চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মুহা. জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়ের উৎসের বাইরে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন এবং সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগে মামলা দায়েরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ ছাড়া তাঁর স্ত্রী মোসা. কাশমেরী বেগমকে সম্পদ বিবরণী দাখিলের নির্দেশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

আজ সোমবার দুদক প্রধান কার্যালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।

দুদক সূত্রে জানা গেছে, সরকারি কর্মচারী হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে মুহা.

জিয়াউর রহমান অসাধু উদ্দেশ্যে ক্ষমতার অপব্যবহার করে জ্ঞাত আয়বহির্ভূতভাবে ১ কোটি ৮ লাখ ৩২ হাজার ৮৫৩ টাকার সম্পদ অর্জন করেন। এ ছাড়া তাঁর নামের পাশাপাশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে পরিচালিত পাঁচটি ব্যাংক হিসাবে ১০ কোটি ২ লাখ ৭৫ হাজার ৯৪৪ টাকার লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ৫ কোটি ৩ লাখ ৩৬ হাজার ৬২৪ টাকা জমা এবং ৪ কোটি ৯৯ লাখ ৩৯ হাজার ৩২০ টাকা উত্তোলন করা হয়।

এদিকে জিয়াউর রহমানের স্ত্রী কাশমেরী বেগমের বিরুদ্ধেও ৫২ লাখ ৪৭ হাজার টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। দুদক বলছে, তাঁর নামে ও বেনামে আরও সম্পদ থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এ অবস্থায় তাঁর বিরুদ্ধে দুদক আইন অনুযায়ী সম্পদ বিবরণী দাখিলের নির্দেশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

জয়পুরহাটে ভাইয়ে-ভাইয়ে দ্বন্দ্ব, ‘বেরিয়ে এল’ দুর্নীতির তথ্য

দীর্ঘদিন ধরে দুই ভাইয়ের মধ্যে জমিজমা নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছিল। এ নিয়ে একাধিক মামলা-মোকদ্দমাও হয়েছে। এর মধ্যে এক ভাইয়ের দুর্নীতির বিষয়টি প্রকাশ্যে এসেছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধান করে তাঁর বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের প্রমাণ পায়। দুদকের সমন্বিত নওগাঁ জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক নওশাদ আলী বাদী হয়ে গত বছর তাঁর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন।

আদালত সেই সম্পদের রক্ষণাবেক্ষণে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) রিসিভার হিসেবে নিয়োগ দেন। আদালতের নির্দেশে আজ বৃহস্পতিবার সকালে আক্কেলপুরের কানুপুর গ্রামে অভিযুক্ত ফজলুর রহমানের ৩ বিঘা ২৫ শতাংশ আবাদি জমির দখল বুঝে নেন ইউএনও।

অভিযুক্ত ফজলুর রহমান যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মগুলোর পরিদপ্তরের খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ে এক্সামিনার অব অ্যাকাউন্টস পদে কর্মরত ছিলেন। চলতি বছরের জানুয়ারিতে তিনি অবসরে যান। তাঁর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা চলমান।

ফজলুর রহমানের দাবি, তিনি বৈধ আয়ে সম্পদ অর্জন করেছেন। আয়কর রিটার্ন ফাইল দাখিলের সময় জমিগুলোর তথ্য ভুলে উল্লেখ করা হয়নি। জমিজমা নিয়ে দ্বন্দ্বে তাঁর বড় ভাই শফিউল ইসলাম এমন কাজ করছেন বলে তিনি অভিযোগ করেন। তবে শফিউল আলম বিষয়টি অস্বীকার করেন।

দুদকের সমন্বিত নওগাঁ কার্যালয়ের উপপরিচালক মেহেবুবা খাতুন বলেন, ফজলুর রহমান চাকরিতে কর্মরত থাকা অবস্থায় ১৯ লাখ ৭১ হাজার ৯৯৬ টাকার স্থাবর সম্পত্তি ও ৮০ লাখ ১৫ হাজার ২৬ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেন। এ নিয়ে দুদক কর্মকর্তা নওশাদ আলী বাদী হয়ে আদালতে মামলা করেন।

আদালত ফজলুর রহমানের হেফাজতে থাকা জয়পুরহাট শহরের সরদারপাড়া মহল্লার ছয় শতাংশের একটি বাড়ি ও আক্কেলপুর উপজেলার কানুপুর গ্রামের ৩ বিঘা ২৫ শতক আবাদি জমি ক্রোক করার আদেশ দেন। ওই সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণে ইউএনওকে রিসিভার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। আজ ইউএনও কানুপুর মাঠের জমিগুলোর দখল বুঝে নিয়েছেন। তখন তিনি নিজেও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। দ্রুত মামলার অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করা হবে।

আক্কেলপুরের ইউএনওর দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবিদা খানম বলেন, ফজলুর রহমানের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত স্থাবর সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণে আদালত তাঁকে রিসিভার নিয়োগ করেন। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী আজ সকালে তফসিলভুক্ত ৩ বিঘা ২৫ শতক জমির দখল বুঝে নিয়ে লাল ঝান্ডা পুঁতে দেওয়া হয়েছে। তবে তাঁর এলাকার বাইরে হওয়ায় জয়পুরহাট সদরে থাকা ছয় শতাংশের বাসাটির দখল বুঝে নেওয়া হয়নি।

তবে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অস্বীকার করে ফজলুর রহমান বলেন, ‘আমার সব সম্পদ বৈধ। আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় ভুলক্রমে জমিগুলো ফাইলে তোলা হয়নি। আমাদের ভাইদের মধ্যে জমিজমা নিয়ে দ্বন্দ্ব আছে। এই সুযোগে বড় ভাই শফিউল আলম আমার ক্ষতি করেছে।’

শফিউল আলম বলেন, ‘ছোট ভাইয়ের সঙ্গে জমিজমা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলছে, সত্য। তবে আমার পরিবারের কেউ দুদকে অভিযোগ করেনি। দুদক আমার ছোট ভাই ফজলুর রহমানের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ পেয়েছে বলে জেনেছি।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জয়পুরহাটে ভাইয়ে-ভাইয়ে দ্বন্দ্ব, ‘বেরিয়ে এল’ দুর্নীতির তথ্য
  • আইডিআরএর সাবেক চেয়ারম্যান মোশারফ, তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুই মামলার অনুমোদন