সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের শ্রমিকদের মহাসড়কে চাঁদাবাজিসহ পাবনার শ্রমিকদের মারধরের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে পাবনা-ঢাকা রুটে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে পাবনা জেলা মোটর মালিক গ্রুপ ও পাবনা জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন।

পরিবহন ধর্মঘটের ফলে পাবনার বিভিন্ন স্থানে ঢাকাগামী মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। জনজীবন অচল হয়ে পড়ে। অনেকে পরিবার নিয়ে এসে বাস না পেয়ে বাড়ি ফিরে যান।

দীর্ঘদিন ধরে পার্শ্ববর্তী সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলার মোটর মালিক ও শ্রমিকরা যৌথভাবে পাবনা থেকে ঢাকাগামী সব পরিবহনের শ্রমিকদের বিভিন্ন সময়ে মারধর ও নানা ধরনের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে আসছেন। গত (২৫ জুন) বিনা অপরাধে পাবনার একজন শ্রমিককে মারধর করে শাহজাদপুরের বাস শ্রমিকরা। এরই প্রতিবাদে এ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে পাবনা জেলা মোটর মালিক ও শ্রমিকরা।

আজ শুক্রবার দুপুরে পাবনা জেলা মোটর মালিক গ্রুপের অফিস সচিব আমিনুল ইসলাম বাবলু এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, পাবনা মোটর মালিক গ্রুপ, বাস মিনিবাস মালিক সমিতি, পাবনা জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নসহ তিনটি সংগঠনের যৌথসভা শেষে পাবনা-ঢাকা রুটে দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়। চলমান সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

শাহজাদপুর মহাসড়ক দিয়ে পাবনার সব বাস ঢাকায় যাতায়াত করে। কিন্তু মাঝেমধ্যেই সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের বাস মালিক-শ্রমিকরা অহেতুক পাবনার বাস চালক ও শ্রমিকদের মারধর করেন।

পাবনা জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ফিরোজ হোসেন সমকালকে বলেন, পাবনার বাসগুলোকে তাদের আগে যেতে দেয় না। শাহজাদপুরের নবীন বরণ পরিবহনের একটি বাস তাদের ইচ্ছেমতো চলাচল করে। কোনো নিয়মশৃঙ্খলার তোয়াক্কা করে না। গত ২৫ জুন দুপুরের দিকে নবীন বরণ বাসটি সমিতির নিয়ম না মেনে তাদের চেইন ব্রেক করে। এ সময় পাবনার একটি বাস ওখানে ছিল। পাবনার বাসটি ছাড়ার সময় হয়েছিল। কিন্তু নিয়ম না মেনে আগেই নবীর বরণ পরিবহনটি তার আগেই ছেড়ে দেয়। এ সময় পাবনার একজন শ্রমিককে মারধর করা হয়। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন।

তিনি আরও বলেন, অন্যায়ভাবে ও জোর করে ভালো কিছু হয় না। আমরা এ সমস্যার সমাধানের জন্য এ পরিবহন ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমাদের এ কর্মসূচি সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের বাস মালিক শ্রমিকদের বিরুদ্ধে। আমরা স্থায়ী সমাধান দাবি করছি। এর আগেও অনেকবার ঝামেলা হয়েছিল। আমরা কয়েকদফা ধর্মঘট দিয়েছিলাম। তখন একটা সমাধান হয়েছিল। এখন আবার নতুন করে ঝামেলা সৃষ্টি করেছে।

পাবনা মোটর মালিক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি খাদেমুল ইসলাম বাদশা সমকালকে বলেন, বারবার কথা দেওয়ার পরও শাহজাদপুরের বাস শ্রমিকরা পাবনার গাড়িতে হামলা চালাচ্ছে। গত ২৫ জুন আমাদের একজন শ্রমিককে মারধর করা হয়। ঘটনায় আমাদের একাধিক শ্রমিক আহত হয়েছেন। আমরা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ ও স্থায়ী সমাধান না পাওয়া পর্যন্ত বাস চালানো সম্ভব নয়। এর আগেও অনেক বার তাদের স্বেচ্ছাচারিতা ও শ্রমিকদের মারধরের ঘটনায় ধর্মঘট হয়েছে। নতুন করে তারা আবারও ঝামেলা সৃষ্টি করছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প বন স র জগঞ জ প বন র ব

এছাড়াও পড়ুন:

সিটি করপোরেশন ও পুলিশ কী করছে

রাজশাহী কলেজের সামনে এক মাস ধরে চলছে ফুটপাতের স্ল্যাব চুরির ঘটনা আর এর করুণ পরিণতি হলো একজন শিক্ষার্থীর নালায় পড়ে গুরুতর আহত হওয়া। সম্প্রতি সেখানে একই ধরনের আরও ঘটনা ঘটেছে। এটি আমাদের নগর ব্যবস্থাপনার অবহেলা ও উদাসীনতার উদাহরণ। একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে এমন ঝুঁকিপূর্ণ ফুটপাত কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

প্রথম আলোর খবর জানাচ্ছে, প্রায় এক মাস রাজশাহী কলেজের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে, যেখানে হাজারো শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ চলাচল করে, সেখানে ফুটপাতের স্ল্যাব চুরি হচ্ছে। প্রায় ৫০০ মিটার সড়কের দুই পাশে থাকা ফুটপাত থেকে অন্তত ২০টি স্ল্যাব চুরি হয়ে গেছে। গত বছরও শহরের বিভিন্ন রাস্তা থেকে স্ল্যাব ও লোহার ফ্রেম চুরি হয়েছিল, কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সিটি করপোরেশন এ বিষয়ে কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেয়নি। এবারও স্ল্যাব চুরির ঘটনায় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে বলে জানা গেছে, কিন্তু সেটি সমস্যার সমাধান করতে পারেনি।

নালায় পড়ে আহত হওয়ার ঘটনা এবারই প্রথম নয়। স্থানীয় লোকজন গত ১০ দিনে অন্তত চারজনকে এই ফুটপাতে পড়ে যেতে দেখেছেন। এটি স্পষ্ট করে যে এ ধরনের দুর্ঘটনা প্রায়ই ঘটছে এবং কর্তৃপক্ষের নজরে আসার পরও কোনো প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। একজন কলেজের ফটকের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তি নিজের ছেলেকে আহত হওয়ার পর নিজেই চোর ধরার জন্য পাহারা দিচ্ছেন, কিন্তু তাতেও কোনো ফল হচ্ছে না।

রাজশাহী সিটি করপোরেশন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত ছিল অবিলম্বে এই অরক্ষিত ফুটপাত মেরামত করা এবং স্ল্যাব চুরি রোধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া। শুধু কাগজে-কলমে ব্যবস্থা নিয়ে নাগরিকদের জীবন ঝুঁকির মুখে ফেলে রাখা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।

একজন শিক্ষার্থী পড়াশোনার জন্য শহরে আসে, কিন্তু শহরের অব্যবস্থাপনা তাকে হাসপাতালের বিছানায় ঠেলে দেয়, এর চেয়ে দুর্ভাগ্যজনক আর কী হতে পারে?

এ ঘটনা একটি সতর্কতা। অবিলম্বে রাজশাহী কলেজের সামনের ফুটপাত সংস্কার করা হোক। একই সঙ্গে নগরজুড়ে এ ধরনের অরক্ষিত স্থানগুলো চিহ্নিত করে জরুরি ভিত্তিতে সেগুলোর মেরামতের ব্যবস্থা করা হোক। নগর কর্তৃপক্ষের প্রধান দায়িত্ব নাগরিকদের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। এই দায়িত্ব পালনে তাদের ব্যর্থতা কোনোভাবেই কাম্য নয়। স্ল্যাব চুরির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে তৎপর হতে হবে। এসব ক্ষেত্রে দেখা যায়, গ্রেপ্তার হওয়ার পর জামিন নিয়ে বের হয়ে অনেক অভিযুক্ত ব্যক্তি একই কাজে জড়িয়ে পড়েন। তাঁদের কীভাবে এ অপরাধকর্ম থেকে বিরত রাখা যায়, সে ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পুরো আসনের ফল বাতিল করতে পারবে ইসি, ফিরছে ‘না’ ভোট 
  • লালমনিরহাটে সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনায় একজন গ্রেপ্তার
  • মৌচাকে হাসপাতালের পার্কিংয়ে প্রাইভেটকারে ২ মরদেহ 
  • তুরস্কে ভূমিকম্পে একজন নিহত, ধসে পড়েছে ১৬টি ভবন
  • তুরস্কে শক্তিশালী ভূমিকম্পে একজনের মৃত্যু, আহত ২৯
  • অসুস্থ ব্যক্তির জন্য দোয়া কীভাবে করব
  • সবুজবাগে ব্যবসায়ীকে লক্ষ্য করে দুর্বৃত্তের ছোড়া গুলিতে পথচারী আহত
  • দেব আনন্দর স্বপ্ন সেদিন ভেঙে চুরমার হয়ে গিয়েছিল
  • ই–মেইলের জমানায় কদর নেই ডাকবাক্সের 
  • সিটি করপোরেশন ও পুলিশ কী করছে