আশুলিয়ায় প্রাইভেটকার ছিনতাই, জিপিএস ট্র্যাকিংয়ে যেভাবে টঙ্গি থেকে উদ্ধার
Published: 25th, June 2025 GMT
প্রতিদিনের মতো মঙ্গলবার বিকেলে আশুলিয়ায় তৈরি পোশাক কারখানা থেকে তিন কর্মকর্তাকে নিয়ে প্রাইভেটকারে ঢাকায় ফিরছিলেন চালক মনিরুল ইসলাম। বেড়িবাঁধের পঞ্চবটিতে যানবাহনের চাপে ধীরে ধীরে চলছিল গাড়ি। তখন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা। হঠাৎ প্রিমিও ব্রান্ডের প্রাইভেটকারের চালকের আসনের পাশ দিয়ে বাইরে থেকে রড ঢুকিয়ে দেয় এক দুর্বৃত্ত। এর পর গাড়ি সামনের দরজা খুলে আরও দু’জন চালককে মারধর করে বের করে আনেন। গাড়িতে থাকা বাকি তিন আরোহীকে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে হামলা করে তারা। এরপর গাড়িটি ছিনতাই করে তারা পালিয়ে যায়।
এ ঘটনার সময় একই সড়কে একই কোম্পানির আরেকটি প্রাইভেটকার অফিসের কর্মকর্তাদের নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে আসছিলেন। সেই গাড়ির চালক রফিকুল ইসলাম ছিনতাইয়ের ঘটনাটি দেখতে পান। তখন নিজের প্রাইভেটকার রেখে দৌড়ে তিনি ছিনতাই হওয়া গাড়ির সামনের বনেটের ওপর লাফিয়ে উঠেন। তখন ছিনতাইকারী জোরে গাড়ি চালানোর পর বনেট থেকে তিনি ছিটকে পড়েন। তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান শারমিন গ্রুপের প্রাইভেটকার ছিনতাইয়ের এমন ঘটনাটি ফোনে চালক ও হামলার শিকার অন্যরা জানান অফিসের অন্য কর্মকর্তাদের। এটি জানার পর কামরুজ্জামান ও সাজিদুল ইসলাম সম্রাট নামে দুই কর্মকর্তা গাড়ির জিপিএস ট্র্যাকিং সিস্টেম চালু করেন। তাদের মধ্যে কামরুজ্জামান ছিলেন আশুলিয়ার কর্মস্থলে। আর সম্রাট উত্তরায় তার বাসার কাছাকাছি।
সম্রাট সমকালকে জানান, ট্র্যাকিং সিস্টেমে দেখা যায়–গাড়িটি বেরিবাঁধ উত্তরার বিভিন্ন জায়গা ঘুরে গাজীপুরের দিকে যাচ্ছিল। এরপর সম্রাট মোটরসাইকেলে গাড়ির পিছু নেন। এক পর্যায়ে তারা বিষয়টি পুলিশকে জানান। জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯–এ কল করেন। গাজীপুরের পুলিশ কমিশনারকে জানানো হয়। এর মধ্যে গ্রামীণ ফোনের সহায়তায় ট্র্যাকিং সিস্টেমের মাধ্যমে বন্ধ করে দেওয়া হয় গাড়ির ইঞ্জিন। তখন প্রাইভেটকারটি ছিল টঙ্গী কলেজ গেটের কাছাকাছি। ইঞ্জিন বন্ধ হওয়ার পর বিপাকে পড়েন ছিনতাইকারীরা। তারা রাস্তায় পাশে গাড়িটি রেখে পালিয়ে যান। এরপর শারমিন গ্রুপের লোকজন ও পুলিশ গিয়ে রাত সাড়ে ৯টায় গাড়িটি উদ্ধার করে।
শারমিন গ্রুপের প্রশাসনিক কর্মকর্তা কামরুজ্জামান বলেন, কোম্পানির কয়েকজন একটি টিম হিসেবে কাজ করে। তারা গাড়ির গতিবিধির ওপর নজর রাখে, পরে তা উদ্ধার করা হয়েছে। গাজীপুরের পুলিশও সহযোগিতা করেছে। উদ্ধারের পর প্রাইভেটকারের মধ্যে চাপাতি, রডসহ বিভিন্ন ধরনের দেশীয় অস্ত্র পাওয়া গেছে। এর আগে প্রাইভেটকারে আমাদের প্রতিষ্ঠানের যে তিন কর্মকর্তা ছিলেন তাদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ ছিনিয়ে নেয় দুর্বৃত্তরা। ঘটনার পরপরই তাৎক্ষণিকভাবে তুরাগ থানায় জিডি করা হয়েছিল। গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার সব ধরনের সহযোগিতা করেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ছ নত ই কর মকর ত ছ নত ই
এছাড়াও পড়ুন:
নিজেকে ‘মুসলিম’ বলে ঘোষণা করেছেন আরিয়ান খান
রোমান্টিক, কমেডি, অ্যাকশন, সায়েন্স ফিকশন সব ঘরানার সিনেমার সফল নায়ক শাহরুখ খান। তিনি ভালোবেসে বিয়ে করেছেনর হিন্দু ধর্মের অনুসারী গৌরী খানকে। ভালোবাসা আর পারস্পরিক সমঝোতার মাধ্যমে বিশ্বস্ততার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে এ দম্পতি।
এক সময় গৌরীকে পাওয়ার জন্য নিজেকে হিন্দু বলে পরিচয় দিতেন শাহরুখ। এই পরিচয়ে গৌরীর বাবা-মায়ের সঙ্গে ভাব জমাতেন তিনি। কিন্তু প্রেমে তিনি ছিলেন আধিপত্যবাদী। গৌরীকে খোলা চুলে দেখতে পারতেন না। গৌরী চুল খুলে রাখলেই তিনি রেগে যেতেন। সামান্য ছোটখাটো বিষয় নিয়ে দুইজনের মধ্যে ঝগড়া হতো। গৌরী এক সময় এই সম্পর্ক ভেঙে দিতে চান। দুইজনের দূরত্ব তৈরি হয়। এরপর শাহরুখ প্রেমের ধরণ পাল্টান। তিনি বিশ্বাস করতে শুরু করেন, ‘মেয়েরা নম্র, ভদ্র, আর কিছুটা নারীসুলভ আচরণ পছন্দ করে।’ নিজেকে পাল্টে নেন শাহরুখ। গৌরী উপলব্ধি করেন, শাহরুখ তাকে অনেক ভালোবাসেন! কিন্তু শাহরুখের সঙ্গে গৌরীর বিয়ে নিয়ে আপত্তি তোলেন তার পরিবারের সদস্যরা। দুইজনের প্রেম তখনও চলছিলো। এরপর হিন্দু ধর্মমতে গৌরীর সঙ্গে শাহরুখকে বিয়ে দিতে রাজি হন গৌরীর বাবা-মা। ১৯৯১ সালের ২৫ অক্টোবর হিন্দু রীতি অনুযায়ী বিয়ে হয় তাদের। বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই গৌরীকে উদ্দেশ্যে শাহরুখ বলে ওঠেন, ‘নামাজের সময় হয়েছে।’ শাহরুখের মুখে এ কথা শুনে বিস্ময়ে হতবাক হয়ে যান বিয়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাই।
দিল্লির সম্ভ্রান্ত এক ব্রাহ্মণ পরিবারের মেয়ে গৌরী শিবার হিন্দু ধর্ম পালন করেন, শাহরুখ পালন করেন মুসলিম ধর্ম। তিন দশকের বেশি সময় ধরে তাদের ভালোবাসায় ধর্ম বাধা হতে পারেনি।
আরো পড়ুন:
শাহরুখের ঘড়ির মূল্য কারো এক জীবনের স্বপ্ন
‘শাহরুখকে নিয়ে সিনেমা নির্মাণের চেয়ে তাকে জানতে পারাটা সৌভাগ্যের’
তিন সন্তানের বাবা-মা তারা। সন্তানদের হিন্দু-মুসলিম হওয়ার বিষয়ে কোনো চাপ দেননি, ধর্ম বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে স্বাধীনতা দিয়েছেন তারা।
শাহরুখ-গৌরীর বড় সন্তান আরিয়ান খানের ধর্ম কী?—এই বিষয়ে সম্প্রতি গৌরী জানিয়েছেন, ‘‘আরিয়ান খান ঘোষণা করেছে ও মুসলিম।’’
বলা যায়, বাবার ধর্মই বেছে নিয়েছেন আরিয়ান খান।
ঢাকা/লিপি