সোমবার ১৩টি জেলা নির্বাচন অফিসে একযোগে দুদকের অভিযান
Published: 24th, June 2025 GMT
নতুন জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়া, সংশোধন ও সংগ্রহে ঘুষ গ্রহণ, হয়রানি ও দালাল চক্রের দৌরাত্ম্যের তথ্যের ভিত্তিতে দেশের ১৩টি জেলা নির্বাচন অফিসে একযোগে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সোমবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত এ অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযান শেষে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দুদক বলেছে, অভিযানে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে।
এর আগে সকালে রাজশাহী, রংপুর, কুড়িগ্রাম, ময়মনসিংহ, পাবনা, নওগাঁ, দিনাজপুর, বরিশাল, বগুড়া, জামালপুর, পটুয়াখালী, ঠাকুরগাঁও ও পিরোজপুরে একযোগে অভিযান শুরু করে দুদক।
দুদক বলছে, রংপুর জেলা নির্বাচন অফিসে সেবাগ্রহীতাদের পাসপোর্টের জন্য এনআইডির সত্যায়িত কপি নিতে গিয়ে ঘুষ ও হয়রানির শিকার হওয়ার অভিযোগ পেয়ে ছদ্মবেশে অভিযান চালায় দুদক। অভিযানের পর সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। রাজশাহীতে অনলাইনে আবেদন জমা দেওয়ার নিয়ম থাকা সত্ত্বেও কিছু কর্মচারীর রসিদ ছাড়াই নগদ অর্থ গ্রহণ করে এনআইডি ভেরিফিকেশন করার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
এ ছাড়া কুড়িগ্রামে ২০২২ সালের একটি আবেদন তিন বছর পর খারিজ করার ঘটনা নজরে আসে। একাধিক নারীসহ ভুক্তভোগীদের বক্তব্য ও কাগজপত্র পর্যালোচনা করে অনিয়মের সত্যতা নিশ্চিত করে দুদক। ময়মনসিংহে সেবাগ্রহীতা ও কর্মকর্তাদের বক্তব্য গ্রহণ করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
দুদক বলছে, পাবনায় এনআইডি সংশোধনের অনলাইন আবেদনে অস্বাভাবিক বিলম্বের সত্যতা পাওয়ার পর তা সমাধানে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নওগাঁ ও দিনাজপুরে ছদ্মবেশে দুদকের একটি দল সরেজমিনে সেবাগ্রহীতাদের কাছ থেকে অভিযোগ সংগ্রহ করে এবং কিছু ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক সমাধান দেয়। বরিশালে ফিঙ্গারপ্রিন্ট নেওয়ার সময় প্রায়ই সার্ভার সমস্যায় পড়ছেন—এমন অভিযোগের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
অন্যদিকে বগুড়া, জামালপুর, পটুয়াখালী, ঠাকুরগাঁও ও পিরোজপুরেও একযোগে অভিযান চালিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কিছু সমস্যার সমাধান করা হয়।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, শুধু এনআইডি সেবা নয়, সরকারি বিভিন্ন সেবায় দুর্নীতি বন্ধে এমন অভিযান নিয়মিত চালানো হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: একয গ
এছাড়াও পড়ুন:
ময়মনসিংহে গারো স্কুলছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগে মামলা, একজন গ্রেপ্তার
ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে গারো স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তির এক সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল রাত ১০টার দিকে জুগলি ইউনিয়নের নয়াপাগা গ্রাম থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তির নাম মিলন মিয়া (২১)। তিনি একই এলাকার বাসিন্দা ও পেশায় অটোরিকশাচালক। এর আগে গতকাল রাতেই মূল অভিযুক্ত আবুল বাশার (২৫) ও তাঁর সহযোগী মিলন মিয়াকে আসামি করে হালুয়াঘাট থানায় মামলা করেন ওই ছাত্রীর মা। তবে মামলার প্রধান আসামিকে আজ সকাল পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা যায়নি।
আরও পড়ুনহালুয়াঘাটে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ১৫ ঘণ্টা আগেপুলিশ, স্থানীয় বাসিন্দা ওই কিশোরীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ওই কিশোরী (১৫) নবম শ্রেণিতে পড়ে। গত সোমবার দুপুরে মিলন মিয়ার (২১) সঙ্গে সে একটি পার্কে বেড়াতে যায়। বিকেলের দিকে সেখান থেকে বাড়ি পৌঁছে দিতে কিশোরীটিকে বাশারের অটোরিকশায় তুলে দেন মিলন। এ সময় বাশার হালুয়াঘাট উপজেলা শহরে পূজামণ্ডপ দেখানোর কথা বলে মেয়েটিকে নিয়ে ঘুরতে থাকেন। একপর্যায়ে একটি নির্জন স্থানে নিয়ে স্কুলছাত্রীটিকে ধর্ষণ করেন। এরপর রাত ১১টার দিকে গামারীতলা এলাকায় তাকে নামিয়ে দিয়ে অটোরিকশাচালক চলে যান। পরে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে তাকে বাড়িতে নিয়ে যান।
খবর পেয়ে পুলিশ গতকাল রাতেই আবুল বাশারের (২৫) বাড়িতে অভিযান চালায়। তবে তাঁকে পাওয়া যায়নি। ওই সময় অটোরিকশাটি জব্দ করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
হালুয়াঘাট থাকার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুল ইসলাম বলেন, ‘প্রধান অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারে আমাদের চেষ্টা চলছে। তাঁর সহযোগী মিলনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মিলন জানিয়াছেন, মেয়েটি তাঁর বন্ধু।’
এদিকে হালুয়াঘাটে গারো ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী ছাত্র ও যুব সংগঠনগুলো। আজ বেলা তিনটায় ঢাকা শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে এ কর্মসূচি আয়োজন করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) কেন্দ্রীয় সদস্য সাবেক যুগ্ম মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) অলিক মৃ।
আজ বুধবার সকালে নিজের ফেসবুকে পেজে পোস্ট দিয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স ওই ঘটনার নিন্দা ও শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, মেয়েটি জীবনের সবচেয়ে বড় ক্ষতি ও বিপর্যয়ের সম্মুখীন। মেয়েটির মা বিএনপি পরিবারের সদস্য ও গত ৩ সেপ্টেম্বর বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর মিছিলেও অন্য গারো নারীদের সঙ্গে অংশ নিয়েছেন। অবশ্যই এই ধর্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হতে হবে।