নিউইয়র্ক নগরের ডেমোক্র্যাট মেয়র প্রার্থী জোহরান মামদানির মার্কিন নাগরিকত্ব বাতিলের বিষয়টি বিবেচনা করার ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তাঁর প্রশাসনের কয়েকজন কর্মকর্তা।

অন্যদিকে, নিজের একসময়ের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ইলন মাস্ক সম্পর্কে ট্রাম্প বলেছেন, ‘তাঁকে ব্যবসা গুঁটিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় ফিরে যেতে হতে পারে।’ সরকারি ব্যয় বাড়ানো ও করছাড়ের বিষয়ে একটি বিলকে (ট্রাম্পের কথায়, বিগ বিউটিফুল বিল) কেন্দ্র করে মিত্র থেকে মুখোমুখি অবস্থানে গিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছেন ট্রাম্প ও মাস্ক।

জোহরান ও মাস্ক—কারও জন্মই যুক্তরাষ্ট্রে নয়। দুজনই পরে যুক্তরাষ্ট্রে গেছেন এবং ন্যাচারালাইজেশনের মাধ্যমে মার্কিন নাগরিকত্ব পেয়েছেন। ট্রাম্প প্রশাসন কি তাঁদের মার্কিন নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার ক্ষমতা রাখে?

ন্যাচারালাইজেশনের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব পেতে কোনো ব্যক্তির বয়স ১৮ বছরের বেশি হতে হবে এবং তাঁকে গ্রিন কার্ডধারী হিসেবে টানা পাঁচ বছর যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করতে হবে অথবা তিনি যদি মার্কিন নাগরিকের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন তবে তিন বছর বসবাস করলেই চলবে।

জোহরান মামদানি ও ইলন মাস্কের অভিবাসন অবস্থা কী

৩৩ বছর বয়সী জোহরানের জন্ম উগান্ডার রাজধানী কাম্পালায়, তাঁর মা–বাবা ভারতীয় বংশোদ্ভূত। সাত বছর বয়সে জোহরান নিউইয়র্কে চলে আসেন এবং ন্যাচারালাইজেশনের মাধ্যমে ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব পান।

মাস্কের জন্ম ১৯৭১ সালে, দক্ষিণ আফ্রিকার প্রিটোরিয়ায়। তাঁর মা কানাডার নাগরিক, বাবা দক্ষিণ আফ্রিকার নাগরিক।

মাস্ক ১৭ বছর বয়সে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে কানাডায় যান, তিনি কানাডারও নাগরিক। পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করতে ১৯৯২ সালে মাস্ক যুক্তরাষ্ট্রে যান। ২০০২ সালে ন্যাচারালাইজেশনের মাধ্যমে মাস্ক মার্কিন নাগরিকত্ব লাভ করেন। এসব তথ্য ২০২৩ সালে সাংবাদিক ওয়াল্টার আইজ্যাকসনের লেখা তাঁর জীবনীতে উল্লেখ করা হয়েছে।

২০২৪ সালের অক্টোবরে ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইলন মাস্ক যথাযথ কর্ম অনুমোদন (ওয়ার্ক অথোরাইজেশন) ছাড়াই যুক্তরাষ্ট্রে কর্মজীবন শুরু করেছিলেন। মাস্ক তাদের এ দাবি অস্বীকার করেছেন।

জোহরান মামদানি একজন ইহুদিবিরোধী, সমাজতান্ত্রিক ও কমিউনিস্ট। তিনি নিউইয়র্কের মতো মহান শহরকে ধ্বংস করে দেবেন। তাঁকে বিতাড়ন করা প্রয়োজন।অ্যান্ডি ওগলস, টেনেসির রিপাবলিকান আইনপ্রণেতা

ওয়াশিংটন পোস্টে ওই প্রতিবেদন প্রকাশের দিনই এক্সে এক পোস্টে মাস্ক লেখেন, ‘আসলে আমি যুক্তরাষ্ট্রে কাজ করার অনুমতি পেয়েই কাজ শুরু করেছি।’

আরেকটি পোস্টে এই ধনকুবের লেখেন, ‘তখন আমার জে-১ ভিসা ছিল, যা পরে এইচ-১বি ভিসায় রূপান্তর করা হয়।’

যুক্তরাষ্ট্রে বিদেশি শিক্ষার্থীদের জে-১ ভিসা দেওয়া হয়। শিক্ষাগত বা সাংস্কৃতিক বিনিময় কার্যক্রমে অংশগ্রহণের জন্য এই ভিসা দেওয়া হয়। আর এইচ-১বি ভিসা হলো সাময়িকভাবে কাজের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে থাকার অনুমতি।

ন্যাচারালাইজেশনের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব পেতে একজন ব্যক্তির বয়স ১৮ বছরের বেশি হতে হবে এবং তাঁকে গ্রিন কার্ডধারী হিসেবে টানা পাঁচ বছর যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করতে হবে, অথবা তিনি যদি মার্কিন নাগরিকের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন, তবে তিন বছর বসবাস করলেই চলবে।

ট্রাম্প নিউইয়র্ক সিটির বর্তমান মেয়র এরিক অ্যাডামসের প্রতি নিজের সমর্থন প্রকাশ করেছেন। অ্যাডামসও ডেমোক্রেটিক পার্টির সদস্য।

জোহরানকে নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসন কী বলেছে

টেনেসি থেকে রিপাবলিকান আইনপ্রণেতা অ্যান্ডি ওগলস গত ২৬ জুন অ্যাটর্নি জেনারেল প্যাম বন্ডিকে একটি চিঠি লেখেন। ওই চিঠিতে তিনি জোহরান মামদানির নাগরিকত্ব প্রত্যাহারের (ডিন্যাচারালাইজেশন) প্রক্রিয়া শুরু করা উচিত কি না, তা তদন্ত করে দেখার জন্য বিচার বিভাগকে অনুরোধ করেন।

বন্ডি যে চিঠি পাঠিয়েছেন, তার একটি অনুলিপি তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করেছেন। ওগলস লেখেন, জোহরান মামদানি একজন ইহুদিবিরোধী, সমাজতান্ত্রিক ও কমিউনিস্ট। তিনি নিউইয়র্কের মতো মহান শহরকে ধ্বংস করে দেবেন। তাঁকে বিতাড়ন করা প্রয়োজন।

সমর্থকদের উদ্দেশে কথা বলছেন জোহরান মামদানি। গতকাল নিউইয়র্ক শহরে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র ন উইয়র ক ব স কর বসব স র বয়স

এছাড়াও পড়ুন:

ঘাম ঝরে একজনের, নম্বর জোটে সবার

ছবি: সাবিনা ইয়াসমিন

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মাধ্যমিকে কর্মবিরতি, বার্ষিক পরীক্ষা হয়নি
  • ইমরান খানকে কি ভুট্টোর পরিণতি বরণ করতে হচ্ছে
  • তারেক রহমান না এলে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না, এমন নয়: তৌহিদ হোসেন
  • কুমিল্লায় অনুষ্ঠিত হলো বুক অলিম্পিয়াড
  • কেমন ছিলেন সাহাবি যুগের নারীরা
  • ‘সালাতুল হাজাত’ নামাজে যে দোয়া পড়বেন
  • মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের কর্মবিরতি, রোগী ভোগান্তি চরমে
  • সাখাওয়াত স্যার, আপনার কাছে জাতির যত ঋণ
  • ঘাম ঝরে একজনের, নম্বর জোটে সবার
  • এক আর্জেন্টাইনের হ্যাটট্রিকে মেসিদের বড় জয়, প্রথমবার কাপ ফাইনালে ইন্টার মায়ামি