ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক হামলাসংক্রান্ত গোপন গোয়েন্দা প্রতিবেদন সংবাদমাধ্যমে ফাঁস হওয়া নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে ক্ষোভ জানান তিনি।

ট্রুথ সোশ্যাল পোস্টে ট্রাম্প লিখেছেন, ‘ভুয়া খবরের সিএনএন ডুবন্ত নিউইয়র্ক টাইমসের সঙ্গে মিলে ইতিহাসের অন্যতম সফল সামরিক অভিযানের গুরুত্বকে খাটো করে দেখাতে চাইছে। ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে! টাইমস আর সিএনএন—দুই প্রতিষ্ঠানকে নিয়েই সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ!’

ফাঁস হওয়া গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক হামলায় ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ধ্বংস হয়নি।

ট্রাম্প প্রশাসন সেই দাবিকে প্রত্যাখ্যান করে যাচ্ছে।

গোপন গোয়েন্দা প্রতিবেদনটি সম্পর্কে জানেন—এমন কয়েকজন মার্কিন কর্মকর্তার বরাতে নিউইয়র্ক টাইমসের খবরে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র ইরানের দুটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়ে প্রবেশপথ বন্ধ করে দিতে পেরেছে। কিন্তু স্থাপনাটির ভূগর্ভস্থ ভবনগুলো ধ্বংস করতে পারেনি।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, হামলার আগেই ইরান তার সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের বড় একটি অংশ সরিয়ে ফেলেছিল। ফলে হামলায় পারমাণবিক উপাদানের খুব সামান্যই ধ্বংস হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এসব ইউরেনিয়ামের কিছু অংশ ইরানের গোপন পারমাণবিক স্থাপনাগুলোয় সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

মার্কিন প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থার (ডিআইএ) প্রতিবেদনে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, হামলায় ইরানের স্থাপনাগুলোর ক্ষয়ক্ষতি প্রশাসনের কিছু কর্মকর্তার প্রত্যাশার চেয়ে কম হয়েছে। শুধু তা–ই নয়, নিজেদের প্রায় সব পারমাণবিক উপকরণের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখার সক্ষমতা ইরানের আছে। এর অর্থ হলো, তারা যদি পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে তুলনামূলকভাবে দ্রুতই তারা তা করতে পারবে।

নিউইয়র্ক টাইমসের এই প্রতিবেদন তৈরির জন্য যেসব মার্কিন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলা হয়েছে, তাঁরা নিজেদের নাম প্রকাশ করতে রাজি হননি। কারণ, প্রাথমিক প্রতিবেদনটি এখনো গোপনীয় নথির পর্যায়ভুক্ত।

এই গোপন গোয়েন্দা প্রতিবেদনের কিছু অংশ এর আগে সিএনএনেও প্রকাশ করা হয়েছিল।

এর আগে হোয়াইট হাউসও ডিআইএর মূল্যায়নের সঙ্গে দ্বিমত জানিয়েছে। হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র ক্যারোলাইন লেভিট এক বিবৃতিতে প্রাথমিক মূল্যায়ন প্রতিবেদনকে ‘পুরোপুরি ভুল’ মন্তব্য করে বলেন, ‘কথিত এই মূল্যায়ন ফাঁস করার উদ্দেশ্য পরিষ্কার। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং যাঁরা অত্যন্ত নিখুঁতভাবে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ধ্বংসের অভিযানে অংশ নিয়েছেন, সেই সাহসী বৈমানিকদের হেয় করতেই তা করা হয়েছে।’

ক্যারোলাইন লেভিট আরও বলেন, ‘৩০ হাজার পাউন্ড ওজনের ১৪টি বোমা যদি নিখুঁতভাবে লক্ষ্যবস্তুতে ফেলা হয়, তাহলে কী হয়, তা সবাই জানে। ফলাফল হয় সম্পূর্ণ ধ্বংস।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ধ ব স হয় ট ইমস

এছাড়াও পড়ুন:

শিশু যৌন নিপীড়ক ও নারী পাচারকারী এপস্টেইনের বাড়িতে এবার পাওয়া গেল সৌদি যুবরাজের ছবি

কুখ্যাত শিশু যৌন নিপীড়ক ও নারী পাচারকারী যুক্তরাষ্ট্রের ধনকুবের জেফরি এপস্টেইনের নিউইয়র্ক নগরের বাড়িতে সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের একটি ছবি পাওয়া গেছে। এই ছবি নিয়ে অনলাইনে বিতর্ক ও সমালোচনার ঝড় উঠেছে।

গত মঙ্গলবার নিউইয়র্ক টাইমসের একটি প্রতিবেদন ওই ঝড় উসকে দিয়েছে। প্রতিবেদনে নিউইয়র্ক নগরে জেফরি এপস্টেইনের প্রাসাদতুল্য বাসভবনের ভেতরে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের ফ্রেম করা ছবি পাওয়া যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। প্রতিবেদনটিতে প্রয়াত এপস্টেইনের ম্যানহাটানের সাততলা বাড়ির ভেতরের বিবরণ তুলে ধরা হয়।

শিশুদের যৌন নিপীড়ন করার অভিযোগে হওয়া মামলায় ২০১৯ সালে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন এপস্টেইন। তাঁর বিচারকাজ শুরুর প্রক্রিয়া চলছিল। এরই মধ্যে নিউইয়র্কের একটি কারাগার থেকে এপস্টেইনের ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার হয়। এপস্টেইন আত্মহত্যা করেছেন, নাকি তাঁকে হত্যা করা হয়েছে, এ নিয়ে বিতর্ক হয়েছিল। পরে বিচার বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, এপস্টেইন আত্মহত্যা করেছেন।

এক শিশুকে যৌনকর্মের জন্য পাচার করার অভিযোগে হওয়া একটি মামলায় ২০০৮ সালের দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন এপস্টেইন। কিন্তু বিতর্কিত একটি সাজা হ্রাস আইনের অধীনে তাঁকে মাত্র ১৩ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।

এপস্টেইনের বাড়ির ভেতরের যে বিবরণ দেওয়া হয়েছে তাতে দেখা যায়, তাঁর শয়নকক্ষ ও সংলগ্ন কক্ষে বসানো রয়েছে নজরদারি ক্যামেরা। বাড়ির ভেতরে রয়েছে স্টাফ করা প্রাণীর দেহ, উসকানিমূলক শিল্পকর্ম ও ভাস্কর্য।

ভবনের ভেতরে সৌদি যুবরাজের ছবি থাকার কথা প্রকাশ পাওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে।

যদিও অনেক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারী এতে মোটেও অবাক হননি বলে মন্তব্য করেছেন। একজন তাঁর মন্তব্যে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের আরেকটি ছবির প্রসঙ্গ টানেন, যে ছবিতে জর্জ আরেফ নাদেরের সঙ্গে সৌদি যুবরাজকে দেখা যায়।

জেফরি এপস্টেইনের বাড়িতে সাজিয়ে রাখা ছবিতে তাঁর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ফার্স্টলেডি মেলানিয়াকে দেখা যাচ্ছে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শিশু যৌন নিপীড়ক ও নারী পাচারকারী এপস্টেইনের বাড়িতে এবার পাওয়া গেল সৌদি যুবরাজের ছবি