সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদাকে গলায় জুতার মালা পরিয়ে হেনস্তা করার ঘটনায় আবারও আলোচনায় ‘মব ভায়োলেন্স’।

গতকাল রোববার রাজধানীর উত্তরার বাসায় ঢুকে একদল লোক নূরুল হুদাকে বের করে আনেন, জুতার মালা পরিয়ে হেনস্তা করে পুলিশে সোপর্দ করেন। জুতা দিয়ে নূরুল হুদাকে আঘাত ও ডিম নিক্ষেপের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। দেখা গেছে ঘটনার সময় সেখানে পুলিশও উপস্থিত ছিল।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর দলবদ্ধভাবে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার ঘটনা বেড়েছে। ঘটনার পর সরকারকে বিবৃতি দিতে দেখা গেছে।

নূরুল হুদার ঘটনার পরও বিবৃতি দিয়েছে সরকার। গত রোববার রাতে সরকারের বিবৃতিতে ‘অভিযুক্ত ব্যক্তির ওপর আক্রমণ ও তাঁকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা বেআইনি, আইনের শাসনের পরিপন্থী ও ফৌজদারি অপরাধ’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) অবৈতনিক নির্বাহী পরিচালক ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সারা হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, সরকার শুধু বিবৃতি দিয়ে দায় সারতে পারে না।

ইংরেজি ‘মব’ শব্দের অর্থ ‘উচ্ছৃঙ্খল জনতা’। এই উচ্ছৃঙ্খল জনতা নিজের হাতে আইন তুলে নিয়ে সহিংসতার ঘটনা ঘটালে তাকে ‘মব ভায়োলেন্স’ বলা হয়।

প্রশ্ন হচ্ছে, কোনো ব্যক্তি চাইলেই কি আরেকজনকে ধরে নিয়ে পুলিশে দিতে পারেন, শারীরিক বা মানসিকভাবে হেনস্তা করতে পারেন, লাঞ্ছিত করতে পারেন? কাউকে মারধর করতে পারেন কিংবা হুমকি দিতে পারেন? উত্তর হচ্ছে, পারেন না।

বিচারব্যবস্থার মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে ন্যায়বিচারের মাধ্যমে সমাজে-রাষ্ট্রে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখা। বাংলাদেশে আইন আছে, আদালত আছে। সংবিধানের ৩৫(৫) অনুচ্ছেদে উল্লেখ আছে, ‘কোনো ব্যক্তিকে যন্ত্রণা দেওয়া যাইবে না কিংবা নিষ্ঠুর, অমানুষিক বা লাঞ্ছনাকর দণ্ড দেওয়া যাইবে না কিংবা কাহারও সহিত অনুরূপ ব্যবহার করা যাইবে না।’

দেশের বিদ্যমান বিচারব্যবস্থায় কোনো নাগরিক যদি কোনো কারণে সংক্ষুব্ধ হন, কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক অন্যায় আচরণের শিকার হন, এর প্রতিকারের জন্য তিনি আইনের আশ্রয় নিতে পারেন। কিন্তু কোনোভাবেই তিনি আইন নিজের হাতে তুলে নিতে পারেন না। বিচার করার একমাত্র এখতিয়ার আইনের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত আদালতের।

ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে কে গ্রেপ্তার করতে পারবেন, কে পারবেন না, সেটি বাংলাদেশের ফৌজদারি কার্যবিধিতে উল্লেখ রয়েছে।

ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৯ ধারা অনুযায়ী, পুলিশ ছাড়াও বেসরকারি ব্যক্তি আমলযোগ্য (গুরুতর) অপরাধে জড়িত ব্যক্তিকে আটক করতে পারেন। ওই ধারায় বলা হয়েছে, কেবলমাত্র যখন কোনো ব্যক্তি এমন অপরাধ সংঘটিত করেন, যে অপরাধ জামিনযোগ্য নয়, সেই অপরাধ ওই ব্যক্তির সামনে সংঘটিত হয়, সে ক্ষেত্রে ওই ব্যক্তি অপরাধে জড়িত ব্যক্তিকে আটক করতে পারেন।

উচ্চ আদালতের একটি নজির [পিএলডি ১৯৫৩, লাহোর ২০৭ (ডিবি)] অনুযায়ী, ‘একজন বেসরকারি ব্যক্তি কেবল অপরাধী বলে ঘোষিত কোনো ব্যক্তিকে অথবা তার সামনে সংঘটিত জামিনঅযোগ্য আমলযোগ্য অপরাধে জড়িত ব্যক্তিকে আটক করতে পারেন।

আইনজীবীরা বলছেন, আটক করার পর সঙ্গে সঙ্গে অভিযুক্তকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করতে হবে। তাঁকে হেনস্তা, লাঞ্ছিত করার কোনো সুযোগ নেই।

ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান কৌঁসুলি (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী প্রথম আলোকে বলেন, ‘সংবিধান এবং ফৌজদারি কার্যবিধিসহ অন্যান্য আইনের বিধান অনুযায়ী কাউকে আটক করার নামে হেনস্তা করা, জুতার মালা পরানো কিংবা শারীরিক ও মানসিকভাবে হেনস্তা করা অপরাধ।’

পিপি ওমর ফারুক ফারুকী অবশ্য এ-ও বলেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার আমলে দিনের ভোট রাতে করা, খুন করা, গুম করা, রাজনৈতিকভাবে হয়রানির জন্য গায়েবি মামলা দেওয়া, জুলাই-আগস্টে নির্বিচার মানুষকে হত্যা করার ঘটনায় জনগণ বিক্ষুব্ধ। যে কারণে কেউ কেউ ফ্যাসিস্ট হাসিনার সহযোগীদের হাতের কাছে পাওয়ার পর অস্বাভাবিক আচরণ করছেন। তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার এবং পুলিশের পক্ষ থেকেও বারবার বলা হচ্ছে, আপনারা কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। বিচার করার একমাত্র এখতিয়ার আদালতের।’

ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে গত বছর ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। এরপর ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। এরপর ১০ মাসেও ‘মব ভায়োলেন্স’ ঠেকাতে না পারা সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে।

মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটির (এইচআরএসএস) হিসাবে, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম সাত মাসে দেশে গণপিটুনির অন্তত ১১৪টি ঘটনা ঘটেছে। এতে ১১৯ জন নিহত এবং ৭৪ জন আহত হয়েছেন।

সরকার অবশ্য বারবার ‘মব ভায়োলেন্স’ বন্ধ করার কথা বলছে। গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছিলেন, ‘কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে কেউ সমাজে বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করলে আমরা তাঁকে অবশ্যই শাস্তির আওতায় নিয়ে আসব।’

মামলা হলেই যে কাউকে গ্রেপ্তার করা যাবে না, সে বিষয়েও সরকারের স্পষ্ট অবস্থান আছে। ২০২৩ সালের ৩ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেছিল, সরকার সবাইকে আশ্বস্ত করতে চায়, মামলা হওয়ার অর্থ যত্রতত্র গ্রেপ্তার নয়। এসব মামলার ক্ষেত্রে সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

কিন্তু দেখা যাচ্ছে, একদল ব্যক্তি মামলার আসামিকে ধরে হেনস্তা করছেন। তারপর পুলিশে দিচ্ছেন। পুলিশ অনেক ক্ষেত্রে কোনো তদন্ত ছাড়াই আসামিকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখাচ্ছে। কিছু ক্ষেত্রে সমালোচনা ও চাপের মুখে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন

সাম্প্রতিক সময়ে ‘মব’ তৈরির কয়েকটি ঘটনায় দেখা গেছে, পুলিশ শক্ত অবস্থান নেয় না। আবার দু–একটি ক্ষেত্রে পুলিশের কোনো কোনো কর্মকর্তাকে শক্ত অবস্থান নিতে দেখা যায়।

যেমন গত মে মাসে ধানমন্ডিতে এক ব্যবসায়ীর বাসার সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্থানীয় এক নেতার (পরে অব্যাহতিপ্রাপ্ত) নেতৃত্বে মব তৈরি করা হয়। তাঁরা ওই ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের ওপর চাপ দেন। যদিও ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ক্যশৈন্যু মারমা চাপের মুখেও ওই ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করেননি। বরং মব সৃষ্টির সঙ্গে জড়িতদের থানায় নিয়ে যান। পরে তাঁকে পুরস্কৃত করেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো.

সাজ্জাত আলী।

সাবেক সিইসি নূরুল হুদাকে জুতার মালা পরিয়ে হেনস্তা করা ও ডিম ছুড়ে মারার সময় সেখানে পুলিশ সদস্যদের দেখা গেছে। ফলে মবের হাত থেকে আসামিকে রক্ষার ক্ষেত্রে পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী আজ সকালে গাজীপুরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সামনেই ওনার (নূরুল হুদা) ওপর হামলা করা হয়েছে। এটার জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তদন্ত করে দেখব কারা জড়িত। এর সঙ্গে যদি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কেউ জড়িত থাকেন, তবে তাঁদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।’

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘মব জাস্টিস কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তাঁর সঙ্গে (সাবেক সিইসি নূরুল হুদা) যেটা হয়েছে, মানে গলায় এটা-সেটা পরিয়ে দেওয়া হয়েছে, তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’

‘সরকার বিবৃতি দিয়ে দায় সারতে পারে না’

যাঁরা মবের ঘটনায় জড়িত, তাঁদের শনাক্ত করা কঠিন কিছু নয়। ভিডিওতে তাঁদের দেখা গেছে। আজ বিকেলে এই বিশ্লেষণ লেখা পর্যন্ত তাঁদের কাউকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেনি।

আইনজীবী সারা হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার নূরুল হুদাকে জুতার মালা পরানোর ঘটনা কোনো সভ্য সমাজে গ্রহণযোগ্য নয়। মধ্যযুগে এ ধরনের ঘটনা ঘটত। তিনি প্রশ্ন তোলেন, পুলিশের সামনে কীভাবে একজন ব্যক্তির গলায় জুতার মালা পরানো হলো? পুলিশের ভূমিকা সেখানে কী ছিল? এ ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কি?

এই জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আরও বলেন, আগে সালিসের নামে কাউকে জুতার মালা পরানোর ঘটনা দেখা যেত। এ ব্যাপারে উচ্চ আদালত কঠোর নির্দেশনা দিয়ে বলেছেন, কারও সঙ্গে এ ধরনের আচরণ সংবিধান পরিপন্থী। সাম্প্রতিক সময়ে এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। অন্তর্বর্তী সরকার কেবল বিবৃতি দিয়ে দায় সারতে পারে না। এভাবে যাঁরা হেনস্তা করে যাচ্ছেন, তাঁদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়ায় মব–এর ঘটনা বেড়েই চলেছে। সারা হোসেন মনে করেন, অন্তর্বর্তী সরকার যদি এ ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ নিত, তাহলে এত বেশি ঘটনা ঘটত না।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আইন ন জ র হ ত গ র প ত র কর মব ভ য় ল ন স ন র ঘটন ব যবস থ র ঘটন য় সরক র র আইনজ ব গ য নয় র স মন র জন য অন য য় আইন র ঘটন র প রথম অপর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

পঞ্চদশ সংশোধনী: তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা ‘যথাযথভাবে পুনর্বহাল হয়নি’, লিভ টু আপিল মঞ্জুরের আরজি

সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী নিয়ে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) মঞ্জুরের আরজি জানিয়েছেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শরীফ ভূঁইয়া। তিনি বলেছেন, হাইকোর্টের রায়ের পরও তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা যথাযথভাবে পুনর্বহাল হয়নি।

পঞ্চদশ সংশোধনীর অংশবিশেষ অসাংবিধানিক ও বাতিল ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারসহ চার বিশিষ্ট ব্যক্তির করা লিভ টু আপিলের শুনানিতে এ কথা বলেন তিনি। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের আপিল বিভাগ আজ বুধবার প্রথম দিনের মতো শুনানি নেন। আগামীকাল বৃহস্পতিবার শুনানির পরবর্তী দিন রেখেছেন আদালত।

চার বিশিষ্ট ব্যক্তির পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শরীফ ভূঁইয়া, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী কারিশমা জাহান ও রিদুয়ানুল করিম। শুনানিতে শরীফ ভূঁইয়া বলেন, হাইকোর্টে পুরো পঞ্চদশ সংশোধনী আইন চ্যালেঞ্জ করা হয়। হাইকোর্ট তার অংশবিশেষ অসাংবিধানিক ও বাতিল ঘোষণা করেছেন। পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের ২০ ও ২১ ধারা বাতিল করেছেন। তাতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা–সংক্রান্ত মূল বিধান ফিরে এসেছে। তবে আইনের আরও কিছু বিধান রয়েছে, যে কারণে যথাযথভাবে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা পুনর্বহাল হয়নি।

কোন বিষয়গুলো পুনর্বহাল হয়েছে এবং কোনগুলো হয়নি—এসব দিক শুনানিতে তুলে ধরেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শরীফ ভূঁইয়া। তিনি বলেন, পঞ্চদশ সংশোধনী আইন পাস করার ক্ষেত্রে পদ্ধতিগত ত্রুটি ছিল। উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে এ সংশোধনী আনা হয়। এ ক্ষেত্রে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন হয়নি।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলোপসহ বেশ কিছু বিষয়ে পরিবর্তন এনে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী এনেছিল আওয়ামী লীগ সরকার। ২০১১ সালের ৩০ জুন পঞ্চদশ সংশোধনী আইন জাতীয় সংসদে পাস হয়। ওই সংশোধনীতে সংবিধানে ৫৪টি ক্ষেত্রে পরিবর্তন এসেছিল। বিলোপ হয়েছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থাও।

জুলাই অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর পঞ্চদশ সংশোধনীর বৈধতা নিয়ে পৃথক রিট আবেদন হয়। সুজন সম্পাদকসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা একটি এবং নওগাঁর বাসিন্দা মো. মোফাজ্জল হোসেন আরেকটি আবেদন করেন।

সেই আবেদনে গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর হাইকোর্ট রায় দেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলুপ্তি-সংক্রান্ত পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের ২০ ও ২১ ধারা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও বাতিল ঘোষণা করা হয় রায়ে। এই দুটিসহ পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের মাধ্যমে সংবিধানে যুক্ত ৭ক, ৭খ, ৪৪ (২) অনুচ্ছেদ সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও বাতিল ঘোষণা করা হয়।

হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধেই সুজন সম্পাদকসহ চার বিশিষ্ট ব্যক্তি লিভ টু আপিল করেন। অন্য তিন ব্যক্তি হলেন এম হাফিজ উদ্দিন খান, জোবাইরুল হক ভূঁইয়া ও জাহরা রহমান। মোফাজ্জল হোসেন আরেকটি লিভ টু আপিল করেন। জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার একটি লিভ টু আপিল করেন। লিভ টু আপিলগুলো একসঙ্গে শুনানির জন্য আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় ওঠার পর আজ শুনানি শুরু হলো।

আরও পড়ুনপঞ্চদশ সংশোধনী সম্পূর্ণ বাতিল চেয়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল০৩ নভেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মুক্তিযোদ্ধা সংসদে স্বচ্ছ মুক্তিযোদ্ধা পাওয়া কষ্টকর : জাহাঙ্গীর
  • পঞ্চদশ সংশোধনী: তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা ‘যথাযথভাবে পুনর্বহাল হয়নি’, লিভ টু আপিল মঞ্জুরের আরজি
  • নারী ক্রিকেটে অসদাচরণ তদন্তে যুক্ত হলেন আরও দুজন
  • যৌন নির্যাতনের অভিযোগ জাহানারার: তদন্ত কমিটিতে আরো ২ জন
  • ‘মাথার ওপর যেন ছাদ ভেঙে পড়তে চলেছে’—ইসলামাবাদে হামলা নিয়ে প্রত্যক্ষদর্শী
  • চাঁপাইনবাবগঞ্জে ভাগনের চাঁদাবাজির মামলায় মামা গ্রেপ্তার
  • প্রাথমিকে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষার শিক্ষক নিয়োগের সুযোগ বাদের বিধান কেন অবৈধ নয়: হাইকোর্ট
  • বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন পুনর্বহালের নির্দেশ
  • সিলেটে অটোচালকদের আন্দোলনে থাকা সিপিবি নেতার চার মামলায় জামিন
  • লতিফ সিদ্দিকী ও মঞ্জুরুল আলমের জামিন বহাল, মুক্তিতে বাধা নেই