কক্সবাজার সদর উপজেলার ভারুয়াখালী এলাকায় জাহেদ আরমানের পারিবারিক বাসভবনে সাম্প্রতিক হামলা-ভাঙচুরের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশি কমিউনিকেশন স্কলার্স ইন নর্থ আমেরিকা (বিসিএসএনএ)। তারা এ ঘটনার পূর্ণ তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দ্রুত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিও জানিয়েছে।

গতকাল বুধবার এক বিবৃতিতে এ দাবি জানায় বিসিএসএনএ। আরমান বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্রেমিংহ্যাম স্টেট ইউনিভার্সিটির কমিউনিকেশন, মিডিয়া ও পারফরম্যান্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত।

বিসিএসএনএর বিবৃতিতে বলা হয়, এ হামলাটি বিএনপির এক স্থানীয় নেতার মৃত্যুর পরপরই ঘটে। ঘটনার ছবিতে দেখা যায়, বাড়িটি সম্পূর্ণরূপে লন্ডভন্ড করা হয়েছে। আসবাব ও ব্যক্তিগত জিনিসপত্র ধ্বংস করা হয়েছে। মূল্যবান জিনিস লুটপাটের বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ রয়েছে।

এ ঘটনার ফলে আরমানের পরিবার চরম মানসিক বিপর্যয়ের শিকার হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয় বিবৃতিতে। এতে বলা হয়, আরমানের ভাষ্য অনুযায়ী, একটি মহল বিএনপির স্থানীয় নেতার মৃত্যুকে রাজনৈতিক রূপ দিতে চাচ্ছে। যদিও এটি মূলত খাসজমি দখল নিয়ে একটি স্থানীয় বিরোধ থেকে উদ্ভূত। প্রতিশোধের অংশ হিসেবে মুখোশধারী একটি সংঘবদ্ধ দল এলাকার একাধিক বাড়িতে হামলা চালায়। এর মধ্যে আরমানের পারিবারিক বাসভবনও রয়েছে। তিনি জানান, হামলাকারীরা তাঁদের বাসায় ভাঙচুর চালায়। স্বর্ণালংকার, নগদ টাকা, পাসপোর্ট, জাতীয় পরিচয়পত্রসহ অন্যান্য গৃহস্থালি সামগ্রী লুট করে নিয়ে যায়। তাঁর বাবা-মায়ের সারা জীবনের পরিশ্রম মুহূর্তেই ধ্বংস হয়ে যায়।

বিবৃতিতে বলা হয়, আরমানের ৭০ বছর বয়সী বাবা ও ছোট ভাইকে এখন হত্যার মিথ্যা মামলায় জড়ানো হয়েছে। তাঁর বাবা যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশে কমন বাইল ডাক্ট সমস্যার চিকিৎসা নিচ্ছেন। এমন শারীরিক অবস্থায় কোনো ঘটনার সঙ্গে তাঁর জড়িত থাকার প্রশ্নই আসে না। তাঁর ভাই আরাফাত চট্টগ্রামের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। ঘটনার সময় তিনি কক্সবাজারে ছিলেন না। এসব সত্য থাকা সত্ত্বেও আরমানের পরিবার এখনো হুমকি ও ভয়ভীতির মধ্যে বসবাস করছে।

আরমানের পরিবারের নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিবৃতিদাতারা। একই সঙ্গে তাঁরা ক্ষমতার অপব্যবহার ও স্থানীয় দ্বন্দ্বের রাজনৈতিকীকরণ রোধ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

বিবৃতিদাতাদের মধ্যে আছেন ফাহমিদুল হক (বার্ড কলেজ), শাহ জাহান শুভ (ইউনিভার্সিটি অব আলাবামা), মোতাসিম বিল্লাহ (নর্থ ডাকোটা স্টেট ইউনিভার্সিটি), জামাল উদ্দিন (কর্নেল ইউনিভার্সিটি), আহমেদ শাতিল আলম (ইউনিভার্সিটি অব ওকলাহোমা), নুর ই মকবুল (দ্য ইউনিভার্সিটি অব আলাবামা ইন হান্টসভিল), এ কে এম জমির উদ্দিন (ইউনিভার্সিটি অব জর্জিয়া), মীর হাছিব (টেক্সাস টেক ইউনিভার্সিটি), চুটন দেব নাথ (ইউনিভার্সিটি অব উইসকনসিন-মিলওয়াকি), মুহাম্মদ আমিনুল ইসলাম (ওয়েন স্টেট ইউনিভার্সিটি), মুহাম্মদ রাশেদুল হাসান (ইউনিভার্সিটি অব ইলিনয় শিকাগো), নাজমা আখতার (নাজারেথ ইউনিভার্সিটি), খায়রুল ইসলাম (ফ্লোরিডা আটলান্টিক ইউনিভার্সিটি), রেজাউল হক কাউসিক (কলোরাডো স্টেট ইউনিভার্সিটি), শেরিন ফারহানা মনি (ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন মিসিসিপি), রুবাইয়া জান্নাত (মিসিসিপি স্টেট ইউনিভার্সিটি), মো.

সুমন আলী (বল স্টেট ইউনিভার্সিটি), মামুনুর রশিদ (ইউনিভার্সিটি অব কলোরাডো), মোহাম্মদ রশিদ (দ্য ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন মিসিসিপি), বাচ্চু শেখ (মিসৌরি স্টেট ইউনিভার্সিটি), জানিফার কামাল নোভা (সাউদার্ন ইলিনয় ইউনিভার্সিটি কার্বন্ডেল), দাউদ ইসা (পয়েন্ট পার্ক ইউনিভার্সিটি), আশরাফুল গনি (টেক্সাস টেক ইউনিভার্সিটি), মাধব চন্দ্র দাস (টেম্পল ইউনিভার্সিটি), এইচ এম মুর্তজা (দ্য ইউনিভার্সিটি অব ওকলাহোমা), মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান (ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন মিসিসিপি), ইমরান মাজিদ (গ্র্যান্ড ভ্যালি স্টেট ইউনিভার্সিটি), রোকসানা পারভিন (মিসৌরি স্টেট ইউনিভার্সিটি), মোহাম্মদ আলী (ইউনিভার্সিটি অব নর্থ ডাকোটা), মো. হামজা কামাল মোস্তফা (ইউনিভার্সিটি অব কানসাস) প্রমুখ।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ট ট ইউন ভ র স ট ক ইউন ভ র স ট আরম ন র প ম হ ম মদ ন র পর ঘটন র

এছাড়াও পড়ুন:

গোপালগঞ্জে ডিসির বাসভবনে হামলার ঘটনায় ১০১ জনের বিরুদ্ধে মামলা

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জুলাই পদযাত্রা কর্মসূচি ঘিরে হামলা ও সংঘর্ষের জেরে জেলা প্রশাসকের (ডিসি) বাসভবনে হামলার ঘটনায় আরও একটি মামলা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে সদর থানার সহকারী উপপরিদর্শক ফারুক হোসেন বাদী হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলাটি করেন।

মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৪১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৫০ থেকে ৬০ জনকে আসামি করা হয়েছে। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মোহাম্মদ সাজেদুর রহমান বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ১৬ জুলাই এনসিপির কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জ পৌর পার্ক, লঞ্চঘাট, কাঁচাবাজার এলাকাসহ সড়ক অবরোধ করে টায়ার জ্বালিয়ে জনগণের মনে ভীতি ও আতঙ্ক সৃষ্টি করে যান চলাচল ব্যাহত করা হয়। কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগসহ সহযোগী সংগঠনের পক্ষে মিছিল করা হয়। আসামিরা অসৎ উদ্দেশ্যে ও এনসিপির পথসভা নস্যাৎ করতে সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টিসহ সরকারি সম্পত্তির ক্ষতিসাধন করতে জনসাধারণের স্বাভাবিক কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করেন। এ সময় জেলা প্রশাসকের বাসভবনে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়।

এ নিয়ে গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশে হামলা ও ককটেল নিক্ষেপ, পুলিশের ওপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ, জেলা কারাগারে হামলা, জেলা প্রশাসকের বাসভবনে হামলা, রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপে জড়ানোর অভিযোগে ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মোট ১৪টি‌ মামলা করা হলো। সদর, কাশিয়ানী, টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়া থানায় মামলাগুলো দায়ের করা হয়েছে। ১৪টি মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১ হাজার ১৭৫ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ১৪ হাজার ৫৬০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এসব মামলায় ১৬ জুলাই থেকে গত সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ৩৩৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

১৬ জুলাই এনসিপির কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মী ও সমর্থকেরা হামলা চালান। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে নেতা–কর্মীদের সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেদিন প্রথমে ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন। রাতেই কারফিউ জারি করা হয়। পরে কারফিউর মেয়াদ কয়েক দফা বাড়ানো হয়। পরে ২০ জুলাই রাত আটটায় কারফিউ ও ১৪৪ ধারা তুলে নেওয়া হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গোপালগঞ্জে ডিসির বাসভবনে হামলার ঘটনায় মামলা
  • গোপালগঞ্জে ডিসির বাসভবনে হামলার ঘটনায় ১০১ জনের বিরুদ্ধে মামলা