প্রতিদিনের মতো মঙ্গলবার বিকেলে আশুলিয়ায় তৈরি পোশাক কারখানা থেকে তিন কর্মকর্তাকে নিয়ে প্রাইভেটকারে ঢাকায় ফিরছিলেন চালক মনিরুল ইসলাম। বেড়িবাঁধের পঞ্চবটিতে যানবাহনের চাপে ধীরে ধীরে চলছিল গাড়ি। তখন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা। হঠাৎ প্রিমিও ব্রান্ডের প্রাইভেটকারের চালকের আসনের পাশ দিয়ে বাইরে থেকে রড ঢুকিয়ে দেয় এক দুর্বৃত্ত। এর পর গাড়ি সামনের দরজা খুলে আরও দু’জন চালককে মারধর করে বের করে আনেন। গাড়িতে থাকা বাকি তিন আরোহীকে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে হামলা করে তারা। এরপর গাড়িটি ছিনতাই করে তারা পালিয়ে যায়। 

এ ঘটনার সময় একই সড়কে একই কোম্পানির আরেকটি প্রাইভেটকার অফিসের কর্মকর্তাদের নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে আসছিলেন। সেই গাড়ির চালক রফিকুল ইসলাম ছিনতাইয়ের ঘটনাটি দেখতে পান। তখন নিজের প্রাইভেটকার রেখে দৌড়ে তিনি ছিনতাই হওয়া গাড়ির সামনের বনেটের ওপর লাফিয়ে উঠেন। তখন ছিনতাইকারী জোরে গাড়ি চালানোর পর বনেট থেকে তিনি ছিটকে পড়েন। তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান শারমিন গ্রুপের প্রাইভেটকার ছিনতাইয়ের এমন ঘটনাটি ফোনে চালক ও হামলার শিকার অন্যরা জানান অফিসের অন্য কর্মকর্তাদের। এটি জানার পর কামরুজ্জামান ও সাজিদুল ইসলাম সম্রাট নামে দুই কর্মকর্তা গাড়ির জিপিএস ট্র্যাকিং সিস্টেম চালু করেন। তাদের মধ্যে কামরুজ্জামান ছিলেন আশুলিয়ার কর্মস্থলে। আর সম্রাট উত্তরায় তার বাসার কাছাকাছি। 

সম্রাট সমকালকে জানান, ট্র্যাকিং সিস্টেমে দেখা যায়–গাড়িটি বেরিবাঁধ উত্তরার বিভিন্ন জায়গা ঘুরে গাজীপুরের দিকে যাচ্ছিল। এরপর সম্রাট মোটরসাইকেলে গাড়ির পিছু নেন। এক পর্যায়ে তারা বিষয়টি পুলিশকে জানান। জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯–এ কল করেন। গাজীপুরের পুলিশ কমিশনারকে জানানো হয়। এর মধ্যে গ্রামীণ ফোনের সহায়তায় ট্র্যাকিং সিস্টেমের মাধ্যমে বন্ধ করে দেওয়া হয় গাড়ির ইঞ্জিন। তখন প্রাইভেটকারটি ছিল টঙ্গী কলেজ গেটের কাছাকাছি। ইঞ্জিন বন্ধ হওয়ার পর বিপাকে পড়েন ছিনতাইকারীরা। তারা রাস্তায় পাশে গাড়িটি রেখে পালিয়ে যান। এরপর শারমিন গ্রুপের লোকজন ও পুলিশ গিয়ে রাত সাড়ে ৯টায় গাড়িটি উদ্ধার করে।

শারমিন গ্রুপের প্রশাসনিক কর্মকর্তা কামরুজ্জামান বলেন, কোম্পানির কয়েকজন একটি টিম হিসেবে কাজ করে। তারা গাড়ির গতিবিধির ওপর নজর রাখে, পরে তা উদ্ধার করা হয়েছে। গাজীপুরের পুলিশও সহযোগিতা করেছে। উদ্ধারের পর প্রাইভেটকারের মধ্যে চাপাতি, রডসহ বিভিন্ন ধরনের দেশীয় অস্ত্র পাওয়া গেছে। এর আগে প্রাইভেটকারে আমাদের প্রতিষ্ঠানের যে তিন কর্মকর্তা ছিলেন তাদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ ছিনিয়ে নেয় দুর্বৃত্তরা। ঘটনার পরপরই তাৎক্ষণিকভাবে তুরাগ থানায় জিডি করা হয়েছিল। গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার সব ধরনের সহযোগিতা করেন।  
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ছ নত ই কর মকর ত ছ নত ই

এছাড়াও পড়ুন:

জিম্বাবুয়েতে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশের যুবারা, ৯৫ রানের পর ৫ উইকেট রিজানের

রিজানের বলে বায়ান্দা মায়োলা আউট হতেই নিশ্চিত হলো জয়। উইকেটরক্ষক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ ছুটলেন রিজানের দিকে—সেঞ্চুরি হারানোর আক্ষেপে পোড়া রিজানই যে জয়ের নায়ক। ব্যাট হাতে দলের বিপদের সময় দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন ঢাল হয়ে, বল হাতেও পেস বোলিংয়ে তিনি পেয়েছেন ৫ উইকেট। তাতে জিম্বাবুয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকা অনূর্ধ্ব-১৯ দলকে ৩৩ রানে হারিয়ে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল হয়েছে চ্যাম্পিয়ন।

অথচ আজ ব্যাটিংয়ের পর বোলিংয়েই শুরুটা ভালো ছিল না বাংলাদেশের যুবাদের। হারারেতে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে ৬৫ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। কালাম সিদ্দিকির সঙ্গী হয়ে দলের হাল এরপরপরই ধরেন রিজান। তাঁদের জুটিতেই নতুন করে আশা দেখতে শুরু করে বাংলাদেশ। চতুর্থ উইকেটে ১১৭ রানের জুটি গড়েন দুজন।

৭৬ বলে ৬৫ রান করে আউট হয়ে যান কালাম। তবে রিজান ছুটতে থাকেন সেঞ্চুরির দিকে। শেষ পর্যন্ত তা তিনি পাননি, ফিরেছেন রানআউট হয়ে তাঁর সঙ্গী হয় রান আউটের দুর্ভাগ্য। ৪৮তম ওভারে দ্বিতীয় রান নিতে গিয়ে ৯৬ বলে ৯৫ রানে রানআউট হন রিজান।

এরপর ২৯ বলে ৩৮ রান করা আবদুল্লাহ ও ৮ বলে ১৩ রান করা সামিউন বাসীর শেষ ১৫ বলে যোগ করেন ২৪ রান।

বড় রান তাড়ায় দুর্দান্ত একটা শুরু পেয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকার যুবারাও। তাঁদের ৫৯ রানের উদ্বোধনী জুটি ভেঙে বাংলাদেশকে প্রথম উইকেট এনে দেন আল ফাহাদ। ৩১ বলে ৪০ রান করা আদনান লাগাদিয়েনকে ফেরান তিনি। আরেক ওপেনার ইউরিখ ফন শালকবভিকও ২২ বলে ১৯ রান করে আউট হন তাঁর বলেই।

দুই ওপেনার ফিরে যাওয়ার পরও দক্ষিণ আফ্রিকাকে কক্ষপথে রেখেছিলেন মোহাম্মদ বুলবুলিয়া ও জেসন রোলেস। তাঁদের ৪৫ রানের জুটি ভাঙেন রিজান। ৪৩ বলে ৩১ রান করে আউট হন বুলবুলিয়া, ৩৫ রানের বেশি করতে পারেননি রোলেসও।

এরপর আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকার যুবারা। শেষদিকে এমবাথার ২৯ আর সোনির ৩৪ কেবল ব্যবধানই কমিয়েছে। ফাইনাল জয়ের আনন্দে মেতেছে বাংলাদেশের যুবারা। আর তাতে ব্যাটে-বলে অসাধারণ পারফরম্যান্স করে নায়ক রিজান। রাতটা নিশ্চিতভাবেই স্মরণীয় হয়ে থাকবে তাঁর জন্য।  

সংক্ষিপ্ত স্কোর

বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল: ৫০ ওভারে ২৬৯/৫ (রিজান ৯৫, কালাম ৬৫, আবদুল্লাহ ৩৮; এমবাথা ২/৫০, মায়োলা ১/৪১)
দক্ষিণ আফ্রিকা অনূর্ধ্ব-১৯ দল : ৪৮.৪ ওভারে ২৩৬ (লাগাদিয়েন ৪০, রোলেস ৩৫, বুলবুলিয়া ৩১, সোনি ৩৪, এমবাথা ২৯; রিজান ৫/৩৪, ফাহাদ ৩/৫০, স্বাধীন ২/৩৪)
ফল: বাংলাদেশ অ–১৯ দল ৩৩ রানে জয়ী।

আরও পড়ুনদুবার জীবন পেয়ে ডেভিডের ৮৩, জিতেছে তাঁর দলই২ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইসির প্রাথমিক বাছাইয়ে উত্তীর্ণ এনসিপিসহ ১৬ দল
  • ‘ক্যাঙারু কোর্ট’ বসিয়ে অনেককে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে: শফিকুল আলম
  • জিম্বাবুয়েতে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশের যুবারা, ৯৫ রানের পর ৫ উইকেট রিজানের
  • এনসিপি নেতাকে ‘প্রস্তুত হ রাজাকার’ চিরকুটের সঙ্গে কাফনের কাপড় পাঠিয়ে হুমকি
  • ইসির প্রাথমিক বাছাইয়ে উত্তীর্ণ এনসিপিসহ অন্তত ১৬টি দল
  • পটিয়ায় চাকরিচ্যুতদের অবরোধ প্রত্যাহার, ৪ ঘণ্টা পর সচল হলো ২০ ব্যাংক
  • পাটুরিয়া লঞ্চঘাট নদীতে বিলীন, লঞ্চে যাত্রীদের ঝুঁকিপূর্ণ ওঠানামা
  • থমকে গেছে জুলাই যোদ্ধা মিশনের জীবন
  • বিরল নেপালি খুদে ছাতারে 
  • হুমা কুরেশির ভাই খুন