন এতটা প্রভাব ফেলেনি, যতটা এখন চোখে পড়ছে। আর এখনকার কথা যদি বলি, তাহলে আমার সংগীতায়োজনে ‘ইনসাফ’ সিনেমার জন্য রেকর্ড করা ‘আকাশেতে লক্ষ তারা ২’০’ গানকে উদাহরণ হিসেবে টেনে আনতে পারি। যেটি তৈরি করা হয়েছে ১৯৯৬ সালে মুক্তি পাওয়া ‘কুলি’ সিনেমার ‘আকাশেতে লক্ষ তারা’ গানের একটি গানের লাইন নিয়ে। যদিও মূল গানটি একটি বিদেশি গানের সুর অবলম্বনে তৈরি করা হয়েছিল, কিন্তু এর ফিউশনে সংগীতের খোল-নলচে বদলে দেওয়া হয়েছে। তাই এই সৃষ্টি মৌলিক আয়োজনের চেয়ে কোনোভাবেই খাটো করে দেখা যাবে না। সবকিছুর পর আসল কথা হলো, শ্রোতা যখন গানের ফিউশন পছন্দ করছেন, তখন বিষয়টা নেতিবাচকভাবে দেখারও কিছু নেই। তাই দোষ-ত্রুটি না খুঁজে আমি বরং প্রীতম হাসানসহ আরও কয়েকজন শিল্পী ও সংগীতায়োজককে ধন্যবাদ দিতে চাই, যারা ফিউশনধর্মী আয়োজনের মধ্য দিয়ে শ্রোতাদের বিদেশি গানের মুখাপেক্ষী করে রাখেননি। বিভিন্ন দশকের আলোচিত গানগুলো নতুন প্রজন্মের কাছে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি তারা অভিনব কিছু তুলে ধরার চেষ্টা করে যাচ্ছেন।’
এ কথার সঙ্গে একমত পোষণ করে সংগীতায়োজক ইমন চৌধুরী বলেন, ফিউশন যদি অডিও গান, টিভি ও অনলাইন সংগীতায়োজনের জন্য হতে পারে, তাহলে সিনেমায় কেন নয়? বরং সিনেমার গানে ফিউশন শ্রোতাদের মাঝে নতুন করে আশার সঞ্চার করেছে। শ্রোতা মুগ্ধ হয়ে শুনছেন, নিজেকে ভালো লাগা, মন্দ লাগার বিষয় শেয়ার করছেন, তখন তো এটা স্বীকার করতেই হয়, এমন আয়োজন সময়ের চাহিদাকে পূরণ করছে। তাই মৌলিক গানের আবেদনের কথা মাথায় রেখেই আমরা ফিউশনধর্মী কাজ করে যাচ্ছি। সিনেমার বেলায় যা হয়, তা হলো গল্প, চরিত্র ও কাহিনির বাঁকবদলে নতুন কিছু তুলে আনার চেষ্টা থাকে। যাতে করে দর্শকের কানেক্ট করা যায়। সেখানে গান বড় একটি ভূমিকা রাখে। যেহেতু সিনেমা টিমওয়ার্ক, তাই অনেকের মতামতের ভিত্তিতেই গানের ভিন্নতা তুলে আনার চেষ্টা থাকে। ফিউশনধর্মী আয়োজন প্রাধান্য পাওয়ার মূলেও সিনেমা নির্মাতাদের বড় একটা ভূমিকা আছে।’ ইমন চৌধুরীর এ কথার সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন শিল্পী ও সংগীতায়োজক প্রীতম হাসান, ইমরান মাহমুদুল, মিলাসহ গানের ভুবনের অনেকে।
নব্বই দশক থেকে শুরু করে গত তিশ দশক সিনেমার গানগুলোর রিমেক করে অডিওতে প্রকাশ করে শ্রোতা প্রশংসা কুড়িয়েছেন তরুণ শিল্পীদের অনেকে। যেখানে প্রাধান্য পেয়েছে শাহনাজ রহমতউল্লাহ, সাবিনা ইয়াসমিন, রুনা লায়লা, এন্ড্রু কিশোর, সৈয়দ আবদুল হাদী, খুরশীদ আলম, সুবীর নন্দী, খালিদ হাসান মিলু, আগুন, বেবী নাজনীন, কনকচাঁপাসহ প্লেব্যাকে সাড়া জাগানো আরও বেশ কিছু শিল্পীর গান। একইভাবে অডিও অ্যালবামের সাড়া জাগানো গানগুলো বিভিন্ন সিনেমায় শিল্পীদের দিয়ে প্লেব্যাক করা হয়েছে। ডলি সায়ন্তনীর ‘রঙচটা জিনসের প্যান্ট পরা’, জেমসের ‘মীরাবাঈ’, আসিফ আকবরের ‘ও প্রিয়া তুমি কোথায়’, কবি রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহর ‘ভালো আছি ভালো থেকো’সহ আরও কিছু গান আছে যেগুলো সিনেমার জন্য রেকর্ড করার আগেই বিভিন্ন অ্যালবামে প্রকাশ পেয়েছিল এবং আলোড়ন তুলেছিল দেশজুড়ে। বিশেষ করে নব্বই দশক থেকে একুশ শতকের প্রথম দশকজুড়ে ছিল রিমেক গানের জোয়ার। আর ফিউশনধর্মী গানের প্রভাব বিস্তার শুরু প্রায় এক দশক ধরে। মূলত টিভি ও অনলাইনভিত্তিক সংগীতায়োজনের মধ্য দিয়ে ফিউশনধর্মী গানের প্রতি দর্শক-শ্রোতার মনোযোগ কেড়ে নেওয়া শুরু হয়েছিল। ‘উইন্ড অব চেঞ্জ’, ‘আইপিডিসি আমাদের গান’, ‘সিলন মিউজিক লাউঞ্জ’, ‘কোক স্টুডিও বাংলা’, ‘ফোক স্টেশন’ ‘লিভিং রুম সেশন’সহ আরও কিছু অনুষ্ঠান দর্শক-শ্রোতার রুচি বদলে ভূমিকা রেখেছে বলেই মতো গানের ভুবনের বাসিন্দাদের।
পার্থ বড়ুয়া, বাপ্পা মজুমদার, হাবিব ওয়াহিদ, পাভেল আরীনসহ আরও কয়েকজন শিল্পী সংগীতায়োজকদের কথা থেকে যে বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে তা হলো– সুরের মূর্ছনায় স্মৃতি রোমন্থনে ডুবে যাওয়া আমাদের চিরায়ত অভ্যাস। চেনা-সুর মনের পর্দায় তুলে আনে সেই সময়ের দৃশ্য, যখন সেগুলো প্রিয় গানের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। তাই পুরোনো হয়েও কিছু গানের আবেদন কখনও ফুরিয়ে যায় না। সময়কে ছাপিয়ে তা হয়ে ওঠে চিরকালের। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কালজয়ী গানগুলো সংগীতের নতুন আবহে বারবার ফিরে আসবে– এটাই সত্যি। এ কারণেই সংগীতে সময়ের ছাপ ধরে রাখতে ফ্রেমে ফ্রেমে তুলে আনা হচ্ছে গানের ফিউশন। আর তা দর্শক-শ্রোতার মনোযোগ কাড়ছে বলেই আরও অভিনবভাবে তা সিনেমার গানেও উঠে আসছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: নত ন গ ন গ ন র ফ উশন স গ ত য় জন সময় র দ ব য় জন র
এছাড়াও পড়ুন:
সিনেমার গানে ফিউশন যেভাবে শুরু হলো
সিনেমার মৌলিক গানগুলো যুগ যুগ ধরে দর্শক-শ্রোতার প্রত্যাশা পূরণ করে আসছে। তারপরও বিভিন্ন সময় বিদেশি গানের অনুকরণ ছিল চোখে পড়ার মতো। সাম্প্রতিক সময়ে প্রাধান্য পাচ্ছে পুরোনো গানের ফিউশনধর্মী আয়োজন। এটি কি সময়ের দাবি নাকি সংগীতায়োজনে সহজ পন্থা বেছে নেওয়া? এ প্রশ্ন নিয়ে এবারের আয়োজন। লিখেছেন রাসেল আজাদ বিদ্যুৎ
খুব একটা পেছনে না গিয়ে যদি গত কয়েক মাসের চিত্র সামনে তুলে ধরি, তাহলে কী দেখতে পাই? দেখি শহর-নগর-গ্রাম-গঞ্জের পথে-ঘাটে সিনেমার গানগুলোই বেশি বাজছে। এমনকি তা শ্রোতার মুখে মুখে ফিরছে। যদিও যুগ যুগ ধরেই সিনেমার গান শ্রোতার প্রত্যাশা পূরণ করে আসছে, তবে এই সময়ে প্রাধান্য পাচ্ছে ফিউশনধর্মী আয়োজনগুলো। পুরোনো জনপ্রিয় গানের অবলম্বনে ‘লাগে উরাধুরা’, ‘লিচুর বাগানে’, ‘আকাশেতে লক্ষ তারা ২.০’, ‘ও সুন্দরী’ মতো ফিউশনধর্মী আয়োজনগুলো একদিকে যেমন শ্রোতার মনোযোগ কাড়ছে, তেমনি প্লেব্যাকে নিয়ে এসেছে নতুন ট্রেন্ড। এখন প্রশ্ন হলো, এটি কি সময়ের দাবি নাকি সংগীতায়োজনে সহজ পন্থা বেছে নেওয়া?
এর জবাবে নন্দিত সংগীত পরিচালক শওকত আলী ইমন বলেন, ‘অভিনব কিছু করে দেখাতে চাইলে সহজ পন্থা অবলম্বনের সুযোগ নেই। তাই ফিউশনধর্মী আয়োজন যে একেবারে সহজ, এটি ভাবা ভুল। সময় বদলের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের চাহিদাও বদলে যায়। তাই এখন যে ফিউশন গানের ট্রেন্ড চলছে, সেটিও ছিল সময়ের দাবি। কারণ, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অনেক আগেই পুরোনো গান ফিউশন শুরু হয়েছে। অডিওর পাশাপাশি সিনেমাতে হরহামেশা জনপ্রিয় গানের ফিউশন তুলে ধরা হচ্ছে। বলিউডেও কয়েক দশক ধরে চলেছে এই রীতি। আমি নিজেই ২০০৮ সালে রুনা লায়লার গাওয়া ‘মন দিলাম প্রাণ দিলাম’ গানটির ফিউশন করেছিলাম। তখনও ফিউশনধর্মী আয়োজন এতটা প্রভাব ফেলেনি, যতটা এখন চোখে পড়ছে। আর এখনকার কথা যদি বলি, তাহলে আমার সংগীতায়োজনে ‘ইনসাফ’ সিনেমার জন্য রেকর্ড করা ‘আকাশেতে লক্ষ তারা ২’০’ গানকে উদাহরণ হিসেবে টেনে আনতে পারি। যেটি তৈরি করা হয়েছে ১৯৯৬ সালে মুক্তি পাওয়া ‘কুলি’ সিনেমার ‘আকাশেতে লক্ষ তারা’ গানের একটি গানের লাইন নিয়ে। যদিও মূল গানটি একটি বিদেশি গানের সুর অবলম্বনে তৈরি করা হয়েছিল, কিন্তু এর ফিউশনে সংগীতের খোল-নলচে বদলে দেওয়া হয়েছে। তাই এই সৃষ্টি মৌলিক আয়োজনের চেয়ে কোনোভাবেই খাটো করে দেখা যাবে না। সবকিছুর পর আসল কথা হলো, শ্রোতা যখন গানের ফিউশন পছন্দ করছেন, তখন বিষয়টা নেতিবাচকভাবে দেখারও কিছু নেই। তাই দোষ-ত্রুটি না খুঁজে আমি বরং প্রীতম হাসানসহ আরও কয়েকজন শিল্পী ও সংগীতায়োজককে ধন্যবাদ দিতে চাই, যারা ফিউশনধর্মী আয়োজনের মধ্য দিয়ে শ্রোতাদের বিদেশি গানের মুখাপেক্ষী করে রাখেননি। বিভিন্ন দশকের আলোচিত গানগুলো নতুন প্রজন্মের কাছে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি তারা অভিনব কিছু তুলে ধরার চেষ্টা করে যাচ্ছেন।’
এ কথার সঙ্গে একমত পোষণ করে সংগীতায়োজক ইমন চৌধুরী বলেন, ফিউশন যদি অডিও গান, টিভি ও অনলাইন সংগীতায়োজনের জন্য হতে পারে, তাহলে সিনেমায় কেন নয়? বরং সিনেমার গানে ফিউশন শ্রোতাদের মাঝে নতুন করে আশার সঞ্চার করেছে। শ্রোতা মুগ্ধ হয়ে শুনছেন, নিজেকে ভালো লাগা, মন্দ লাগার বিষয় শেয়ার করছেন, তখন তো এটা স্বীকার করতেই হয়, এমন আয়োজন সময়ের চাহিদাকে পূরণ করছে। তাই মৌলিক গানের আবেদনের কথা মাথায় রেখেই আমরা ফিউশনধর্মী কাজ করে যাচ্ছি। সিনেমার বেলায় যা হয়, তা হলো গল্প, চরিত্র ও কাহিনির বাঁকবদলে নতুন কিছু তুলে আনার চেষ্টা থাকে। যাতে করে দর্শকের কানেক্ট করা যায়। সেখানে গান বড় একটি ভূমিকা রাখে। যেহেতু সিনেমা টিমওয়ার্ক, তাই অনেকের মতামতের ভিত্তিতেই গানের ভিন্নতা তুলে আনার চেষ্টা থাকে। ফিউশনধর্মী আয়োজন প্রাধান্য পাওয়ার মূলেও সিনেমা নির্মাতাদের বড় একটা ভূমিকা আছে।’ ইমন চৌধুরীর এ কথার সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন শিল্পী ও সংগীতায়োজক প্রীতম হাসান, ইমরান মাহমুদুল, মিলাসহ গানের ভুবনের অনেকে।
নব্বই দশক থেকে শুরু করে গত তিশ দশক সিনেমার গানগুলোর রিমেক করে অডিওতে প্রকাশ করে শ্রোতা প্রশংসা কুড়িয়েছেন তরুণ শিল্পীদের অনেকে। যেখানে প্রাধান্য পেয়েছে শাহনাজ রহমতউল্লাহ, সাবিনা ইয়াসমিন, রুনা লায়লা, এন্ড্রু কিশোর, সৈয়দ আবদুল হাদী, খুরশীদ আলম, সুবীর নন্দী, খালিদ হাসান মিলু, আগুন, বেবী নাজনীন, কনকচাঁপাসহ প্লেব্যাকে সাড়া জাগানো আরও বেশ কিছু শিল্পীর গান। একইভাবে অডিও অ্যালবামের সাড়া জাগানো গানগুলো বিভিন্ন সিনেমায় শিল্পীদের দিয়ে প্লেব্যাক করা হয়েছে। ডলি সায়ন্তনীর ‘রঙচটা জিনসের প্যান্ট পরা’, জেমসের ‘মীরাবাঈ’, আসিফ আকবরের ‘ও প্রিয়া তুমি কোথায়’, কবি রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহর ‘ভালো আছি ভালো থেকো’সহ আরও কিছু গান আছে যেগুলো সিনেমার জন্য রেকর্ড করার আগেই বিভিন্ন অ্যালবামে প্রকাশ পেয়েছিল এবং আলোড়ন তুলেছিল দেশজুড়ে। বিশেষ করে নব্বই দশক থেকে একুশ শতকের প্রথম দশকজুড়ে ছিল রিমেক গানের জোয়ার। আর ফিউশনধর্মী গানের প্রভাব বিস্তার শুরু প্রায় এক দশক ধরে। মূলত টিভি ও অনলাইনভিত্তিক সংগীতায়োজনের মধ্য দিয়ে ফিউশনধর্মী গানের প্রতি দর্শক-শ্রোতার মনোযোগ কেড়ে নেওয়া শুরু হয়েছিল। ‘উইন্ড অব চেঞ্জ’, ‘আইপিডিসি আমাদের গান’, ‘সিলন মিউজিক লাউঞ্জ’, ‘কোক স্টুডিও বাংলা’, ‘ফোক স্টেশন’ ‘লিভিং রুম সেশন’সহ আরও কিছু অনুষ্ঠান দর্শক-শ্রোতার রুচি বদলে ভূমিকা রেখেছে বলেই মতো গানের ভুবনের বাসিন্দাদের।
পার্থ বড়ুয়া, বাপ্পা মজুমদার, হাবিব ওয়াহিদ, পাভেল আরীনসহ আরও কয়েকজন শিল্পী সংগীতায়োজকদের কথা থেকে যে বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে তা হলো– সুরের মূর্ছনায় স্মৃতি রোমন্থনে ডুবে যাওয়া আমাদের চিরায়ত অভ্যাস। চেনা-সুর মনের পর্দায় তুলে আনে সেই সময়ের দৃশ্য, যখন সেগুলো প্রিয় গানের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। তাই পুরোনো হয়েও কিছু গানের আবেদন কখনও ফুরিয়ে যায় না। সময়কে ছাপিয়ে তা হয়ে ওঠে চিরকালের। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কালজয়ী গানগুলো সংগীতের নতুন আবহে বারবার ফিরে আসবে– এটাই সত্যি। এ কারণেই সংগীতে সময়ের ছাপ ধরে রাখতে ফ্রেমে ফ্রেমে তুলে আনা হচ্ছে গানের ফিউশন। আর তা দর্শক-শ্রোতার মনোযোগ কাড়ছে বলেই আরও অভিনবভাবে তা সিনেমার গানেও উঠে আসছে।