জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপ, ক্যাফেটেরিয়ার মানোন্নয়ন ও ফুড কার্ড চালুর দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ দাবি করেছে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা।

আজ রোববার দুপুরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে একাত্তরের গণহত্যা ভাস্কর্য চত্বরের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিন দফা দাবি উত্থাপন করে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ।

বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার তিন দফা দাবিগুলো হলো দ্রুত সময়সীমা নির্ধারণ করে জকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে; বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাফেটেরিয়ার পরিবেশ ও সেবার মান উন্নয়ন করে শিক্ষার্থীবান্ধব অবকাঠামো নিশ্চিত করতে হবে এবং শিক্ষার্থীদের স্বল্প মূল্যে মানসম্মত খাদ্য নিশ্চিত করতে ঘোষিত ‘ফুড কার্ড’ কার্যক্রম দ্রুত চালু ও তা বাস্তবায়নে প্রশাসনিক উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে ছাত্র অধিকার পরিষদের সদস্যরা বলেন, বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গণতান্ত্রিক চর্চা, শিক্ষার্থীদের অধিকার ও অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণে ছাত্র সংসদ নির্বাচন একটি অপরিহার্য অনুষঙ্গ। জুলাই বিপ্লবের অন্যতম অঙ্গীকার ছিল প্রতিটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বতন্ত্র, অংশগ্রহণমূলক ও নিয়মিত ছাত্র সংসদ নির্বাচন আয়োজন করা। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিমধ্যে কার্যক্রম শুরু হয়েছে বা রোডম্যাপ প্রণয়ন করেছে। কিন্তু জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে এ বিষয়ে প্রশাসনের কার্যক্রম অত্যন্ত ধীরগতির ও সদিচ্ছাশূন্য বলে দাবি করেন তাঁরা।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ১৬ হাজার শিক্ষার্থীর পক্ষে কথা বলার ও প্রতিনিধিত্ব করার কোনো গণতান্ত্রিক প্ল্যাটফর্ম না থাকা যেমন অগণতান্ত্রিক, তেমনি এটি শিক্ষার্থীদের মতপ্রকাশ ও নীতিনির্ধারণের প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের অধিকার হরণের শামিল। এ অবস্থায় বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা প্রশাসনের কাছে জকসু নির্বাচনের একটি নির্দিষ্ট সময়সীমাভিত্তিক রোডম্যাপ প্রকাশের জোর দাবি জানাচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়া প্রসঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ে মাত্র একটি ক্যাফেটেরিয়া আছে। অথচ সেখানে নেই পর্যাপ্ত পানির ফিল্টার ও শিক্ষার্থীদের বসার জন্য প্রয়োজনীয় স্থান। খাবারের মান নিয়েও আছে গুরুতর অভিযোগ। দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসন ফুড কার্ড চালুর ঘোষণা দিলেও তা আজও বাস্তবায়িত হয়নি। উদ্যোগটি এখন কাগজে-কলমে সীমাবদ্ধ আছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এর বাস্তবায়নে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপও চোখে পড়ে না।

আরও পড়ুনবিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে হেনস্তা করা হলে আইনি ব্যবস্থা নেবে জবি প্রশাসন২৪ জুন ২০২৫

সংবাদ সম্মেলনে ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রায়হান হাসান রাব্বি বলেন, ‘আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, তিন দফা দাবি অমূলক নয়; বরং শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকার ও স্বার্থসংশ্লিষ্ট। প্রশাসন যদি শিক্ষার্থীদের এই যৌক্তিক দাবির প্রতি অবিলম্বে ইতিবাচক পদক্ষেপ না নেয়, তবে আমরা শিক্ষার্থীদের বৃহত্তর স্বার্থে গণতান্ত্রিক ও সাংগঠনিক আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব। আন্দোলনের সব দায়দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বহন করতে হবে।’

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

গোলাপের স্ত্রী গুলশান আরার বিরু‌দ্ধে মামলা কর‌বে দুদ‌ক

নির্ধা‌রিত সময়সীমার মধ্যে সম্পদের হিসাব না দেওয়ায় আওয়ামী লী‌গের সা‌বেক দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান মিয়া ওরফে গোলাপের স্ত্রী গুলশান আরা মিয়ার বিরু‌দ্ধে মামলার সিদ্ধান্ত নি‌য়ে‌ছে দুর্নী‌তি দমন ক‌মিশন।

মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুদ‌কের মহাপ‌রিচালক আক্তার হো‌সেন এ তথ‌্য জানান।

আরো পড়ুন:

মাদারীপুরে কবরস্থানে বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগে দুদকের অভিযান

পলাতক থাকলেও বিদেশে টাকা পাচার অব্যাহত জাবেদের: দুদক

তি‌নি ব‌লেন, “গুলশান আরা মিয়ার বিরু‌দ্ধে জ্ঞাত আয় ব‌হির্ভূত সম্পদ অর্জ‌নের অভিযোগ খ‌তি‌য়ে দেখ‌তে নির্ধা‌রিত সম‌য়ে সম্প‌দের হিসাব দি‌তে বলা হলেও তি‌নি জমা দেন‌নি। ফ‌লে, তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৬(২) ধারায় (১) একটি মামলা রুজুর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।”

দুদক জানায়, আওয়ামী লী‌গের সা‌বেক দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান মিয়া ওরফে গোলাপের স্ত্রী গুলশান আরা মিয়ার বিরু‌দ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জ‌নের অভিযোগ উঠে। অভিযোগ আম‌লে নি‌য়ে অনুসন্ধান শুরু ক‌রে ক‌মিশন। এক পরিচালক এর সমন্বয়ে দুই সদস্য বিশিষ্ট টিমও গঠন করা হয়। অনুসন্ধা‌নের এক পর্যা‌য়ে গোলা‌পের স্ত্রীর অর্জিত সম্পদের পরিমাণ, সম্পদ অর্জনের উৎস ও উৎসসমূহের সঠিকতা বা যথার্থতা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে নিরুপণে কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৬(১) ধারা অনুযায়ী গত  ১৫ এপ্রিল তা‌কে সম্প‌দের হিসাব দা‌খি‌লের নো‌টিশ দেওয়া হয়। নো‌টিশ পে‌য়ে তি‌নি সম্পদ বিবরণীর দাখিলের সময় বৃদ্ধির জন্য গত ২৩ জুলাই আবেদন করেন।

আবেদনের প্রেক্ষিতে পূর্বোক্ত সময়সীমার ধারাবাহিকতায় আরো ১৫ কার্যদিবস সময় বর্ধিত করা হয়। বর্ধিত ২১ আগস্টের মধ্যে তার সম্পদ বিবরাণী দাখিলের সময় শেষ হয়ে গেলেও অভিযোগ সংশ্লিষ্ট গুলশান আরা মিয়া সম্পদ বিবরণী দাখিল করেননি। কিন্তু তিনি নির্ধারিত ও বর্ধিত সময়সীমার মধ্যে সম্পদ বিবরণী দাখিলের আদেশ প্রাপ্তির পর তদনুযায়ী লিখিত বিবৃতি বা তথ্য প্রদানে ব্যর্থ হওয়ায় তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৬(২) ধারায় (০১) একটি মামলার অনুমোদন দেয় দুদক।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এসবি 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গোলাপের স্ত্রী গুলশান আরার বিরু‌দ্ধে মামলা কর‌বে দুদ‌ক